আমরা প্রত্যেকেই নিজস্ব ব্যক্তি স্বত্তা এবং সৌন্দর্য নিয়ে জন্মগ্রহণ করি। আমাদের সৌন্দর্যকে এবং শারীরিক অবয়ব আমাদের নিয়ন্ত্রণে না থাকলেও, স্থান, কাল, পাত্রভেদে সেটির সঠিক বহিঃপ্রকাশের মাধ্যমে আমরা নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারি। আকষর্ণীয় হওয়ার অর্থ শুধুই একটি সুন্দর মুখমন্ডলের অধিকারী হওয়া নয়। নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার ব্যপারটি ব্যক্তিত্ব, ফ্যাশনসহ আরো বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে।
প্রতিটি মানুষ, বিশেষ করে ছেলেরা কিভাবে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলা যায়, তা নিয়ে চিন্তা করে থাকে। আর প্রশ্ন যখন গার্লফ্রেন্ডের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার, সেখানে এই চেষ্টা বেড়ে যায় বহুগুণে।
ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি যে নিজের মধ্যে কিছু সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে যে কোন ছেলেই তার গার্লফ্রেন্ডের কাছে পূর্বের তুলনায় নিজেকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।
থট ক্যাটালগ নামের একটি অনলাইন পত্রিকা সম্প্রতি কিভাবে ছেলেরা মেয়েদের নিকট নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে তার উপর একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটিতে দেখা যায় যে, লেখক ছেলেদের আকর্ষণীয় হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে রুপ লাবণ্যের চাইতে ব্যক্তিত্ব, অবয়ব এবং অন্যান্য বিষয়গুলির উপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।
যদিও সেখানে এটি বলা হয় যে, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় অতি সহজেই নিজেদেরকে এভাবে সবার সামনে তুলে ধরতে পারে। তথাপি ছেলেদের জন্যেও রয়েছে এমন কিছু কার্য্যকরী টিপস্ যা তাকে তার গার্লফ্রেন্ডের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তুলবে।
তাই দেরী না করে চলুন জেনে নিই গার্লফ্রেন্ডের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার সেই গোপন টিপসগুলি।
পরিচ্ছন্নতা নিয়ন্ত্রণে রাখা:
নিজেকে আকর্ষণীয় করে তোলার সবচেয়ে সহজ এবং প্রাথমিক ধাপটি শুরু হয় নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার মধ্য দিয়ে। আপনি যদি সবসময় নিজেকে সতেজ এবং সুগন্ধময় হিসেবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হন, আপনার আশে-পাশের সব মানুষই আপনার প্রতি আকর্ষিত হবে এবং আপনার নিকটেই অবস্থান করতে চাইবে। আপনার গার্লফ্রেন্ডও তার ব্যক্তিক্রম নয়। নিজেকে সতেজ রাখার জন্য কিছু বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরী।
আপনার শরীর থেকে নির্গমনকারী ঘ্রাণ আপনার ব্যক্তিত্বকে অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করে। দুর্গন্ধময় কারো আশে-পাশে থাকা কারোরই পছন্দ নয়। আপনাকে অবশ্যই এবং সুগন্ধী কোন কিছু ব্যবহার করতে হবে যা আপনার শরীরের সাথে মানানসই হবে।
নিয়মিত গোসল করুন এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল সাবান ব্যবহার করুন। বাইরে বের হওয়ার সময় ভালো একটি ফেসওয়াশ দ্বারা মুখমন্ডল পরিষ্কার করে নিন। যদি আপনার মনে হয় যে, আপনি যখন বাইরে অবস্থান করেন, তখন ঘামের কারণে আপনার শরীর থেকে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে, তাহলে অবশ্যই আপনার ব্যাগে একটি ডিওড্রেন্ট বহন করুন এবং সময় মতো তা প্রয়োগ করুন।
যদি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ডিওড্রেন্ট নিতে ভুলে যান, তাহলে অবশ্যই টিস্যু ব্যবহার করে শরীরের ঘাম কিছু সময় পর পর মুছে ফেলুন। এতে শরীর থেকে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে এবং শরীর দুর্গন্ধমুক্ত থাকবে।
ডিওড্রেন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে মনে রাখুন যে, কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডিওড্রেন্ট অপরদের জন্য এ্যালার্জীর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এজন্য যতটা সম্ভব ঘ্রানবিহীন ডিওড্রেন্ট ব্যবহারের চেষ্টা করুন। এছাড়া নিয়মিত হাত ও পায়ের নখ এবং চুল কাটুন। সর্বপরি যতটা সম্ভব নিজেকে পরিপাটি রাখার চেষ্টা করুন।
পোশাক নির্বাচনে সতর্ক থাকা:
থট ক্যাটালগের প্রতিবেদনে একটি উক্তিতে বলা হয় যে, “পোশাকই পুরুষের ব্যক্তিত্বের পরিচয় বাহক”। এ থেকে আমরা খুব সহজেই অনুমান করতে পারি যে, নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য পোশাক কতটা গুরুত্বপূর্ণ। তার মানে এই নয় যে, আপনাকে অনেক দামী দামী পোশাক পরিধান করতে হবে।
পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখুন যে, কোন ধরনের পোশাক আপনার সাথে সবচেয়ে বেশি মানানসই। অনেক বেশি উজ্জল রঙের পোশাক পরিধান থেকে বিরত থাকুন।
হ্যাঁ, পোশাক আপনার জন্য এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রতিদিনই আপনাকে এটি নিয়ে ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আজকে আপনি কি পরিধান করবেন। অনেকেই আছেন, যারা বাসায় বা সাধারণ সময়ে হাতের কাছে যা পান তাই পরিধান করেন। এ ধরনের অভ্যাস অবশ্যই পরিত্যাগ করতে হবে।
মোট কথা, আপনি যা করছেন, তার সাথে খাপ খায় এমন পোশাক নির্বাচন করুন। কখনোই আপনার গার্লফ্রেন্ডের সামনে এমন কোন কাপড়ে উপস্থিত হবেন না, যাতে আপনার প্রতি তার নেতিবাচক ধারণা তৈরী হয়।
নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করুন:
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, আপনি যদি সোজা হয়ে দাঁড়ান, তাহলে আপনাকে অনেক বেশি সুঠাম এবং আত্মবিশ্বাসী হিসেবে প্রকাশ করে। জেনে রাখুন যে, এই ব্যাপারটি বেশিরভাগ মেয়েদের কাছেই আকর্ষণীয়। আত্মবিশ্বাসী পুরুষরা প্রতিটি মেয়ের কাছেই সমাদৃত। আর এটি আপনার গার্লফ্রেন্ডের কাছে গর্বের বিষয়ও বটে।
যখন আপনার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কথা বলবেন, তখন মুখে হাসি রাখুন। তবে অস্বাভাবিক বা বিনা কারণে হাসবেন না। প্রয়োজনে মাঝে মাঝে হাসার চেষ্টা করুন এবং সেটিকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবহারের জন্য নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন।
আপনারা যখন দুজন একসাথে থাকবেন, তখন অবশ্যই তার চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। মেয়েরা এই জিনিসটি খুবই পছন্দ করেণ। এটি তার প্রতি আপনার আগ্রহ এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে। মাঝে মাঝে তার সাথে দুষ্টুমি করুন।
উপরের বিষয়গুলি মাথায় রেখে নিজেদের দৈনন্দির কার্যবিধি নিয়ন্ত্রণ করলে, আপনি খুব কম সময়েই আপনার গার্লফ্রেন্ডের কাছে আগের চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবেন। কিন্তু আপনাকে মাথায় রাখতে হবে যে, নিজেকে বাইরে থেকে সুন্দর দেখানোর পাশাপাশি আপনার কথা-বার্তা, আচার-ব্যবহার ইত্যাদিও আপনার ব্যাক্তিত্বকে আকর্ষণীয় করো তোলার দিক থেকে সমান ভাবে গুরুত্ব বহন করে।
সুতরাং, আপনার ব্যবহারে যেন আপনাকে যথেষ্ট ভদ্র, বিনয়ী এবং আন্তরিক মনে হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
Leave a Reply