আপনি যদি ইন্টারনেরট আয় করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই MyLikes নামটি শুনে থাকবেন। যদি না শুনে থাকেন তাহলে আমি আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেব MyLikes এর সাথে। আপনার যদি গুগল অ্যাডসেন্স বা অ্যাডওয়ার্ড সম্পর্কে সাধারণ ধারণা থেকে থাকে, তাহলে আপনি মাইলাইকস থেকে আয় করার জন্য উপযুক্ত।
যদিও আমি নিশ্চিত যে আপনাদের সবারই মোটামুটি গুগল অ্যাডসেন্স বা অ্যাডওয়ার্ড সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রয়েছে, তারপরেও যারা জানেন না তাদের জন্য বলে দেই। গুগল অ্যাডওয়ার্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানী তাদের বিজ্ঞাপন প্রদান করে থাকেন, আর অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে পাবলিশারগণ তাদের ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপনগুলি প্রদর্শন করান।
মাইলাইকস থেকে আয়
সহজ ভাষায় বলতে গেলে বলতে হবে MyLikes হল গুগল অ্যাডসেন্স ও অ্যাডওয়ার্ড প্রোগ্রাম এর সমন্বয়। এখানে আপনি বিজ্ঞাপন দাতা এবং বিজ্ঞাপন পাবলিশার দুই ভুমিকাতেই কাজ করে আয় করতে পারবেন। তবে ওয়েবসাইটটির কিছু আলাদা বৈশিষ্ট রয়েছে যা একে গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আলাদা করে তুলেছে।
MyLikes থেকে বিজ্ঞাপন দাতা এবং পাবলিশার দুইভাবেই আয় করার সুযোগ থাকলেও আজকের পোষ্টে আমরা পাবলিশার হিসেবে অর্থাৎ বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কিভাবে মাইলাইকস থেকে আয় করা যায় সে বিষয়ের দিকে বেশি গুরুত্ব দেব। অর্থাৎ বিজ্ঞাপন না দিয়ে শুধুমাত্র বিজ্ঞাপন দেখিয়ে কিভাবে মাইলাইকস থেকে আয় করতে হবে সেগুলি নিয়ে আলোচনা করব।
যেভাবে আয় করতে হবে
প্রথম ধাপ: মাইলাইকস থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনাকে মাইলাইকস এ একটি কাস্টম ডোমেইন তৈরী করতে হবে। আপনি যখন মাইলাইকস এর সাইনআপ করবেন তখন আপনার ইউজারনেম আপনার ডোমেইন এর ইউআরএল হিসেবে বিবেচিত হবে। তাই ইউজারনেম নির্বাচনের দিক থেক সতর্ক থাকুন। যতটা সম্ভব স্বাভাবিক এবং সহজ ইউজারনেম নির্বাচন করার চেষ্টা করুন এবং ইউজারনেমে নম্বর ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন।
দ্বিতীয় ধাপ: ওয়েবসাইট তৈরীর পরে আপনার কাজ হবে ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরী করা ও সেগুলিকে শেয়ার করা। মাইলাইকস থেকে আয় করার জন্য অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়াতে অ্যাকাউন্ট তৈরী করতে হবে এবং সেখান থেকে যেন প্রচুর পরিমাণ ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে আসে তা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি ইচ্ছা করলে ফেসবুক পেজ এবং গ্রুপে আপনার কন্টেন্ট শেয়ার করতে পারেন। তাছাড়া অনলাইন আর্নিং বিভিন্ন গ্রুপে মাইলাইকস থেকে আয় করার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন এবং সেখানে প্রমাণ হিসেবে আপনার লিংকি দিতে পারেন।
তৃতীয় ধাপ: এই ধাপে আপনার কোন ভিজিটর যদি আপনার ওয়েবসাইটে থাকা কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন তাহলে আপনি মাইলাইকস থেকে পেমেন্ট পাবেন।
কন্টেন্ট তৈরী ও শেয়ার করা
আপনার ওয়েবসাইটটি তৈরী হয়ে যাওয়ার পরেই আপনার কাজ হবে ভালো মানের কন্টেন্ট তৈরী করে সেটি শেয়ার করা। এজন্য অবশ্যই আপনাকে কন্টেন্ট এর মান এবং শেয়ারিং সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখতে হবে।
কন্টেন্ট তৈরীর ক্ষেত্রে এখানে কোন বাধাধরা নিয়ম নেই। আপনার সোস্যাল ফলোয়ার এবং সাবস্ক্রাইবার যে ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করেন আপনি সে ধরনের কন্টেন্টই তৈরী করবেন। তবে কন্টেন্ট যেন ইউনিক হয় সে ব্যাপারে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। কপি করা কন্টেন্ট হলে সেটিকে স্প্যাম বিবেচনা করে আপনার অ্যাকাউন্টটি বাতিল করা হতে পারে।
আপনি যদি ইউটিউবার হয়ে থাকেন তাহলে যতটা সম্ভব ভাইরাল কন্টেন্ট তৈরী করার চেষ্টা করুন। ইউটিউবে ভাইরাল ভিডিও তৈরী করার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলি জেনে নিন। এছাড়া অন্যান্য ক্ষেত্রে ইনফোগ্রাফিক এর ব্যবহারও আপনার ওয়েবসাইটে প্রচুর ভিজিটর এনে দিতে পারে। যারা ভালো আর্টিকেল লিখতে পারেন আমি তাদেরকে পরামর্শ দেব ১০০০ শব্দের ভিতরে সুন্দর করে গুছিয়ে ইংরেজীতে আর্টিকেল লিখুন। আর্টিকেল ইউনিক হচ্ছে কি না সেটি যাচাই করার জন্য ইন্টারনেটে অনেক প্লাগারিজম চেকার টুলস রয়েছে, তার মধ্যে যে কোন একটির সহায়তা নিতে পারেন।
পেমেন্ট পদ্ধতি
মাইলাইকস সাধারণত পেপাল, অ্যামাজন গিফট কার্ড বা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে পেমেন্ট প্রদান করে থাকে। আপনার অ্যাকাউন্টে ২০ ডলার জমা হলেই তা পেপালের মাধ্যমে এবং ৫০ ডলার হলে ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট নিতে পারবেন। আমাদের দেশে যেহেতু এখনো পেপাল আসেনি তাই ব্যাংকের মাধ্যমে পেমেন্ট নেয়াটাই আমাদের জন্য একমাত্র পেমেন্ট গেটওয়ে।
প্রতিকূলতা
মাইলাইকস এ কাজ করার বিষয়ে সুবিধার সাথে সাথে, এর সাথে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা নিয়ে আলোচনা করাটা আমি আমার দায়িত্ব বলে মনে করি। চলুন জেনে নিই সেগুলি কি কি:
- মাইলাইকস আপনাকে কখনোই ডোমেইন নেম তৈরী করতে দেবে না। আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরীর সময় প্রদানকৃত ইউজারনেমই আপনার ইউআরএল হিসেবে বিবেচিত হবে।
- মাইলাইকস এর ইউআরএলগুলি কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্প্যাম ইউআরএল এর মত মনে হয়। যেহেতু আপনি সোস্যাল মিডিয়াতে কাজ করবেন তাই কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- আপনি ইচ্ছা করলেও আপনার ওয়েবসাইটটিকে অন্য কোথাও ট্রান্সফার করতে পারবেন না, কারণ আপনি তাদের ডোমেইন নেম ব্যবহার করছেন।
সবশেষে আমি মনে করি মাইলাইকস থেকে আয় করার বিষয়টি সবার জন্য নয়। সহজ ভাষায় আপনি যদি ছোট ছোট কন্টেন্ট তৈরী করতে ও সেগুলিকে সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভাইরাল করে দিতে সক্ষম হন, তাহলে মাইলাইকস আপনার জন্যই। অন্যভাবে বলতে গেলে আপনি অবশ্যই সেই ধরনের কন্টেন্টই তৈরী করবেন যা আপনার ফলোয়ার বা সাবস্ক্রাইবার চান। মাইলাইকস ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবারদের জন্য অধিক উপযোগী হিসেবে প্রমাণিত।
Leave a Reply