ইউটিউব, ফেসবুক এর এই যুগে ভিডিও আপলোড হচ্ছে অহরহ। কিন্তু যে কোন ভিডিও আপলোড করার জন্য সেটাকে আগে এডিট করার প্রয়োজন হয়। আর তার জন্য প্রয়োজন একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোন একটি ভিডিওকে সহজেই এডিট করে সেটাকে সুন্দর, আকর্ষণীয় এবং প্রপেশনাল করে তোলা যায়।
হাই ডিমান্ডের কারণে অনেকেই আজকাল ভিডিও এডিটিংকে প্রপেশন হিসেবে নিচ্ছেন। আবার, নিজের প্রয়োজনে হোক আর চাকরির প্রয়োজনে হোক, অনেকেই ভিডিও এডিটিং শেখার কথা ভাবছেন। জেনে নিন যে ৩টি বিশেষ কারণে আপনারও ভিডিও এডিটিং শেখা উচিৎ।
ভিডিও এডিটিং করতে হলে ভাল মানের সফটওয়্যার প্রয়োজন। এই পোস্টে আমরা এ রকমই কিছু ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে জানবো।
ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
এর আগে আমরা স্মার্টফোনে ভিডিও তৈরির জন্যে ৫টি ফ্রি অ্যাপস নিয়ে লিখেছিলাম। আর আজ লিখছি কম্পিউটারের জন্যে ফ্রি এডিটিং সফটওয়্যার নিয়ে।
প্রযুক্তির এই সহজলভ্য দুনিয়ায় বর্তমান সময়ে গুগলে সার্চ দিলে শত শত ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার পাওয়া যাবে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঠিক মতো বাছাই করতে না পারার কারণে সেই সফটওয়্যারটি মনের মতো হয় না। কিংবা তাতে এডিটিংও বেশি ভালো হয় না।
তাই চলুন জেনে নেওয়া যাক ৪টি দারুন ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সম্পর্কে।
Lightworks
অ্যাডভান্স এডিটিং টুলস, রিয়েল টাইম ইফেক্ট, পরিকল্পিত ডিজাইন ইন্টারফেস Lightworks কে পেশাদারী মানের ভিডিও সম্পাদনের জন্য একটি অসাধারণ সফটওয়্যার এ পরিণত করেছে। ভিডিও ক্লিপ মিশ্রন এবং ফিল্টার প্রয়োগ করার জন্য এই সফটওয়্যারটি একটি সহজ ও সুবিধাজনক সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে অন্যতম। সিম্পল এবং সহজ টাইমলাইন এডিটিং সুবিধাসহ অডিও ভিডিও যুক্ত করার মতো সুবিধাও এতে রয়েছে। সফটওয়্যারটি ইন্সটল করার জন্য অবশ্যই নিচের সিস্টেমসমূহ থাকা লাগবে।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস:
- উইন্ডোজ ভিস্তা, উইন্ডোজ 7, উইন্ডোজ 8 / 8.1 এবং উইন্ডোজ 10
- ইন্টেল i7 চিপসেট , ফাস্ট AMD চিপসেট
- 3 গিগাবাইট র্যাম বা উচ্চতর
- দুটি উচ্চ-রেজুলেশন (1920 x1080) বা এর উপরে
- PCI এক্সপ্রেস গ্রাফিক্স কার্ড (NVIDIA বা AMD) 1 গিগাবাইট বা উচ্চতর এবং DirectX 9 (উইন্ডোজ শুধুমাত্র) সমর্থন সহ
- পৃথক মিডিয়া এবং সিস্টেম ড্রাইভ
- সাউন্ড কার্ড
- এছাড়াও Lightworks ইনস্টলেশন জন্য 200MB ডিস্ক স্পেস থাকা লাগবে।
OpenShot
অপশনালঃ সলিড-স্টেট ড্রাইভ (SSD), ডিস্ক-ক্যাশিং ব্যবহার করে (এবং অতিরিক্ত 10 গিগাবাইট হার্ড-ডিস্ক স্পেস)
এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারের আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্যগুলির তালিকা যখন আপনার চোখে পড়বে তখনই আপনি বুঝতে পারবেন যে এটি একটি অসাধারণ ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। আপনি উইন্ডোজ এবং ম্যাক ছাড়াও লিনাক্সে এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারটি ইন্সটল করতে পারবেন।
OpenShot সফটওয়্যারের ফ্রি ভার্সনে ড্র্যাগ এবং ড্রপ এর জন্য ডেস্কটপ ইন্টিগ্রেশন, ইমেজ এবং অডিও, বক্ররেখা ভিত্তিক কী ফ্রেম অ্যানিমেশন, সীমাহীন ট্র্যাক ও লেয়ার, 3D অ্যানিমেটেড টাইলস এবং ইফেক্ট থাকবে। ক্লিপের আকার পরিবর্তন, স্কেলিং, ছাঁটাই, স্ন্যাপিং এবং রোটেট, মোশান পিকচার ক্রেডিট স্ক্রোলিং, ফ্রেম স্টপিং, টাইম ম্যাপিং, অডিও মিক্সিং এবং রিয়েল-টাইম প্রিভিউগুলির জন্য OpenShot খুব কার্যকরী একটি সফটওয়্যার।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস:
- 64-বিট অপারেটিং সিস্টেম (লিনাক্স, ওএস এক্স, উইন্ডোজ 7/8/10)
- 64-বিট সমর্থন সহ মাল্টি কোর প্রসেসর
- 4 গিগাবাইট র্যাম (16 গিগাবাইট রিকোমেন্ডেড)
- ইনস্টলেশনের জন্য 500 মেগাবাইট হার্ড-ডিস্ক স্পেস
Hitfilm Express
এটিও জনপ্রিয় একটি ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার যার সাহায্যে প্রো-লেভেলের বৈশিষ্ট্যগুলি খুব সহজেই ব্যবহার করে একটি ভিডিওকে এডিট করা সম্ভব। অ্যাডভান্স কাটিং টুল, অডিও এবং ভিডিও ফিল্টারের সেট, লেয়ার এবং মাস্কিং, কম্পোজিটিং অপশন এবং গ্রিন স্ক্রীন ইফেক্ট এর জন্য ক্রোমা কীবোর্ড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
এছাড়াও অতিরিক্ত কোন টুলস অ্যাড করতে চাইলে, যার মধ্যে কালার কারেকশন, এক্সপোজার অ্যাডজাস্টমেন্ট, স্প্লিট স্ক্রিন মাস্কিং এবং বিভিন্ন ক্রিয়েটিভ ফিল্টারগুলি সমন্বিত করে, একটি প্যাকের জন্য প্রায় US $ 10 খরচ পড়বে। এ বাড়তি সুবিধাগুলোর প্রয়োজন না হলে, আপনি এটি ফ্রিতেই ইউজ করতে পারেন। তবে ডাউনলোড লিংক পাওয়ার জন্য আপনাকে তাদের অফিসিয়াল পেজটি টুইটার, ফেসবুক কিংবা গুগল প্লাসে শেয়ার করতে হবে।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস:
- উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ ভিস্তা বা উইন্ডোজ 7
- 32 বা 64-বিট অপারেটিং সিস্টেম
- প্রসেসর: 1.4 গিগাহার্জ ইন্টেল পেন্টিয়াম 4 বা এএমডি এথলন 64
- র্যামঃ 2 গিগাবাইট
- গ্রাফিক্স কার্ড: ইন্টেল এইচডি 3000, এনভিডিয়া জিওফোর্স 7900 জিটি বা এএমডি / এটিটি Radeon এইচডি ২900 জিটি কমপক্ষে 512 এমবি ভিডিও মেমরি এবং ওপেনজিএল 2.0 এর জন্য সমর্থিত
- স্ক্রিন রিজোলিউশন: 32-বিট কালার মোডে 1024 x 768
- সাউন্ড কার্ড: ইন্টারনাল সাউন্ড কার্ড
- হার্ড ডিস্ক স্পেস: প্রোগ্রাম ইনস্টলেশনের জন্য 300MB ফ্রি ডিস্ক স্পেস
- অপটিক্যাল ড্রাইভ: ডিভিডি ড্রাইভ (শুধুমাত্র বক্স ভার্সন ইনস্টলেশনের জন্য)
- ইন্টারনেট সংযোগ: অনলাইন অ্যাক্টিভেশন এবং HitFilm.com ওয়েব পরিসেবাগুলি পাওয়ার জন্য।
VSDC
এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারটি একটি পূর্ণ বৈশিষ্ট্যযুক্ত ফ্রি ভিডিও এডিটিং টুল যা আপনি উইন্ডোজ এ ইনস্টল করতে পারেন। তবে এই প্রোগ্রামটি বেশ কয়েকটি বৈশিষ্ট্য এবং মেনুর জন্য নতুনদের কাছে ব্যবহার করা কঠিন হতে পারে। এটির মাধ্যমে লাইন অ্যাড করা, চার্ট, অ্যানিমেশন, চিত্র, অডিও এবং সাবটাইটেল সহজেই যোগ করা সম্ভব।
এছাড়াও ভাল ভিডিও এডিটর হিসাবে এটি বিভিন্ন ধরনের ফাইল ফরম্যাটে ভিডিও এক্সপোর্ট করতে পারে। এর সাথে এই এডিটিং সফটওয়্যারটি ভিডিও ক্যাপচার প্রোগ্রাম এবং স্ক্রিন রেকর্ডার ইন্সটল করে দিবে।
সিস্টেম রিকোয়ারমেন্টস:
- মাইক্রোসফট উইন্ডোজ 2000 / এক্সপি / 2003 / ভিস্তা / Win7 / Win8
- ইন্টেল বা AMD বা কম্প্যাটিবল, সর্বনিম্ন 800 MHz প্রসেসর
- ন্যূনতম রেজল্যুশন 800x600x16-বিট কালার গ্রাফিক্স
- র্যাম 128 মেগাবাইট (মেগাবাইট)
- মাইক্রোসফট DirectX 8.1
- ইনস্টলেশনের জন্য নূন্যতম 20 MB ফ্রি হার্ড ডিস্ক
- পণ্যটি রেজিস্টার করার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ।
আশা করি, কম্পিউটারের জন্য এই চারটি চমৎকার এবং ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আপনার বেশ কাজে লাগবে। বিশেষ করে যখন আপনি ইউটিউবের জন্য প্রপেশনাল ভিডিও এডিটিং করবেন। সবগুলো সফটওয়্যারের মাধ্যমেই আপনি আপনার ধারণ করা ভিডিও এডিট করে সেটাকে করে তুলতে পারবেন আরও আকর্ষণীয়।
তাই দেরি না করে চট করে ডাউনলোড করে নিন আপনার প্রয়োজন এবং সিস্টেম রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী সেরা সফটওয়্যারটি, আর ইউজ করে একজন ভিডিও এডিটর হয়ে উঠুন। আর আপনি যদি মোবাইলেই ভিডিও নিয়ে কাজ করেন এবং বেশিরভাগ সময়ই আপনার স্ক্রিণ রেকডিং এর দরকার হয়, তবে সেরা ৬টি স্ক্রিন রেকর্ডার অ্যাপ দেখে নিতে পারেন এবং পছন্দেরটি ইউজ করতে পারেন।
mehedi hasan says
আপনাদের এই লেখাগুলো আমি মোবাইল দিয়ে দেখেছি কিন্তু ল্যাপটপে দেখতে হলে আমাকে কোন লিংকে ঢুকতে হবে?
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, মেহেদী হাসান। ল্যাপটপে গিয়ে আপনার ব্রাউজারে টাইপ করুন- hoicoibangla.com এবং এন্টার চাপুন।