একজন সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেম করাটা নিঃসন্দেহে যে কোন ছেলের জন্য ভাগ্যের ব্যাপার। পাশাপাশি সে যদি সুন্দর চেহারার সাথে সাথে সুন্দর মনেরও অধিকারী হয়, তাহলে ব্যাপারটা যেন একেবারে সোনায় সোহাগা। বেশিরভাগে ক্ষেত্রে ছেলেদেরকেই প্রেম করতে বেশি আগ্রহ পোষণ করতে দেখা যায়। অর্থাৎ মেয়েদের তুলনায় ছেলেরাই তাদের জন্য সঙ্গী নির্বাচন করা, তাদেরকে প্রেমের প্রস্তাব দেওয়া এবং তাকে পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রচেষ্টায় এগিয়ে থাকে।
একজন ছেলে হিসেবে আপনি কোনও মেয়েকে পছন্দ করবেন এবং আপনার মনের কথা তাকে জানাবেন এটাই স্বাভাবিক। একই সাথে যদি না সেই মেয়েটিও আপনাকে আগে থেকেই ভালোবাসে, তবে সে সাথে সাথেই আপনার প্রস্তাবে রাজী হবে না এটাও অতি বাস্তবিক।
মেয়েরা তাদের জীবনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণে অনেক বেশি সময় নেয়। হঠাৎ করেই আবেগের বশে তারা সিদ্ধান্ত নিতে চায় না। এ সময়টাতে ছেলেরা যথেষ্ট পরিমাণ ধৈর্য্যরে পরিচয়ও দেয় বটে। তাদের প্রিয় মানুষটি যতক্ষণ না তার ডাকে সাড়া দিচ্ছে, ততক্ষণ যেন কোনভাবেই হাল ছাড়তে চায় না ছেলেরা।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, একটি মেয়েকে পাওয়ার দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরেও তাকে আপন করে পাওয়া সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে ছেলেরা বিভিন্ন ধরনের হতাশায় ভোগে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের বিপথগামী হবারও অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। আমি ছেলেদের উদ্দেশ্যে বলবো যে, এ সময় আবেগের জোয়ারে ভেসে না গিয়ে একটু সময় নিয়ে ভাবুন যে, কেন মেয়েটি আপনার প্রস্তাবে রাজী হলো না?
আপনি প্রস্তাব করলেই যে তাকে রাজী হতে হবে এমন কোন শর্ত না থাকলেও রাজী না হওয়ার পেছনে অবশ্যই তার কোন ব্যক্তিগত কারণ থাকতেই পারে। তাই চলুন দেরী না করে জেনে নিই এমন সব মেয়েদের সম্পর্কে যাদের প্রেমের জালে আটকানো অনেক বেশি কঠিন।
বাস্তববাদী মেয়ে:
এ ধরনের মেয়েরা যে কোন কাজেই বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে পর্যালোচনা করে থাকেন। প্রেমের বিষয়টিও তার ব্যতিক্রম নয়। একটি ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ানোর বিষয়টা এখনও আমাদের সমাজ সেইভাবে মেনে নিতে পারে না। পাশাপাশি তিনি যদি কারো সাথে প্রেম করেও বসেন, তাহলে সেই ছেলেটি কতটুকু প্রতিষ্ঠিত এবং তার কাছে মেয়েটির ভবিষ্যতই বা কতটুকু নিরাপদ তা প্রথমেই পর্যালোচনা করে নেন।
যদি কোন কারণে তার মনে হয় যে, আপনার পক্ষে তাকে একটি নিরাপদ ভবিষ্যত উপহার দেওয়া সম্ভব না, তাহলে সে আপনার প্রস্তাবে কখনোই রাজী হবে না।
এ ধরনের মেয়েরা সাধারণত পরিবারের সিদ্ধান্তের উপর বেশি আস্থা রাখে। আপনি যদি এমন কোন মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেন, তাহলে প্রথমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করুন। তারপর আপনার অভিভাবক সমেত মেয়েটির বাড়ীতে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে চলে যান। আর না হলে মেয়েটিকে পাওয়ার আশা বাদ দিয়ে দিন।
উচ্চাকাঙ্খী মেয়ে:
এ ধরনের মেয়েরা সাধারণ প্রচন্ড পরিমানে আত্মবিশ্বাসী হয়ে থাকে। তারা তাদের ভবিষ্যতের লক্ষ্যকে পূরণ করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যান এবং এমন কোন কাজ করেন না যার ফলে তার মনোযোগ বিঘ্নিত হতে পারে। মেয়েটি যদি বর্তমানে শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন, তাহলে সে পড়াশোনাকেই নিজের একমাত্র কাজ হিসেবে বিবেচনা করেন। পক্ষান্তরে সে যদি কর্মজীবি হয়ে থাকে, তাহলে তার কাঙ্খিত পদে নিয়োগ না পাওয়া পর্যন্ত সে ক্ষান্ত হয় না।
প্রেমের বিষয়ে এ সব মেয়েরা মনে করেন যে, তারা যদি কোন ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান, তাহলে ছেলেটি কখনোই তার আশা-আকাঙ্খার মূল্যায়ন করবে না এবং তার লক্ষ্যের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। ফলে হয়তো তার এতদিনের কষ্ট পরিশ্রম সব জলাঞ্জলী দিয়ে দিতে হবে।
আপনি যদি এমন কাউকে মনে মনে ভালোবেসে থাকেন, তাহলে তার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করুন। তার সাথে কথা বলুন এবং তার স্বপ্ন পূরণে তাকে যথাসম্ভব সহায়তা করতে থাকুন। যখনই মেয়েটি এটা বুঝতে পারবে যে আপনি তার স্বপ্ন পূরণে আগ্রহী, তখন হয়তো সে নিজে থেকেই আপনার প্রেমে পড়ে যাবে।
ভীত মেয়ে:
আমরা এমন একটি সমাজে বসবাস করছি, যেখানে আজও নারীদের নিরাপত্তা পুরোপুরিভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। আমি সবার কথা বলবো না কিন্তু এমন অনেক মেয়েই আছেন যারা শৈশবে বা কৈশরে বিভিন্ন ছেলের দ্বারা সম্পর্কে প্রতারিত হন। ফলে পুরুষ জাতির প্রতি তাদের মনে ঘৃণার সৃষ্টি হয়। এ ধরনের মেয়েরা সাধারণত ছেলেদের যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলে।
আপনি যদি এমন কারো প্রেমে পড়ে যান, তাহলে আমি বলবো যথেষ্ট পরিমাণ ধৈর্য্য নিয়ে তারপরই সামনের দিকে যান। কারণ মেয়েটি প্রথম পর্যায়ে আপনাকেও সেই একই দৃষ্টিতে দেখবে, যে দৃষ্টিতে সে আর দশজন পুরুষকে দেখে। আর এ বিষয়টা আপনার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে।
সুতরাং, এ ধরণের মেয়েদের ক্ষেত্রে প্রথমেই প্রেমের প্রস্তাব না দিয়ে মেয়েটির বিশ্বাস ও আস্থা অর্জনের দিকে মনোনিবেশ করুন। যখন সেটি অর্জন করে ফেলবেন, তারপরই নিজের মনের কথা খুলে বলুন।
একটি মেয়ে তার জীবন নিয়ে অনেক বেশি ভাবেন। তারা যে কোন কাজের ভবিষ্যত ফলাফল পর্যালোচনা করেই সামনে অগ্রসর হন। যদি কোন কাজে তাদের মনে হয় যে, এটির কোন ভবিষ্যত ফলাফল নেই, তবে সেই কাজে মেয়েটি কখনোই সাড়া দেবে না এটাই বাস্তব।
বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যানে সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য মাধ্যমে অনেক মেয়ের সাথেই পরিচিত হওয়া সম্ভব। এদের মধ্যে অনেক মেয়েরা ইন্টারনেটে বা বাস্তব জীবনে অনেকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এটা যেমন সত্য, তেমনি এমনও অনেক মেয়ে রয়েছেন যারা খুব সহজে প্রেম করতে চান না এটাও সত্যি। আপনি যাকে পছন্দ করে ফেলেছেন সে এই দুই শ্রেণীর কোন শ্রেণীতে পড়ে, এটা আগে ভালোভাবে বুঝুন, তারপর সামনের দিকে অগ্রসর হোন।
Leave a Reply