যে কোন সাইটের এসইও’র জন্য ব্যাকলিংক যে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবে ব্যাক লিংক কত প্রকার এটা নিয়ে কিছুটা বিতর্ক রয়েছে। গুগল কখনোই তাদের সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং ফ্যাক্টরগুলো প্রকাশ করে না। তবে বিভিন্ন এসইও সংক্রান্ত জরিপ থেকে এটা নিশ্চিত হওয়া যায় যে, সার্চ ইঞ্জিন র্যাংকিং ফ্যাক্টরগুলির ক্ষেত্রে সর্ব প্রথমে যে ৩টি বিষয় গুরুত্ব লাভ করে ব্যাকলিংক তাদের মধ্যে একটি।
ওয়েবমাস্টার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটর, কন্টেন্ট মার্কেটর এবং এসইও এক্সপার্টরা ব্যাকলিংক এর প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে খুব ভালোভাবে অবগত। কিন্তু কোন ধরনের ইনকামিং লিংক তাদের সাইটের জন্য বেশি উপযোগী এটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই দ্বিমত পোষণ করতে দেখা যায়। আর এ কারণেই ব্যাকলিংক এর প্রকারভেদ এবং কোনটির উপযোগীতা কতটুকু তা জানা আবশ্যক।
ব্যাকলিংক কত প্রকার
ব্যাকলিংক এবং ভালো ব্যাকলিংক এর পার্থক্য বোঝার আগে কখনোই কোন ওয়েবসাইটকে চাহিদা অনুযায়ী র্যাংক করানো সম্ভব নয়। এর জন্য ব্যাকলিংক কি এবং কিভাবে কাজ করে তা সবার আগে জানা প্রয়োজন।
বিশেষ করে আপনি যখন লিংক বিল্ডিং স্ট্রেটেজি তৈরী করবেন, তখন আপনাকে ঠিক কোন কোন ধরনের লিংকগুলিকে এড়িয়ে চলতে হবে, সে ব্যাপারে আপনাকে ১০০ ভাগ নিশ্চিত হতে হবে।
ব্যাকলিংক ক্যাটাগরি
ব্যাকলিংকের প্রকারভেদ সম্পর্কে বিশদ আলোচনার আগে আমি আপনাদের এটির ক্যাটাগরী সম্পর্কে কিছু ধারণা দিতে চাই। আপনি যখনই আপনার ওয়েবসাইটের জন্য লিংক বিল্ডিং করার চিন্তা করবেন, তখন অবশ্যই আপনাকে টার্গেটকৃত সাইটগুলিকে এই ক্যাটাগরীগুলিতে বিভক্ত করে নিতে হবে। আর তাহলেই আপনি সহজে বুঝতে পারবেন যে, এর মধ্যে কোনটি আপনার প্রয়োজনীয় আর কোনটি অপ্রয়োজনীয়।
ক্যাটাগরী ভেদে ব্যাকলিংক ৩ প্রকারের হয়ে থাকে-
- টায়ার-১: এগুলি হচ্ছে সেই ধরনের লিংকগুলি যা আপনার ওয়েবসাইটের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী। সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাওয়ার ক্ষেত্রে এ ধরনের লিংকগুলিই আপনার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
- টায়ার-২: টায়ার-২ ব্যাকলিংকগুলি হচ্ছে মধ্যম সারির লিংক। সাইট র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে এ ধরনের লিংকগুলিকে আপনি যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। কারণ এরা আপনার জন্য ভালো বা খারাপ কোনটাই না। এ ধরনের প্রয়োজনীয় লিংক আপনার সাইটের জন্য আবর্জনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
- টায়ার-৩: এগুলি নিশ্চিতরুপে খারাপ লিংক যা আপনার ওয়েবসাইট র্যাংকিংয়ে সাহায্য তো করবেই না বরং আপনার সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে পেনাল্টি খাওয়ানোসহ ব্লাকলিস্টেড পর্যন্ত করে দিতে পারে।
উপরের ক্যাটাগরীগুলি দেখে সহজেই বোঝা যায় যে, এসইও’তে সব সময় সাইটের জন্য টায়ার-১ লিংক বিল্ড করার চেষ্টা করতে হবে। টায়ার-২ কে এড়িয়ে চলতে হবে। আর টায়ার-৩ এর কোন ব্যাংকলিংক যেন সাইট না পায় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এবার আসি টায়ার-১ এর লিংকগুলির কথায়। টায়ার-১ লিংকগুলি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে যা একেকটি ওয়েবসাইটের জন্য একেক ধরনের উপযোগিতা বহন করে।
এডিটোরিয়াল লিংক:
অন্য কোন সাইট যদি আপনার সাইটকে রেফার করে তার ওয়েবপেজে আপনার লিংক দেয়, তবে সেটিকে এডিটোরিয়াল ব্যাকলিংক বলা হয়। এ ধরনের ব্যাকলিংকগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনার ওয়েবসাইটের সাথে সম্পৃক্ত কোন হাই-কোয়ালিটি আর্টিকেলের মধ্যে প্লেস করা হয়ে থাকে। আর এ কারণে এই লিংকগুলিকে সবচেয়ে আদর্শ ব্যাকলিংক হিসেবে গণ্য করা হয়।
এসব লিংক পাওয়ার জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার সাইটে এমন শক্তিশালী কন্টেন্ট তৈরী করতে হবে যাতে অন্যান্য সাইটগুলি আপনার পেজটিকে একটি আদর্শ উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করতে বাধ্য হয়।
গেস্ট ব্লগিং লিংক:
এ ধরনের লিংক পেতে হলে আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটের বিষয় সম্পৃক্ত অন্যান্য ওয়েবসাইটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। একইসাথে তাদেরকে ইমেইল বা অন্য কোন মাধ্যমে অনুরোধ করতে হবে তাদের ওয়েবসাইটে আপনার তৈরীকৃত কন্টেন্ট প্রকাশ করার জন্য যার মধ্যে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক দেয়া থাকবে।
গেস্ট ব্লগিং লিংকও এক ধরনের এডিওটোরিয়াল লিংক হলেও যেহেতু এর কন্টেন্ট আপনাকেই তৈরী করতে হবে, এজন্য একে সরাসরি এডিওটোরিয়াল এর পরিবর্তে গেস্ট ব্লগিং বলা হয়।
বিজনেস প্রোফাইল:
বিভিন্ন ধরনের বিজনেস লিষ্টিং সাইট, সোশ্যাল মিডিয়া, ইন্ডাস্ট্রি ডিরেক্টরি ও অন্যান্য রিভিউ সাইটগুলিতে আপনার একটি সুন্দর ব্যবসায়ীক প্রোফাইল তৈরীর মাধ্যমে যে ইনকামিং লিংক প্রকাশ করা হয়, তাকে বিজনেস প্রোফাইল ব্যাকলিংক বলে। এ ধরনের এন্ট্রিগুলির মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন আপনার ওয়েবসাইটকে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীক সাইট হিসেবে গণ্য করতে শুরু করে।
ওয়েবইনার লিংক:
এ ধরনের লিংক পাওয়ার জন্য আপনাকে বিভিন্ন সাইটের ওয়েবইনার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে হবে। ওয়েবইনারে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটের লিংক এমবেড কোড আকারে প্রকাশের মাধ্যমে ইনবাউন্ড লিংক তৈরী করতে পারেন।
ফ্রি টুল ব্যাকলিংক:
এটি এসইও’তে অনেক দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব বিস্তার করে এবং একই সাথে ভিজিটর ও ব্যাকলিংক উভয়ই সৃষ্টি করে। এর জন্য আপনার সাইটে অবশ্যই এমন একটি টুল থাকতে হবে যা আপনি অন্যদের বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ করে দেবেন।
উদাহরণ হিসেবে নীলপাটেল ডট কমের কথা ধরে নিতে পারেন। এটি এসইও শেখার জন্য একটি জনপ্রিয় ওয়েবসাইট। এই সাইটে উবার সাজেস্ট নামে একটি ফ্রি টুল রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি যে কোন সাইটকে অ্যানালাইসিস করতে পারবেন। এ কারণে অনেক ওয়েবসাইটেই এসইও টিউটোরিয়ালে ফ্রি কিওয়ার্ড রিসার্চ বা সার্চ অ্যানালাইসিসের জন্য এই ওয়েবসাইটটিকে রিকমেন্ড করতে দেখা যায়।
ইনফোগ্রাফিক্স:
আপনার কন্টেন্টকে সমগ্র ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য একটি চমৎকার উপায় হলো ইনফোগ্রাফিক্স। এ ধরনের কন্টেন্ট খুব সহজেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়ে যায় যা আপনাকে ব্যাকলিংক তৈরীতে সাহায্য করে।
আপনি যদি একটি মানসম্মত ইনফোগ্রাফিক্স তৈরী করতে সমর্থ হন, তাহলে যে কোন এডিটরই তাদের সাইটে আপনাকে কন্টেন্টটি এমবেড করবে। পৃথিবীর প্রায় সব সফল ওয়েবসাইটই তাদের প্রচার ও লিংক বিল্ডিংয়ের জন্য ইনফোগ্রাফিক্স ব্যবহার করে থাকে।
ডোনেশন লিংক:
ইন্টারনেটের বিভিন্ন অলাভজনক ওয়েবসাইটে ডোনেশনের মাধ্যমে এ ধরনের লিংক পাওয়া সম্ভব। এর জন্য আপনাকে শুধু তাদের ডোনেট বাটনে ক্লিক করে সামান্য কিছু অর্থ ডোনেট করার মাধ্যমে আপনার সাইটের লিংক সেখানে সাবমিট করতে হবে। তবে আপনি যেখানে লিংক সাবমিট করছেন সেই সাইটটি কেমন তা অবশ্যই আগে যাচাই করে নিতে হবে।
কোয়েশ্চন-অ্যান্সার প্লাটফর্ম:
ইন্টারনেটে সবাই কোন না কোন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে আসে। আর এই সুযোগটিকে আপনি লিংক বিল্ডিংয়ে কাজে লাগাতে পারেন। কোরা বা ইয়াহু অ্যান্সার এর মত সাইটগুলি এ ধরনের কাজের জন্য আদর্শ। এখানে আপনার ওয়েবসাইটের বিষয় সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেয়া এবং প্রশ্নকারীর সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। একই সাথে বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার সাইটের লিংক দিয়ে দিতে হবে।
ব্যাকলিংক কত প্রকার এই প্রশ্নের নির্দিষ্ট কোন সংখ্যার উপর নির্ভর করে উত্তর দেওয়াটা একটু কঠিন। উপরের ধরণগুলি ছাড়াও আরো হাজারো ধরনের ইনকামিং লিংক তৈরী করা সম্ভব। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে ভালো লিংকগুলির নিয়ে আপনাদের ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনাদের কাছে যদি আরো কোন আইডিয়া থাকে, তবে তা অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না।
Ishak Mahmud says
প্রত্যেকটা ডিজিটাল মার্কেটারই চায় তার ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক যেনো টায়ার-১ ক্যাটাগরি অনুযায়ী। তবে অধিকাংশ-ই সে অনুযায়ী নিজের সাইটকে র্যাংক করাতে সফল হয় না। কেননা ব্যাকলিংক সম্পর্কে জানার পরিসরটা কম। ব্যাকলিংক সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Dipu says
ব্যাংকলিংক সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।
Md Sumon Ahmed says
ব্যাকলিংক যে এতোগুলো ভাগে ভাগ করা সেটাই আজ প্রথম জানলাম, আমি তো মনে করতাম যে-কোনো জায়গায় লিংক দিয়ে আসলেই হলো, ধন্যবাদ ভাই আপনাকে নতুন কিছু শিখানোর জন্য।