লাইফ ইন্সুরেন্স কত প্রকার ও কি কি তা অনেকে জানেন, অনেকে জানেন না। টার্ম এবং পার্মানেন্ট, এই দুই ক্যাটেগরির ভিত্তিতে বিভিন্ন প্রকারের লাইফ ইন্সুরেন্স রয়েছে। তবে, প্রকারভেদটা মূলত নির্ভর করছে ইন্সুরেন্সের ইফেক্ট কত দীর্ঘ হয়, তার উপর।
লাইফ ইন্সুরেন্স কি আর কেন করবেন সে সম্পর্কে এ আধুনিক সময়ে কম-বেশি সবাই জানেন। তবে, অবস্থা ভেদে একজন ব্যক্তির জন্যে ঠিক কোন প্রকারের লাইফ ইন্সুরেন্স প্রয়োজন, তা ঠিক করতে অনেকেই হিমসিম খান। আসুন, আজ ১০ প্রকারের লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।
লাইফ ইন্সুরেন্স কত প্রকার
লাইফ ইন্সুরেন্স ১০ প্রকার। যথা:
- পার্মানেন্ট লাইফ ইন্সুরেন্স বা স্থায়ী জীবন বীমা
- টার্ম লাইফ ইন্সুরেন্স বা মেয়াদী জীবন বীমা
- হোল লাইফ ইন্সুরেন্স বা পুরো জীবন বীমা
- ইনিভার্সাল লাইফ ইন্সুরেন্স বা সার্বজনীন জীবন বীমা
- ভেরিয়েবল লাইফ ইন্সুরেন্স বা পরিবর্তণশীল জীবন বীমা
- ভেরিয়েবল ইউনিভার্সাল লাইফ ইন্সুরেন্স বা পরিবর্তণশীল সার্বজনীন জীবন বীমা
- সিম্পিফাইড ইস্যু লাইফ ইন্সুরেন্স বা সরল ইস্যু জীবন বীমা
- গ্যারান্টেড ইস্যু লাইফ ইন্সুরেন্স বা গ্যারিন্টি যুক্ত জীবন বীমা
- ফাইনাল এক্সপেন্স লাইফ ইন্সুরেন্স বা চুড়ান্ত ব্যয় জীবন বীমা
- গ্রুপ লাইফ ইন্সুরেন্স বা দলগত জীবন বীমা
পার্মানেন্ট লাইফ ইন্সুরেন্স:
স্থায়ী বা পার্মানেন্ট লাইফ ইন্সুরেন্স একটি ছাতার মতো যার বিভিন্ন শিক রয়েছে। কারণ, এই ধরণের জীবন বীমা আরো নানা বিষয়কে কাভার করে। একজন গ্রাহক যতদিন পর্যন্ত এই বীমার জন্যে প্রিমিয়াম ফি প্রদান করে, ততদিন পর্যন্ত এই বীমা স্থায়ী হয়। যেদিন গ্রাহক আর ফি প্রদান করতে না চান, সেদিনই তিনি এই বীমার লাভসহ মূলধন তুলতে পারেন।
টার্ম লাইফ ইন্সুরেন্স:
মেয়াদী জীবন বীমাই হচ্ছে গ্রাহকদের সবচেয়ে পছন্দের বীমা। এটি একটি খাঁটি বীমা নীতি যেখানে একজন গ্রাহক যথন তার প্রিমিয়াম ফি প্রদান করে, তখন সে মূলত তার মৃত্যুর পর পরিবারের জীবন-ধারণ নিশ্চিত করে। অর্থাৎ, গ্রাহক মারা যাওয়ার পর তার পরিবার বীমা কোম্পানির কাছ থেকে এককালীন একটা অ্যামাউন্ট পেয়ে থাকে। এ ধরণের বীমার ফি মাসিক ও বাৎসরিক দুইটাই হয়ে
ইউনিভার্সাল লাইফ ইন্সুরেন্স:
এ ধরণের লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্যাশ ভ্যালু আছে যা হোল পলিসির মতো। সার্বজনীন বীমার ক্ষেত্রে মৃত্যুর আগে বীমার মূলধন ও লাভ যেমন উত্তোলন করা যায়, তেমনই মৃত্যুর পরও উত্তোলন করা যায়। তবে, এখানে একটি টুইস্ট আছে। পলিসি হোল্ডার নতুন বীমা না করেও এই বীমাকে অন্য বীমাতে পরিবর্তণ করতে
ভেরিয়েবল লাইফ ইন্সুরেন্স:
ভেরিয়েবল বা পরিবর্তণশীল জীবন বীমা আর পুরো জীবন বীমার মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে ক্যাশ ভ্যালু, অর্থাৎ নগদ মূল্য কম্পোনেন্ট কিভাবে কাজ করে। হোল লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্যাশ ভ্যালু অনেকটা সেভিংস অ্যাকাউন্টের মতো। আর ভেরিয়েবল লাইফ ইন্সুরেন্স অনেকটা মিউচুয়াল ফান্ডের মতো।
ভেরিয়েবল ইউনিভার্সাল লাইফ ইন্সুরেন্স:
আপনি যদি মনে করেন যে পরিবর্তণশীল বীমা এবং পরিবর্তণশীল সার্বজনীন বীমার মধ্যে মিল রয়েছে, তবে আপনি ঠিক চিন্তাই করছেন। তাই আর বেশি কথা না বলে লেখাটাকে অহেতুক বড় করা থেকে বিরত থাকলাম।
সিম্পিফাইড ইস্যু লাইফ ইন্সুরেন্স:
ট্রিফিক্যালি আপনি যখন বীমার জন্যে আবেদন করেন, তখন আপনাকে অনেকটা প্যারামেডিকেল পরীক্ষার ভেতর দিয়ে যেতে হয়। এখানে বীমা কোম্পানী নিশ্চিত হতে চায় যে, আপনি বীমার জন্যে কতটা সামর্থ্যবান। এটা প্রকৃতপক্ষে তাদেরকে আপনার বীমার রেট নির্ধারণে সাহায্য করে। যদিও সিম্পিফাইড ইস্যু টাইপ লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে আপনি মেডিকেল পরীক্ষাটাকে স্কিপ করতে পারেন, তবু হেলথ্ এক্সাম ছাড়া এটি পরিপূর্ণতা পায় না।
গ্যারান্টেড ইস্যু লাইফ ইন্সুরেন্স:
যদিও আপনাকে কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে হয় না, তবু গ্যারিন্টি যুক্ত জীবন বীমা অনেকটা সরল ইস্যু লাইফ ইন্সুরেন্সের মতো। তাই, এটি নিয়েও আর বেশি কথা বললাম না। শুধু এটুকু বলবো, আপনি যতদিন পর্যন্ত প্রিমিয়াম পে করবেন, ততদিন পর্যন্ত আপনার বীমা বলবৎ থাকবে এবং কোম্পানী আপনাকে কাভার দেবে।
ফাইনাল এক্সপেন্স লাইফ ইন্সুরেন্স:
ফাইনাল বা চুড়ান্ত ব্যয় জীবন বীমা আপনাকে মূলত মৃত্যুর পর আপনার চুড়ান্ত বা ফাইনাল খরচ বহন করার নিশ্চয়তা দিয়ে থাকে। এটি একটি ইউনিক টাইপ বীমা পলিসি যা আপনার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত সমস্ত কিছুর ব্যয়ভার বহন করতে বাধ্য থাকে।
ছোট্ট পরিসরে বা অল্প কথায় জানলেন লাইফ ইন্সুরেন্স কত প্রকার আর সেগুলো কি কি। এখন আপনি যদি একটি লাইফ ইন্সুরেন্স করতে চান, তবে উপরের আলোচনা থেকে ঠিক করে নিন আপনার জন্যে কোনটি প্রয়োজন বা কোনটি ভাল হবে।
Leave a Reply