বলা হয়ে থাকে যেদিন থেকে মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখলো, সেদিন থেকেই মানুষের সভ্যতা শুরু হল। এরপর মানব সভ্যতায় যোগ হয়েছে অনেক রহস্যময় আবিস্কার, যা এখনকার মানুষ এখনও সেই আবিস্কারগুলোর কোন রহস্যভেদ করতে পারেনি। কীভাবে আবিস্কার হয়েছিল সেই সব, তা নিয়ে এখনও কৌতুহল জাগে অনেকের কাছেই। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিস্কার এমনই।
তবে, আজ আমরা কথা বলবো এই আধুনিক যুগের কিছু আবিস্কার নিয়ে যা সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীকে অনেকটাই বদলে দিয়েছে। সেই সব আবিস্কারের মাঝে সেরা ১০টি আবিস্কার নিয়ে কথা বলবো, যেসব আবিস্কার না হলে এই আধুনিক সভ্যতাকে আমরা আধুনিক বিজ্ঞানের যুগ বলে অভিহিত করতে পারতাম না।
বিজ্ঞানের ১০টি বিস্ময়কর আবিস্কার যা পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে!
ভবিষ্যতের তাক লাগানো ১০টি বিস্ময়কর প্রযুক্তি সম্পর্কে আপনি হয়তো আগেই জেনেছেন। এবার, জানুন অতীতের বিস্ময়কর ১০টি আবিস্কার।
বিজ্ঞানের ১০টি বিস্ময়কর আবিস্কার যা পৃথিবীকে বদলে দিয়েছে, আর সেগুলো হচ্ছে-
- বিদ্যুৎ
- ব্যাটারি
- কংক্রিট
- উড়োজাহাজ
- বাল্ব বা বাতি
- কম্পিউটার
- মোবাইল ফোন
- প্রিন্টিং প্রেস
- স্টিল বা ইস্পাত
- এক্স-রে মেশিন
১. বিদ্যুৎ
আপনি আপনার ঘরের প্রতিটি ইলেকট্রনিক্স জিনিসের দিকে লক্ষ্য করুন, যেমন আপনার ঘরের টিভি, ডেস্কটপ কম্পিউটার, ফ্যান, বাতি। একবারও কী ভেবে দেখেছেন, আপনার ঘরের এইসব গুরুত্বপূর্ণ ইলেকট্রনিক্স জিনিস কখনই চলতো না যদি আপনার ঘরে ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুৎ না থাকতো।
তাই, বিদ্যুৎ আছে বলেই আমরা আমাদের এসব জিনিস খুব সহজেই চালাতে পারছি। আধুনিক বিজ্ঞানকে তাই ত্বরান্বিত করেছে এই বিদ্যুৎ। ইলেকট্রিসিটি বা বিদ্যুতের প্রথম ব্যবহারিক পদ্ধতি আবিস্কার করেন আলেসান্দ্রো ভোল্টা। ১৮৩১ সালকে চিহ্নিত করা হয় বিদ্যুতের আবির্ভাবের বছর হিসেবে। অন্যদিকে, বিদ্যুতের মৌলিক ধারণা আবিস্কার করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে।
যদিও বিদ্যুতের ধারণা আসে আরও অনেক আগে। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালে, প্রাচীন গ্রিকরা আবিস্কার করেন, যে অ্যাম্বার (Amber) (যা জীবাশ্মযুক্ত গাছের রজন হিসেবে পরিচিত) এর উপর পশম লাগিয়ে ঘষলে তা আকর্ষণ করে। মূলত প্রাচীন গ্রিকরা সে সময় স্থির বিদ্যুৎ আবিস্কার করেন।
১৬০০ সালে ইংরেজ বিজ্ঞানী উইলিয়াম গিলবার্ট তার কিছু গবেষণাপত্রে ল্যাটিন শব্দ ইলেকট্রিকাস (Electricus) নামটি ব্যবহার করেন। ধারণা করা হচ্ছে, এই ‘Electricus’ শব্দ থেকেই আজকের এই ইলেকট্রিসিটি (Electricity) নামটি ব্যবহার হয়ে আসছে।
তবে, অনেকেই বিদ্যুতের আবিস্কারক হিসেবে বেন ফ্রাঙ্কলিনকে (Ben Franklin) মনে করেন। তার কারণ, বেন ফ্রাঙ্কলিন বজ্রপাত যে বিদ্যুৎ এর একটি রূপ, সেই ধারণা আবিস্কার করেন। ১৭৫২ সালে ফ্রাঙ্কলিন এক ঝড়ো আবহাওয়ায় একটি ঘুড়িতে লোহার চাবি লাগিয়ে তা ওড়ানোর চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে বজ্রপাত তার সেই ঘুড়িকে আকর্ষিত করে এবং বেনও কিছুটা বজ্রপাতে আহত হন। তবে, গুরুতর কিছু হয়নি তার।
এরপর বিদ্যুৎ নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা করেন মাইকেল ফ্যারাডে, জর্জ ওহম সহ আরও বেশ কিছু বিজ্ঞানী। তাঁদের এই গবেষণার ফলেই বিদ্যুৎকে আজ বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যায়।
২. ব্যাটারি
ব্যাটারিকে বাংলা পরিভাষায় বলা হয় তড়িৎকোষ বা বৈদ্যুতিক কোষ। আমরা এখন বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকি বিভিন্ন জিনিসপত্রে। এই যেমন- বিভিন্ন টর্চ লাইটে আমরা ব্যাটারি ব্যবহার করে থাকি। এছাড়া বলা যায়, ল্যান্ডফোন বা টেলিফোন বিদ্যুতের সংযোগ ছাড়া চালানো সম্ভব নয়। কিন্তু মোবাইলে আমরা বিদ্যুৎকে কাজে লাগিয়ে মোবাইলের ব্যাটারিকে চার্জ করে সেটি ব্যবহার করতে পারি।
ব্যাটারি কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা আমাদের চারপাশের বিভিন্ন জিনিসের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি। এই যেমন গাড়িতে, বিভিন্ন ধরণের খেলনায়, এমনকি আপনার বাসার টিভির রিমোটেও ব্যাটারির ব্যবহার দেখতে পাই যা বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিস্কার হিসেবে প্রসিদ্ধ।
তবে, এই ব্যাটারির ব্যবহার সম্পর্কে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ২০০০ বছর আগে পারথিয়ান আমলে। পারথিয়ান আমল হচ্ছে মূলত পারস্য উপসাগর অঞ্চলের তথা ইরান, ইরাকসহ বেশ কিছু আরব অঞ্চলের প্রাচীন যুগ। প্রাচীন সময়ে ব্যাটারি তৈরি হত মাটির তৈরি একটি জার বা বড় বোতলে ভিনেগারের সাথে কপার সিলিন্ডারের চারপাশে লোহার রড যুক্ত করে।
প্রথম বৈদ্যতিক ব্যাটারির আবিস্কারক হচ্ছেন ইটালিয়ান পদার্থ ও রসায়নবিদ আলেসান্দ্রো ভোল্টা (Alessandro Volta)। অষ্টাদশ শতকে প্রথম ব্যাটারি আবিস্কারক হিসেবে তিনি সমাদৃত হয়ে আছেন ইতিহাসের পাতায়। বৈদ্যুতিক ব্যাটারির উৎপাদন শুরু হয় ১৮০২ সালে রসায়নবিদ উইলিয়াম ক্রুইকশ্যাঙ্ক (William Cruickshank) এর মাধ্যমে। অন্যদিকে, প্রথম রিচার্জাবল ব্যাটারি আবিস্কার করেন ফরাসি পদার্থবিদ গ্যাস্টন প্লান্তে (Gaston Plante) ১৮৫৯ সালে।
৩. কংক্রিট
আজ আমরা বড় বড় যে-সব দালান দেখতে পাই, এ-সব নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে কংক্রিট। মানুষের তৈরি বানানো এই কংক্রিট কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা হয়তো আর বোঝাতে হবে না। তবে, কংক্রিটের ব্যবহার কয়েক হাজার বছর আগে থেকে চলে আসছে।
ধারণা করা হচ্ছে, খ্রিস্টপূর্ব ৬৫০০ বছর আগে থেকেই কংক্রিটের ব্যবহার হয়ে আসছে। আর খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর আগে মিশরীয়রা প্রথম কংক্রিটের ব্যবহারের মাধ্যমে পিরামিড তৈরি করেছে। সে যাইহোক, কংক্রিট তৈরিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে সিমেন্ট। এই সিমেন্টের ব্যবহার প্রথম শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০ সালে। সিমেন্টের কারণেই কংক্রিট আরও বেশ শক্ত ও স্থায়ীত্বতা পায়।
৪. উড়োজাহাজ
এক সময় এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হলে জাহাজ, উট, ঘোড়া কিংবা গরুর গাড়ি ব্যবহার করা হত। সমুদ্রপথে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে যেতে কয়েক মাস লেগে যেত। আর তাই, এক সময় মানুষ ভাবতো পাখির মত যদি মানুষও আকাশে উড়ে বেড়াতে পারতো।
মানুষের এই আকাশে ওড়ার স্বপ্নটাকেই বাস্তবে রূপ দেওয়ার মূল কারিগর উইলবার রাইট (Willbur Wright) ও অরভিল রাইট (Orville Wright)। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় ১৯০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর প্রথম উড়োজাহাজ বানিয়ে আকাশে সফলভাবে ওড়েন। মাত্র ১২ সেকেন্ডের সেই ফ্লাইটে ২৬০ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করা হয়। রাইট ভ্রাতৃদ্বয় আকাশে বিমান ওড়াতে সফল হলেও এর আগে অনেকেই আকাশে উড়তে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।
বিশ্বের প্রথম বাণিজ্যিক বিমানের যাত্রা শুরু হয় ১৯১৪ সালের ১ জানুয়ারি। প্রথমবার বাণিজ্যিক বিমানের যাত্রার জন্য সময় লেগেছে ২৩ মিনিট। আর সেই ফ্লাইটটি সেইন্ট পিটার্সবার্গ থেকে শুরু করে টাম্পাতে গিয়ে শেষ হয়েছিল। পুরো এই ২৩ মিনিটের যাত্রায় পাড়ি দেওয়া হয়েছিল পানির উপর দিয়ে প্রায় ২১ মাইল পথ। আর উড়ার সময় বিমানটির উচ্চতা ছিল মাটি থেকে মাত্র ১৫ ফুট।
৫. বাল্ব বা বাতি
বাতি ছাড়া আপনার ঘর যেমন অন্ধকারে ডুবে যায়, তেমনি বাতি আবিস্কার না হলে আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিও অন্ধকারেই ডুবে থাকতো। আজ থেকে প্রায় ১৫০ বছর আগে প্রথম ইলেকট্রিক বাতির ধারণা আসে। বাতি আবিস্কারক হিসেবে আমরা থমাস আলভা এডিসনের (Thomas Alva Edison) নাম জানি। তিনি ১৮৭৯ সালে বাতি আবিস্কার করেন। যদিও বাতি আবিস্কারের পেছনে রয়েছে আরও অনেক বিজ্ঞানীর অবদান।
তবে, ইলেকট্রিক বাতি আবিস্কার করেন হামফ্রি ড্যাভি (Humphry Davy)। ১৮০২ সালে ড্যাভি অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর প্রথম ইলেকট্রিক বাতি আবিস্কার করেন যা আজো বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিস্কার এর মধ্যে অন্যতম।
৬. কম্পিউটার
কম্পিউটার এমন একটি যন্ত্র যেটি ছাড়া আজ আমরা কল্পনাও করতে পারি না। বর্তমানে সব ধরণের প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়। গান শোনা, মুভি দেখা থেকে শুরু করে প্রযুক্তির সবকিছুই করা যায় এই কম্পিউটার দিয়ে।
কম্পিউটারের একক কোন আবিস্কারক নেই মূলত। কেননা, কালের পরিক্রমায় কম্পিউটারের আবিস্কারে ভূমিকা রেখেছেন অনেক বিজ্ঞানী। তবুও কম্পিউটারের প্রাথমিক আবিস্কারক হিসেবে মনে করা হয় চার্লস ব্যাবেজকে। চার্লস ব্যাবেজের বেশ কিছু জানা-অজানা তথ্য জেনে নিতে পারেন।
৭. মোবাইল ফোন
টেলিফোনের আধুনিক রূপ মোবাইল ফোন। মোবাইল ফোনের আগে আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেলের আবিস্কৃত টেলিফোনই ছিল দূর-দূরান্তে কথোপকোথনের এক মাত্র আধুনিক মাধ্যম। মজার বিষয় হচ্ছে টেলিফোনের আবিস্কার আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল একটি বিশেষ কারণে নিজের অফিসেই টেলিফোন রাখেননি।
যাইহোক, মোবাইল ফোন আবিস্কার খুব বেশিদিন আগের নয়। টেলিফোন ব্যবহারের যে সমস্ত প্রতিকূলতা রয়েছে সেগুলো সমাধানের চিন্তা-ভাবনা থেকেই মূলত মোবাইল ফোন আবিস্কার হয়েছে। যেমন- টেলিফোনে তার রয়েছে এবং এটি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে বহন করা যায় না। আর এ সমস্যা সমাধানের জন্য মার্টিন কুপার নামের এক আমেরিকান গবেষক মোবাইল ফোন আবিস্কার করেন।
১৯৭৩ সালেই মার্টিন কুপার (Martin Cooper) মোবাইল ফোনে যোগাযোগ ব্যবস্থা রূপায়ন করেন। এ সময় মার্টিন কুপার আমেরিকার বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান মটোরোলা (Motorola)-তে একজন গবেষক এবং কার্যনির্বাহী হিসেবে কাজ করতেন।
মোবাইলের ফোনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে ব্যাটারি। ব্যাটারি নিয়ে উপরে অংশে আলোচনা করা হয়েছে। আজকাল স্মার্টফোনে অনেক বেশি অ্যাপস থাকায় এবং নানাবিদ কাজ মোবাইলের মাধ্যমে করার কারণে ব্যাটারি খরচ হয় বেশি। আর তাই, ব্যাটারির দিক থেকে সেরা ১০টি স্মার্টফোন সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন।
৮. প্রিন্টিং প্রেস
বর্তমান দুনিয়াতে ইন্টারনেট প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহারের ফলে কাগজের ব্যবহার এবং কাগজের সংবাদপত্র কিংবা বইয়ের ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে বলা যায়। কারণ, এখন অফিস আদালতে ইমেইলের মাধ্যমে যে কোন তথ্য আদান-প্রদান করা যায়। তবে, ইন্টারনেটের পূর্বে এই প্রিন্টিং প্রেসই ছিল তথ্য আদান-প্রদান ও বই ও পত্রিকার জন্য সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ হাতিয়ার।
প্রিন্টিং প্রেসের আবিস্কারক হচ্ছেন জার্মানীর জোহানস গুটেনবার্গ (Johannes Gutenberg)। ধারণা করা হয় গুটেনবার্গ ১৪৫০ সালের দিকে প্রথম প্রিন্টিং প্রেসের ব্যবহার শুরু করেন।
৯. স্টিল বা ইস্পাত
বড় বড় অট্টালিকা বা আকাশচুম্বি প্রাসাদ নির্মাণের জন্য স্টিল বা ইস্পাত অপরিহার্য। অনেকেই স্টিলকেই লোহা মনে করেন। অর্থাৎ, সমার্থক শব্দ মনে করেন। তবে, বস্তুত ইস্পাত (স্টিল) বা লোহা (আয়রন) এক জিনিস নয়।
কারণ, লোহা একটি প্রাকৃতিক উপাদান। অর্থাৎ, লোহা একটি খনিজ পদার্থ। অন্য দিকে ইস্পাত বা স্টিল হচ্ছে লোহা ও কার্বনসহ অন্যান্য উপাদান মিশিয়ে তৈরি করা হয় ইস্পাত। আর এই ইস্পাত লোহার তুলনায় বেশ শক্ত বা দৃঢ় হয়। ১৭শ শতাব্দীতে বিভিন্ন উপায়ে ইস্পাত তৈরি করা হলেও এর ব্যবহার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেতে শুরু ১৯ শতকের মাঝামাঝি সময়ে।
১০. এক্স-রে মেশিন
এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মি মেশিন আবিস্কারের পর থেকে চিকিৎসা শাস্ত্রে অনেক উন্নতি সাধিত হয়েছে। আর এটি আবিস্কার করেন উইলিয়াম রন্টজেন। তিনি ১৮৯৫ সালে এটি আবিস্কার করেন। রঞ্জন রশ্মির তরঙ্গ আলোর চেয়ে অনেক কম বলে এই রশ্মি দর্শন অনুভূতি সৃষ্টি করে না। এক্স-রে (X-Ray) রশ্মির আবিস্কারের পেছনে রয়েছে অদ্ভুত এক গল্প।
রঞ্জন বিভিন্ন রশ্মি নিয়ে গবেষণা করতেন। একবার তিনি এমন এক অজানা রশ্মি নিয়ে গবেষণা করছিলেন যে তিনি তার ফলাফল কী হতে পারে তা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন না। অনেক গবেষণার পর দেখতে পেলেন রশ্মিটি অনেক কিছুর ভেতর দিয়ে আলোটি প্রবেশ করতে পারে কিন্তু লোহার মত কঠিন বস্তু ভেদ করে যেতে পারে না। তো তিনি একবার তার স্ত্রীর আনা বার্থার হাতের উপর সেই রশ্মিটি ছাড়লেন। পরক্ষণে তিনি আবিস্কার করলেন, একটি চিত্রের মাঝে তার স্ত্রীর হাতের কংকালের ছবি উঠেছে। এবং আঙ্গুলে থাকা একটি আংটির অস্তিত্বও বোঝা যাচ্ছে।
আর এটা দেখে তিনি চমকে যান। এরপরেই তিনি এটি মানব সেবার জন্য উন্মুক্ত করে দেন। তিনি কোন প্যাটেন্ট গ্রহণ করেননি। রঞ্জনের আবিস্কার করা এই রশ্মিটির সম্পর্কে তিনি জানতেন না। আর তাই, পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় কোন অজানা রাশিকে X অক্ষর দিয়ে প্রকাশ করা হয় বলে তিনি এই রশ্মিটির নাম দেন X-Ray.
প্রিয় হৈচৈ বাংলা পাঠক, আজ এ পর্যন্তই। পরবর্তীতে আপনাদের জন্য আরও কিছু যুগান্তকারী আবিস্কার নিয়ে কথা হবে। সবাই ভাল থাকবেন এবং হৈচৈ বাংলার আর্টিকল নিয়মিত পড়ার জন্য অনুরোধ রইল।
Leave a Reply