হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করার উপায়গুলো জানা থাকলে নিরাপদ থাকা সহজ হয়ে যায়। এমন কিছু টিপস্ আর ট্রিকস্ আছে যেগুলো ব্যবহার করে অনায়াসেই হ্যাকারকে বোকা বানানো যায়। হ্যাকারকে বোকা বানানো মানেই নিজেকে নিরাপদ আর চিন্তামুক্ত রাখা।
আপনি হয়তো ভাবছেন, হ্যাকারদের আবার বোকা বানানো যায় নাকি! হ্যাকাররা চালাক বলেই তো হ্যাক করে থাকে! কিন্তু আমি বলবো আপনি চাইলে হ্যাকারদের চেয়েও বেশি চালাক হতে পারবেন যদি আপনার ইচ্ছে থাকে, জানার ও শেখার আগ্রহ থাকে।
অনলাইন দুনিয়া সবার জন্যেই উন্মুক্ত, আপনিও এ দুনিয়ায় প্রবেশ করতে পারেন এবং জেনে নিতে পারেন হ্যাকারদের বোকা বানানোর ট্রিকস্। প্রথমে জেনে নিন হ্যাকাররা যে ৭টি ট্রিকস্ ব্যবহার করে আমাদের ফোন হ্যাক করে থাকে। এরপর, এগুলো থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে চলুন অর্থাৎ হ্যাকারদেরকে আপনার উপর এই ট্রিকসগুলো অ্যাপ্লাই করা থেকে বিরত রাখুন।
আশা করি, উপরের লেখাটি পড়ে এসে আপনি কিছুটা চালাক আর সচেতন হয়েছেন। এবার চলুন জেনে নেই হ্যাকার আসলে কে?
হ্যাকার কে?
একজন হ্যাকার হচ্ছে একজন ব্যক্তি বা একটি গ্রুপ যে বা যারা কারো ফোন, কম্পিউটার বা যে কোন ডিভাইসের দূর্বলতা খুঁজে নিয়ে অ্যাটাক করে থাকে। অবৈধ অ্যাক্সেস নেয়ার মাধ্যমে ডিভাইসের মালিককে হয়রানি করে থাকে। হ্যাকাররা সাধারণত কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে অনেক এক্সপার্ট হয়ে থাকে। বিশেষ করে বিভিন্ন ডিভাইসের সিকিউরিটি সিস্টেমে তাদের অগাধ নলেজ থাকে।
হ্যাকার কত প্রকার ও কি কি?
নানা ধরণের হ্যাকার আছে। তার মাঝে সবচেয়ে কমন কয়েকজন হ্যাকার নিম্নরূপ-
ইথিক্যাল হ্যাকার: এ ধরণের হ্যাকাররা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোন একটা ডিভাইসের অ্যাক্সেস নিয়ে থাকে সেই ডিভাইসের দূর্বলতা বের করা ও ফিক্স করার জন্যে। অনেক সময় টেস্টিং পারপাসেও এ ধরণের হ্যাকাররা অ্যাক্সেস নিয়ে থাকে।
আসলে, অ্যাক্সেস নেয় না, আমরাই অ্যাক্সেস দিয়ে থাকি। কারণ, এরা যা করে তা ইথিক্যাল হ্যাকিং যা কারো জন্যে ক্ষতিকর নয়। প্রায় সব দেশের সরকার এবং বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানী তাদের সিকিউরিটি হোল বন্ধ করার জন্যে অনেক চড়া বেতনে ইথিক্যাল হ্যাকার নিয়োগ দিয়ে থাকেন। জেনে নিন যেসব কারণে আপনারও ইথিক্যাল হ্যাকিং শেখা জরুরী। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কিংবা অনলাইনে স্টাডি করে আপনিও একজন হ্যাকার হতে পারেন এবং পেতে পারেন অনেক সন্মান।
ক্রেকার্স: ইনি হচ্ছেন সেই লোক যিনি তার ব্যক্তিগত বেনিফিটের জন্যে আপনার মোবাইলে প্রবেশ করে অনেক কিছুর অ্যাক্সেস নিয়ে থাকেন। মূল উদ্দ্যেশ্য থাকে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টসহ অন্যান্য আর্থিক অ্যাকাউন্টের তথ্য নেয়া এবং সেসব অ্যাকাউন্ট থেকে তার অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করা।
গ্রে-হ্যাট হ্যাকার: এ ধরণের হ্যাকাররা হোয়াইট ও ব্লাক অর্থাৎ ভাল ও মন্দ হ্যাকারদের মাঝামাঝি পর্যায়ের। অনেক সময় কিছু কোম্পানী তাদের সিস্টেমের উইকনেস বের করার জন্যে এ ধরণের হ্যাকারদের নিয়োগ দিয়ে থাকেন। যেমন, একজন হ্যাকার আপনার সিস্টেমে ঢুকে চেক করে নিলো তাতে কোন সিকিউরিটি হোল আছে কিনা। এরপর সে আপনার সিস্টেমের মালিককে সেটা জানিয়ে দিলো।
হ্যাকটিভিস্ট: এ ধরণের লোকেরা তাদের হ্যাকিং স্কিল ব্যবহার করে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সামাজিক উদ্দেশ্যে। তবে এরা সাধারণত কারো পার্সোনাল ডিভাইস হ্যাক করে না। বরং সরকারী কিংবা রাজনৈতিক ওয়েবসাইট বা সার্ভার হ্যাক করে থাকে। আর অধিকাংশ সময়ই এরা কোন প্লাটফর্মের অ্যাক্সেস নিয়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলের উদ্দেশ্যে সেখানে তাদের কোন মেসেজ লিখে রাখে।
কিড হ্যাকার: বুঝতেই পারছেন বাচ্চা হ্যাকারদের কথা বলছি। এরা তেমন একটা স্কিলড্ না অর্থাৎ আনাড়ি হ্যাকার। হ্যাকিং শিখে সেটাকে চেক করার জন্যেই এরা মূলত কোনকিছু হ্যাক করে থাকে। অর্থাৎ, এরা দেখতে চায় যে কতটুকু শেখা হয়েছে, বা আমি হ্যাক করতে পারি কিনা। মূলত নিজেদের মেধা যাছাইয়ের জন্যেই এরা এক ধরণের উত্তেজনা থেকে অন্যদের ডিভাইস হ্যাক করে থাকে।
ফ্রিকার্স: এ ধরণের হ্যাকাররা কখনোই কম্পিউটার কিংবা কোন বিশেষ ওয়েবসাইট হ্যাক করে না। এদের মেইন টার্গেটই হয় স্মার্টফোনের মতো টেলিফোন ডিভাইস হ্যাক করা।
হ্যাকারদের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানলেন। এবার জানুন কিভাবে এইসব হ্যাকারকে বোকা বানাবেন আর তাদের হাত থেকে আপনার স্মার্টফোন রক্ষা করবেন।
হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করার উপায়
দুনিয়া কাঁপানো কিছু হ্যাকার আছে যারা অনলাইনে ওঁত পেতে থাকে আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসের কন্ট্রোল নেয়ার জন্যে। তথাপি, আমাদের জন্যেও রয়েছে কিছু কার্যকরী টিপস্ ও ট্রিকস্ যেগুলো ব্যবহার করে আমরা এসব হ্যাকারের হাত থেকে নিজেদের ফোনসহ যাবতীয় সব ডিভাইসই রক্ষা করতে পারি। আসুন, জানি ফোন রক্ষার সেই টিপস্গুলো।
অপারেটিং সিস্টেম আপ-টু-ডেট রাখুন
অ্যান্ড্রয়েড হোক আর অ্যাপল হোক, যে অপারেটিং সিস্টেমের ফোনই আপনি ব্যবহার করুন না কেন, সেটিকে সব সময়ই আপ-টু-ডেট রাখতে হবে। যখনই অ্যান্ড্রয়েড কিংবা অ্যাপল আপনাকে জানাবে যে আপনার অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট রেডি, তখনই আপডেট দিয়ে দিন। অর্থাৎ, দেরী না করে বর্তমান আপডেট ডাউনলোড ও ইনস্টল করে নিন।
মনে রাখবেন, অপারেটিং সিস্টেমের আপডেট দেয়া হয় তখনই, যখন সিকিউরিটি রিলেটেড কোন ইস্যু ধরা পড়ে। বিশেষ করে নির্মাতা কোম্পানী যখন খুঁজে পায় যে কোন একটি কিংবা একাধিক সিকিউরিটি হোল তৈরি হয়েছে, তখন আপডেট রিলিজ দিয়ে মূলত সেই হোল প্যাচ করা হয় অর্থাৎ বন্ধ করা হয়। সুতরাং, আপনার সিস্টেম সব সময়ই আপডেট রাখুন।
নিশ্চিত হয়ে নিন কি ইনস্টল করছেন
বিভিন্ন ওয়েব পেজ ব্রাউজ করার সময় প্রায়ই এমন হয় যে, হঠাৎ একটি পপ-আপ উইন্ডো ওপেন হয় এবং Install for free এ জাতীয় কোনও লেখা জ্বলজ্বল করতে থাকে। আমাদের মাঝে অনেকেই চিন্তা না করে এরকম লেখার উপর ক্লিক করে বসেন। ফলে, দেখা যায় এমন কিছু ইনস্টল হয়ে যায় যা আমাদের ফোনের ইনফর্মেশন পাঠিয়ে দেয় হ্যাকারের কাছে। আর পেয়ে যায় হ্যাক করার সুযোগ।
সুতরাং, বুঝতেই পারছেন না জেনে না বুঝে কোন কিছুই ইনস্টল করা যাবে না। আপনার যদি কোনও অ্যাপস্ বা গেমস্ ইনস্টল করতে হয়, তবে সব সময়ই তা প্লে-স্টোর কিংবা অ্যাপ স্টোর থেকে ইনস্টল করুন। খুব প্রয়োজন হলেও অন্য কোন সোর্স থেকে, বিশেষ করে অজানা কোন সোর্স থেকে কোনভাবেই কোন কিছু ডাউনলোড করা উচিৎ নয়।
বুঝে-শুনে অ্যাপস্ বা গেমস্ এর পারমিশন দিন
যখন আমরা কোন অ্যাপ বা গেম ডাউনলোড ও ইনস্টল করি, তখন সেটি আমাদের ফোনের কিছু কিছু জিনিস ব্যবহারের পারমিশন চায়। যেমন, কন্টাক্টস্, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, ইত্যাদি। যদিও এসব ফাইল বা ফিচারের বৈধ ব্যবহার রয়েছে, তবু মাঝে মাঝে কিছু অ্যাপস্ বা গেমস্ অবৈধভাবে এগুলোর ব্যবহার করতে পারে।
সুতরাং পারশিন দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বণ করা জরুরী। বিশেষত, সব পারমিশন দেয়া যাবে না। যেমন, যদি পাসওয়ার্ড কিংবা মেইল অ্যাক্সেসের পারমিশন চায়, কিছুতেই সেটা দেয়া উচিৎ হবে না। মূলত, একটা অ্যাপ বা গেম ইনস্টল করার পর সেট-আপ নেয়ার সময় কি কি পারমিশন চাইছে, সেগুলো ভাল করে দেখে তারপর পারমিশন দিতে হবে।
ফোনে থাকা অ্যাপস্ ও গেমস্ রিভিউ করুন
আপনার ফোনে ইতিমধ্যেই ডাউনলোড ও ইনস্টল করা অ্যাপ ও গেমগুলো একবার রিভিউ করুন। দেখে নিন কোনটা কি কোনও আননোন সোর্স থেকে নিয়েছেন কিনা। অর্থাৎ, অ্যান্ড্রয়েডের প্লে-স্টোর এবং আইফোনের অ্যাপ স্টোরের বাহির থেকে কোনটি ইনস্টল করেছে কিনা। যদি করে থাকেন, আর যদি সেগুলোর কোনটির খুব বেশি প্রয়োজন না থাকে, তবে আন-ইনস্টল করে দিন আর হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করুন।
আর যেগুলো অ্যাপ স্টোর বা প্লে-স্টোর থেকে ডাউনলোড করেছেন সেগুলোর অ্যাক্সেস রিভিউ করুন। অর্থাৎ, চেক করে নিন সেগুলো আপনার ফোনের কি কি ফাইল বা ফিচার ব্যবহার করছে। চেক করার জন্যে সেটিংস্ থেকে প্রাইভেসীতে (Settings>Privacy) যান, তাহলেই দেখতে পাবেন কোন কোন অ্যাপস্ কি কি অ্যাক্সেস নিয়েছে বা আপনি কোনটিকে কি পারমিশন দিয়েছেন। অস্বাভাবিক কোন অ্যাক্সেস পারমিট করা থাকলে, সেটি পরিবর্তণ করে দিন।
স্ক্রিন লক ব্যবহার করুন
স্ক্রিন লকের ব্যবহার আপনাকে অনেক ঝামেলা থেকেই রক্ষা করতে পারে। কথা বলে ফোন রেখেছেন পকেটে, অনাকাংখিত ট্যাপ পড়ে কারো কাছে কল চলে যেতে পারে, কোন ওয়েব পেজ ওপেন হয়ে যেতে পারে। মূলত এসব থেকে রক্ষা পেতেই অধিকাংশ মানুষ স্ক্রিন লক ব্যবহার করে থাকে।
কিন্তু কখনো ভেবেছেন কি, গাড়িতে আপনার ফোনটি হারিয়ে গেল কিংবা বাড়িতে বা অফিসে সেটি চুরি হয়ে গেল, অথবা একদিন ছিনতাই হয়ে গেল! আপনার ফোনে স্ক্রিন লক নেই! সুতরাং, অন্য একজন আপনার ফোনের সমস্ত অ্যাক্সেসই পেয়ে গেল। জেনে গেল আপনার যাবতীয় সমস্ত প্রাইভেট তথ্য, আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, আপনার মাস্টার কার্ড, ইত্যাদি।
কাজেই, এ বিষয়ে হেলাফেলা নয়, অবশ্যই স্ক্রিন লক ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে সেরা ১০টি অ্যান্ড্রয়েড লক স্ক্রিন অ্যাপস্ থেকে যে কোনটি ব্যবহার করুন। আর সেই সাথে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি অনেক স্ট্রং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেছেন যা কারো পক্ষে অনুমান করা সহজ হবে না। এক্ষেত্রে প্যাটার্ন লক ইউজ করাটা উত্তম। অথবা সংখ্যা ও বিভিন্ন চিহ্ন মিলিয়ে জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে পারেন।
নিজের ওয়াই-ফাই সেটআপে পাসওয়ার্ড দিন
অনেক সময়ই আমরা ওয়াই-ফাই সেট-আপের সময় ডিফল্ট পাসওয়ার্ডই রেখে দেই। এটি একটি বড় সিকিউরিটি হোল যা দিয়ে হ্যাকাররা আমাদের নেটওয়ার্কে ঢুকতে পারে। সুতরাং, কাস্টম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। ডিফল্ট পাসওয়ার্ড মুছে দিয়ে নিজেই একটি পাসওয়ার্ড দিন এবং সেটিকে স্ট্রং রাখার চেষ্টা করুন।
ওয়াই-ফাই হাইড করবেন না
হোম রাউটারের ক্ষেত্রে এসএসআইডি নামে একটি অপশন আছে যার পুরোটা হয় সার্ভিস সেট আইডেনটিফায়ার। এটি আমাদের রাউটারের ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক নেম। যখন রাউটার সেট করা হয়, তখন এই অপশনটি জানতে চায় যে এসএসআইডি হাইড করে রাখবো কিনা। এক্ষেত্রে যদি আমরা “ইয়েস” সিলেক্ট করি, অর্থাৎ হাইড করি, তবে এটি হ্যাকারের জন্যে ছোট হলেও একটি সুযোগ হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং, এ ক্ষেত্রে “নো” সিলেক্ট করে না করে দিন।
ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সাবধান হোন
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কাস্টোমারদের জন্যে কিংবা সাধারণ মানুষের জন্যে ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ দিয়ে থাকে। আর আমাদের প্রায় সকলেই বিশেষ বিশেষ জায়গায় সেই সব ফ্রি ওয়াই-ফাইয়ের সঙ্গে কানেকটেড হয়ে থাকি।
কিন্তু জেনে অবাক হবেন যে, বেশিরভাগ ডিভাইসই হ্যাক হয়ে থাকে ফ্রি ওয়াই-ফাই ব্যবহারের ফলে। কারণ, একজন হ্যাকার খুব সহজেই ফ্রি ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কে ঢুকে দেখে নিতে পারে সেই নেটওয়ার্কে আর কারা আছে, কে কি করছে, ইত্যাদি। ফলে, ফোন হ্যাক করা তার জন্যে সহজ হয়ে যায়। সুতরাং, ফ্রি নেটের জন্যে যেখানকার সেখানকার ওয়াই-ফাই ব্যবহার না করাটাই উত্তম। হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করার জন্যে এটি একটি ভাল উপায়।
ওয়াই-ফাই ও ব্লুটুথ বন্ধ রাখুন
হ্যাকারদের জন্যে আরেকটি সহজ উপায় আমরা সব সময়ই খুলে রাখি আর সেটি হচ্ছে ওয়াই-ফাই অন রাখা। আবার, ব্লুটুথও। স্মার্টফোনের এই দুই ফিচারের সুযোগ নিয়ে থাকে হ্যাকাররা। ওয়াই-ফাই চালু করে রাখলে যে সমস্যাটি তৈরি হয় সেটি হচ্ছে হ্যাকারের পক্ষে এটি সহজেই জানা সম্ভব হয় যে আপনি এর আগে কোন কোন নেটওয়ার্কে যুক্ত ছিলেন।
আপনার ইউজ করা পুরনো নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জেনে হ্যাকাররা যেটা করে থাকে সেটা হচ্ছে নতুন আর ফেইক নেটওয়ার্ক তৈরি করে নেয়। আর আপনাকে সেটা বুঝতে না দিয়ে পুরনো কোন নেটওয়ার্কের ছদ্মবেশেই আপনাকে ওই নেটওয়ার্কে কানেকটেড হওয়ার প্রলোভন দেখায়। আর আপনি যদি সেই প্রলোভণন পড়ে যান, তবে আপনার ব্রাউজিং হিস্ট্রি, বিভিন্ন সাইটে ব্যবহৃত ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড এবং আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাকাররা জেনে যায়।
এরপর আসুন ব্লুটুথ খোলা রাখার সমস্যা নিয়ে বলি। হ্যাকাররা কারো ব্লুটুথ খোলা পেলে বিভিন্ন ফিশিং স্ক্রিপ্টসহ আর নানা রকম ফাইল পাঠিয়ে থাকে। অনেক সময় অনেকেই কে পাঠিয়েছে, কি পাঠিয়েছে সেটা ভাল করে না দেখে রিসিভ করে ফেলে। ফল, যা হবার তাই হয়, হ্যাকারের কাজ সহজ হয়। সুতরাং, হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করতে হলে শুধু ওয়াই-ফাই নয়, ব্লুটুথ অফ করে রাখা উচিৎ, বিশেষ করে আমরা যখন বাইরে থাকি।
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিফিকেশন চালু করুন
স্মার্টফোনে আপনি যাই করুন না কেন, সবখানেই আপনার টু-ফ্যাক্টর অথেনটিফিকেশন চালু করা উচিৎ। এটি মূলত দুই স্তর বিশিষ্ট্য নিরাপত্তা বলয় যা ভেদ করা হ্যাকারদের জন্যে অত্যন্ত কঠিন।
স্প্যাম ও ফিশিং মেইল খোলা থেকে বিরত থাকুন
অনেক সময়ই আমাদের মেইলে কিংবা সোশ্যাল সাইটের ইনবক্সে কিছু স্প্যাম ও ফিশিং লিংক থাকে, এগুলোতে কখনোই ক্লিক করা উচিৎ নয়। প্রায়ই হ্যাকাররা নানা রকম লোভ দেখিয়ে, বিশেষ করে আর্থিক প্রলোভন দেখিয়ে এসব লিংকে ক্লিক করতে বলে। আর কেউ ক্লিক করা মানেই তার অনেক গোপণ তথ্য হ্যাকারের হাতে দিয়ে দেয়া।
সব সময় সতর্ক থাকুন
আপনার ফোন অন্যদের হাতে দেয়ার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। যেখান সেখান থেকে অ্যাপস্ বা গেমস্ নামানোর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারে সতর্ক থাকুন। মোট কথা, উপরে হ্যাকিং থেকে স্মার্টফোন রক্ষা করার যতগুলো উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, সেগুলোর সবটিই মেনে চলনু। অবশ্যই আপনি নিরাপদ থাকবেন, আপনার ফোন নিরাপদ রাখতে পারবেন।
Leave a Reply