অপারেটিং সিস্টেম শব্দটি সম্পর্কে আমরা সবাই পরিচিত। আর এই পোস্টটি যিনি পড়ছেন, আপনিও কোন না কোন ও. এস. (অপারেটিং সিস্টেম) এর মাধ্যমেই পোস্টটি দেখতে পাচ্ছেন। তাই বলা যায়, আমরা সকলেই ও. এস. ইউজার। আসলে এই ও. এস. দু’ভাবে ব্যবহার করা যায়।
- জি ইউ আই (গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেজ)
- সি এল আই(কমান্ড লাইন ইন্টারফেজ)
প্রথমটি আমরা সকলেই ব্যবহার করি কিন্তু দ্বিতীয়টি নিয়ে খুব কম মাথা ঘামাই আমরা। আসলে এই দুটি পদ্ধতিই খুব গুরুত্বপূর্ণ, যদি আপনি প্রোগ্রামার বা ঐ জাতীয় কোন পেশায় যেতে চান। আর সাধারণ ইউজারদের জন্য কম্পিউটার ইউজিং এ এটি একটি অন্যরকম মাত্রা যোগ করবে।
বিশ্বে অনেক ধরনের অপারেটিং সিস্টেম প্রচোলিত রয়েছে, যেমনঃ উইন্ডোজ, ম্যাক, লিনাক্স। যেহেতু উইন্ডোজ, এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়, তাই উইন্ডোজের কমান্ড লাইন ইন্টাফেজ নিয়ে আলোচনা করছি। উইন্ডোজের কমান্ডগুলো কমান্ড প্রোমটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়।
এর আগে আমরা উইন্ডোজের ২৩টি প্রয়োজনীয় কমান্ড প্রোমট সম্পর্কে জেনেছিলাম। আজ আরো ১০টি দরকারি কমান্ড প্রোমটের কমান্ড সম্পর্কে জানবো।
FC :
কিছু প্রয়োজনীয় ফাইল থাকে যাদের ভার্সন ক্রমাগত পরিবর্তণ হয়। যার ফলে ভেতরের কন্টেন্টও পরিবর্বিত হয়। কিছু ক্ষেত্রে এই পরিবর্তণ খোজা দুষ্কর হয়ে উঠে। এই কাজটি করার জন্য আমরা FC-কমান্ড পরিচালনা করতে পারি। এই কমান্ডের দুটি অপশন রয়েছে। যথাঃ
- a – অ্যাসকি ফরম্যাটে ফাইলের তুলনা করে।
- b – বাইনারি ফরম্যাটে ফাইলের তুলনা করে।
IPCONFIG:
ইন্টারনেট আমরা প্রাই সকলেই ব্যবহার করি। ধরুন, কোন এক গুরুত্বপূর্ণ কাজের সময় ইন্টারনেটের সমস্যা হলো, আর এটি খুব বেদনাদায়ক। তাই সমস্যাটা দ্রুত সমাধান করা লাগে। এখানে ipconfig -কমান্ডটি খুব কার্যকর। কারণ, এটি আপনাকে আপনার নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিবে।
NETSTAT:
ইন্টারনেটে কাজ করার সময় আমাদের অজান্তে কিছু থার্ড পার্টি আপ্লিকেশন চালু হয়ে যায়। আর এগুলো নেটের ধীর গতি, হ্যাকিংসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের নেটওয়ার্কে কি কি থার্ড পার্টি আপ্লিকেশন চালু আছে, তা দেখা লাগতে পারে যা আমরা NETSTAT – কমান্ডের মাধ্যমে দেখতেপারি। এটি মূলত সক্রিয় টিসিপি যাচাই এর মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন হয়।
PING:
নেটওয়ার্ক বিশ্লেষকের জন্য কমান্ডটি খুবই সহায়ক। যে-কোনো কাঙ্ক্ষিত সার্ভারের সাথে প্যাকেট যোগাযোগ যাচাই করার ক্ষেত্রে খুব ভাল মাপের একটি কমান্ড হচ্ছে Ping। এটি প্যাকেট সমূহের গন্তব্যে পৌছানোর সময় দেখিয়ে দেয় যা দুর্বল নেটওয়ার্ক সনাক্তকরণেও সাহায্য করে। উল্লেখ্য, প্যাকেট হচ্ছে নেটওয়ার্কিং জগতে ডাটাসমূহের ক্ষুদ্রতম একক।
SHUTDOWN:
কমান্ড দেখেই বুঝতে পারছেন এর কাজ কি হতে পারে। হাঁ, আপনি ঠিকই ভেবেছেন, এর মাধ্যমে আপনি আপনার কম্পিউটারকে বন্ধ করতে পারবেন। কিন্তু এটি তো আপনি সাধারণ জি ইউ আই (গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেজ) দিয়েই করতে পারতেন, কমান্ডের কি প্রয়োজন ছিল? মুলত ব্যাচ স্ক্রিপ্ট লেখবার কাজে কমান্ডটি ব্যবহার করা হয়। আবার এর বিভিন্ন অপশন আপনাকে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করতে সাহায্য করবে।
কমান্ডের দুটি অপশন এখানে উল্লেখ করা হলো।
- i -বন্ধ হবার সময় একটি পপ আপ দেখাবে, যেখানে বন্ধের সময়সহ আরও অনান্য ফিল্ড আছে।
- s – এর মাধ্যমে কম্পিউটারটি সরাসরি বন্ধ হয়ে যাবে।
SYSTEMINFO:
কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার যেমনঃ নেটওয়ার্ক কার্ড, মাদারবোর্ড, প্রসেসর সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য দেখাবে। আবার আপনি কোন ও.এস আর্কিটেকচার (৩২/৬৪ বিট) ব্যবহার করেন, তা এখান থেকে দেখে নিতে পারবেন।
SFC:
যদি আপনার কম্পিউটারের সিস্টেম ফাইল কোন ভাইরাস দ্বারা বিনষ্ট হয়, তবে তা আপনি SFC কমান্ডের মাধ্যমে যাচাই করতে পারবেন। যদি সেই ফাইলে কোন খন্ডতা দেখা যায়, তবে এটি তার ব্যাকআপ ফাইলের মাধ্যমে ফাইলটির অখন্ডতা ফিরিয়ে দিবে। এই কমান্ডের কিছু অপশন রয়েছে তা দেখে নেয়া যাক।
কমান্ডটি পরিচালনা করার জন্য কমান্ড প্রোমটটি “run as administrator” মাধ্যমে চালু করতে হবে।
- VERIFYONLY – খন্ডতা যাচাই করবে কিন্তু সংশোধন করবে না।
- SCANFILE – খন্ডতা যাচাই করবে কিন্তু সংশোধন করবে।
- VERIFYFILE – খন্ডতা যাচাই করবে কিন্তু সংশোধন করবে না।
- OFFLOGFILE – স্ক্যান করা ফলাফলের লগ ফাইল সংরক্ষণ করার জন্য প্যাথ নির্দিষ্ট করবে।
DIR :
কমান্ডটির মাধ্যমে আপনি আপনার বর্তমান ডিরেক্টরিতে থাকা সব ফাইল সম্পর্কে বিস্তারিত দেখতে পারবেন। যেমনঃ ফাইলের নাম, ফাইলটি তৈরির সময়, ইত্যাদি।
CD :
এর মাধ্যমে এক ডিরেক্টরি থেকে আর এক ডিরেক্টরিতে যাওয়া যায়। কমান্ডের পর দুটি ডট ব্যবহার করে প্যারেন্ট ডিরেক্টরিতে আসা যায় অর্থ্যাৎ ব্যাক বাটনের কাজ করে।
COLOR:
কমান্ড প্রোমটের রং পরিবর্তন করার কাজে আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন।
উপরুক্তে ব্যবহৃত কমান্ডসমূহ খুবই সাধারণ কিছু কমান্ড হলেও বহুল ব্যবহৃত এবং শক্তিশালী। আশা করি, আপনারা আপনাদের কম্পিউটারে কমান্ডগুলো প্রয়োগের চেষ্টা করবেন। বলা বাহুল্য, কমান্ডগুলোর আরও অনেক অপশন আছে। পোস্টটি সাধারণ রাখার খাটিরে বেশি গভীরে আলোচনা করিনি।
এই কমান্ডগুলো ছাড়াও আরও অনেক কমান্ড রয়েছে, যা আপনাদের বিভিন্ন জটিল কাজকে সহজ করে দিবে। যে-কোনো কমান্ড সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে বিস্তারিত জানতে কমান্ডগুলোর পাশে ‘help’ শব্দটি লিখতে পারেন। আর প্রয়োজনে গুগল মামা তো আছেই, তার সাহায্য নিবেন অবশ্যই। আপনার মুল্যবান মতামত আমাকে পরবর্তীতে লিখতে উৎসাহ যোগাবে।
Leave a Reply