ক্রিকেট খেলায় বোলার, ব্যাটসম্যান ও ফিল্ডার, এই ৩ বিভাগে লোক থাকা চাই। ক্রিকেট মূলত ব্যাটসম্যান বনাম বোলারের খেলা। বোলারের প্রধানতম দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিপক্ষের উইকেট তুলে নেয়া, রান আটকানোও আরেকটা দায়িত্ব তাদের। ফিল্ডাররা এই কাজে বোলারদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। অনেক সময় ফিল্ডাররা রান-আউট করতে পারেন ব্যাটসম্যানদের, তবে সেটা অন্য বিষয়। আপাতত, আমাদের আলোচনা হচ্ছে বোলারদের নিয়ে, বেসিক বোলিং টিপস্ নিয়ে।
অনেকেরই শখ একজন ভালো বোলার হতে পারা। কিন্তু এজন্য শুধু বল নিয়ে মাঠে ছোড়াছুড়ি করলেই যে আপনি একজন ভালো বোলার হয়ে উঠবেন, বিষয়টা এমন নয়। এরজন্য সাধনা, মনোযোগ ও পরিশ্রমের পাশাপাশি কিছু বেসিক বিষয়ে জানা থাকা জরুরি। সবকিছুরই আছে নির্দিষ্ট নিয়ম। নিয়ম মেনে কোনো কাজ করলেই আসে সফলতা। বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং এসবের ক্ষেত্রেও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। বোলারদেরও মৌলিক কতিপয় বিষয় মেনে বোলিং করতে হয়।
বিখ্যাত বোলারদের কাছ থেকে পাওয়া ১০টি ফাস্ট বোলিং টিপস্ অনেকেই ফলো করছেন। তবে, একেকজন বোলার একেক পদ্ধতিতে বোলিং করে থাকেন। আর আদর্শ একটি বোলিং অ্যাকশনের জন্য বোলিং এর এই পাঁচটি মৌলিক উপাদানের দিকে খেয়াল করতে হবে। আর সাথে টিপসগুলো মেনে চললেই একটি আদর্শ অ্যাকশনে বোলিং করা যাবে।
৫টি বেসিক বোলিং টিপস্
১। রান-আপ,
২। কয়েল,
৩। বাউন্ড,
৪। রিলিজ,
৫। ফলো থ্রু।
১। রান-আপঃ
ক. রান-আপ শুরু করতে হবে প্রথমে ছোট ছোট পদক্ষেপ ফেলে। আস্তে আস্তে পদক্ষেপ বড় করতে হবে। সাথে গতিও বাড়াতে হবে।
খ. বাহুদ্বয়কে দেহের কাছে রাখতে হবে। মাথাটাকে রাখতে হবে অনড়। চোখের নজর থাকবে মানে তাকিয়ে থাকতে হবে আপনার লক্ষ্য, অর্থাৎ ব্যাটসম্যানের দিকে।
২। কয়েলঃ
ক. কয়েল হচ্ছে বল রিলিজ করার আগে দেয়া লম্ফ। বলটাকে চিবুকের কাছে রাখুন। আর মাথা থাকবে সামনের উঁচু হাতটির পিছনে।
খ. পিছনের পা টা যখন পিচে নামাবেন দেহটাকে তখন সোজা রাখবেন। পিছনের পা স্থিতিশীল এবং পুরো দেহের ভারবহন করতে হবে। আর সামনের পা সামান্য উপরে উঠাতে হবে।
গ. সামনের পা মাটিতে নামানোর সময় ব্যাটসম্যানের দিকে মুখ করে থাকতে হবে। এভাবে পা রাখলে আপনার পাজোড়া ডেলিভারির পূর্ণ ধকল সামলাতে প্রস্তুত থাকবে।
৩। বাউন্ডঃ
ক. ক্রিজের দিকে যখন আপনি অগ্রসর হবেন, শরীরটাকে পাশে একটু বাঁকিয়ে পিছনের দিকে সামান্য ঝুঁকবেন।
৪। রিলিজঃ
ক. হাত ঘুরানো শুরু করলে, আপনার বোলিং এর হাতটাকে কয়েল পজিশনের সামনে ও নিচের দিকে ধাক্কা দিন। আর অন্য হাতটি ব্যাটসম্যানের দিকে তাক করে রাখুন।
খ. হাতটাকে পুরোপুরি ঘুরান। বল রিলিজ করবেন ঘূর্ণ্নবৃত্তের সর্বোচ্চ স্থান হতে।
৫। ফলো থ্রুঃ
ক. ফলো থ্রু করার সময় বোলিং এর হাতটাকে ভাঁজ করে দেহের দিকে নিয়ে আনুন। নিতম্ব পাশে ঘুরিয়ে ফলো থ্রু শেষ করুন।
খ. আপনার ভরবেগের কারণে আপনি সামনের দিকে একটু এগোবেন। এটা যত কমানো যায় তত ভালো। কারণ, সামনে যত কম আগাবেন, আপনার ফিরতি ক্যাচ ধরতে ও ক্ষেত্রবিশেষে নন-স্ট্রাইকিং ব্যাটসম্যানকে আউট করতে তত সুবিধা হবে। কিন্তু কোনোভাবেই পিচের মাঝখানে যাওয়া যাবে না। কারণ এরূপ করলে “Damaging The Pitch” এই ওজরে আপনার বিরুদ্ধে ম্যাচ রেফারি আপনাকে জরিমানা, একাধিক ম্যাচ নিষিদ্ধকরণ বা উভয়ই করতে পারেন।
শেষ কথাঃ
এই সব বেসিক বোলিং টিপস্ মেনে বল করলে আপনি একটি আদর্শ অ্যাকশনে বল করতে পারবেন। প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ বোলিং এর মাধ্যমেই ঘায়েল করতে হয়। তাই যারা ভালো পেসার হতে চান, তারা এইসব টিপসগুলো মেনে চলতে পারেন।
Leave a Reply