গোসলের পর শরীরকে সাধ্যমতো বডি লোশন দিয়ে আরেকটা ছোট্ট গোসল করানোর মতো তৃপ্তিদায়ক আর কিছু নেই।
পাওয়ারফুল কোনও ফর্মূলা দিয়ে আপনার ত্বককে ফ্রস্ট করা অনেকটাই বিলাসবহুল একটি প্রক্রিয়া।
আর এটা উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই যে, সুস্থ্য ত্বকের ক্ষেত্রে যাবতীয় যত বাধা (Healthy Skin Barrier) রুখে দেয়ার একটা গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি হলো প্রাকৃতিক লিপিড এর ব্যবহার (Replenishing Necessary Lipid)।
আর সেটা আপনি পেয়ে থাকেন বডি লোশন ও বডি ক্রিম থেকে। কিন্তু, আপনি কি জানেন কখন বডি লোশন আর কখন বডি ক্রিম ব্যবহার করতে হয়?
এই দুইটা বিউটি প্রোডাক্টস্ কি একই? নাকি কোনও পার্থক্য আছে? চলুন, সেটাই জানা যাক আজ।
বডি লোশন VS বডি ক্রিম
সংক্ষেপে বলতে গেলে বলতে হয়, বডি ক্রিম বডি লোশনের চেয়ে ঘন।
প্রায় সকল চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরাই একমত যে, বডি ক্রিমের তুলনায় বডি লোশনে পানির পরিমাণ বেশি থাকে। আর এই বেশি থাকাটাই শরীরে ধারাবাহিক ঘনত্ব তৈরি ও ত্বকের লোমকূপে ছড়িয়ে যাওয়ার জন্যে কাজ করে থাকে। মোট কথা, এটি শরীরে চর্বিহীন (non-greasy feel) আর মোলায়েম একটি অনুভূতি তৈরি করে। পানি হালকা হওয়া সহজেই শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং আরামদায়ক অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
অন্যদিকে, ক্রিম তৈরিতে ভারী উপাদান ব্যবহার করা হয়। যেমন, শিয়া মাখন (shea butter) এবং নারকেল তেল (coconut oil)। এই দু’টো উপাদানই ময়েশ্চার তৈরি করে। নারিকেল তেল ও মাখনের উচ্চ ঘনত্বের কারণে বডি ক্রিম বেশি সময় ধরে ঘষতে হয়। কারণ, এটি বডি লোশনের মতো হালকা নয়, বরং বেশ আঠালো।
তবে শেষ পর্যন্ত, অর্থাৎ উপসংহার টানতে গিয়ে আপনাকে মানতেই হবে যে, বডি লোশন আর বডি ক্রিমের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। অনেক সময় বডি লোশন বডি ক্রিম হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। আবার, বডি ক্রিমও প্রায়ই বডি লোশন হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে যায়।
এরপরও, এ দু’টোর মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলো ছক আকারে দেখে নিতে পারেন-
বডি লোশন | বডি ক্রিম |
বডি লোশন মেইনলি পানি, তেল আর কিছু ময়েশ্চারাইজার উপাদান (moisturizing ingredients) দিয়ে তৈরি করা হয়। | বডি ক্রিমও পানি এবং তেল দিয়ে তৈরি করা হয়। কিন্তু, এতে যে পরিমাণ তেল ব্যবহার করা হয়, তা বডি লোশনের চেয়ে অনেক বেশি। |
বডি লোশন ক্রিমের চেয়ে হালকা। | বডি ক্রিম লোশনের চেয়ে ঘন। |
বডি লোশন তৈলাক্ত ত্বককে আদ্র (moisturize) করে। শুস্ক ত্বকের ক্ষেত্রে এটি ভাল আদ্র করতেও পারে, আবার নাও করতে পারে। | শুস্ক ত্বকের ক্ষেত্রে বডি ক্রিমই সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। কারণ, এটি শুস্ক ত্বকে পুষ্টি যোগায়। |
বডি লোশনে ময়েশ্চারাইজিং এর দু’টি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানই (emollients ও humectant) থাকে। সেই সাথে, এতে ভিটামিন E এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিডও থাকে। আর এই উপাদানগুলো ত্বককে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে। | বডি ক্রিমে শুধু মাত্র emollient থাকে। কিন্তু, সেটি লোশনের চেয়ে হালকাও নয়, আবার বেশি ঘনও নয়। |
বডি লোশন সাধারণত বাহু, গলা ও পায়ে ব্যবহার করা হয়। আর এটি সহজেই শরীরে মিশে যায়। গোসলের পর বডি লোশনের ব্যবহার সবচেয়ে ভাল। | বডি ক্রিম সহজে মিশতে পারে না। এটি ত্বকের সাথে পুরোপুরি মিশতে অন্তত আধা ঘন্টা সময় নেয়। |
Leave a Reply