আমরা যারা ফ্রিল্যান্সিং করতে আগ্রহী তাদের অনেকেই কিন্তু জানি না কিভাবে এবং কোথায় অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়। অনলাইনে আয় করার জন্য অনেক প্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট থাকলেও, সহজভাবে কাজ করার জন্য একটি জনপ্রিয় সাইট হলো Feelancer। ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা আয় করছেন অনেকেই। ফ্রিল্যান্সারে রয়েছে নানা ধরনের আউটসোর্সিং কাজ যেখান থেক আপনি যে কোনো কাজ বেছে নিতে পারবেন আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী।
ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা আয়
এই আর্টিকেলে ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলে কিভাবে টাকা আয় করা যায় তা নিয়ে লিখেছি। আপওয়ার্ক, ফাইভার এসব সাইটের মতো ফ্রিল্যান্সারেও খুব সহজেই অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। চলুন ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়াটি দেখে নেই।
প্রথমে ফ্রিল্যান্সার এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট -এ প্রবেশ করুন। প্রবেশ করার পর নিচের ছবির মতো করে আপনার সামনে একটি পেইজ আসবে যা ফ্রিল্যান্সার এর হোম পেইজ।
দেখুন উপরে ‘Sign Up’ লিখা একটি বাটন আছে। ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলতে এই বাটনটিতে ক্লিক করুন। এবার আপনার সামনে নিচের ছবির মতো একটি পেইজ আসবে যেখানে আপনাকে কিছু তথ্য দিয়ে ‘Sign Up’ করতে হবে।
দেখুন প্রথমেই আপনাকে একটি ইমেইল অ্যাড্রেস দিতে হবে, এখানে আপনার নিজের ইমেল অ্যাড্রেস দিন। এমন কোনো ইমেইল অ্যাড্রেস দিবেন না যেটি আপনি অনেকদিন ধরে ব্যবহার করেন না। আর প্রতিদিন ইমেইল চেক করার অভ্যাস থাকতে হবে। কারণ ফ্রিল্যান্সিং করলে প্রতিদিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল এসে থাকে। আপনার যদি ইমেইল চেক করার অভ্যাস না থাকে তাহলে আজ থেকেই অভ্যাসটা তৈরী করে নিন। দেখবেন ভবিষ্যতে আপনার অনেক উপকার হবে। কাজের সুবিধার জন্য এখন আপনি আপনার ইমেইলটি ওপেন করে রাখুন।
ইমেইল লিখার পর আপনাকে এখন একটি ইউজার নেম দিতে হবে যেটি এটি সাধারণত ইউনিক হতে হয়। এখানে আপনি আপনার নাম লিখতে পারেন। যদি আপনার নামে এখানে অন্য কেউ থাকেন তবে তারাই আপনার নামের সাথে কিছু যোগ করে আপনার নামটিকে ইউনিক করে দিবে।
এখন আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্ট এক্সেস করার জন্য একটি পাসওয়ার্ড দিতে হবে। আমরা অনেকেই পাসওয়ার্ড দিয়ে থাকি খুব ছোট ছোট বা পাসওয়ার্ড হিসেবে আমরা নিজেদের নাম বা অন্য কোনো শব্দ ব্যবহার করে থাকি যা মারাত্মক ভুল কাজ। আমরা অবশ্যই পাসওয়ার্ডে এমন কিছু ব্যবহার করবো না যা সহজে অনুমান করা যায় কিংবা হ্যাক হওয়ার সম্ভাবণা তৈরি করে।
আপনি এখন দুইটি অপশন দেখতে পাচ্ছেন ‘Hire’ এবং ‘Work’। এখানে ‘Hire’ হলো তাদের জন্য যারা কাউকে কাজ দেয়ার জন্য ‘Sine Up’ করছে আর ‘Work’ অপশনটি হলো যারা এখানে কাজ করতে চাচ্ছে তাদের জন্য। সুতরাং, কাজ করার জন্য ওয়ার্ক বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আপনি ‘Create Account’ বাটনে ক্লিক করুন। আপনার সামনে এখন নিচের ছবির মতো একটি পেইজ আসবে।
এই পেইজে আপনি দেখতে পাচ্ছেন এখানে আপনাকে আপনার স্কিলগুলো সিলেক্ট করে দিতে হবে। অর্থাৎ আপনি যে-সব বিষয়ে পারদর্শী সেই বিষয়গুলো সিলেক্ট করতে হবে। অযথা এমন কোনো বিষয় সিলেক্ট করতে যাবেন না যেগুলো নিয়ে আপনার কোনো ধারণা নেই।
তাই আবারও বলছি আপনি যে কাজগুলোতে পারদর্শী কিংবা মোটামুটি ভালই জানেন, কেবল সেই কাজগুলোই সিলেক্ট করুন। এতে আপনার কাজ পেতে সুবিধা হবে। যেমন আমি এখানে ডাটা এন্ট্রি সংক্রান্ত কাজ কাজগুলো সিলেক্ট করেছি। আপনি যদি একাধিক কাজে পারদর্শী হয়ে থাকেন তবে অবশ্যই একাধিক কাজ সিলেক্ট করে দিতে পারেন। সিলেক্ট করার পর নিচের নেক্সট স্টেপ বাটনে ক্লিক করুন। এখন আপনার সামনে নিচের ছবির মত প্রোপাইল সেট আপ করার একটি পেজ আসবে।
দেখুন এই পেইজে আপনাকে বলা হয়েছে আপনার প্রোফাইলটি সম্পূর্ণ করার জন্য। প্রথমেই আপনার পুরো নাম লিখতে হবে। পরে আপনি কোন কোন ভাষা জানেন সেটা উল্লেখ করতে হবে। তবে অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে ইংরেজি ভাষা জানতে হবে। শুধু জানলেই হবে না। ইংরেজিতে কথা বলতে পারতে হবে।
এখন আপনি যদি জানতে চান আপনাকে কতটুকু ইংরেজি জানতে হবে তাহলে আমি বলবো আপনি যখন অন্য কারো কাজ করে দিতে যাবেন তখন তার সাথে আপনার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কনভার্সেশন চলতে থাকবে। এখন আপনিই বুঝতে পারছেন আপনাকে কতটুকু দক্ষ হতে হবে।
এছাড়াও আপনি যদি অন্য কোনো ভাষায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে সেটা উল্লেখ করুন। এতে বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছ থেকে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। এবার আপনাকে উল্লেখ করতে হবে আপনার কাজের দক্ষতা কতটুকু। আপনি কি বিগেনার বা মাত্র কাজ শিখেছেন নাকি কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা আছে আপনার কিংবা আপনি পুরোদমে পারদর্শী কিনা? আপনি যে লেভেলে আছেন সেটি সিলেক্ট করে দিন। এখন নিচের নেক্সট স্টেপ বাটনে ক্লিক করলে আপনার সামনে নিচের ছবির মতো করে একটি পেইজ আসবে।
এই ধাপে আপনাকে আপনার পেমেন্ট মেথড সিলেক্ট করে ভেরিফাই করতে হবে। অর্থাৎ আপনি এখানে কাজ শেষ করার পর কিভাবে আপনার পারিশ্রমিক নিবেন সেটা আপনাকে উল্লেখ করতে হবে। বর্তমানে যদি আপনার কোনো রকম অ্যাকাউন্ট না থাকে তাহলেও সমস্যা নেই। আপনি পরেও এটি অ্যাড করে দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে স্কিপ লেখার উপর ক্লিক করে পরবর্তী পেইজে যেতে হবে। সেই পেজে আপনি নিচের ছবির মতো একটি পেইজ দেখতে পাবেন।
এটা হচ্ছে ওদের প্লাস মেম্বারশিপ। আপনি প্লাস মেম্বার হলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। আপনি প্রতি মাসে ১০০টি বিড করতে পারবেন। এছাড়াও আরো কিছু সুবিধা পেয়ে থাকবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে প্রতি মাসে $৯.৯৫ ডলার ফ্রিল্যান্সার সাইটকে দিতে হবে। এখন নেক্সট স্টেপে গেলে আপনি নিচের ছবির মতো একটি পেইজ দেখতে পাবেন।
আপনার অ্যাকাউন্ট তৈরী হয়ে গেছে, এখন আপনাকে অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করতে হবে। আপনার দেয়া ইমেইল অ্যাড্রেসে ফ্রিল্যান্সার থেকে একটি ইমেইল চলে গেছে। আপনি ইমেইলটি ওপেন করে ‘Verify Your Email’ বাটনে ক্লিক করে আপনার অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করুন। এখন আপনার সব কাজ শেষ হয়ে গেলেও আপনার প্রোফাইল আপডেট করা বাকি। আপনার প্রোফাইল যদি ভালো করে আপডেট না করেন তবে আপনি কাজ পাবেন না।
প্রোফাইল আপডেট করার সময় উপরের ছবির মতো একটি পেইজ আপনার সামনে আসবে। এখানে আপনি আপনার এক্সপেরিয়েন্স, ইডুকেশন ইত্যাদি লিখতে পারবেন। মনে রাখবেন আপনার প্রোফাইল ১০০% আপডেট করতে হবে কাজ পাওয়ার জন্য। তাই আপনাকে স্কিল এর উপর একটি পরীক্ষা দিতে হতে পারে। পাশ করলে আপনি সহজেই কাজ পেয়ে যাবেন।
এখন আপনি কাজ পাওয়ার জন্য বিড করা শুরু করুন, তবে না বুঝে অযথা বিড করতে যাবেন না। কাজটি আপনি করতে পারবেন বলে মনে হলে তবেই বিড করুন।
কিভাবে ফ্রিল্যান্সারে অ্যাকাউন্ট খুলে টাকা আয় করতে হয় সে সম্পর্কে আমি আপনাদের বললাম। তবে টাকা আয় করতে হলে অবশ্যই ভালো দক্ষতা ও একটি ভালো প্রোফাইল তৈরী করে নিতে হবে। আশা করছি আপনি এখন সহজেই কাজ শুরু করতে পারবেন ফ্রিল্যান্সারে।
Monsur Alam says
আমি আপনাদের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক, দয়া করে আমাকে সাহায্য করবেন। আমি আপনার প্রতি কৃতঙ্গ থাকবো।
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, Monsur Alam। আপনার বক্তব্য আমরা ঠিক মতো বুঝতে পারছি না। আপনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। কিন্তু আমরা তো কাউকে দিয়ে কোন কাজ করাচ্ছি না, ভাই। আমরা যেটা করছি সেটা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং কাজ সম্পর্কে মানুষকে খোঁজ-খবর জানাচ্ছি। অ্যাকাউন্ট করা, কাজ পাওয়া, টাকা উত্তোলন, ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে লেখা-লেখির মাধ্যমে তথ্য দিয়ে সহযোগীতা করছি। আপনার যদি এ জাতীয় কোনও সহযোগীতা দরকার হয়, তবে আমরা নিশ্চয়ই আপনাকে সহযোগীতার চেষ্টা করবো।