LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটি লঞ্চ হয়েছে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে। ৬ ইঞ্চির বেশ বড় সড় একটি ডিসপ্লে রয়েছে এই ফোনে। ১৪৪০ পিক্সেল বাই ২৮৮০ পিক্সেল রেজুলেশনের পিক্সেল পার ইঞ্চি (PPI) ৫৩৮।
৬ জিবি র্যাম নিয়ে LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটি অক্টা কোর কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫ প্রসেসরে চলবে। এটি বেশ শক্তিশালী একটি প্রসেসর যা নিঃসন্দেহে হ্যান্ডসেটটিকে অসাধারন গতি দিবে। V30S এ ইন্টারনাল স্টোরেজ আছে ১২৮ জিবি যেটা মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ২জিবি পর্যন্ত বাড়িয়ে নেয়া যাবে। ফোনের রিয়ারে আছে ১৬ মেগাপিক্সেল প্রাইমারী ক্যামেরা এবং ফ্রন্টে আছে ৫ মেগাপিক্সেল সেলফি শ্যুটার।
LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ৮.০ এ চলে এবং এই চালনায় শক্তি যোগাতে আছে ৩৩০০ মিলি আম্প্যায়ারের ব্যাটারি। ফোনের মিজারমেন্ট হল ১৫১.৭১*৭৫.৪০*৭.৩০ (উচ্চতা* প্রস্থ * পুরুত্ব)। ১৫৮ গ্রাম ওজনের ফোনটিকে এর আয়তনের সাথে তুলনা করলে বেশ হালকাই বলতে হবে।
বিস্তারিত আলোচনা শুরু করার আগে চলুন এর কী স্পেসিফিকেশন গুলো দেখে নেই।
LG V30S ThinQ এর কী স্পেসিফিকেশন
- ডিসপ্লে- ৬ ইঞ্চি
- রেজুলেশন- ১৪৪০*২৮৮০
- স্টোরেজ- ১২৮ জিবি
- প্রসেসর- অক্টা কোর
- র্যাম- ৬ জিবি
- রিয়ার ক্যামেরা- ১৬ মেগাপিক্সেল
- ফ্রন্ট ক্যামেরা- ৫ মেগাপিক্সেল
- ওপারেটিং সিস্টেম- অ্যান্ড্রয়েড ৮.০
- ব্যাটারি ক্যাপাসিটি- ৩৩০০ মিলি আম্প্যায়ার
বডিঃ
চমৎকার ফিনিশিং এর এলুমিনিয়াম ফ্রেমে তৈরি LG V30S ThinQ এর ফ্রন্ট এবং ব্যাক পার্ট গ্লাস দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এতে গোরিলা গ্লাস ৫ ব্যবহার করা হয়েছে, তবে ইউজারদের রিভিউ অনুযায়ী ফিনিশিং খুব চমৎকার হলেও গ্লাসে ফিঙ্গার প্রিন্ট আটকায় খুব বেশি যেটা পরে ভালো দেখায় না।
১৫১.৭১*৭৫.৪০*৭.৩০ (উচ্চতা* প্রস্থ * পুরুত্ব) মেজারমেন্ট এবং ১৫৮ গ্রাম ওজনের V30S এ দুটি হাইব্রিড ডুয়াল সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে। এই ফোনটি আইপি৬৮ সারটিফাইড। অর্থাৎ ১.৫ মিটার এবং ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় ধুলা/পানি থেকে নিরাপদ থাকবে।
ডিসপ্লেঃ
LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটির ডিসপ্লে P-OLED ক্যাপাসিটিভ টাচস্ক্রিন, ১৬এম কালার। ৬ ইঞ্চির মাল্টিটাচ ডিসপ্লেটির রেজুলেশন ১৪৪০*২৮৮০ পিক্সেল এবং এর এসপেক্ট রেশিও ১৮:৯। স্ক্রিনের প্রটেকশনের জন্য আছে করনিং গোরিলা গ্লাস ৫। সবসময় অন ডিসপ্লেটিতে আরো আছে ডলবি ভিশোন/ HDR10 কমপ্লায়েন্ট।
প্ল্যাটফর্মঃ
LG V30S ThinQ এর অপারেটিং সিস্টেম হল অ্যান্ড্রয়েড ৭.১.২ নুগাট। এই ফোনে চিপসেট কোয়ালকম MSM৮৯৯৮ স্ন্যাপড্রাগন ৮৩৫। বেশ শক্তিশালী চিপসেট এটি। অপরদিকে র্যাম ৬জিবি থাকার কারণে এই ফোনের পারফর্মেন্স নিয়ে কোন প্রকার সংশয়ের সুযোগ নেই। দারুন উপভোগ্য পারফর্মেন্স পাওয়া যাবে এই হ্যান্ডসেটটি থেকে। এতে সিপিইউ আছে অক্টা কোরের আর জিপিইউ আছে Adreno ৫৪০।
মেমোরিঃ
LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটির কার্ড স্লটে দুটি অপশন আছে। প্রথম অপশনে একটি সিঙ্গিল সিম ব্যবহার করা যাবে এবং মাইক্রো এসডি কার্ডের জন্য নির্ধারিত স্লট রয়েছে। ২য় অপশনে ডুয়াল সিম মডেলের দুটি স্লটেই সিম কার্ড ব্যবহার করা যাবে । আবার একটি সিম এবং অপরটিতে মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহার করা যাবে। দুটি মডেলেই মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ২৫৬ জিবি পর্যন্ত মেমরি বাড়ানো যাবে।
সেটটিতে র্যাম আছে ৬ জিবি এবং ইন্টারনাল স্টোরেজ আছে ১২৮ জিবি।
ক্যামেরাঃ
দারুন ক্যামেরা রয়েছে LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটিতে। ডুয়েল ক্যামেরা আছে প্রাইমারী ক্যামেরায়। একটি ১৬ মেগাপিক্সেল (f/১.৬, ১ µm, ৩-axis OIS, PDAF) এবং অপরটি ১৩ মেগাপিক্সেল (f/১,৯, AF নাই)। সাথে আছে ফেস ডিটেকশন এবং লেজার অটোফোকাস, LED ফ্ল্যাশ।
ক্যামেরা দুটিকে আরো আকর্ষণীয় করেছে এর কিছু বিশেষ ফিচার। এগুলো হল জিও ট্যাগিং, টাচ ফোকাস, ফেস ডিটেকশন, HDR এবং প্যানোরোমা। ২৪-bit/১৯২kHz স্টেরিও সাউন্ড রেকর্ডিং আছে HDR ভিডিও ধারন ক্ষমতার সাথে।
সেকেন্ডারি ক্যামেরা খুব বেশি একটা পছন্দ নাও হতে পারে সেলফি প্রেমিদের। কারন এখানে রয়েছে মাত্র ৫ মেগাপিক্সেল (f/২.২, ১/৫”, ১.১২ µm) সেলফি শ্যুটার।
সাউন্ডঃ
এলারট টাইপ এ LG V30S ThinQ এ আছে ভাইব্রেশন, MP3, WAV রিংটোন। সাথে লাউড স্পিকার তো আছেই। ৩.৫ মিলিমিটারের হেডফোন জ্যাক আছে। B&O প্লে সারটিফাইড ৩২-bit/১৯২kHz অডিও আছে। ২৪-bit/৪৮kHz অডিও রেকর্ডিও করা যাবে। ডেডিকেটেড মাইকের মাধ্যমে একটিভ নয়েজ ক্যান্সেল করা যাবে।
কানেক্টিভিটিঃ
LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটির কানেক্টিভিটি অপশনেও রয়েছে অনেক কিছু। ওয়াই ফাই, হটস্পট, জিপিএস, ব্লুটুথ এবং এনএফসি ইত্যাদি সব কিছুই পাবেন। RDS এর সাথে স্টেরিও এফএম রেডিও আছে। এর সাথে পাচ্ছেন ৩.১, Type-C ১.০ রিভারসিবল কানেক্টর।
ফিচারসমুহঃ
ফোনের সেন্সরে রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট (রিয়ার সাইডে), প্রক্সিমিটি সেন্সর, গাইরো, কম্পাস, ব্যারোমিটার, কালার স্পেক্ট্রাম, এক্সেলেরোমিটার এবং এম্বিয়েন্ট লাইট সেন্সর।
ম্যাসেজিং এর জন্য রয়েছে এসএমএস, এমএমএস, ই-মেল, পুশ মেল এবং আইএম। ব্রাউজারে আছে HTML5।
নতুন দারুন একটি ফিচার সংযোজিত হয়েছে আর তা হল ThinkQ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এছাড়া MP4, MP3, ফটো/ ভিডিও এডিটর এবং ডকুমেন্ট এডিটর তো রয়েছেই।
ব্যাটারিঃ
আগেই দেখেছি যে LG V30S ThinQ এ শক্তিশালী অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে আর একে সচল রাখতেও তাই দেয়া হয়েছি ভালো মানের লি-পো ৩৩০০ মিলি আম্প্যায়ারের নন রিমুভেবল ব্যাটারি। ব্যাটারিটি ফাস্ট চারজিং সাপোর্ট দেয়। মাত্র ৩৬ মিনিটেই ৫০% হয়ে যায়।
কালার এবং দামঃ
Maroccan Blue এবং Platinum Gray এই দুটি রঙে পাওয়া যাবে LG V30S ThinQ। বাংলাদেশে এই ফোনটির দাম হতে পারে আনুমানিক ১,১১,০০০ টাকা।
মতামতঃ
LG ইলেক্ট্রনিক্স বিশ্বের বিখ্যাত ব্রান্ড গুলোর একটি। এদের সব প্রোডাক্টই বিশ্বমানের। আর তার সুস্পষ্ট ছাপ আমরা দেখছি LG V30S ThinQ স্মার্টফোনটিতে। দারুণ দারুণ ফিচার আর এর শক্তিশালী প্রসেসর এই ফোনের প্রধান আকর্ষণ। তবে এর সেকেন্ডারি ক্যামেরা আমার কাছে পিছিয়ে পড়া মনে হয়েছে বিশেষ করে এর বিশাল দামের কাছে কিছুটা কম তো অবশ্যই।
বিঃ দ্রঃ উপর্যুক্ত আলোচনার যাবতীয় তথ্য LG এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইট এবং ইন্টারনেট থেকে সংগৃহিত।
Leave a Reply