ঈর্ষাপরায়নতা মানুষের একটি শক্তিশালী আবেগ যাকে ব্যবহার করে খুব সহজেই প্রিয় মানুষটিকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করা সম্ভব। এর যথাযথ ব্যবহার করার ফলে একটি ভেঙ্গে যেতে বসা সম্পর্ককেও আবার নতুন ভাবে শুরু করা যায়। সম্পর্কের মধ্যকার একঘেয়েমী ভাব দুর করে একে অন্যের সাথে একটু দুষ্টুমি করার জন্যেও এর তুলনা নেই।
আপনার যদি মনে হয়ে থাকে যে আপনার গার্লফ্রেন্ড আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণ গুরুত্ব দিচ্ছে না, তাহলে আপনিও কিছু পদ্ধতি অনুসরনের মাধ্যমে তাকে কিছুটা ঈর্ষাপরায়ন করে তুলতে পারেন। আর তাকে বোঝাতে পারেন যে আপনারা দুজন একে অপরের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
তবুও এধরনের কাজ করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং লক্ষ্য রাখতে হবে যে তা যেন কখনোই মাত্রাতিরিক্ত না হয়। কারণ আপনার গার্লফ্রেন্ডকে ঈর্ষাপরায়ন করে তোলার সাথে সাথে আপনাকে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, তার নিকট আপনার অবস্থান কোথায় এবং সেটি যাতে কোনভাবে নষ্ট না হয়, সেদিক ভেবে চিন্তেই সামনে অগ্রসর হতে হবে।
তাকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিন:
আপনার যদি কোন মেয়েকে সত্যিই ঈর্ষাপরায়ন করে তুলতে হয়, তাহলে অবশ্যই প্রথমেই আপনাকে তার প্রতি যথেষ্ট আগ্রহ দেখাতে হবে। কারণ, ছেলেরা যেমন খুব সহজেই কোন মেয়েকে লক্ষ্য করে বা তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে, মেয়েদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক তার উল্টোটা। খুব সহজে কোন মেয়ে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হবে, এটা যেমন ভাবা ভুল, তেমনি যতক্ষণ না সে আপনার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে, ততক্ষণ আপনি যাই করেন না কেন তাতে সে ঈর্ষাপরায়ন হবে না।
একারণে প্রথমেই মেয়েটির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন। তার প্রতিটি কার্যকলাপ এবং কর্মকান্ডে নিজের আগ্রহ দেখাতে শুরু করুন। তারপর ধীরে ধীরে সেটা কমাতে শুরু করুন, দেখবেন একটা সময় ঠিকই মেয়েটি ঈর্ষাপরায়ন হয়ে উঠবে। এ পদ্ধতিটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর. যদি মেয়েটি আপনার অপরিচিত কেউ হয়ে থাকে। আর যদি সেই মেয়েটি আপনার প্রিয় মানুষটি হয়ে থাকে, তাহলে প্রথম ধাপটি এড়িয়ে যান। দ্বিতীয় ধাপ অনুসরন করুন অর্থাৎ তাকে কম গুরুত্ব দেয়া শুরু করুন।
অন্য মেয়েদের প্রশংসা করুন :
ভালো কোন কিছুর প্রশংসা করা দোষের কিছু নয়। কিন্তু মেয়েদের স্বভাবজাত প্রবৃত্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ এটিই যে তারা প্রিয় মানুষটির মুখ থেকে নিজের ব্যতীত অন্য কারো প্রশংসা সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে না। এর কারণ এটি নয় যে. তারা নিজেদের সম্পর্কে অহংকার করে বা অন্যদেরকে ছোট করে দেখে। এর কারণ হলো ছেলেদের এধরনের আচরণকে ফ্ল্যার্টিং এর অংশ হিসেবে দেখে।
তাই মেয়েদের এই দুর্বলতাটিকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডের মনোযোগ নিজের প্রতি আকৃষ্ট করতেই পারেন। তবে জিনিসটাকে অবশ্যই এমন পর্যায়ে রাখবেন, যেন সেটি ঈর্ষা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে। আপনার কাজটির দ্বারা আপনার গার্লফ্রেন্ড যেন কোনভাবেই মনে চরমভাবে দুঃখ না পায়, সেদিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখুন।
ফোন এবং ম্যাসেজ এর রিপ্লাই দেওয়া থেকে বিরত থাকুন:
মেয়েরা প্রিয় মানুষটির খোঁজ খবর নেওয়া এবং তাদের যত্ন নিতে ভালোবাসে। সম্পর্ক ভালো থাকুক আর খারাপ থাকুক, তারা এটিকে একটি রুটিনের সমপর্যায়ে নিয়ে যায়। ফলে, আপনার যদি মনেও হয় যে, সে আপনাকে আগের মত গুরুত্ব দিচ্ছে না, তারপরেও লক্ষ্য করলে দেখবেন আপনার খাওয়া, বাসায় ফেরা ইত্যাদি কিছু বিষয়ের দিকে সে অনবরত দৃষ্টি রেখেই চলেছে।
এখানে আপনি চাইলে তার ফোন কল এবং ম্যাসেজের উত্তর না দিয়ে তাকে ঈর্ষাপরায়ন করে তুলতে পারেন।
আপনার ফোনকে ব্যবহার করুন:
আপনি যদি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে আপনার জীবনে অন্য কোন মেয়ের উপস্থিতির ধারণার মাধ্যমে ঈর্ষাপরায়ন করে তুলতে চান, তাহলে এক্ষেত্রে আপনার হাতের ফোনটি হতে পারে আপনার জন্য সবচেয়ে আদর্শ হাতিয়ার। দীর্ঘ সময় ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকা, কিছু সময় পর পর সেটির নোটিফিকেশন দেখা বা ফোনের উত্তর করা যে কোন মেয়েকে ঈর্ষাপরায়ন করে তুলতে সক্ষম।
ফোনর ব্যবহারের সময় একটু পর পর এমন একটু ভাব করে হাসুন, যেন কোন মেয়ে আপনাকে খুব মজার কোন ম্যাসেজ দিয়েছে। ফোনটি বেজে ওঠা মাত্রই রিসিভ করার চেষ্টা করুন এবং বলুন “কেমন আছো তুমি? আমি তোমাকে কিছুক্ষণ পর ফোন করছি।”
তারপর আপনার গার্লফ্রেন্ড থেকে একটু দুরে যেয়ে আবার ফোন করে কিছুক্ষণ কথা বলুন। তবে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন এবং যার সাথে কথা বলছেন, তাকে এমন কোন নামে সম্বোধন করবেন না, যাতে মনে হয় যে আপনি ওই মেয়েটির সাথে কোন সম্পর্কে জড়িয়ে আছেন। এমনভাবে কথা বলুন যাতে বোঝা যায় যে মেয়েটি আপনার প্রতি আগ্রহী।
অন্যান্য মেয়েদের কথার গুরুত্ব দিন:
মেয়েরা সবসময় চায় তারা যাকে পছন্দ করে, সে যেন তার কথার মূল্যায়ন করে এবং সেভাবে চলাফেরা করে। এতে মেয়েরা নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণ একজন মানুষ হিসাবে ভাবতে শুরু করে। পক্ষান্তরে আপনি যদি এমন কোন কাজ করেন যেটা হয়তো ভালো কোন কাজ কিন্তু কাজটি করার সময় আপনি যদি কাজটির জন্য অন্য কারো প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন, তখন সেটি একটি মেয়ের জন্য অবশ্যই ঈর্ষাপরায়নতা সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
তাই এভাবে কাউকে ঈর্ষাপরায়ন করার জন্য এমন কিছু কাজ করুন, যা খুব সহজেই মেয়েটির দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম। সেই সাথে, কাজটি শেষ করে অন্য কোন মেয়েকে সেটির জন্য ধন্যবাদ দিন। নিশ্চিতভাবে এতে আপনার মেয়ে বন্ধুটি ঈর্ষাপরায়ন হয়ে উঠবে এবং আপনার প্রতি আরো বেশি বেশি তার অধিকার প্রয়োগ করার চেষ্টা করতে থাকবে।
একটি মেয়ে সবচেয়ে বেশি আপনার কাছ থেকে যে জিনিসটি আশা করে, তা হচ্ছে তার প্রতি আপনার আগ্রহ এবং একাগ্রতা। যদি আপনি জানতে চান যে, শুধুমাত্র কোন জিনিসকে সরিয়ে নিলে আপনার গার্লফ্রেন্ড ঈর্ষাপরায়ন হতে শুরু করবে, তার উত্তরটিও হচ্ছে আপনার আগ্রহ এবং একাগ্রতা।
মেয়েরা সবসময় কাছের মানুষটিক কাছে নিজেকে বিশেষ একজন হিসাবে দেখতে চায় এবং সেই অনুভুতি পাওয়ার জন্য তারা আকুল হয়ে থাকে। যদি তারা কোনভাবে এটি অনুধাবন করতে পারে যে, আপনার আগ্রহ আর তার দিকে নেই, তাহলে অবশ্যই সেটি পুনরায় ফেরত পাওয়ার জন্য সে মরিয়া হয়ে উঠবে।
সত্যি কথা বলতে মানুষ হিসাবে আমাদের মধ্যে কিছু সহজাত প্রবৃত্তি রয়েছে যার মধ্যে প্রতিদ্বন্দিতা মূলক মনোভাব একটি। যদি কাউকে আমাদের জন্য প্রতিযোগি বলে মনে হয় এবং তার দ্বারা এমন কোন কিছু হারানোর সম্ভবনা দেখা দেয়, যা আমরা ভালোবাসি, তাহলে কোন কিছু না ভেবেই আমরা প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য প্রাণপন চেষ্টা করতে থাকি। আর একারণেই মেয়েদের ঈর্ষাপরায়নতা একটি চমৎকার উপায় হতে পারে, তাদের কমতে থাকা আন্তরিকতাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য।
Leave a Reply