আপনি যদি একটি আকর্ষণীয় ব্রুশিয়ার ডিজাইন করতে চান, তবে আপনাকে এই লেখায় স্বাগতম। লেখাটিতে আপনি এমন ১০টি ক্রিয়েটিভ টিপস পাবেন যা আপনাকে ব্রুশিয়ার ডিজাইনে ব্রিলিয়ান্ট করে তুলবে। যদি ডিজাইনের ক্ষেত্রে এই টিপসগুলো মেনে চলেন, তবে অবশ্যই আপনি ক্রিয়েটিভ মার্কেটে নিজেকে তুলে ধরতে পারবেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার অনেক উপায় আছে। তার জন্যে প্রয়োজন ক্রিয়েটিভ ডিজাইন আইডিয়া। ডিজাইনে ক্রিয়েটিভিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর সেটা যদি হয় ব্যবসায়িক ডিজাইন, তবে তো কথাই নেই।
একটা ব্যবসায়িক ব্রুশিয়ার একটা কোম্পানীর ইমেজকে রিপ্রেজেন্ট করে। তাই যে কোন ধরণের কোম্পানীর জন্যেই ক্রিয়েটিভ ডিজাইন প্রয়োজন। আর এখানে একজন ডিজাইনার সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে থাকেন।
একজন ডিজাইনার হিসেবে আপনার হয়তো নিজস্ব কিছু টেকনিক রয়েছে। তবে, এখানে দেয়া ১০ টিপস আপনাকে আরো বিচক্ষণ, সৃজনশীল এবং এক্সপার্ট করে তুলবে।
ব্রুশিয়ার ডিজাইন করার দুর্দান্ত টিপস
আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইনার না হয়ে থাকেন এবং কেবল মাত্র কৌতুহল থেকে এই পেজে এসে থাকেন, তবে জেনে নিন যে ১০টি কারণে আপনার গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখা প্রয়োজন। আর যদি আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে থাকেন এবং ব্রুশিয়ার ডিজাইন করার কোন প্রজেক্ট হাতে পেয়ে থাকেন, তবে দুর্দান্ত ১০টি টিপস জেনে নিন।
১. ব্র্যান্ড আইডেনটিটি মাথায় রাখুন
ডিজাইনের শুরুতেই আপনাকে ব্র্যান্ড আইডেনটিটি মাথায় নিয়ে বসতে হবে। আপনি যদি কোন পুরনো কোম্পানীর জন্যে ব্রুশিয়ার ডিজাইনের কাজ শুরু করেন, তবে কোম্পানীর আগের ডিজাইন করা ব্রুশিয়ারগুলো একবার দেখে নিন। একই সাথে, এমন একটা ডিজাইন প্ল্যান দাঁড় করান যেখানে আপনি কোম্পানীর ব্র্যান্ড আইডেনটিটি আরো সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারবে।
আর যদি কোন নতুন কোম্পানীর ব্রুশিয়ার ডিজাইন করেন, তবে এখানে আপনার জন্যে রয়েছে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। কারণ, আপনার ডিজাইনের মাধ্যমে কোম্পানীর একটা ব্র্যান্ড আইডেনটিটি আপনাকেই ক্রিয়েট করতে হবে। এতে যেমন আপনার সৃজণশীলতা প্রকাশ পাবে, তেমনি কোম্পানীর লোকজন আপনার উপর খুশি হবে এবং বাকী কোম্পানীর বাকি সব ডিজাইনের কাজ আপনিই পাবেন।
২. কোম্পানীর প্রয়োজন জেনে নিন
ধরে যাক, আপনি একটা কোম্পানীর জন্যে বিজনেস ব্রুশিয়ার ডিজাইনের কাজ পেয়েছেন। এখন আপনার প্রথম কাজই হচ্ছে কোম্পানীর কাছ থেকে জেনে নেয়া যে, ব্রুশিয়ারটি তাদের কেন প্রয়োজন।
তারা যদি চায় যে এটির মাধ্যমে মানুষকে তাদের কোম্পানীর কার্যক্রম সম্পর্কে একটা ক্লিয়ার ধারণা দেবে, তবে এর ডিজাইন হবে এক রকম। আর যদি তারা ব্রুশিয়ারে মাধ্যমেই তাদের কিছু প্রোডাক্ট সেল করতে চায়, তবে ডিজাইন হবে আরেক রকম।
আবার এমনও হতে পারে যে, কোম্পানীটি কোনও সার্ভিস বিক্রি করছে। সুতরাং, এক্ষেত্রে নিশ্চয়ই ডিফরেন্ট ডিজাইন হবে। আসলে, উদ্দেশ্যের উপর নির্ভর করে কাজের ধরণ। আপনি যদি প্রয়োজনটা জেনে যান, তবে ডিজাইনের ধরণ পেয়ে যাবেন সহজেই।
৩. ব্রুশিয়ার টাইপ ঠিক করুন
নানা টাইপের ব্রুশিয়ার রয়েছে। যেমন, বাই ফোল্ড, ট্রাই ফোল্ড, ফোর ফোল্ড, জেড ফোল্ড, অ্যাকর্ডিয়ন ফোল্ড, সিঙ্গেল গেট ফোল্ড, ডাবল গেট ফোল্ড, ইত্যাদি। কোম্পানীর প্রয়োজন বুঝে নিয়ে ঠিক করুন কী ধরণের ব্রুশিয়ার ডিজাইন করবেন। এটা অনেকটা কোম্পানীর প্রয়োজনীয় তথ্যের উপরও নির্ভর করে। কোম্পানী যদি ব্রুশিয়ারে বেশি তথ্য রাখতে চায়, তবে থ্রি-ফোল্ড কিংবা ফোর ফোল্ড ব্রুশিয়ার করতে পারেন।
৪. হেডলাইনে গুরুত্ব দিন
ব্রুশিয়ারের হেডলাইনকে অবহেলা করবেন না। এটাকে আকর্ষণীয় এবং অর্থপূর্ণ করুন। হেডলাইন যেন এমন হয় যে পাঠক সহজেই বুঝতে পারে ব্রুশিয়ারটির বিষয় কি। যেমন, এটি যদি বিজ্ঞাপন রিলেটেড হয়, তবে হেডলাইনে কোম্পানীর অফারটি হাইলাইট করুন।
৫. সীমিত ফন্ট ব্যবহার করুন
অনেকেই আছেন যারা একই ডিজাইনে অনেক ধরণের ফন্ট ব্যবহার করে থাকেন। ফলে, ডিজাইনটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলে, দেখতে হিজিবিজ লাগে। ব্রুশিয়ার হোক আর যাই হোক, ডিজাইনের ক্ষেত্রে আপনার বেশি ফন্ট ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। জাস্ট হেডিং, সাব-হেডিং আর বডি টেক্সট্, এই তিন জায়গায় ৩ ধরণের ফন্ট ব্যবহার করাই যথেষ্ট্য।
৬. সঠিক কালার নির্বাচন করুন
ডিজাইনে কালার নির্বাচন ক্রিয়েটিভিটির একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। এমনভাবে কালার নির্বাচন করুন যাতে সব ধরণের মানুষের কাছেই সেটি ভাল লাগে। কিছু মানুষ আছে যাদের নির্দিষ্ট কিছু কালারের প্রতি বিরক্তি আছে।
আবার এমনও কিছু মানুষ আছে যারা শুধু কালারের জন্যেই ব্রুশিয়ার হাতে নিয়ে থাকে। সুতরাং, একটি ব্রুশিয়ার ডিজাইনে কালার কম্বিনেশন গুরুত্বপূর্ণ। আবার আপনাকে এদিকেও খেয়াল রাখতে হবে যে ব্রুশিয়ারের কালার যেন কোম্পানীকে রিপ্রেজেন্ট করে। যেমন, কোম্পানীর লোগো কালারের সঙ্গে মিল রেখে আপনি একটা বেসিক কালার প্ল্যান করে নিতে পারেন।
৭. সঠিক ছবি ব্যবহার করুন
ছবি না থাকলে ব্রুশিয়ার আর কিছুতেই ব্রুশিয়ার থাকে না। এটি হয়ে যায় লিফলেট, যদিও লিফলেটেও আজকাল ছবি ব্যবহার করা হয়। সে যাই হোক, আপনি যদি ব্রুশিয়ারে ছবি ব্যবহার না করেন, তবে এটি মানুষকে আকৃষ্ট করতে পারবে না। আবার যদি অপ্রয়োজনী ছবি ব্যবহার করেন, তবে এটি মানুষকে বিরক্ত করবে। কাজেই, সঠিক ছবি ব্যবহার করে ব্রুশিয়ারের সৌন্দর্য্য বাড়াতে চেষ্টা করুন।
৮. সিম্পল কিন্তু সুন্দর ডিজাইনের দিকে মনোযোগ দিন
আপনার ব্রুশিয়ারে যদি অনেক কিছু থাকে, তবে মানুষের চোখের জন্যে সেটা খুবই বিরক্তিকর হবে। সুতরাং, বেশি লেখা নয়, বেশি গ্রাফিক্স নয়, বেশি ইলিমেন্ট নয়; নয় বেশি ফন্ট ও কালার। সবকিছুতেই আপনাকে পরিমিত হতে হবে যাতে ডিজাইনটি দেখতে একই সঙ্গে সিম্পল এবং সুন্দর হয়।
৯. প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যবহার করুন
বেশি সিম্পল করতে গিয়ে আবার প্রয়োজনীয় তথ্য বাদ দিয়ে গেলে চলবে না। ব্রুশিয়ারটি যে ধরণের কোম্পানীর জন্যেই হোক না কেন, তাতে যেন যোগাযোগের পূর্নাঙ্গ তথ্য থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন। যেমন, কোম্পানীর নাম, ওয়েবসাইট, ঠিকানা, ইমেল অ্যাড্রেস এবং ফোন নাম্বার, ইত্যাদি থাকা চাই। এমনকি, সম্ভব হলে কোম্পানীর সোশ্যাল মিডিয়া পেজের ঠিকানাও তুলে দিতে পারেন।
১০. ভাল মানের পেপার ব্যবহার করুন
খুব সুন্দর একটি ব্রুশিয়ার ডিজাইন করলেন যা দেখে নিজেও যেমন তৃপ্তি পেলেন, তেমনি ক্লায়েন্টও খুব খুশি হল। কিন্তু প্রিন্ট বা মুদ্রণ এর সময় এমন একটা পেপার ব্যবহার করলেন যেটাতে আপনার ডিজাইন ঠিক ফুটে উঠলো না; সবকিছুই ব্যর্থ।
কাজেই, ব্রুশিয়ারের জন্যে ভাল মানের পেপার ব্যবহার করতে হবে। নৈলে ভাল ডিজাইনও বাজে লুক নিয়ে প্রিন্ট হয়ে আসবে। পেপার কোয়ালিটির পাশাপাশি পেপারের ওয়েট বা জিএসএমের দিকেও নজর দিতে হবে।
শেষ কথা
একটি আকর্ষণীয় ও সুন্দর ব্রুশিয়ার ডিজাইন করার জন্যে উপরের ১০টি টিপস্ মেনে চলুন। আপনি হয়তো এগুলোর সবটিই আগে থেকে জানতেন। কিন্তু ডিজাইন করার সময় কারোই এগুলোর সবটি মাথায় থাকে না। তাই, যেহেতু সবগুলো বিষয় এক জায়গায় পেলেন, সেহেতু এটিকে সংগ্রহে রাখুন আর প্রয়োজনের সময় ওপেন করে দেখুন।
Md Asif Hd says
আমি সৌদিয়া কাঠের ফার্নিচারে জব করি, আমার কোম্পানীর জন্যে ব্রুশিয়ার লাগবে।