আমরা যারা অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চাই তারা গুগলে সার্চ করলে সবচেয়ে বেশী যে সার্চ রেলাল্টগুলি আমাদের সামনে এসে হাজির হয় তা কোন না কোন পিটিসি সাইটের। যদি আপনি পিটিসি সাইটগুলির একটি তালিকা তৈরী করেন, তাহলে আপনি শতাধিক এমন পিটিসি সাইট পাবেন যারা আপনাকে খুব ভালো অংকের একটি ইনকাম দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্বস্ত সাইট ছাড়া বাকী কোন পিটিসি সাইট থেকেই ইনকাম করা সম্ভব নয়। মাত্র কয়েকটি এ রকম পিটিসি সাইট রয়েছে যেগুলো তাদের কর্মীদের নির্দিষ্ট সময়ে এবং নিয়মিত ভাবে পেমেন্ট দিয়ে আসছে। এর মাঝে ক্লিকসেন্স ও পেইডভার্টস অন্যতম। আমরা বিশ্বাস করি যে, আজকের পোষ্টটি পড়ার পর ক্লিকসেন্স থেকে আয় করার সকল বিষয় সম্পর্কে আপনার যথাযথ ধারণা চলে আসবে।
আপনি যদি মনে করেন যে কোন পিটিসি সাইট আপনাকে দিনের ১০ মিনিট সময় দেওয়ার পরিবর্তে রাতারাতি কোটিপতি বানিয়ে দিতে পারে তাহলে আপনি ভুল পথে রয়েছেন। পিটিসি সাইটগুলি হতে পারে আপনার একটি অতিরিক্ত অর্থ আয়ের উৎস যা আপনাকে অর্থনৈতিকভাবে কিছুটা স্বাবলম্বী করে তুলবে।
ক্লিকসেন্স থেকে আয়
ক্লিকসেন্স থেকে আয় করার জন্য প্রথমেই আপনাকে ক্লিকসেন্সে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য ক্লিকসেন্সের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সাইনআপ করুন। সফলভাবে সাইনআপ করার পরে আপনার ই-মেইলে একটি ভেলিডেশন লিংক আসবে যাতে ক্লিক করে আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্টটি সচল করে নিতে হবে। তারপর ক্লিকসেন্স আপনাকে আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করতে বলবে এবং লগইনের পর আপনার প্রোফাইলে ঠিকানা, পেমেন্ট ইত্যাদির মত অন্যান্য আরো কিছু তথ্য দিতে বলবে। এছাড়াও প্রথমবার ক্লিকসেন্সে লগইন করার জন্য আপনি কিছু বোনাসও পাবেন।
ক্লিকসেন্স পেমেন্ট করার জন্য ৪টি পদ্ধতিকে সমর্থন করে যা হলো Payza, Payoneer, Skrill, Neteller। যেহেতু বাংলাদেশ থেকে Payoneer, Skrill, Neteller থেকে টাকা উত্তোলন করা একটু জটিল, তাই ক্লিকসেন্স থেকে পেমেন্ট নেওয়ার জন্য Payza হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ উপায়। আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বা এখানে ক্লিক করে আপনি বাংলাদেশ থেকে পেইজা অ্যাকাউন্ট তৈরী, পেমেন্ট গ্রহণ ও উত্তোলনের পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। সবগুলি তথ্য ঠিকঠাক পূরণ করা হয়ে গেলে ক্লিকসেন্স আপনাকে তাদের মেইন পেজে নিয়ে যাবে যেখান থেকে আপনি আয় করতে পারবেন। ক্লিকসেন্স থেকে আয় করার কয়েকটি পদ্ধতি রয়েছে, এবার চলুন সেগুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
বিজ্ঞাপন থেকে আয়
বিজ্ঞাপন দেখে আয় করাটাকেই ক্লিকসেন্স থেকে আয়ের মূল উৎস বলা যেতে পারে। আপনি ক্লিকসেন্সের ভিউ অ্যাড বাটনে ক্লিক করলে আপনাকে দেখার জন্য কিছু বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে যা আপনাকে কমপক্ষে ৩০ সেকেন্ড ধরে দেখতে হবে। এরপরেও প্রতিটি বিজ্ঞাপন আপনাকে কতক্ষন ধরে দেখতে হবে বা সেটি দেখার বিনিময়ে আপনি কত টাকা পাবেন তা প্রতিটি বিজ্ঞপনের নিচেই দেওয়া থাকে। ক্লিকসেন্স সাধারণত দুই ধরনের বিজ্ঞাপন দেখার জন্য দিয়ে থাকে যা হলো ষ্টিকি অ্যাড এবং রেগুলার অ্যাড। এই বিজ্ঞাপনগুলি দেখার পরিবর্তে আপনি ক্লিকসেন্স থেকে বিজ্ঞাপন প্রতি ০.০১ ডলার থেকে শুরু করে ০.০২ ডলার পর্যন্ত পেতে পারেন।
আপনার আয়ের পরিধিকে একটু বাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ক্লিকসেন্সে রয়েছে রেফারেল প্রোগ্রাম। সহজ ভাষায় আপনি যদি আপনার রেফারেল লিংকের মাধ্যমে অন্য কাউকে ক্লিকসেন্সে একটি অ্যাকাউন্ট করিয়ে দেন এবং সে যদি নিয়মিত কাজ করে তাহলে তার আয়ের একটি অংশ ক্লিকসেন্স আপনাকে কমিশন হিসেবে দিবে। এছাড়াও আপনি যদি ক্লিকসেন্সের প্রিমিয়াম কেনেন, তাহলে খুব সহজেই আপনি বর্তমানে যে পরিমাণ আয় করছেন তার দ্বিগুন আয় করতে পারবেন। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি আপনি আপনার উপার্জিত অর্থ থেকে প্রিমিয়াম মেম্বারশীপ কিনে আপনার আয়ের ব্যাপ্তিকে বাড়িয়ে নেন। কারণ ক্লিকসেন্সের একটি প্রিমিয়াম মেম্বারশীপ মোটেও ব্যায়বহুল নয়।
সার্ভে থেকে আয়
বিভিন্ন ধরনের সার্ভে প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে ক্লিকসেন্সে আরো বেশি আয় করা সম্ভব। প্রতিটি সার্ভে সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য তারা আপনার ০.৫ ডলার থেকে শুরু করে ১.২৫ ডলার পর্যন্ত পেমেন্ট দিয়ে থাকে। সাইনআপ করার পর পরই আপনি আপনার প্রোফাইলে কমপক্ষে ৩/৪টি সার্ভে অফার পাবেন।
খেয়াল রাখার বিষয়টি হলো সার্ভে প্রোগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার সার্ভে প্রোফাইলটি যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। সার্ভে প্রোফাইলের লিংকটি আপনার অ্যাকাউন্টের উপরে ডান কোনার দিকে থাকে। সার্ভে প্রোফাইল সম্পূর্ণ করার জন্য আপনাকে বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বৈবাহিক অবস্থা, আপনার শখ সম্পর্কিত কিছু তথ্য দিতে হবে যার মাধ্যমে ক্লিকসেন্স বুঝতে পারবে যে কোন ধরনের সার্ভেগুলোর জন্য আপনি সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত।
অফার থেকে আয়
ক্লিকসেন্সে বিভিন্ন অফার বা বিজ্ঞাপন দেখার বাইরেও কিছু কাজ থেকে আয় করা যায়। প্রতিবার আপনি লগইন করার পরই দেখতে পাবেন যে আপনার জন্য কি কি অফার রয়েছে। অফারের মধ্যে সাধারণত কোন একটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট তৈরী করা বা কোন একটি মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করার মত ১১ ধরনের কাজ থাকে যা থেকে আপনি বিজ্ঞাপন দেখার বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ আয় করতে পারবেন।
সবশেষে বলা যায় যে, ক্লিকসেন্স থেকে আয় করার ব্যাপারটিও অন্যান্য পিটিসি সাইট থেকে আয় করার মতই সহজ ব্যাপার। আপনি যেহেতু এই আর্টিকেলটি পড়তে পারছেন তার মানে আমি এটাই ধরে নিব যে আপনিও ক্লিকসেন্স থেকে আয় করতে সক্ষম। ক্লিকসেন্স আপনাকে একটি সাধারণ ইনকাম দেওয়ার জন্য বিশ্বস্ত একটি পিটিসি সাইট। কিন্তু আপনি যদি আরো বেশি ইনকাম করতে চান তাহলে ক্লিকসেন্সের পাশাপাশি আপনি পেইডভার্টসেও অ্যাকাউন্ট করতে পারেন। এখান থেকে কিভাবে পেইডভার্টস থেকে প্রতিদিন ১০ ডলার আয় করবেন তার বিস্তারিত গাইডলাইন পড়ুন এবং ক্লিকসেন্স ও পেইডভার্টসে যৌথভাবে কাজের মাধ্যমে ভালো অংকের একটি মাসিক ইনকাম করুন।
Leave a Reply