ওয়েবসাইট থেকে ইনকাম করার সাথে যারা সম্পৃক্ত এক্সপায়ার্ড ডোমেইন শব্দটি তাদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এটি ব্যবহার করলে একটি ওয়েবসাইট তৈরী হওয়ার সাথে সাথেই বেশ কিছু এসইও বেনিফিট পেতে শুরু করে। বেশিরভাগ এসইও এক্সপার্টরাই তাদের সদ্য তৈরী ওয়েবসাইটের জন্য নতুন ডোমেইন কেনার চাইতে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনা বেশি পছন্দ করেন।
আমরা সবাই জানি যে, একটি ওয়েবসাইট তৈরীর মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে সেটিকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করানোর মাধ্যমে ফ্রি অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়া। কারণ, আপনার ওয়েবসাইটে যখনই ভিজিটর আসা শুরু করবে, তখন আপনি সেটিকে বিভিন্নভাবে মানিটাইজ করে সেখান থেকে স্মার্ট ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন।
আর নিশ্চয়ই এটা কারো অজানা নয় যে, ওয়েবসাইট তৈরীর প্রথম কাজটাই হলো ডোমেইন কিনে ফেলা।
একটি নতুন কেনা ডোমেইন থেকে শুরুতেই কোন ধরনের এসইও বেনিফিট পাওয়া যায় না। কেমন হয় যদি আপনার কেনা ডোমেইনটি কেনার প্রথম দিন থেকেই আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতে সাহায্য করতে থাকে?
আপনি নিশ্চয়ই জানেন সার্চ ইঞ্জিন কি আর কিভাবে কাজ করে। ডোমেইন নেয়ার শুরু থেকেই সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক পাওয়া নিশ্চয়ই দারুন হবে, তাই না? ঠিক এই কাজটিই একটি ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন আপনার জন্য করে থাকে।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কি?
একটি স্বাভাবিক ডোমেইন আর এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের মধ্যে পার্থক্য হলো, নরমাল ডোমেইন ইতিপূর্বে কেউ কখনো কেনেনি আর এক্সপায়ার্ড ডোমেইন আপনার আগেও হয়েতো কেউ কিনেছে। কোন ডোমেইন কেউ সারা জীবনের জন্য কিনে নিতে পারে না। একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর ডোমেইনটি রিনিউ করতে হয়।
যদি কেউ রিনিউ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সেই ডোমেইনটি পুনরায় আবার বিক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। ইচ্ছা করলেই যে কেউ তখন ওই ডোমেইনটি কিনে নিতে পারেন। মূলত এই ধরনের পূর্বে ব্যবহৃত ডোমেইনগুলোকেই এক্সপায়ার্ড ডোমেইন বলা হয়ে থাকে।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার সুবিধা:
একটি গল্প দিয়ে বিষয়টা বোঝানো শুরু করি। মনে করুন, রহিম সাহেবের একটি রেন্ট-এ-কার এর ব্যবসা আছে এবং ৫ বছর ধরে সুনামের সাথে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এখন ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে বা অন্য কোন ব্যবসা করতে ইচ্ছুক হওয়ার কারণে রহিম সাহেব উক্ত ব্যবসাটি করিম সাহেবের কাছে বিক্রয় করে দিলেন।
এখন যে ব্যক্তিটি এই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ক্রয় করলেন সে তো ইচ্ছা করলে নতুন করেও একটি রেন্ট-এ-কার ব্যবসা চালু করতে পারতেন। কিন্তু সে রহিম সাহেবের ব্যবসাটিই কেনো ক্রয় করলেন জানেন? কারণ, নতুন করে ব্যবসা শুরু করলে ঐ ব্যক্তির নতুন করে গ্রাহক সংগ্রহ করতো হতো, যেটা এখন আর প্রয়োজন হবে না। কারণ, রহিম সাহেব ৫ বছরে যে পরিমাণ গ্রাহক এবং সুনাম অর্জণ করেছেন সেটির সুফল ভোগ করার পাশাপাশি ঐ ব্যক্তি চাইলে ব্যবসাটিকে আরো বেশি উন্নত করতে পারবেন।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার পেছনেও একজন এসইও এক্সপার্টের ঠিক একই ধরনের মানসিকতা কাজ করে। কারণ, যারা এসইও করেন, তারা খুব ভালো করেই জানেন যে সার্চ ইঞ্জিন কোন সাইটকে র্যাংক করার জন্য সবচেয়ে বেশি যে ৩টি বিষয়কে প্রাধান্য দেয় তা হলো ডোমেইনের বয়স, ডোমেইন অথরিটি এবং এর ব্যাকলিংক প্রোফাইল। আর এগুলি অর্জণ করা অনেক সময় সাপেক্ষ ব্যাপার। যার কারণে যে কোন ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংক করতে অনেক সময় নিয়ে নেয়।
সবচেয়ে মজার বিষয় হলো ব্যতিক্রম কিছু বিষয় ছাড়া কোন ডোমেইন এক্সপায়ার হয়ে গেলেও এর বয়স, অথরিটি বা ব্যাকলিংক প্রোফাইলের পরিবর্তন হয় না। যার ফলে ডোমেইন যিনি কিনবেন, তার সময় ও পরিশ্রম ২টাই অনেক কমে যাবে। আর এই কারণে এই ধরনের ডোমেইনগুলি এত বেশি জনপ্রিয়।
অনেকে আবার এই ডোমেইনগুলি খুঁজে বের করে পরে আবার সেটি বেশি দামে বিক্রয় করে থাকেন। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে একটি সুন্দর নাম এবং ভালো প্রোফাইল থাকলে সেটি অনেক বেশি মূল্যে বিক্রয় করা খুবই সহজ কাজ। আমি এমন অনেক মানুষকে চিনি যারা ডোমেইন কেনা বেচাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। আপনিও চাইলে ডোমেইন নেম কেনা-বেচা করে আয় করার উপায় জেনে নিতে পারেন।
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনার অসুবিধা:
উপরের উদাহরণের সূত্র ধরেই বলি, করিম সাহেব রহিম সাহেবের ব্যবসাটি কিনে লাভবান এ কারণে হয়েছিলেন কারণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি সুনামের সাথে ব্যবসা করেছে। কিন্তু যদি এমন হতো যে, রহিম সাহেব ব্যবসায়ী হিসেবে খুবই খারাপ ছিলেন এবং তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কেউ সেবা নিতো না। তাহলে কিন্তু গোটা ব্যপারটাই বদলে যেতো। করিম সাহেব ঐ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি কিনে কোন লাভ করতে পারতেই না।
অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যারা সচল থাকা অবস্থায় গুগল, ইয়াহু সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের চোখে স্প্যামার হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। আবার অনেক ওয়েবসাইটে দেখা যায় তাদের ডোমেইনে যে-সব ব্যাকলিংক এসেছে তার মধ্যে অনেকগুলাই গ্যাম্বলিং বা অ্যাডাল্ট সাইট থেকে।
এ-সব ডোমেইন কিনলে কোন ধরনের লাভ তো আপনি পাবেনই না, উল্টো সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার ওয়েবসাইটও যে খুব তাড়াতাড়ি পেনাল্টি খাবে, এটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। ফলে, আপনার সমস্ত বিনিয়োগ এবং পরিশ্রম বৃথা চলে যাবে শুধুমাত্র একটি ডোমেইনের কারণে।
প্রতিটি ব্যবসাতেই কম বেশি ঝুঁকি থাকে। এটিও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে, বুদ্ধিমান তারাই যারা এই ঝুঁকি নিয়েও নিজেদের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে এমন সব ডোমেইন খুঁজে বের করনে যা সব ধরনের ত্রুটিমুক্ত। এগুলি চেনার বেশ কিছু উপায় এসইও এক্সপার্টরা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন।
উপরে যে-সব বিষয় নিয়ে কথা বললাম, আমি জানি সেগুলি পড়ে অনেকেই দ্বিধায় ভুগছেন যে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কেনা উচিৎ হবে নাকি হবে না। আমি বলবো, আপনি যদি সময় ব্যয় করে একটি ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন কিনে নিতে পারেন, তাহলে অবশ্যই সেটি কেনা উচিৎ।
দ্রুত সময়ে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পাতায় জায়গা করে নেওয়ার জন্য এর চেয়ে ভালো পদ্ধতি অনেক কমই আছে। এখন প্রশ্ন আসে কিভাবে চিনবেন যে কোনটি কেনা উচিত আর কোনটি কেনা উচিত নয়? চিন্তার কোন কারণ নেই, ভালো মানের এক্সপায়ার্ড ডোমেইন খুঁজে বের করার সবগুলো কিলার টিপস্ নিয়ে খুব শিঘ্রই আমরা হাজির হবো। সে পর্যন্ত চোখ রাখুন হৈচৈ বাংলার পাতায়।
আকাশ গোলদার says
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন সম্পর্কে অনেক ভাল তথ্য দিলেন। যারা এই ধরণের ডোমেইন কিনতে চান, তাদের জন্যে অত্যন্ত সহায়ক একটি লেখা যেখান থেকে এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের সুবিধা যেমন জানা যাবে, তেমনি জানা যাবে এর অসুবিধাগুলো সম্পর্কেও।
bangla subtitle says
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। গুগল সার্চ রেজাল্টে দ্রুত র্যাংক পেতে এক্সপায়ার্ড ডোমেইন দিয়ে ওয়েবসাইট শুরু করা একটি কার্যকরী কৌশল। তবে, এর কিছু নেগেটিভ দিকও রয়েছে যা লেখক খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন। মোট কথা, এক্সপায়ার্ড ডোমেইন সম্পর্কে দারুণ কিছু তথ্য দিয়ে সাজানো এই লেখাটি আমার খুব ভাল লেগেছে।
MD Sohan says
আমি আগে এই তথ্যগুলো জানতাম না যে Expired ডোমেন এই সমস্যা। আজকে আপনার আটিকেল পড়ে জানলাম, ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের এক্সপায়ার্ড ডোমেইনের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর জন্য।
Md Gulam Rabbi says
এক্সপায়ার্ড ডোমেইন সম্পর্কে খুব বেশি জানা ছিল না, তবে জানার আগ্রহ ছিল। এই লেখাটি পড়ে বিস্তারিত জানলাম যা আমার জানার কৌতুহল মিটিয়েছে, তাই ধন্যবাদ লেখককে।