গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পাওয়ার জন্য আপনাকে খুব বেশি দৌড়-ঝাঁপ দিতে হবে না, সাহায্য সহযোগীতার জন্য কারো পিচে তেল মারতে হবে না। আপনি নিজে নিজেই প্রস্তুতি নিতে পারবেন এবং নিজে নিজেই সঠিক পন্থায় আবেদন করে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পেয়ে যাবেন।
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পাওয়াকে যদিও সোনার হরিণ পাওয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়, আপনি যদি ঠিক মত এই টিপস্ গুলো মেনে আবেদন করেন, আমরা ১০০% নিশ্চয়তা দিয়ে বলতে পারি – আপনি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট পাবেন।
আরো পড়ুন-
- গুগল অ্যাডসেন্স থেকে প্রতি মাসে তার আয় ৪ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা
- আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা
- ইউটিউব থেকে আয় তার মাসে ৯ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা
গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন
গত পর্বে আমরা ৪ নং টিপস্ এ ছিলাম। কিন্তু সেটা পুরোপুরি শেষ হয়নি। তাই ৪নং টিপস্ এর জরুরী এবং দরকারি পেজগুলো নিয়ে আরেকটু ক্লিয়ার হওয়া দরকার।
প্রাইভেসি পলিসি/ টার্মস্ এন্ড কন্ডিশন: এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পেজ যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইটি ভিজিট করার জন্য নিয়ম কানুন ঠিক করে দেবেন। মানুষ কিভাবে আপনার সাইটের কন্টেন্টগুলো ইউজ করতে পারবে বা পারবে না, তা তাদের জানিয়ে দেবেন। আপনি কী ধরণের কুকিজ ব্যবহার করছেন, সেটাও জানাতে হবে এ পেজের মাধ্যমে। উল্লেখ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্দেশ অনুযায়ী সব ওয়েবসাইটের জন্যই কুকি নোটিস দেয়া গুগল বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া, আপনার সাইটের কন্টেন্টগুলোর কপিরাইট পলিসি এবং আপনার কন্টেন্টে ইউজারদের জন্য কমেন্ট পলিসিও আপনাকে সুন্দরভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে এ পেজে।
কন্টাক্ট পেজ: আপনাকে অবশ্যই আপনার পাঠকদের সঙ্গে যোগাযোগের একটি সেতু রাখতে হবে। কেউ যদি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায় তাহলে এ পেজটি হবে সেই সেতু যার মাধ্যমে যে কেউ খুব সহজেই আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। এ পেজটি সত্যিকার অর্থেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি তাদের পণ্যগুলো আপনার সাইটের মাধ্যমে প্রমোট করতে চায় কিংবা কেউ যদি তার কোন সার্ভিসের জন্য আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে চায়, তাহলে যাতে আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে।
অ্যাবাউট পেজ: আগেই বলেছি যে, গুগল তার ইউজারদের এক্সপেরিয়েন্সের দিকে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী। অ্যাবাউট পেজ ইউজার এক্সপেরিয়েন্সের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অনেক লোকই আপনার ব্লগে এসে আপনার সম্পর্কে জানার জন্য কৌতুহলী হয়ে উঠতে পারে। সুতরাং, অ্যাবাউট পেজের মাধ্যমে আপনার সম্পর্কে ইউজারদের জানান। তাছাড়া, গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন দেয়ার আগে অবশ্যই দেখবে আপনি কে, আপনি কি করেন ইত্যাদি।
৫. কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরি করুন
আপনি আপনার সাইটে যে সব লেখা, আর্টিকেল, ছবি, ভিডিও কিংবা অন্য যা কিছু পাবলিশ করবেন সেগুলোর সবই কন্টেন্ট। আর অ্যাডসেন্সের জগতে একটা কথা ব্যাপকভাবে চালু রয়েছে যা হল – কন্টেন্ট ইজ দ্যা কিং। আসলে একটা ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য কোয়ালিটি কন্টেন্টই সবকিছু। আপনি যদি মৌলিক এবং কোয়ালিটি কন্টেন্ট না দিতে পারেন, তাহলে অ্যাডসেন্স অ্যাকউন্টের কথা ভুলেও চিন্তা করবেন না।
আপনার প্রকাশিত কন্টেন্ট অবশ্যই আপনার পাঠকদের জন্য গুরুত্ব বহন করতে হবে। নৈলে তারা কেন আপনার সাইট ভিজিট করবে? ওয়েবসাইট বা ব্লগ মালিকদের জন্য গুগলের একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা রয়েছে, সেটা হল- Give people a reason to visit you. এটা সত্যি যে, গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পাওয়ার জন্য আপনার ব্লগের পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকা বাঞ্চনীয় নয়। কিন্তু অ্যাডসেন্স থেকে ইনকামের জন্য অবশ্যই আপনার পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিজিটর থাকতে হবে, নৈলে আপনি ইনকাম করতে পারবেন না।
অরিজিনাল এবং কোয়ালিটি ছাড়া আপনার কন্টেন্টগুলো সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাবে না আর সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক না পেলে আপনার সাইটে ভিজিটরও আসবে না। ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের সাইটগুলো থেকে আপনি যদি কিছু ভিজিটর পেয়ে থাকেন, সেগুলো গুগলের কাছে মূল্যহীন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিজিটর হচ্ছে অর্গানিক ভিজিটর যারা সার্চ ইঞ্জিন হয়ে আপনার সাইটে আসবে। আপনার সাইটে যদি অরিজিনাল কন্টেন্ট না থাকে, তবে অর্গানিক ভিজিটর আশা করাই বৃথা এবং অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টও স্বপ্নই থেকে যাবে। কোয়ালিটি কন্টেন্ট আপনাকে যা যা দেবে-
- সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক
- প্রচুর অর্গানিক ভিজিটর
- অনেক রিটার্নিং ভিজিটর
- গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টের নিশ্চয়তা
- এবং প্রচুর টাকা
এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, অনেক ব্লগারই মাত্র ২০-৩০টা আর্টকেল দিয়ে গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পেয়েছেন শুধু মাত্র তাদের আর্টিকেলগুলোর অরিজিনালিটি আর কোয়ালিটির জন্য। সুতরাং আপনাকে অবশ্যই ফোকাস দিতে হবে আপনার আর্টিকেলের দিকে আর আর্টিকেলগুলো হওয়া উচিৎ তথ্যবহুল, মোটামুটি ১৫০০ থেকে ২০০০ শব্দের মধ্যে।
আপনি যদি ডুপ্লিকেট বা কপি পেস্ট কন্টেন্ট দিয়ে সাইট ভরিয়ে রেখে অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পেতে চান, তবে সেটা আজই ভুলে যান। প্রতিদিন গুগল হাজার হাজার আবেদন নাকচ করে দেয় ডুপ্লিকেট আর লো কোয়ালিটি কন্টেন্টের জন্য। এছাড়াও, আপনাকে অবশ্যই হ্যাকিং, ক্র্যাকিং, ক্যাসিনো, গ্যাম্বলিং, অ্যাডাল্ট, অ্যালকোহল এবং কপি রাইট ভায়োলোটেড কন্টেন্ট পরিত্যাগ করতে হবে যদি অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্ট অনুমোদন পেতে চান।
১ম পর্ব এখানে —————————— ২য় পর্ব এখানে —————————— শেষ পর্ব এখানে।
Gram Bangla24 says
আসলে গুগল থেকে আয় করা খুব সহজ নয়। তবে যিনি কোয়ালিটি কন্টেন্ট তৈরী করে পাঠক পাবেন – এক্ষেত্রে তিনিই সফল হবেন।
Antor says
ঠিকই বলেছেন, কোয়ালিটি কন্টেন্ট ছাড়া আয় করা সহজ নয়। আরেকটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে ডুপ্লিকেট কন্টেন্ট। আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে, কোথাও একটা লেখা পোস্ট হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা অসংখ্য সাইটে কপি-পেস্ট হয়ে যায়। যারা এমনটি করে তারা কোনদিনই নিজেদের সাইট তুলতে পারবে না, ইনকাম তো বহু দূরের ব্যাপার। সুতরাং, কারো কন্টেন্ট কপি করা যাবে না, সম্পূর্ণ ইউনিক কন্টেন্ট দিয়ে সাইট সাজাতে হবে। তাহলেই একদিন ইনকাম আসবে, আশানুরূপভাবে।
Tareq Chy says
ব্লগে কী ভিজিটরদের ইন্টারেস্ট অনুযায়ী এড আসে নাকী ব্লগের ধরণ অনুযায়ী এড আসে?
টি আই অন্তর says
ব্লগে অ্যাড আসে যে-সব কিছু বিবেচনায়-
ক. ভিজিটরের ইন্টারেস্ট, ব্রাউজিং হিস্ট্রি যা গুগল কুকিজের মাধ্যমে সংগ্রহ করে থাকে।
খ. ব্লগের ধরণ, বিশেষ করে কি-ওয়ার্ডের ধরণ।
গ. অ্যাডভার্টাইজারের সিলেক্ট করা কি-ওয়ার্ডের ধরণ।