আপনার হাতে নিশ্চয়ই একটি অ্যান্ড্রয়েড ফোন আছে আর তাতে একটি বিল্ট-ইন ক্যামেরাও আছে যা দিয়ে আপনি সুন্দর কিছু দেখলেই একটা ক্লিক মেরে দেন মানে ছবি তুলে নেন আর কি! কিন্তু সুন্দর কোন দৃশ্য, আপনার নিজের সেলফি কিংবা আশে-পাশের কোন প্রিয়মুখ কি আপনার ক্যামেরায় প্রিয় হয়ে ফুটে ওঠে? যদি আপনার উত্তর হয় ‘না’ মানে আপনি আপনার ক্যামেরার উপর সন্তুষ্ট না, তবে এই ৫টি অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ আপনার মুখে হাসি ফুটিয়ে অনায়াসে বের করে আনবে একটি পজিটিব শব্দ- হ্যাঁ। মানে আপনি সন্তুষ্ট না হয়ে যাবেন কই!
সব অ্যান্ড্রয়েড ফোনে এক রকম ক্যামেরা দেয়া থাকে না। মান ও দামের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সেট করা হয় অ্যান্ড্রয়েড ফোনের ক্যামেরা। তাই সব ক্যামেরার মান এক নয়, সব ক্যামেরাই আপনাকে ভাল ছবি কিংবা ভাল ভিডিও দিতে পারবে না। কিন্তু ক্যামেরা অ্যাপ আপনার ক্যামেরাকে লেখা-পড়া শিখিয়ে মানুষ করে তুলবে, মানে ঘঁষে-মেজে আপনার ক্যামেরার ফিচারগুলোকে উন্নত করে দেবে। সুতরাং, আপনার ক্যামেরা বাধ্য হবে ভাল ছবি তুলতে কিংবা ভাল ভিডিও ধারণ করতে আর আপনিও সন্তুষ্ট হবেন এখানকার যে কোন ক্যামেরা অ্যাপ ব্যবহার
করে।
সেরা ৫টি অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ
এই ক্যামেরা অ্যাপগুলো শুধু আপনাকে ভাল ছবি তুলতেই সাহায্য করবে না, আপনার সাধের ছবির সাথে মনের মাধুরি মেশাতেও সাহায্য করবে। অর্থাৎ, আপনার তোলা ছবিকে আপনি আরো সুন্দর, আরো পরিচ্ছন্ন করার জন্য নানা অ্যাঙ্গেলে এডিট করার সুযোগ পাবেন। এখানে ১০টি অ্যাপ সম্পর্কে আলোচনা থাকছে আর আপনার হাতে থাকা ফোনের কনফিগারেশন আর ক্যামেরার ক্যাপাসিটির সঙ্গে সম্পূর্ণ খাপ খাইয়ে নেবে এমন একটি অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ ব্যবহার করুন এখান থেকে।
Candy Camera – সেলফি এক্সপার্ট
আজকের দিনে Canndy Camera সম্পর্কে জানে না এমন সেলফি লাভার হয়তো খুঁজেও পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে যারা হাঁটতে-বসতে, ঘুরতে-ফিরতে সেলফি তুলতে পছন্দ করেন আর সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করে বন্ধুদেরকে নিজের অবস্থান কিংবা ভাল-লাগা, মন্দ-লাগা জানাতে ভালবাসেন, তাদের কাছে Canndy Camera সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
৭ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন এই ক্যামেরা অ্যাপ দিয়ে ছবি তোলেন আর সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন। বিশ্ব জুড়ে সোস্যাল মিডিয়ার ঝড় তোলা ছবিগুলোর অধিকাংশই এই মহাশয়ের হাতের কাজ। এই মহাশয় তরুণ প্রজন্মকে দিয়েছে সেলফি তোলার এক নতুন উদ্যম। এই উদ্যমের সাথে যোগ দিতে পারেন আপনিও, নিচের নীল বাটনে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিন আর নতুন উদ্যমে ছবি তুলতে থাকুন।
Motion Stills – মনের মত ছবি আর ভিডিও
Motion Stills গুগল রিসার্চ থেকে আসা একটি দারুণ ক্যামেরা অ্যাপ যা আপনাকে ছবি তোলার পাশাপাশি ছোট ছোট ভিডিও ধারণ করে সেগুলোকে সিনেমা ইফেক্ট দিতে সাহায্য করবে। ক্যামেরার জন্য ব্যবহৃত রেন্ডারিং টেকনোলোজি টিউন করে তৈরি করা এই অ্যাপটি সুইফিং পদ্ধতিতে আপনার ছবি কিংবা ভিডিওতে চলে আসা অপ্রয়োজনীয় দাগ কিংবা ধূলো-বালি দূর করে ছবি ও ভিডিওকে করে তুলবে ঝকঝকে।
ছোট কোনও ভিডিও ধারণ করার পর সেটিকে আপনি লুপিং GIF এ কনভার্ট করতে পারবেন, এমনকি অন্য কোনও মুভি ক্লিপের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে আপনার সোশাল প্রোপাইলে শেয়ার করতে পারবেন। অ্যাপটির ফাস্ট এন্ড ফরওয়ার্ড মুড ব্যবহার করে আপনি যে কোনও 3S ক্লিপও ধারণ করতে পারবেন। অটো মুড চালু করা থাকলে আপনার ধারণকৃত ভিডিও আপনাকে দেখিয়ে দেবে সেটি কতটুকু মান-সম্পন্ন হয়েছে। নতুন হলেও প্রায় ৫ লক্ষ অ্যান্ডয়েড ফোন ব্যবহারকারীর কাছে ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে এই অ্যাপ। আপনিও যদি যোগ দিতে চান তাদের দলে, তবে ডাউনলোড করে নিন এখনই।
Open Camera – শৈল্পিক ছবি
Open Camera আপনার শৈল্পিক দক্ষতাকে মোবাইলের স্ক্রিনে ওপেন করতে সাহায্য করবে। আপনি যদি ফেসবুকে শেয়ারের জন্য ছবি তুলতে আগ্রহী না হয়ে সিরিয়াস ফটোগ্রাফিতে ইচ্ছুক হন, তবে আপনার মোবাইলের জন্য এটিই হবে সেরা অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ। এইচডি কোয়ালিটির ভিডিও ধারণ তো করবেই এটি, সেই সাথে ভিডিও ধারণ করা অবস্থাতেই আপনাকে স্টিল ছবি তোলার সুযোগ দেবে অ্যাপটি।
এই অ্যাপটি ফোকাস মুড এবং সিন মুড সাপোর্ট করে, সেই সাথে হোয়াইট ব্যালেন্স ও কালার ইফেক্ট যথাযথভাবে ঠিক করে নেয়ার অপশনও রয়েছে এটিতে। এমনকি, এর ফেস ডিটেকশন ফিচারটি কোন দৃশ্য বা মানুষের একটি নির্ধারিত অংশকে ছবি কিংবা ভিডিওতে বিশেষভাবে তুলে আনতে সাহায্য করবে এটি।
Z Camera – এডিটিং এক্সপার্ট
যারা ফটো এডিটিং নিয়ে একটু আধটু ভাবেন কিংবা অন্যদের দারুণ দারুণ ফটো এডিট দেখে মনে মনে একটু ব্যাথিত হন, তাদের জন্য স্থায়ী সমাধান এই এন্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ। এর ‘ফিল্টার ইফেক্ট’ ফিচারটি ছবি তোলা কিংবা ভিডিও করার আগেই দৃশ্য থেকে শট নিয়ে আপনাকে দেখিয়ে দেবে আপনার ছবি কিংবা ভিডিও দেখতে কেমন লাগবে। আর সেখান থেকেই দেবে আপনাকে সেটিং অপশন। তার মানে, প্রিভিউ দেখে আপনি রিয়েল টাইম সেটিংস্ এ যেতে পারবেন আর আপনার ছবিকে মান-সন্মত করার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবর্তণ সাধন করে নিতে পারবেন।
ছবি তোলার পরও আপনি সেটিকে এডিট করে গুণগত মান বাড়াতে পারবেন, ভিডিওর বিউটি ইনক্রিজ করতে পারবেন। এমনকি, আপনার ছবি এবং ভিডিওতে গুগল ইমোজিসহ নানা ধরণের ইমোজি যোগ করতে পারবেন। তবে, এই অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ এর সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে বিউটি সেলিফি যা আপনার সেলফির বিউটি বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।
Camer FV-5 – গরিবের DSLR
যদি আপনিও আমার মত মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে হয়ে থাকেন এবং আপনার বড়লোক ফ্রেন্ডের DSLR দেখে ব্যাথিত হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য আমার ছোট্ট একটি পরামর্শ, আপনিও আমার মত ফোনে ইনস্টল করে নিন Camera FV-5।
আমার মতে, এটা গরিবের কিংবা মধ্যবিত্তদের DSLR, কারণ এটার ফটো কোয়ালিটি DSLR এর মতোই। দামি ক্যামেরা আর হাই কোয়ালিটির লেন্সের চেয়ে কিছুটা নিম্নমানের ফটো দিলেও আমাদের দুধের স্বাধ ঘোলে মিটিয়ে দেবে এই এন্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ। দাম নিয়েও টেনশন নাই, আমাদের হাতের একদম নাগালেই আছে, প্রায় নয় সম্পুর্ণ ফ্রি।
এই ৫টি অ্যান্ড্রয়েড ক্যামেরা অ্যাপ থেকে আপনি ব্যবহার করতে পারেন যে কোনটি, একটার চেয়ে বেশি কিংবা চাইলে আপনি সবক’টিই ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তারপর, যে অ্যাপটি আপনার সবচেয়ে ভাল লাগবে সেটি রেখে বাকীগুলো ডিলিট করে দিতে পারেন। আর আপনার পছন্দের অ্যাপটি নিয়ে আপনার ছবি তোলা ও ভিডিও করার অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা জানাতে পারেন নিচের কমেন্ট বক্সে লিখে।
Leave a Reply