ছোট ব্যবসা করে কিভাবে ধনী হওয়া যায় তা কে না জানতে চায়? মানুষ যে-সব কারণে ব্যবসা করে, তার মাঝে অন্যতম হল ধনী হওয়া। অনেক পাঠক আছেন যাঁরা ছোট ব্যবসা করে কিভাবে ধনী হওয়া যায় তা জানতে চান। কোন ব্যবসা শুরু করতে একান্ত চলমান ব্যক্তি জীবন ধারা পরিবর্তণ করতে হবে কিনা বা ধনী হতে কি দরকার হয়- এমন সব নানা প্রশ্ন তাঁদের মনে ঘুরপাক খায়।
আসলে ধনী হতে তেমন অসাধারণ মেধা বা অতি কর্মব্যস্ততার দরকার হয় না। দরকার হয় না বাবার রেখে যাওয়া কোনও বিশেষ ব্যবসা বা সম্পত্তির। এমনকি, প্রয়োজন নেই কোনও ইউনিক কোয়ালিটির। বরং, ধনী হতে হলে যুবক বয়সেই ৭টি কাজ করতে হয় যা ধনী হওয়ার পথ সুগম করে তোলে।
বড় বা ধনী হতে বড় ব্যাবসা করতে হবে এমন কোন কথা নেই। অল্প টাকায় দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া বিরক্তিকর লাগলেও ছোট উদ্যোগে শৃংখলা ধরে রাখা এবং বুদ্ধির সাথে টাকা পরিচালনা করতে হয়। অমায়িক ব্যক্তি আচরণ এবং ব্যবসা-কারবার ও ব্যক্তি জীবনে টাকার হিসেবী ব্যবহার একজন লোককে অর্থনৈতিকভাবে উপরে নিয়ে যাবেই।
পৃথিবীর সকল ছোট ব্যবসা থেকেই অসংখ্য লোক সফল হয়ে ধনী হয়েছেন। সুতরাং ছোট ব্যবসাকে তুচ্ছ ভাবা একেবারেই ঠিক না। আত্মবিশ্বাসের সাথে অল্প পুঁজি বা বিনা পুঁজির ব্যবসা করলে লোকসানের ঝুঁকি অল্প বা নেই বলা চলে। কারণ, আপনি তো এখানে খুব সামান্য পুঁজি বা পুঁজিহীন ব্যবসা করবেন।
ভাবছেন, এখানে কিভাবে ধনী হওয়া যায়? আপনি অকারণে ভাবছেন। কারণ, গরীব থেকে মানুষ ধনীই হয়, গরীব তো আর গরীব হয় না। আর ধনী থেকে মানুষের গরীব হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা আরও ধনী হওয়ার সুযোগ থাকে। যেমন, দিনের পরে রাত আসে, আর রাতের পরে দিন আসে। তাই, আপনার ধনী হওয়ার সুযোগই রয়েছে।
কিভাবে ধনী হওয়া যায়
আপনি নিজেই মালিক এবং নিজেই কর্মচারি
ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে আপনি নিজেই মালিক এবং নিজেই কর্মচারি। ফলে, আপনি এক ঢিলে দুই পাখি মারতে পারবেন। বাড়তি সুবিধা কর্মচারিকে বেতন দিতে হয় না। আবার, আপনি নিজেই কর্মচারি হওয়াতে ছোট ব্যবসা থেকে কর্মচারির বেতন নিজেই তুলে নিতে পারবেন।
অন্যদিকে একটু ভেবে দেখুন, আপনার ছোট ব্যবসা থেকে যে লাভ বা মুনাফা হয়, তার ভাগ অন্য পার্টনারকেও দিতে হয় না। সমুদয় লাভের একমাত্র মালিক আপনি নিজেই। তারপরও ভাবছেন ছোট ব্যবসা করে কিভাবে ধনী হওয়া যায়? বেশি না ভেবে আপনার অবস্থা অনুযায়ী যে কোনও ব্যবসা শুরু করে দিন।
তবে, শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই ভাল করে বাছাই করে নিতে হবে ব্যবসার ধরণ বা প্রকৃতি। কারণ, সঠিক ব্যবসা ধরতে না পারলে সেটা দিয়ে আপনি বড় তো হতে পারবেনই না, উপরন্তু ফতুর হয়ে যেতে পারেন। তবে, আপনি জেনে আনন্দিত হবেন যে এমন ৫টি ব্যবসা আছে যেগুলো কখনো ফ্লপ খাবে না। আপনার যদি মোটামুটি মানের পুঁজি থাকে, তবে এখান থেকে যে কোনও একটি ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
জিরো থেকে হিরো
ভাবছেন,” আমি ছিন্নমূল মানুষ, আমার মাথা গোঁজার ব্যবস্থা নেই। আমাকে দিয়ে কিছুই হবে না।“ একটি ইংরেজি প্রবাদ আছেঃ “ A drowning man will clutch at a straw.” অর্থাৎ একজন ডুবন্ত লোক খড়কুঁটো আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টা করে।
পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ আছে যারা জীবনে খড়কুঁটো আঁকড়ে ধরারও সুযোগ পাননি। অথচ তারা শুন্য থেকে অগাধ সম্পদশালী হয়েছেন। “ম্যাক্সিম” নামক ম্যাগাজিনের মালিক মিস্টার ডেনিস শুন্য থেকে জীবন চলা শুরু করেন। বর্তমানে তিনি প্রায় ৫০টি ম্যাগাজিন বা পত্রিকার মালিক এবং তাঁর সম্পদের পরিমাণ প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা।
মিস্টার ডেনিস মনে করেন, অনভিজ্ঞ, সহায়সম্বলহীন এবং গরিব লোকদেরই ধনী হয়ে ওপরে ওঠার সুযোগ রয়েছে। নিজের ওপর ভরসা রাখুন, সঠিক সিদ্ধান্ত নিন এবং চেষ্টা করুন। সফলতা আপনার হবে। তারপরও ভাবছেন কিভাবে ধনী হওয়া যায়?
কি ধরণের ব্যবসা করবেন?
করতে পারেন যে কোন ধরণের ব্যবসা যাতে পুঁজি লাগে কম, আবার লাভও হয় বেশি। এ-রকম ব্যবসা আইডিয়ার অভাব নেই। আমি নিশ্চিত আপনার মাথাতেই অনেক বিজনেস আইডিয়া রয়েছে যেগুলোকে আপনি হয়তো গুরুত্ব দিচ্ছেন না। না, ভাই; মাথা থেকে সব নামান!
মানে আপনার মাথায় ছোট-বড় যত বিজনেস আইডিয়া আছে সব একটা কাগজে লিখে ফেলুন। এরপর সেগুলোকে শর্ট-আউট করুন। অর্থাৎ, কিছু কিছু আইডিয়া বাদ দিয়ে দিন। বিশেষ করে যেগুলোতে তুলনামূলকভাবে পুঁজি বেশি লাগে, আবার লোকজনও প্রয়োজন। এমন আইডিয়াগুলোই রাখুন যেগুলো আপনি নিজেই শুরু করতে পারবেন এবং শুরুর দিকে নিজে নিজেই চালিয়ে নিতে পারবেন।
এছাড়াও, এই ২০টি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া থেকে যে কোনটি বাছাই করে নিতে পারেন, যদি আপনি অনলাইনে ব্যবসা করতে চান। এছাড়া, আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে থাকেন এবং বাসায় বসে অনলাইনে ব্যবসা করতে চান, তবে মেয়েদের জন্যে এই ৩টি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া থেকে যে কোনটি বাছাই করে নিতে পারেন।
ব্যবসা ছোট হলেও একটানা লেগে থাকুন
ছোট ব্যবসা শুরু করার পর আপনি নিজেকে খুঁজে পাবেন জীবন যুদ্ধের প্রতিযোগিতার মধ্যে। সেই প্রতিযোগিতায় আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঝে থাকবে অনেক ধনী ও বড় ব্যবসায়ী। এদের পাশে আপনি নিজেকে অসহায় মনে করতে পারেন।
কিন্তু আপনার কাজ হলো মনকে শক্ত করা। আসল মৃত্যুর আগে নিজেকে মেরে ফেলবেন না। মনে রাখবেন, আপনার হারানোর কিছু নেই। বাংলা একটি গল্প আছে- “ খরগোশ ও কচ্ছপের দৌঁড়ের পাল্লা”- সেখানে কিন্তু কচ্ছপই জয়লাভ করেছিলো। দ্রুতগামী কচ্ছপ দৌঁড়ের পাল্লায় পরাজিত হয়েছিল।
ভাবছেন, এ তো শুধু গল্প! আপনি যদি ছোট ব্যবসা না করে আপনার অসহায় অবস্থার কথা ভেবে ভেবেই জীবন পার করে দেন এবং এক সময় স্বাভাবিক নিয়মেই আপনার মৃত্যু হয় আর আপনি পৃথিবী থেকে চির বিদায় নেন, তাহলেও কিন্তু আপনি এক প্রকার পরাজয়ের মৃত্যুবরণ করেন। অর্থাৎ, জীবন যুদ্ধে পরাজিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
সুতরাং প্রতিযোগিতা না করে পরাজিত হওয়ার চাইতে ছোট ব্যবসা দ্বারা প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাওয়া বেশি সম্মানজনক। আপনি নানা সমস্যার মাঝ দিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ধৈর্য্য ধরে সততার সাথে সাধনা চালিয়ে যান। আপনার কর্মই আপনাকে আপনার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে এবং অপমানজনক মৃত্যুবরণ থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
এখন আপনার যা করতে ইচ্ছা হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন
আপনি মনে হয় এখনও ভাবছেন, কিভাবে ধনী হওয়া যায়? আপনার যে ব্যবসা করতে ইচ্ছে করছে, সে বিষয়ে সজাগ ও সতর্ক থাকুন। আপনার সুচিন্তিত কর্মপন্থা, সততা, একাগ্রতা, নিষ্ঠা ইত্যাদি গুণ থাকলে ভাগ্য আপনার সহায় হবে। কারণ, সকল ধর্মে কর্মের ন্যায্য ফলের নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
তাই, সব সময় ভাববেন যে আপনার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে, খারাপ কিছু নয়। খারাপ ফলের টেনশনে জীবনকে কষ্টে ফেলে দেওয়ার মতো বোকামি আমাদের না করাই ভালো। তাতে আমরা স্বস্তিতে থাকতে পারবো। সব সময় ভাবুন ভবিষ্যতে আমার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। আমার বর্তমান দুর্দশা কেটে যাবে এবং ভালো ফল আমি অবশ্যই পাবো। এ বিষয়ে আরও অনেক কিছু বলার আছে। অন্য কোনো দিন নিশ্চয় আবার এ বিষয়ে বলার ইচ্ছা রইলো।
কিভাবে ধনী হওয়া যায় তা নিয়ে বেশি না ভেবে একবার আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আপনার মতো করে উপযোগি ব্যাবসা শুরু করে দিন। কিভাবে ধনী হওয়া যায় তা বেশির ভাগই আপনার কর্মের উপর নির্ভর করে, ভাগ্যের উপর সামান্যই। তাই সততার সাথে কর্মে ডুবে থাকুন। এই আর্টিলটির বিষয়ে এই পেজের ইনবক্সে আপনার মতামত জানাতে পারেন। ইচ্ছা করলে ফেইসবুক এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ের করতে পারেন যদি মনে করেন মানুষ এতে উপকৃত হবে।
এম. এম. নবী says
অ্যাডমিন স্যার,
সালাম ও শুভেচ্ছা। আসলে ধন্যবাদ আপনাকেও কারণ লেখাটি প্রকাশে আপনার অনেক মেহেরবানি।