বিবিএ সময়ের চাকরীর বাজারে যেন সোনার হরিণ। বর্তমান বাজারে এর চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়েই বিবিএর জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট আছে। যারা বিবিএ নিয়ে পড়তে চায়, তারা যে কোন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পড়তে পারে।
কিন্তু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দের ক্ষেত্রে অনেকেই দিশেহারা হয়ে যায়। আসলে কোন বিশ্ববিদ্যালয়টি ভাল আর কোনটি খারাপ, সেটা বোঝা অনেক সময়ই একটু কঠিন হয়। তাই বিবিএ নিয়ে পড়ার জন্যে দেশের সেরা কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
যুগের সাথে মানুষের চাহিদারও পরিবর্তন ঘটছে। বর্তমানে দেশের বেশিরভাগ চাকুরীই ব্যবসা বাণিজ্য ভিত্তিক। তাই বিজনেস বিষয়ে পড়াশোনার জন্য শিক্ষার্থীর পরিমাণও দিন দিন বেড়েই চলছে। শিক্ষার্থীদেরকে সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে পড়াশোনা করানোর ক্ষেত্রে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ অবস্থান থেকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফলে শিক্ষার্থীরা এখন কেবল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কেই তাদের একমাত্র লক্ষ্য হিসাবে নিচ্ছে না বরং পাবলিকের পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকেও টার্গেট হিসাবে দেখছে। অনেকেই আবার দেশে থেকেই অনলাইনে বাইরের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ডিগ্রি নিচ্ছেন। আপনিও যদি চান, তবে জেনে বিশ্বের যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনলাইনেই বিবিএ ডিগ্রি নিতে পারেন।
এজন্য দেশের বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজনেস বিষয়ে আলাদা বিবিএ ডিপার্টমেন্ট খোলা হচ্ছে। তাই আজকে আমি আপনাদেরকে এমন ১০টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বলব যেখানে বিবিএ নিয়ে পড়তে পারেন।
তাহলে, চলুন আর দেরী না করে জেনে নেয়া যাক সেরা দশটি বিবিএ নিয়ে পড়ার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে।
বিবিএ নিয়ে পড়ার প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়
এর আগে আমরা মেডিকেলে পড়ার জন্যে দেশের সেরা ৭টি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আপনাদের মোটামুটি ধারণা দিয়েছিলাম। অনেকের কাছেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগে থেকেই পরিচিত হলেও হঠাৎ করে সবগুলোর নাম মনে থাকে না। তাই, এক জায়গায় এক সাথে প্রায় সবগুলো পাবলিক মেডিকেল কলেজের তথ্য পেয়ে খুশি হয়েছেন সবাই। আশা করি, এবার বিবিএ নিয়ে পড়ার জন্যে সেরা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলো সম্পর্কে জেনেও আপনারা খুশি হবেন।
North South University (NSU)
প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে এটি হল প্রথম যার বিবিএ ডিপার্টমেন্ট অনেক নামকরা। এটি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিষ্ঠা করা হয় যাতে করে জ্ঞান বিজ্ঞান দেশের সকল মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে পারে।
বিবিএ পড়ার জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি দারুণ চয়েস হতে পারে। কারণ এখানের বিবিএ ডিপার্টমেন্টের আছে সকল প্রকার সুযোগ সুবিধা। পাবলিক ভার্সিটির পর এই বিশ্ববিদ্যালয়কেই সবার উপরে রাখা যায়।
BRAC University (BRACU)
এই বিশ্ববিদ্যালয়টিও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতেই আছে। মেধা এবং সৃজনশীলতা দিয়ে দেশের উন্নয়ন আরোও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে এই বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের মতোই আছে বিবিএর জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট। চার বছর মেয়াদী এই কোর্সেও বিবিএ সম্পর্কিত সকল বিষয়ে পড়ানো হয়ে থাকে। তাছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সেমিষ্টার ভিত্তিতেই পড়ানো হয়ে থাকে।
East West University (EWU)
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় এটি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে অত্যন্ত সুন্দর একটি ক্যাম্পাস। বিবিএ পড়তে চাইলে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি আপনার পছন্দের তালিকায় রাখতে পারেন।
১৯৯৬ সালে ইউজিসির পারমিশনে চালু হওয়া এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বর্তমানে দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সম্মানের সাথেই কাজ করে যাচ্ছে। অনেকেই এখান থেকে স্কলারশিপ নিয়ে বাইরে দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাচ্ছে।
Independent University, Bangladesh (IUB)
১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নিজের অবস্থান করে নিয়েছে। এখানের একাডেমিক সুযোগ সুবিধা, শিক্ষক, ল্যাব ফ্যাসিলিটি অত্যন্ত ভাল। বিবিএ পড়ানোর জন্য আছে দক্ষ শিক্ষকগণ। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয় বিবিএ পড়ার জন্য হতে পারে আপনার প্রথম চয়েস।
বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে ৭০৫০ জন শিক্ষার্থী। তাছাড়া তাদের আগের ব্যাচে আছে প্রায় ১০৪৫৫ জন শিক্ষার্থী। মোটামুটিভাবে বলা যায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সফল ব্যাচের সংখ্যাও কম না। প্রত্যেক বছর ১০% করে শিক্ষার্থী বাড়ছে।
American International University-Bangladesh (AIUB)
এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে শিক্ষার্থীদের সব ধরণের ফ্যাসিলিটি দিচ্ছে। যদিও এই বিশ্ববিদ্যালয় শুরু থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনার জন্য অনেক খ্যাতি অর্জন করেছে কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ডিপার্টমেন্টও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে কোন অংশে কম না।
এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ পড়ে বের হওয়া অনেক শিক্ষার্থীই এখন দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দক্ষতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
United International University (UIU)
টিচিং, লার্নিং এবং রিচার্স এই তিন ক্ষেত্রেই এই বিশ্ববিদ্যালয় অনেক খ্যাতি অর্জন করেছে। বিবিএ পড়ার জন্য দেশের নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও অনেক এগিয়ে যাচ্ছে।
আর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম সারির দিকে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি অন্যতম।
Ahsanullah University of Science and Technology (AUST)
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দিক থেকে সবচেয়ে বেশি থাকা এই বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে সায়েন্সের সাবজেক্টগুলো ছাড়াও অন্যান্য দিকেও একই সাথে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএও কোন অংশে কম নয়।
আপনার যদি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিবিএ পড়ার ইচ্ছা থাকে, তাহলে Ahsanullah University of Science and Technology (AUST) কে রাখতে পারেন আপনার পছন্দের তালিকায় সবার উপরে।
International University of Business Agriculture and Technology (IUBAT)
দেশের অর্থনীতি এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তিতে ভুমিকা রাখতে ১৯৯১ সাল থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রা। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠা কাল থেকেই এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সকল সুযোগ সুবিধা দিয়ে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও সর্বদা শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করে আসছে।
Daffodil International University (DIU)
২০০২ সালের জানুয়ারী থেকে শুরু হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা। বিশ্ববিদ্যালয়টি মূলত বিজ্ঞান প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নিজেদের এগিয়ে রাখলেও অন্যান্য বিষয়ে কিন্তু তারা খুব একটা পিছিয়ে নেই।
তাই বিবিএ নিয়ে পড়াশোনার জন্য এই Daffodil International University হতে পারে আপনার প্রথম চয়েস। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই পড়াশোনা করে অনেকেই স্কলারশিপ নিয়ে এখন বাইরের কাজ করছে।
Bangladesh University of Business and Technology (BUBT)
বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি ব্যবসা শিক্ষাকেই অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য সাবজেক্ট নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বিবিএ নিয়ে পড়াশোনার সব ফ্যাসিলিটি আছে।
আশা করি, এই আর্টিকেল থেকে আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টি বেছে নিতে সক্ষম হয়েছেন যেখান থেকে বিবিএ করতে পারেন। কোন প্রশ্ন কিংবা সমস্যা থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন, চেষ্টা করব এই সব বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে আপনার যে কোন প্রশ্নের উত্তর দেয়ার। আর আপনার পরিচিত কেউ যদি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার জন্যে দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানতে চায়, তবে এর আগে প্রকাশিত আমাদের এই লেখাটি তার সঙ্গে শেয়ার করতে পারেন।
Leave a Reply