ইমরুল ও সাইফুদ্দিন এর দূর্দান্ত দুটি ইনিংসে ভর করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২৮ রানের এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি মোর্তজা।
টপঅর্ডারের পুরনো রোগটি আজও বাংলাদেশকে ভুগিয়েছে। এক ইমরুল কায়েস বাদে টপঅর্ডারের বাকিরা আউট হয়েছেন দ্রুতই। লিটন দাস টেন্ডাই চাতারাকে তুলে মারতে গিয়ে শর্ট লং-অনে জোয়াউ এর তালুবন্দি হন।
অভিষিক্ত ফজলে রাব্বি অবশ্য বেশ ভাল একটি ডেলিভারীতেই নিজের উইকেট হারিয়েছিলেন। এরপর মুশফিকুর রহিম ১৫ রান করে ফিরে গেলে মোহাম্মদ মিঠুনের সাথে জুটি গড়েন ইমরুল কায়েস। দুজনে জুটিতে এক সময় ৩০০ রানের প্রবল সম্বাবনা তৈরী হয়েছিল। কিন্তু কাইল জারভিসের হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে মিঠুন উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলে সম্ভাবনাময় জুটিটির অপমৃত্যু ঘটে।
খুব দ্রুত প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন মাহমুদুল্লাহ ও মেহেদি মিরাজ। ১৩০-৩ থেকে বাংলাদেশ ১৩৯-৬ হয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যেই। তখন ২০০ পার করা নিয়েই শঙ্কা জেগেছিল।
সাইফুদ্দিন উইকেটে এসেই থিতু হতে সংগ্রাম করছিলেন। একপর্যায়ে ক্যাচও দিয়ে বসেছিলেন। কিন্তু ভাগ্যগুণে বেঁচে গিয়েছিলেন। এরপর সাইফুদ্দিন আর ভুল করেননি।
অভিজ্ঞ ইমরুলের সাথে যোগ দিয়েছিলেন ইনিংস গড়ার কাজে। দুজনের জমাট জুটিতে বাংলাদেশ ক্রমশ ধ্বংসস্তুপ থেকে বড় সংগ্রহের দিকে এগোতে থাকে।
এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের ৩য় সেঞ্চুরি পেয়ে যান ইমরুল কায়েস।
সেঞ্চুরি করার পর সদ্য পৃথিবীতে আসা সন্তানকে মনে করে “ক্রিস গেইল বেবি সেলিব্রেশন” করেছিলেন। বস্তুত ক্রিস গেইলই প্রথম এভাবে উদযাপন করা শুরু করেছিলেন বলে এই সেলিব্রেশনের এমন নাম।
থিতু হয়ে এক সময় হাত খুলতে শুরু করেন দুজনেই। একের পর এক চার-ছক্কায় রান আসতে থাকে তুমুল গতিতে। এক ইনিংসে বাংলাদেশ এত ছক্কা আগে কখনো মেরেছিল কিনা তা জানতে রীতিমতো পরিসংখ্যানের সাহায্য নিতে হবে। খুব দ্রুত বাংলাদেশ ২৫০ রানও পেরিয়ে যায়।
ইমরুল কায়েসই ঝড় তুলেছেন বেশী। শেষ পর্যন্ত জারভিসের বলে মুরের ক্যাচ হওয়ার আগে করেন ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ১৪৪ রান। ১৪০ বলে ১৩ চার ও ৬ ছক্কায় গড়া ইমরুলের ইনিংটি যৌথভাবে কোন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানের ২য় সর্বোচ্চ ইনিংস।
সাইফুদ্দিনও নিজের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ৫০ রান করে আউট হন।
নির্ধারিত ৫০ ওবার শেষে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ৮ উইকেটে ২৭১ রান। জিম্বাবুয়ের পক্ষে জরভিস নেন ৪ উইকেট।
২৭২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুটা দূর্দান্ত হয়েছিল জিম্বাবুয়ের। তবে ৪৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর পথ হারাতে শুরু করে তারা।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর ফলে খুব দ্রুতই ম্যাচ থেকে ছিটকে যাচ্ছিল জিম্বাবুয়ে। তখনই হাল ধরার চেষ্টা করেন উইলিয়ামস ও পিটার মুর। কিন্তু মিরাজের শিকার হয়ে মুর ফিরে যাওয়ার পরই ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় জিম্বাবুয়ে।
এরপর বাকি সময় জুড়ে জিম্বাবুয়ে হারের ব্যবধান কমানোর দিকেই মনোযোগ দেয়।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন উইলিয়ামস। মিরাজ ৩ উইকেট আর ম্যাচজুড়ে দারুণ বোলিং করা নাজমুল ইসলাম নেন দুই উইকেট।
ম্যান অব দ্যা ম্যাচ হন ইমরুল কায়েস (১৪৪ রান)
Leave a Reply