বর্তমানে উইন্ডোজ ১০ হলো উইন্ডোজ দুনিয়ার সবচেয়ে আধুনিক সংস্করণ। ৭০০ মিলিয়নেরও বেশি কম্পিউটার, ট্যাবলেট কিংবা স্মার্টফোনে বর্তমানের রানিং উইন্ডোজ হলো উইন্ডোজ ১০। তাই, উইন্ডোজ ১০ সমস্যা ও সমাধান নিয়ে আমাদের আজকের লেখা।
খুব অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে উইন্ডোজের এই ভার্সনটি। তবে আপডেট ভার্সন হলেও উইন্ডোজ ১০ এর বাগ, প্রবলেম এবং বিরক্তিকর কিছু ব্যাপার রয়েই যায়। যা খুবই সাধারণ মানের সমস্যা হলেও বিরক্তিকর।
এখন আমরা জানবো উইন্ডোজ ১০ এর ১০টি সাধারণ সমস্যা এবং একইসাথে তাদের সমাধানও।
উইন্ডোজ ১০ সমস্যা ও সমাধান
১. উইন্ডোজ ১০ ইন্সটলের জন্য পাওয়ারফুল রিকোয়ারমেন্ট
উইন্ডোজ ১০ যদি আপনি আপনার ল্যাপটপ কিংবা পিসিতে ইন্সটল করতে চান, তাহলে প্রাথমিক রিকোয়ারমেন্ট হিসাবে অবশ্যই রাখা লাগবে যে ড্রাইভে ইন্সটল করবেন তার মধ্যে খালি স্পেস। উইন্ডোজ ১০ এর জন্য আপনার মিনিমাম ১৬ জিবি থেকে ২০ জিবি পর্যন্ত ফ্রি স্পেস রাখা লাগবে।
একইসাথে উচ্চগতির প্রসেসর এবং বেশি জিবির র্যাম লাগবে। এইসব রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করতে না পারলে উইন্ডোজ ফল হওয়া কিংবা কম্পিউটার হ্যাং করা কিংবা উইন্ডোজ ১০ ইন্সটল নাও হতে পারে। তাই এইসব সমস্যা দূর করার জন্য অবশ্যই আপনার উইন্ডোজ ১০ ইন্সটলের মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট মানতে হবে।
২. উইন্ডোজ একটিভেট করা
উইন্ডোজ ৭ কিংবা উইন্ডোজ ৮.১ এর মতো উইন্ডোজ ১০ ডিফল্টভাবে একটিভ হয় না। অর্থাৎ ইন্সটলের সাথে সাথেই উইন্ডোজ রান হয় না। আলাদাভাবে উইন্ডোজের ডিস্কের ভিতরে থাকা লোডার দিয়ে উইন্ডোজ একটিভ করা লাগে।
৩. সফটওয়্যার আপডেট রিবুটস
উইন্ডোজ ১০ এর সবচেয়ে ঝামেলাপূর্ণ একটা বিষয় হলো এর সফটওয়্যারগুলো কিংবা উইন্ডোজ আপডেট যখন তখন শুরু হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় বিভিন্ন সময় কাজের মুহূর্তেও এটি সামনে চলে এসে বিরক্তির সৃষ্টি করে।
এই সমস্যার সমাধান করা যায়। এ জন্য আপনাকে Settings এর Update & Security অপশন থেকে Notify to Schedule Restart এ ক্লিক করতে হবে। যার অর্থ আপনি যে কাজগুলো করছেন, তাতে বাধা দেওয়ার পরিবর্তে ওএস একটি রিবুট রিকোয়েস্ট করবে।
৪. পুরাতন সফটওয়্যার আপডেট করা
উইন্ডোজ ১০ ইন্সটল করার পর দেখা যায় বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার ইন্সটল হচ্ছে না কিংবা ইন্সটল হলেও ঠিকভাবে কাজ করা যাচ্ছে না। এ ধরনের সমস্যাকে “Compatibility” সমস্যা বলা হয়। অর্থাৎ সফটওয়্যারটির ভার্সন উইন্ডোজ ১০ এর সাথে ঠিকভাবে স্যুট করছে না।
এ ধরণের সমস্যাতে আগের সফটওয়্যারগুলো উইন্ডোজ ১০ এর Compatibility ভার্সনের সাথে আপডেট করে নিতে হয়।
৫. Bing এর বদলে Google
মাইক্রোসফটের সার্চ ইঞ্জিন হলো Bing। কিন্তু গুগলের জনপ্রিয়তার এই যুগে বিং চলে না বললেই হয়। অর্থাৎ বেশিরভাগ মানুষই বিং পছন্দ করেন না। কিন্তু উইন্ডোজ ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসাবে বিং সেট করে রাখে। যার ফলে, যা সার্চ করা হয় না কেন, সার্চিং রেসাল্ট আসে বিং এ।
এই সমস্যা দূর করতে চাইলে মাইক্রোসফট এডজ থেকে গুগলকে নেভিগেট করতে হবে। ফলে কোন কিছু সার্চ দিলে তা গুগলে প্রদর্শন করবে।
৬. বিরক্তিকর নোটিফিকেশন
উইন্ডোজ ১০ ভার্সনে বিরক্তিকর নোটিফিকেশন আসতেই থাকে। যার ফলে দেখা যায় কাজের সময় বিলম্বিত হয়। একশন সেন্টারে এইসব বিরক্তির নোটিফিকেশন এসে জমা হতে থাকে।
এ জন্য Settings থেকে System আর তারপর Notifications & Actions অপশন থেকে Show app notifications বন্ধ করে দিতে হবে।
৭. স্টার্ট মেনু সাজানো
উইন্ডোজ ১০ ইন্সটল করার পর একটা সমস্যা খুব বড় আকারে দেখা যায়। আর তা হলো স্টার্ট মেনু ঠিকভাবে সাজানো না থাকা। আসলে এটা সাজানো থাকে না বললে ভুল হবে। এটা ডিফল্টভাবে সাজানো থাকে। কিন্তু এতে প্রয়োজনীয় জিনিষগুলো খুঁজে পেতে খুব কষ্ট হয়।
এ জন্য উইন্ডোজ ইন্সটল করার পর স্টার্ট মেনু নিজের সুবিধামতো সাজিয়ে নিতে হবে।
৮.ব্লু স্ক্রিন অব ডেথ
আপনি কাজ করছেন। এমন সময় হঠাৎ স্ক্রিন নীল হয়ে গেলো এবং কিছু লেখা উঠলো যার মাধ্যমে আপনি জানতে পারলেন আপনার পিসিতে কোন একটা সমস্যা চলার কারণে তা রিস্টার্ট নিবে। এই সমস্যাকে বলা হয় ব্লু স্ক্রিন অব ডেথ। এই ধরণের সমস্যার কারণে সেই মুহূর্তে কাজ করা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। আর পিসি রিস্টার্ট নিয়ে নেয়। যার ফলে দেখা যায় চলমান কোন কাজ সেভ করা না থাকলে তা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়।
বিভিন্নভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায়। প্রথমত দেখতে হবে সিস্টেম ড্রাইভে যথেষ্ট পরিমাণে জায়গা আছে কিনা। যদি না থাকে, তাহলে স্পেস বাড়াতে হবে। এছাড়াও আউটডেট কোন সফটওয়্যার থাকলে তা রিমুভ করে দিতে হবে। এছাড়াও ড্রাইভার সফটওয়্যারগুলো আপডেট করতে হবে।
৯. Cortana’s সার্চ বক্স
উইন্ডোজ ১০ এ উইন্ডোজ আইকনের পাশে একটা বক্স আছে। যাতে লেখা রয়েছে “Ask me anything”। অর্থাৎ এখানে সার্চ দিয়ে বিভিন্ন জিনিষ খুঁজে পাওয়া যায়।
কিন্তু এটা ডিফল্টভাবে অনেক বড় থাকে। তার ফলে টাস্কবারে বেশি টাস্ক ধরানো যায় না। এজন্য এর সাইজ ছোট করে দিতে হবে।
১০.উইন্ডোজ ট্রাবলশুটিং
উইন্ডোজের বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সমাধান করার জন্য সবচেয়ে ভালো উপায় হলো উইন্ডোজ ট্রাবলশুটিং। এর ফলে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা খুব সহজেই সমাধান করা যায়।
উইন্ডোজ ১০ উইন্ডোজের সবচেয়ে আপডেট ভার্সন হলেও এরও রয়েছে কিছু সীমাবদ্ধতা। আপনি ব্যবহারের সময় পড়তে পারেন সমস্যাতে। তাই জেনে নিন উইন্ডোজ ১০ এর ১০টি সাধারণ সমস্যার সহজ সমাধান।
Leave a Reply