কিছু স্মার্টফোনের বেলায় ভাল ক্যামেরা পাওয়া গেলেও ব্যাটারি লাইফ পাওয়া যায় না। আবার, দেখা যায় যে কিছু ফোনের ব্যাটারি অত্যন্ত ভাল কিন্তু ক্যামেরা খুব একটা উন্নত মানের নয়। যদি একই ফোনে ভাল ক্যামেরা ও উন্নত ব্যাটারি পাওয়া যায়, তাহলে কেমন হয়!
হ্যাঁ, Vivo V20 তেমনই একটি স্মার্টফোন যাতে আপনি উপরোক্ত দুইটি সুবিধাই পাবেন।
Vivo V20 একটি সিরিজ ফোন যা ভিভো নেক্স এর বেজেলহীন যাদু নিয়ে বাজারে আসার সাথে সাথে ইউজারদের মন জয় করে নিয়েছে। এই সিরিজের অন্য দুটি স্মার্টফোন নিয়ে পরবর্তীতে রিভিউ লেখার ইচ্ছে আছে। আপাতত: Vivo V20 রিভিউটি দেখে নিন।
Vivo V20 ক্যামেরা
ক্যামেরার কোয়ালিটির দিকে যাওয়ার আগে আসুন স্পেসিফিকেশনটা দেখে নেয়া যাক। ভিভো ভি টুয়েন্টি ট্রিপল রিয়ার ক্যামেরা ফোন, যার সেট আপে রয়েছে-
- ৬৪ এমপি (F/189) প্রাইমারি সেন্সর।
- F/2.2 অ্যাপার্চারসহ ৮ এমপি ওয়াইড অ্যাঙ্গেল/ ম্যাক্রো/ বোকেহ্ সেন্সর এবং
- F/2.4 অ্যাপার্চারসহ ২ এমপি মনো সেন্সর।
- আর সামনে রয়েছে eye-AFসহ ৪৪ এমপি ক্যামেরা।
বিভিন্ন কন্ডিশনে ক্যামেরা টেস্ট করে দেখা হয়েছে এবং দেখা গিয়েছে যে, প্রাইমারি ৬৪ এমপি ক্যামেরার শট অত্যন্ত শার্প, ডিটেইল এবং ভাইব্র্যান্ট। এমনকি, এই ক্যামেরাটির ডায়নামিক রেঞ্জ ক্যাপাসিটি রয়েছে যা সাধারণত খুব কম স্মার্টফোনের ক্যামেরাতেই পাওয়া যায়।
অন্য দুটি লেন্স সম্পর্কে বলতে গেলে বলতে হয়, ম্যাক্রো এবং বোকেহ্ লেন্স দুটি অসাধারণ, দুটিই ওয়াইড অ্যাঙ্গেল। ছবি তোলায় আপনি যদি নিজের বেস্ট পারফরমেন্স দেখাতে চান, তবে এ দুটি ছোট লেন্স আপনাকে দারুণ সহযোগীতা করবে। ডিসটরশন লেভেলের ব্যালেন্স অসাধারণ, সেই সাথে ছবির সাবজেক্টকে ফোকাস করা এবং ব্যাকগ্রাউন্ডকে ব্লারিং করার জন্যে Vivo V20 এর ক্যামেরার সত্যিই কোন তুলনা হয় না।
ক্যামেরার অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে-
- নাইট এন্ড সুপার নাইট মোড।
- মোশন, বডি ও অবজেক্ট ও আই AF।
- আল্ট্রা স্ট্যাবল ভিডিও ক্যাপচারিং।
- ওয়াইড অ্যাঙ্গেল নাইট মোড।
- আর্ট পোর্টফোলিও ভিডিও ক্যাপচারিং।
তবে, ব্যবহারকারীর কাছে যে ফিচারটি অনেক ভাল লাগার বিষয় হবে, সেটি হচ্ছে অটো ফোকাস। কারণ, অটো ফোকাসে মোশন এবং আই এএফ দূর্দান্ত ভূমিকা রাখে।
ফ্রন্টে থাকা ৪৪ এমপির সেন্সর আপনাকে শার্প আর ডিটেইল ছবি উপহার দেবে। ডায়নামিক রেঞ্জ আরো একটু ভাল হতে পারতো, তবে যেটা আছে সেটা কিন্তু কম নয়।
ভিভোর এই ভি টুয়েন্টি ফোনটি দিয়ে ফোর কে ভিডিও শ্যুট করা যায় এবং প্রাইমারি রিয়ার সেন্সর দিয়ে করা ভিডিওর কোয়ালিটি একেবারে ছবির মতোই ঝকঝকে।
যাইহোক, এখন পর্যন্ত এই স্মার্টফোনটির ক্যামেরা নিয়ে কোনও ইউজারের নেগেটিভ কমেন্ট পাওয়া যায়নি। ফ্রন্ট এবং ব্যাক উভয় ক্যামেরাতেই ভাল ছবি আসে। আর সেলফি তোলার ক্ষেত্রে তো কথাই নেই। দাম বা অন্যান্য ফিচারের দিক থেকে এটি পছন্দ না হলে, সেলফি লাভারদের জন্যে রয়েছে Vivo V9।
Vivo V20 ব্যাটারি লাইফ
আপ একই মানের পুরনো স্মার্টফোনের ব্যাটারির চেয়ে ভাল। এটি ৩৩ ওয়াট ফ্ল্যাশ চার্জ সাপোর্ট করে। আপনি যদি একটানা ব্যবহার করেন, তবে এর ব্যাটারি লাইফ থাকবে ২৪ ঘন্টা। আর যদি সাধারণভাবে প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করেন, তবে ২ থেকে ৩ দিন ব্যাকআপ পাবেন।
ব্যাটারির বিষয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, 33W ফাস্ট চার্জের কারণে এক ঘন্টার মধ্যে এটি ০ থেকে ১০০% চার্জ হয়ে যায়।
Vivo V20 ডিজাইন
Vivo V20 ফোনের দিকে তাকালে বোঝা যায় যে, ডিজাইনের দিকে ভিভোর মনোযোগ বেশ স্পষ্ট। ভিভো ভি 20 এর ডিজাইন আই-ক্যাচি এবং যারা ডিজাইনকে গুরুত্ব দেয় তাদেরকে মুগ্ধ করবে। ফোনটির পাতলা এবং গোলাকার কোণগুলো ফোনটিকে ধরার ক্ষেত্রে আরামদায়ক করে তুলেছে।
আপনি 20: 9 অ্যাসপেক্ট রেশিও এবং ফুল-এইচডি + রেজোলিউশনের সাথে একটি 6.44-ইঞ্চি AMOLED ডিসপ্লে পাবেন। ফোনটির পাতলা বর্ডার রয়েছে যা সামগ্রিকভাবে স্মার্টফোনে নান্দনিকতা যুক্ত করেছে।
Vivo V20 হাতে নিলে দেখতে পাবেন এর ফ্রেমটি প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি। পাওয়ার এবং ভলিউম বাটন খুব সুন্দরভাবে যথাযথ স্থানে সেট করা হয়েছে যা ভাল ফিডব্যাক দেয়। পাওয়ার বাটনকে সহজে আলাদা করার জন্যে ভিভো এটিতে টেক্সার যুক্ত করেছে।
ফোনটির নিচের অংশে আপনি একটি ইউএসবি টাইপ পোর্ট, ৩.৫ এমএম এর একটি হেডফোন জ্যাক এবং একটি লাইড স্পিকার দেখতে পাবেন।
Vivo V20 ফোনটির ওজন ১৭১ গ্রাম। আর এটির পুরুত্ব ৭.৩৮ এমএম। আর ফোনটি পাওয়া যাচ্ছে ৩ কালারে।
আরো কিছু শর্ট স্পেসিফিকেশন ও ফিচার-
- প্রসেসর: অক্টাকোর ২.৩ গিগাহার্টস্
- র্যাম: ৮ জিবি।
- রোম: ১২৮ জিবি।
- সিকিউরিটি: ফেস আনলক, ফিঙ্গারপ্রিন্ট।
- নেটওয়ার্ক: ২জি, থ্রিজি, ফোরজি।
- সাইজ: ৬.৪৪ ইঞ্চি।
- রেডিও: এফএম।
বাংলাদেশে Vivo V20 এর মূল্য: ৩২৯৯০
Vivo কোম্পানীর সর্বাধিক বিক্রিত স্মার্টফোনগুলোর তালিকায় থাকা এই ফোনটির দাম একটু বেশি মনে হলেও অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় অসম্ভব রকমের ভাল। কাজেই, ফোনটি চেক করে দেখতে পারেন।
Leave a Reply