লাইফ ইন্সুরেন্স সম্পর্কে অনেকেই জানেন, আবার অনেকই ভালভাবে জানেন না। যারা জানেন তারা হয়তো এর গুরুত্ব বোঝেন এবং নিজেদের জন্যে জীবন বীমা করে রাখেন। যারা এই বীমা সম্পর্কে বিস্তারিত জানেন না, তাদের জানাটা দরকার। জানলেই গুরুত্ব বুঝবেন এবং এর থেকে সুবিধা নিতে পারবেন। তাই, আজ এ বিষয়টি নিয়ে, লাইফ ইন্সুরেন্সের ইন-আউট সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
লাইফ ইন্সুরেন্স কি?
লাইফ ইন্সুরেন্স হচ্ছে ইন্সুরেন্স কোম্পানী ও একজন ইন্সুরেন্স গ্রাহকের সঙ্গে এমন একটি আইন সন্মত চুক্তি যা উভয় পক্ষকেই লাভবান করে। এ ধরণের চুক্তি থেকে ইন্সুরেন্স কোম্পানী লাভবান হয় চুক্তি অনুযায়ী গ্রাহকের কাছ থেকে মাসিক কিংবা বাৎসরিক একটা নির্দিষ্ট অংকের অর্থ পেয়ে। এই অর্থ কোম্পানী তাদের ব্যবসায়িক কাজে লাগিয়ে আরো বাড়িয়ে তুলতে পারেন।
অন্যদিকে একজন গ্রাহকের লাভ হচ্ছে মৃত্যুর পর তার পরিবার বীমা কোম্পানির কাছ থেকে একটা নির্দষ্ট পরিমাণ টাকা পেয়ে থাকেন। এতে গ্রাহকের উত্তরাধিকারী জীবন-চলার একটা আর্থিক নিশ্চয়তা পেয়ে থাকে। অনেক সময় গ্রাহক মৃত্যুর আগেও ইন্সুরেন্স কোম্পানীর কাছ থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হয়ে থাকেন। এটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঘটে থাকে গ্রাহক যখন মারাত্মক অসুস্থ্য হন। তবে, এ বিষয়টি চুক্তির মধ্যে উল্লেখ্য থাকতে হয়।
কোম্পানী এবং গ্রাহকের মাঝে গৃহিত এই চুক্তিকেই লাইফ ইন্সুরেন্স বলা হয়ে থাকে। এ চুক্তি একজন ব্যক্তির মাঝে কিংবা একদল ব্যক্তির মাঝে হতে পারে। অর্থাৎ, সিঙ্গেল ইন্সুরেন্স কিংবা গ্রুপ ইন্সুরেন্স। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লাইফ ইন্সুরেন্স ইনকাম ট্যাক্স ফ্রি হয়ে থাকে। আমাদের দেশের প্রধান ২টি সরকারি ইন্সুরেন্স কোম্পানী রয়েছে যেগুলোর বেশিরভাগ স্কিমই ট্যাক্স-ফ্রি।
লাইফ ইন্সুরেন্স কেন করবেন?
আপনি কি আপনার ফ্যামিলিকে সাপোর্ট করতে চান, এমনকি যখন আপনি বেঁচে থাকবেন না, তখনো? কখন এবং কেন আপনি একটি লাইফ ইন্সুরেন্স বা জীবন বীমা করবেন? আপনার কি আসলেই বীমা করা ভীষণ দরকার? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এবং কেন আপনার জীবন বীমা করা দরকার তা জানতে পড়ে যেতে থাকুন…….
আপনার কি তখনই লাইফ ইন্সুরেন্স দরকার যখন আর কোন অবলম্বণ না থাকে?
হ্যাঁ, এটা সত্যি যে যখন আপনার আর কোনও অবলম্বণ না থাকে, তখনই একটি জীবন বীমা হতে পারে আপনার শেষ জীবনের অবলম্বণ। যেমন, আপনাদে স্বামী-স্ত্রী’র কোনও সন্তান-সন্তুতি নেই আর আপনাদের মধ্যে যখন একজন মারা যাবেন, তখন অন্যজনের জীবন ধারণের অবলম্বণ কি হবে? হুম, তখন আপনাদের করে রাখা বীমাই হতে পারে একাকী জীবন যাপনের দারুণ অবলম্বণ।
আবার, এ রকম অনেক উদাহরণ রয়েছে যে, অবলম্বণ থাকলেও জীবন বীমা অনেকের জীবনের জন্যেই অন্যান্য নানা কারণে অত্যন্ত দরকারি। আসুন, সেগুলো সম্পর্কে অল্প বিস্তর জানা যাক-
পারিবারিক জীবন শুরু
আপনি যদি সিঙ্গেল লাইফ থেকে সদ্য বেরিয়ে গিয়ে থাকেন অর্থাৎ পারিবারিক জীবন শুরু করে দিয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্যে জীবন বীমা প্রয়োজন। কারণ, আপনি যখন বয়স্ক হবেন, তখনকার জীবন বীমা এখনকার চেয়ে অনেক সস্তা হয়ে যাবে।
সুতরাং, বেশি বয়সে বীমা করলে খুব বেশি লাভবান হবেন না। আপনার সন্তান-সন্ততি হবে, পরিবার বড় হবে এবং আপনার ব্যয় বাড়বে। সুতরাং, বৃদ্ধ বয়সে যাতে আপনাকে সন্তানদের চিন্তায় পেরেশান হতে না হয়, সেজন্য বীমা করে রাখতে পারেন। এতে শেষ বয়সে আপনি পরিবারের সদস্যদের জীবন-যাপনের খরচ নিয়ে অনেকটাই নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন।
নির্ভরশীল পরিবার
আপনার পরিবারটি যদি এমন হয়ে থাকে যার সদস্যরা আপনার উপরই নির্ভরশীল, তবে আপনার লাইফ ইন্সুরেন্স প্রয়োজন। কারণ, গোটা পরিবার চালাতে গিয়ে শেষ বয়সে আপনি অনেকটই নি:স্ব থাকতে পারেন। তখন, এখনকার করা জীবন বীমা আপনাকে শান্তিতে রাখবে।
আপনি যদি তরুণ ও সিঙ্গেল হয়ে থাকেন
আপনি যদি সিঙ্গেল হয়ে থাকেন অর্থাৎ বিয়ে শাদি নিয়ে তেমন ভাবনা না থাকে, তবু আপনাকে কিছু বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। বিশেষত আপনার বৃদ্ধ বাবা মা’র কথা। বৃদ্ধ বয়সে তাদের ভালভাবে দেখা-শুনা করা, উন্নত মানের চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ নানা কারণে তরুণ বয়সেই আপনি একটি জীবন বীমা করে রাখতে পারেন।
এমন আরো অনেক কারণ রয়েছে যেগুলোর জন্যে আপনার অবশ্যই লাইফ ইন্সুরেন্স করা দরকার। সবগুলো নিয়ে এই ছোট্ট পরিসরে আর আলোচনা করলাম না। আশা করি, ছোট এই লেখাটি থেকেই আপনি জীবন বীমার গুরুত্ব অনুধাবন করেছেন।
MD Tanvir islam says
লাইফ ইন্সুরেন্স নিয়ে লাক্সারিয়াস একটা পোস্ট যা থেকে জানা যায় এ সম্পর্কিত সবকিছুই।
জেসিকা জেসমিন says
ধন্যবাদ, তানভীর ইসলাম ভাই। আপনার মন্তব্য আমাদের লেখকদের উৎসাহিত করছে। আমিও নিজেও এই সাইটের একজন লেখিকা। চাইলে আমার দু’একটা লেখাও পড়ে দেখতে পারেন।