ইন্টারনেটে ফাইল শেয়ারিং এর জন্য যতগুলো পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হলো টরেন্ট। মুভি, গান, গেমস ইত্যাদি ফাইল ডাউনলোডের জন্যে কম বেশি ডাউনলোড প্রেমিদের সবাই সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট খুঁজে থাকেন। কারণ আপনার চাহিদা যাই হয়ে থাকুক না কেন, টরেন্ট তা পূরণ করতে সক্ষম।
টরেন্ট ফাইল কি
বিটটরেন্ট ফাইল সিস্টেমে টরেন্ট বলতে এমন একটি কম্পিউটার ফাইলকে বোঝায় যা কোন এক বা একাধিক ফাইল বা ফোল্ডারের মেটাডাটা সংরক্ষণ করে। বলে রাখা ভালো যে টরেন্ট ফাইলের মধ্যে কোন ধরনের কন্টেন্ট থাকে না এটিতে শুধুমাত্র যে ফাইল শেয়ার করা হয় তার নাম, সাইজ, ফোল্ডারের গঠন, ক্রিপ্টোগ্রাফিক হ্যাশ ভ্যালু ইত্যাদি বিষয়ক তথ্য সংরক্ষিত থাকে।
স্বাভাবিকভাবে আমরা যখন কোন ওয়েবসাইট থেকে মুভি বা অন্য কোন ফাইল ডাউনলোড করে থাকি সেক্ষেত্রে সচরাচর যা দেখা যায় তা হলো ঐ মুভি বা ফাইলটি উক্ত ওয়েবসাইটের নিজস্ব সার্ভারে বা অন্য কোন ফাইল শেয়ারিং ওয়েবসাইটের সার্ভারে আপলোড করা থাকে। কিন্তু টরেন্টের ক্ষেত্রে ব্যাপারটি সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।
টরেন্ট ডাউনলোডের ক্ষেত্রে মূল যে ফাইলটি ডাউনলোড হবে সেটি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে কোন কম্পিউটারে সংরক্ষিত থাকতে পারে এবং সংরক্ষিত ফাইলটির টরেন্ট তৈরী করে ব্যক্তিগতভাবে বা কোন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে টরেন্ট ফাইলটি শেয়ার করা হয়।
এখন কেউ যদি ওই ফাইলটি ডাউনলোড করতে ইচ্ছুক হয় তাহলে সে উক্ত টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোড করে এবং একটি ক্লায়েন্ট সাইড সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে শেয়ার করা কম্পিউটার থেকে ফাইলটি ডাউনলোড করতে সক্ষম হয়। এক্ষেত্রে যিনি ফাইলটি শেয়ার করছেন তিনি সিডার হিসাবে গণ্য হন।
আবার যিনি টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোড করছেন তিনিও যদি ফাইলটি ডাউনলোড করার পর সেটিকে মুছে না ফেলে ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যারে রেখে দেন, তাহলে তিনিও উক্ত ফাইলটির একজন সিডারে পরিণত হন। আবার অন্য কেউ ফাইলটি ডাউনলোড করতে চাইলে তা একযোগে মূল ফাইল শেয়ারকারী ব্যক্তির কম্পিউটার এবং পরবর্তীতে যিনি ডাউনলোড করেছিলেন উভয়ের কম্পিউটার থেকে একযোগে ডাউনলোড হয়।
বলে রাখা ভালো যে টরেন্ট ফাইল ডাউনলোডের ক্ষেত্রে সিডারের সংখ্যা যত বেশি হবে ফাইলটি তত দ্রুত গতিতে ডাউনলোড হবে। তাই টরেন্ট ডাউনলোড করার পূর্বে অবশ্যই ফাইলটিকে অধিক সংখ্যক মানুষ সিড করছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। সিডার যদি না থাকে তাহলে আপনার ইন্টারনেট সংযোগ যত দ্রুতগতি সম্পন্ন হোক না কেন ফাইল ডাউনলোড হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়।
এমন অনেক টরেন্ট ডাউনলোড ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে টরেন্ট ডাউনলোড করলে সিড করা বাধ্যতামূলক এবং আপনি কি পরিমাণ ফাইল ডাউনলোড করছেন এবং কি পরিমাণ সিড করছেন তার একটি হিসাব তারা সংরক্ষণ করে থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে যদি এমন হয় যে কেউ শুধু ফাইল ডাউনলোড করছেন কিন্তু সিড করছেন না, সেক্ষেত্রে তার মেম্বারশীপ বাতিল করা হয়ে থাকে।
টরেন্ট ওয়েবসাইট কি
আশা করি টরেন্ট ফাইল সম্পর্কে আপনারা ধারণা পেয়ে গেছেন। এবার আসি টরেন্ট ওয়েবসাইটের কথায়। এখানে কিছু কথা না বললেই নয়, সেটি হলো অধিকাংশ টরেন্ট ওয়েবসাটই সাধারণত পাইরেটেড মুভি, মিউজিক এবং অন্যান্য কপিরাইটেড ফাইল ডাউনলোডের কাজে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া এ সকল ওয়েবসাইট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
বিশ্বের অনেক দেশেই এখন টরেন্ট ডাউনলোড করা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করার পূর্বে অবশ্যই এ সব ব্যাপারে একবার ভেবে দেখুন এবং তারপরেও যদি ডাউনলোড করতে চান তাহলে ডাউনলোড করার পূর্বে অবশ্যই ভালো মানের কোন ভিপিএন সফট্ওয়্যার দ্বারা আপনার আইপি পরিবর্তণ করে নিন।
সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট
টরেন্ট ডাউনলোডের জন্য সেরা ওয়েবসাইটের তালিকায় এ বছরেও Pirate Bay এর নাম শীর্ষে অবস্থান করছে। সাইটটি গত বছর বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই এটি প্রতিষ্ঠার ১৫তম বছরে পা দিতে চলেছে। যদিও গত বছর বিভিন্ন ধরনের জটিলতার কারণে সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট এর তালিকায় থাকা এক্সট্রা টরেন্ট, টরেন্ট প্রজেক্ট এবং আইএসও হান্ট এর মত অনেক বড় বড় ওয়েবসাইটই বন্ধ হয়ে গেছে, তারপরেও খুশির খবর এই যে এ বছর সে তালিকায় নতুন বেশ কিছু নাম যুক্ত হয়েছে যা টরেন্ট প্রেমিদের জন্য সুখবরই বটে। তাই আজকে আপনাদের সাথে আমি জানাতে চলেছি এ বছরের সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট এবং তাদের সম্পর্কে সর্বশেষ খবরাখবর। তো চলুন দেরী না করে জেনে নেওয়া যাক:
The Pirate Bay
টরেন্ট ডাউনলোড সাইটের দিক থেকে দি পাইরেট বে ওয়েবসাইটটিকে কিং অব টরেন্ট বললে ভুল হবে না। কিং অব টরেন্ট হওয়ার সাথে সাথে এটি টরেন্ট ডাউনলোডের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য এবং পুরাতন ওয়েবসাইটও বটে। যদিও গত বছরে ওয়েবসাইটটি কিছু সমস্যার জন্য সাময়িকভাবে বন্ধ ছিলো তারপরেও সেটি অ্যালেক্সা র্যাংকিং এ তার প্রথম স্থানকে ধরে রেখেছে। বর্তমানে ওয়েবসাইটটির অ্যালেক্সা র্যাংক ১১৪ এবং তারা The Pirate Bay3 ডোমেইনটি দিয়ে তাদের ওয়েবসাইটের কার্যক্রম চালু রেখেছে।
RARBG
বুলগেরিয়া ভিত্তিক এই টরেন্ট ওয়েবসাইটটি বিশেষ করে ভিডিও ফাইলের টরেন্ট ডাউনলোডের জন্য সবচেয়ে বেশি বিখ্যাত। ২০০৮ সালে অনেক হাই কোয়ালিটি ভিডিও শেয়ার করার মাধ্যমে ওয়েবসাইটটি সকলের নজরে আসে। এরপর সময়ের সাথে সাথে ভিডিও টরেন্ট ডাউনলোডকারীদের মনে এটি তার জায়গা করে নেয়। গত বছরে অ্যালেক্সা র্যাঙ্কিং এ এই ওয়েবসাইটটি তৃতীয় স্থানে থাকলেও বর্তমানে এর স্থান ২৯৮ তম।
1337x
1337x গত বছরের মত এবারও তাদের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে। গত বছর ওয়েবসাইটির অ্যালেক্সা র্যাংক ছিল ৬ যা বর্তমানে ৩২১। তারপরেও সাইটটিতে প্রতিনিয়ত অনেক বেশি পরিমাণে ট্রাফিক আসে। সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট এর তালিকায় নিজের জায়গা করে নেওয়ার একটি মূল কারণ হলো, ওয়েবসাইটটির রয়েছে একদল নিবেদিত আপলোডার যারা প্রতিনিয়ত নিত্য নতুন টরেন্ট আপলোড করে থাকে। আর সক্রিয় আপলোডার এবং সিডার থাকার কারণে এই ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোডকৃত টরেন্ট ফাইলগুলি অন্যান্য ওয়েবসাইটের চাইতে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ডাউনলোড হয়ে থাকে।
Torrentz2
এই ওয়েবসাইটি মূলত Torrentz.eu নাম দিয়ে তাদের যাত্রা শুরু করে। ২০১৬ সালে কিছু জটিলতার কারণে তাদের সাময়িকভাবে ওয়েবসাইট বন্ধ করে দিতে হলেও বর্তমানে তারা Torrentz2 নামে ওয়েবসাইটটি পরিচালনা করছে। পূর্বের এই ওয়েবসাইটটিতে শুধু মাত্র অন্য টরেন্টসাইটের ডাউনলোড লিংক পাওয়া গেলেও বর্তমানে সাইটির নিজস্ব সার্ভার থেকেও টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করা সম্ভব।
বিভিন্ন ব্রাউজারের জন্য সাইটটির রয়েছে একাধিক অ্যাড-অন ও প্লাগ-ইন। সাইটটি ব্রাউজ করলে প্রথম দিকে এটিকে দেখে আপনার একটি সার্চ ইঞ্জিনে ফাইল সার্চের অভিজ্ঞতা তৈরী হবে। আপনি যখন আপনার কাঙ্খিত ফাইলটির নাম উল্লেখ করে সার্চ করবেন এই সাইটটি তখন এদের ডাটাবেজ থেকে উক্ত ফাইলটি যদি কোন টরেন্ট ওয়েবসাইটে আপলোড হয়ে থাকে তাহলে তার নাম, বিবরণসহ উক্ত সাইটের লিংক প্রদর্শন করবে। সেখান থেকে আপনি ওই ওয়েবসাইটে যেয়ে আপনার পছন্দসই ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
YTS.AG
টরেন্ট ডাউনলোডের জগতে এই ওয়েবসাইটটি হাই ডেফিনেশন কোয়ালিটির ভিডিও ডাউনলোডের জন্য বিখ্যাত। এই ওয়েবসাইটটির বেশির ভাগ মুভি বা ভিডিওই ব্লু-রে কোয়ালিটির হয়ে থাকে। যে সকল মুভি প্রেমিরা তাদের পছন্দের মুভির এইচডি কিংবা ব্লু-রে ভার্সন দেখার জন্য অপেক্ষায় থাকেন, তাদের জন্য এই ওয়েবসাইটটি আদর্শ হতে পারে। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, যেহেতু এই ওয়েসাইটটিতে শুধু ভালো মানের ভিডিও কোয়ালিটির ভিডিওগুলির টরেন্ট শেয়ার করা হয়ে থাকে সেহেতু কোন মুভি মুক্তির সাথে সাথেই আপনি তার টরেন্ট এই ওয়েবসাইটে পাবেন না।
EZTV.AG
বিভিন্ন টেলিভিশন সিরিজের টরেন্ট শেয়ারের জন্য বিখ্যাত এই ওয়েবসাইটটি ২০১৫ সালে মালিকানা পরিবর্তনের কারণে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে গেলেও বর্তমানে এটি তাদের নিজস্ব টরেন্ট ফাইল শেয়ার করে চলেছে। সাধারণ একটি টরেন্ট ফাইল একাধিক ওয়েবসাইটে পাওয়া গেলেও এই ওয়েবসাইটটির পূববর্তী সমস্যাগুলোর কারণে এই ওয়েবসাইটের টরেন্টগুলি অন্যান্য ওয়েবসাইটে শেয়ার করা হয় না।
টরেন্ট ফাইল কিভাবে ডাউনলোড করবেন
টরেন্ট শব্দটি শুনতে যতটা জটিল মনে হয়, টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড করা আসলে ততটাই সহজ। টরেন্ট প্রযুক্তিতে ফাইল ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে আপনি যে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন সে অনুযায়ী টরেন্ট ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যার ইনষ্টল করে নিতে হবে।
ইন্টারনেটে টরেন্ট ডাউনলোডের জন্য অসংখ্য ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যার রয়েছে তাদের মধ্যে utorrent সবচেয়ে ভালো বলে আমি মনে করি। কারণ utorrent একই সাথে উইন্ডোজ, লিন্যাক্স এবং ম্যাক পিসিতে কাজ করে। তাছাড়া utorrent এর ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেসের কারণে, এটি ব্যবহার করাও খুবই সহজ। এছাড়াও, utorrent সফট্ওয়্যারটি বিনামূল্যে ব্যবহারযোগ্য। তবে আপনি যদি utorrent এর পরিবর্তে অন্য কোন ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যার ব্যবহার করতে চান তাহলে qBittorrent, Deluge অথবা Transmission এর মত সফট্ওয়্যারগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
একবার টরেন্ট ক্লায়েন্ট সেট আপ হয়ে গেলে, আপনার কাজ হবে ভালো কোন টরেন্ট ডাউনলোড বা ইনডেক্সার ওয়েবসাইট থেকে আপনি যে ফাইলটি ডাউনলোড করতে চান তার টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোড করে নেওয়া। আপনি চাইলে টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোডের পরিবর্তে ম্যাগনেট লিংক ব্যবহার করেও ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন।
ম্যাগনেট লিংক ব্যবহারের সুবিধা হলো এক্ষেত্রে আপনি টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড না করেই সরাসরি ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে আপনার কাঙ্খিত ফাইলটি ডাউনলোড করতে পারবেন।
আপনি যদি সফলভাবে টরেন্ট ফাইলটি ডাউনলোড করে থাকেন, তবে এর পরে আপনার কাজ হবে ডাউনলোডকৃত টরেন্ট ফাইলটিকে ক্লায়েন্ট সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে ওপেন করা এবং সেখান থেকে প্রয়োজনীয় ফাইলগুলি সিলেক্ট করে ডাউনলোড করা।
আপনি যদি utorrent এর মাধ্যমে ডাউনলোড করেন, তাহলে আপনি টরেন্ট ডাউনলোডের ক্ষেত্রে ডাউনলোড সাময়িক স্থগিত করে রাখা, পরবর্তীতে তা আবার স্বক্রিয় করা, একাধিক টরেন্ট ফাইল একসাথে ডাউনলোড করা, ডাউনলোডে থাকা টরেন্ট ফাইলগুলির মধ্যে কোনটি আপনার সর্বাগ্রে প্রয়োজন বা কোনটি পরবর্তীতে প্রয়োজন এ সমস্ত সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।
তাছাড়া আপনি যদি কোন ফাইল ডাউনলোড করতে করতে সেটি বাতিলও করে দেন এবং পরবর্তীতে আপনি যদি মনে করেন যে ওই ফাইলটি আপনি আবার ডাউনলোড করতে চান, তাহলে পূর্বে যতটুকু ডাউনলোড হয়েছিল সেখান থেকেই আবার ডাউনলোড শুরু হয়। একারণে অধিকাংশ টরেন্ট ডাউনলোডকারীদের কাছে utorrent প্রথম পছন্দ।
টরেন্ট ডাউনলোড কতটা নিরাপদ
যে সমস্ত সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলি ছাড়াও আপনি চাইলে আমাদের দেশীয় বিভিন্ন টরেন্ট ওয়েবসাইট থেকেও ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে ভুলবেন না। কারণ টরেন্ট ডাউনলোডের জন্য ওয়েবসাইট তৈরী করা আইনত বৈধ না হওয়ায় আমাদের দেশীয় অধিকাংশ টরেন্ট ওয়েবসাইটগুলো এমন সব হোস্টিং সার্ভিসে তাদের ওয়েবসাইট হোস্ট করে থাকেন যা সাধারণত বিরক্তিকর বিজ্ঞাপনসহ কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্ণগ্রাফিক লিংকও বহন করে থাকে।
তাছাড়া এ ধরনের ওয়েবসাইট ব্যবহার করার ফলে আপনার কম্পিউটার খুব সহজেই মালওয়্যার দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবণা থেকে যায়। আমি বলছি না যে বাংলাদেশের সব ওয়েবসাইটে এমন হয়। বাংলাদেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশীয় টরেন্ট সাইটেও একই ধরনের ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তাই টরেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতনতা অবলম্বন করা উচিৎ।
টরেন্ট ওয়েবসাইটের আইন-কানুন
আজকের পোষ্ট থেকে আপনার অবশ্যই বুঝতে পেরেছেন যে টরেন্ট কি, কিভাবে কাজ করে এবং সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট কোনগুলি। তাছাড়া টরেন্ট ডাউনলোডের দিক থেকে আইনগত কি কি সমস্যা আছে তা নিয়েও আশা করি আপনাদের পরিষ্কার ধারণা তৈরী হয়েছে।
মনে রাখবেন টরেন্ট ডাউনলোড যে পৃথিবীর সবখানেই বেআইনি তা কিন্তু নয়। পৃথিবীতে বেশ কিছু দেশ রয়েছে যেখানে টরেন্ট ডাউনলোড সম্পূর্ণ বৈধ। উদাহরন স্বরুপ সুইজারল্যান্ডে যতক্ষণ না টরেন্ট ডাউনলোডের মাধ্যমে আপনি কোন অর্থ উপার্জন করছেন বা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন ততক্ষন এটি সম্পূর্ণ বৈধ।
আমাদের দেশে টরেন্ট ডাউনলোডের ব্যপারটি বৈধ নয়। সে কারণে আমরা প্রথমেই আপনাকে নিরুৎসাহিত করব টরেন্ট থেকে ফাইল ডাউনলোডের ক্ষেত্রে। কারণ আপনি যদি টরেন্ট থেকে ডাউনলোড করতে যেয়ে কোন বিপদে পড়েন বা আইনি জটিলতায় আটকে যান, তাহলে তার দায়ভার আপনাকেই বহন করতে হবে।
আমাদের দেশে অনেক আগে থেকেই টরেন্ট থেকে ফাইল ডাউনলোড শুরু হয়ে থাকলেও বিগত কয়েক বছরে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও গতির কারণে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে। পাশাপাশি টরেন্ট বিডি এবং ক্রেইজি এইচডি এর মত টরেন্ট শেয়ারিং ওয়েবসাইটগুলোতেও এত সংখ্যক মেম্বার রেজিষ্ট্রেশন শুরু হয়, যার ফলে অ্যাডমিনদের ওপেন রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতির পরিবর্তে ইনভাইট অনলি পদ্ধতিতে মেম্বার রেজিষ্ট্রেশন শুরু করতে হয়।
সেরা টরেন্ট ওয়েবসাইট এর তালিকায় আমি যে ওয়েবসাইটগুলির কথা বলেছি তা আমার অভিজ্ঞতা মতে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ। অন্যান্য ওয়েবসাইটগুলির চাইতে এই ওয়েবসাইটগুলিতে যেসব টরেন্ট পাওয়া যায় তাতে অনেক বেশি পরিমাণে সিডার থাকে। তাছাড়া এই ওয়েবসাইটগুলি থেকে ডাউনলোকৃত টরেন্টে মালওয়্যারসহ অন্যান্য ভাইরাস থাকার আশংকাও অনেক কম। তাই আপনিও যদি আমার মত একজন ডাউনলোড প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে এখনই উপরের ওয়েরসাইটগুলি ভিজিট করুন আর ডাউনলোড করা শুরু করে দিন।
Leave a Reply