ডিজাইনের যে কোনো শাখায় রিসার্চ বা গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আর সেটা যদি হয় লোগো ডিজাইন তাহলে তো কোনো কথায় নেই। লোগো ডিজাইন করার আগে তাই কিছু গবেষণা করে নেয়া ভাল। গবেষণা আপনাকে সমস্যা বুঝতে সাহায্যে করে, যার ফলে আপনি ওই সমস্যা সমাধান করে ভালোভাবে একটি ডিজাইন প্রেজেন্ট করতে পারেন।
গবেষণা বলতে কোনো ডিজাইন করার আগে ভালোভাবে জেনে নেওয়া। একটা ভালো গবেষণা করা ডিজাইন ক্লায়েন্ট কি চায় তা সহজেই পূরণ করতে পারে। অন্যদিকে কম গবেষণা করা ডিজাইন বাতিল হওয়ার সম্ভাবণা থাকে। ক্লায়েন্টের কথায় আপনি শুধু আইডিয়া পেতে পারেন কিন্তু কিভাবে ডিজাইন করা যায়, কিভাবে ব্যবহার করা যায় এ-সব প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই গবেষণা করতে হবে। মানে লোগো ডিজাইন শুরু করার আগে কিছু বিষয় জেনে রাখতে হবে।
লোগো ডিজাইন করার আগে যা জানতে হবে
খুব বেশি তথ্য থাকে এমন কোনো জিনিস নেই, বিশেষ করে আপনি যখন অচেনা অজানা একটা প্রোডাক্ট কিংবা কোম্পানির জন্য লোগো ডিজাইন করবেন। আপনাকে গভীর চিন্তা কিংবা গবেষণা করে কোম্পানি সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে। কিন্তু আপনি কি জানবেন বা গবেষণা করবেন?
আজকে তাই লোগো ডিজাইন করার আগে যে ৫ টি জিনিস জানা উচিৎ তা নিয়ে বলতে যাচ্ছি, যেগুলো গবেষণা করা বা জানা জরুরি কোনো লোগো ডিজাইন করার আগে।
কেনো কোম্পানির নতুন লোগো প্রয়োজন?
যে কোন লোগো ডিজাইন শুরু করার আগে এটা জানা জরুরি যে কোম্পানি কেনো নতুন লোগো চাচ্ছে। যদি কোম্পানিটি নতুন হয়, তাহলে তো কোনো কথা নেই। কিন্তু লোগোটি যদি রি-ডিজাইন হয়, তাহলে পুরাই অন্য কাহিনী। লোগো পরিবর্তণ করার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। যেমন- মালিক পরিবর্তণ, যে তার নিজের মতো কিছু পরিবর্তণ চায়। অথবা নতুন প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিস যা মার্কেটের সাথে পরিবর্তিত হয়েছে। এ-সব ভালোভাবে জানা উচিত লোগো ডিজাইন করতে যাওয়ার আগে।
২। কোম্পানি কি করে?
যদিও এটা খুবই সাধারণ প্রশ্ন, কিন্তু আপনাকে জানতে হবে কোম্পানি কি করে, কেন করে? কোম্পানির ইতিহাস বের করতে পারেন, কি কি প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দেয় সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন। কোম্পানির মূল্য বুঝতে হবে, তারা কাস্টোমারের কাছে কি ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করছে, কাস্টোমারের অনুভূতি কি ঐ কোম্পানি নিয়ে? অনেক সময়, বলতে গেলে বেশিরভাগ সময়ই ডিজাইন কাস্টোমারকে প্রভাবিত করে।
৩। টার্গেট কাস্টোমার কারা?
আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে আপনি যে কোম্পানির লোগো বানাচ্ছেন তার কাস্টোমার কারা। তাহলে আপনি এমনভাবে ডিজাইন করবেন যাতে লোগোটি কাস্টোমারকে আকর্ষণ করে। কিছু কোম্পানি হয়তো ভালোভাবেই বলে দিতে পারবে তাদের টার্গেট কারা। কিন্তু অনেক ছোট কোম্পানি হয়তো নির্দিষ্টভাবে বলতে পারবে না।
এ জন্য আপনাকে আদর্শ কাস্টোমার কারা হতে পারে জিজ্ঞেস করে নিতে হবে। কাস্টোমারের বয়স, লিঙ্গ, কি পরিমাণ আয় করে, তাদের লাইফস্টাইল, তারা কি চায় কিংবা ঐ কোম্পানি যে সার্ভিস দেয় সে সার্ভিসে তারা খুশি কিনা, এ-সব জানাও অনেকটা সাহায্য করে আপানাকে ক্রিয়েটিভ কিছু ডিজাইন করতে।
৪। কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য কি?
একটা লোগো এমন হওয়া উচিত যেনো সময়ের সাথে মানিয়ে যেতে পার। তাই আপনি যে লোগো ডিজাইন করছেন সেটা যেনো পরে আরো ১০ বছর তারা ব্যবহার করতে পারে এমনভাবে করতে হবে। এজন্যে আপানাকে কোম্পানির দীর্ঘমেয়াদী কোনো পরিকল্পণা আছে কিনা জেনে নিতে হবে। যেমন- একটা কোম্পানি এখন একটা প্রোডাক্ট বা সার্ভিস দিচ্ছে, কিন্তু পরে তারা আরো বাড়াবে। তাই এসব বিষয়ে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে।
৫। প্রতিযোগী কারা?
প্রতিযোগী কারা এটা জানা অত্যন্ত জরুরি। আপনি যে কোম্পানির লোগো করতে যাচ্ছেন তারা যে সার্ভিস দেয়, সেই সার্ভিস অনেক কোম্পানি হয়তো দিচ্ছে। তাই লোগো ডিজাইন করার আগে আপনার যদি জানা থাকে কারা প্রতিযোগী, তাহলে লোগো নকল বা একই রকম হোওয়ার সুযোগ কম থাকবে। এটা আপনি ক্লাইন্টের কাছে জেনে নিতে পারেন কিংবা নিজে গবেষণা করতে পারেন।
আপনার লক্ষ্য এমন এক লোগো ডিজাইন করা যেটি হবে সবার থেকে আলাদা। যারা প্রতিযোগী তাদের লোগো একবার দেখে নিলে কোনো সুযোগ থকেবে না আর নকল বা একই রকম হওয়ার।
গবেষণা একটি বড় হাতিয়ার, যা আপনাকে ভালো একজন ডিজাইনার এবং জ্ঞানী মানুষ হতে সাহায্যে করবে। তাই যে কোনো কাজের আগে আমাদের উচিত একটু গবেষণা করে, কি করতে যাচ্ছি একটু ভালোভাবে জেনে নেওয়া। বিশেষ করে যারা ডিজাইনের কাজ করি।
সোহেল রানা says
অনেক কিছু জানলাম। লোগো ডিজাইন এর বিষয়ে এই লেখাটা চমৎকার হয়েছে। 🙂
আব্দুর রহমান says
লোগো ডিজাইন শুনতে সাধারণ কাজ মনে হলেও, এটি আসলে আসলে অনেক সৃষ্টিশীল একটা কাজ। কারো মাঝে যদি ক্রিয়েটিভিটি না থাকে, তবে সে যত বড় ডিজাইনারই হোক না কেন, ইউনিক কোনও লোগো ডিজাইন করতে পারবে না। তাই, লোগো ডিজাইন করার এ বিষয়গুলো অবশ্যই জেনে রাখা দরকার যা লেখক খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন।
Sayed Rubel says
লেখককে ধন্যবাদ লোগো ডিজাইনের উপরে সুন্দর আলোকপাত করার জন্য। যাদের ভিতরে ক্রিয়েটিভ বুদ্ধিমত্তা আছে, তাদেরই এই পেশায় আসা উচিত।
Julfiker says
আমি বেশী কিছু জানি না। ১৯৮৯ সালে আইবিএম কম্পিউটারে এমএস ওয়ার্ডস্টার, ওয়ার্ড পারফেক্ট, ডিবেজ, লোটাস শিখে কাজ শুরু করি। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ভাগ্যকে এখনও পরিবর্তণ করিতে পারিনি। প্রথমে ঢাকার জিঞ্জিরাতে একটি ট্রেনিং সেন্টার খুলেছিলাম। বিদ্যুতের দুর্গতিতে সব হারিয়েছি। পরে চাকুরী নিয়ে নিজ এলাকা নোয়াখালীতে চলে আসি। এখন যে লাউ সে কদু হয়ে আছি। বিবেকের তাড়নায় সব কিছুতে লজ্জা পাই। কাজের সময় মেশিনটি উপযুক্ত কাজ দেয় না।
Layzu says
আমি গ্রাফিক ডিজািইনে পড়ি কিন্তু লোগো ডিজাইন জটিল বিষয় মনে হয়। আপনার লেখাটা উপকারে আসবে। ধন্যবাদ 🙂