যদি আপনাকে বলা হয় যে মাত্র এগারো থেকে বারো হাজার টাকার মধ্যে অসাধারণ একটি স্মার্টফোন পাবেন, তাহলে কেমন হবে? কেমন হবে তা তো সবাই বুঝতেই পারছেন। তবে যদি আপনাকে বলি যে, আপনি ফাইনালি দশ হাজার টাকার আশে-পাশে একটি অসাধারণ স্মার্টফোন পাচ্ছেন, যা রীতিমতো এন্ট্রি লেভেলের বায়ারদের সব সমস্যার সমাধান করে দিবে। হ্যাঁ, আমি কথা বলছি শাওমি রেডমি ফোর এক্স নিয়ে। অনেকে হয়তো ভেবেছিলেন এন্ট্রি লেভেল বা লো বাজেট স্মার্টফোন হিসেবে রেডমি ফোর এ কিনবেন। এক্ষেত্রে বলবো একটু থামুন, সময় এসেছে ডিসিশন চেঞ্জ করার।
শাওমি রেডমি ফোর এক্স
ডিজাইন
শাওমি মি ফাইভ সি যারা দেখেছেন তারা এর ডিজাইনের সাথে অনেকটাই মিল পাবেন। ফোনটি কমপ্লিটলি মেটাল বিল্ড এবং এর ডিজাইন অসাধারণ। এর চারদিকের এজগুলো কমপ্লিটলি রাউন্ড যা হাতে নিলে প্রিমিয়াম অনুভব করবেন। ফোনটি এক হাতে কমফোর্টেবলভাবে ব্যবহার করা যায়।
ফোনটির রাইট সাইডে পাওয়ার বাটন, লেফট সাইডে সিম কার্ড ট্রে, টপ সাইডে ৩.৫ মিমি অডিও জ্যাক, সেকেন্ডারি মাইক্রোফোন এবং বটম সাইডে থাকছে মাইক্রো ইউএসবি পোর্ট এবং এর দুই পাশে দুইটি স্পীকার গ্রিল। সাউন্ড একটা দিয়ে বের হয়। অর্থাৎ একটি স্পীকার গ্রিল আর অন্যটি প্রাইমারী মাইক্রোফোন গ্রিল। তাড়াছা পেছন দিকে থাকা মি লোগোটি একেবারেই দেখা যায় না। বাজারে ফোনটির তিনটি কালার পাওয়া যাচ্ছে।
ডিসপ্লে
৫ ইঞ্চি এইচডি আইপিএস ডিসপ্লে দেয়া হয়েছে রেডমি ফোর এক্স ফোনটিতে। যার রেজুলেশন ৭২০×১২৮০পি ৫ ইঞ্চি ডিসপ্লে অনুযায়ী কম। তবে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, এটি একটি লো বাজেটের স্মার্টফোন। তাই আমি মনে করি এটিই ঠিক আছে। লো বাজেটের স্মার্টফোন থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করা বোকামি। তবে লো বাজেটের প্রতিটি ফোনেই কিছুই সমস্যা পাওয়া যায়। এই ফোনের ক্ষেত্রেও কোনো পরিবর্তণ নেই।
ডিসপ্লেটি হালকা নেগেটিভ হওয়ায় এর কালার মোটেও ভালো লাগেনি আমার কাছে। কালারগুলো অতিরিক্ত ডার্ক আর কিছুটা হলদে হলদে ভাব আছে। তবে এর টাচ রেসপন্স খুবই ভালো ছিলো। এর উপর প্রোটেকশন হিসেবে কোনো ডিসপ্লে প্রোটেকটর নেই বলে আপনাকে সাজেস্ট করবো ফোন কেনার পর একটি প্রোটেকশন গ্লাস পেপার লাগিয়ে নিতে।
তবে এর ২.৫ডি কার্ভ গ্লাস খুব দারুণ একটা জিনিস। ফোনের বেক সাইডে ফিঙ্গার প্রিন্ট সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। তবে এর ফিঙ্গার রিকোগনেশন টাইম একটু স্লো মনে হলেও ব্যবহার করতে করতে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন।
প্রসেসর
একটি লো বাজেট ফোন থেকে ভালো প্রসেসর আশা করা যায় না। তবে তাই বলে যে খুব খারাপ প্রসেসর পাবেন তাও না। রেডমি ফোর এক্স ফোনটিতে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৪৩৫ এবং এটি একটি ১.৪ গিগাহার্জ অক্টাকোর প্রসেসর আর রয়েছে এড্রেনো ৫০৫। এছাড়া রয়েছে ২/৩ জিবি র্যাম ও ১৬/৩২ জিবি রম।
ফোনটিতে খুব বড় সাইজের গেইমগুলো ভালোভাবে খেলা যাবে না। তবে ছোট গেইমগুলো খুব ভালোভাবেই খেলতে পারবেন। তাড়াছা ফোনটিতে থাকছে অনেক ধরণের সেন্সর। রেডমি ফোর এক্স ফোনটিতে দেয়া হয়েছে ৪১০০এমএএইচ ব্যাটারি। ব্যাটারি ব্যাকআপ খুবই ভালো। চোখ বন্ধ করে একদিন চলে যাবে। আর সাথে থাকছে ফাস্ট চার্জার।
ক্যামেরা
রেডমি ফোর এক্স এর ব্যাক ক্যামেরায় ব্যবহার করা হয়েছে ১৩ মেগাপিক্সেল, যার এফ/২.০ এবং ফ্রন্টে রয়েছে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। এই বাজেটের স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে ফোনটির ক্যামেরার পারফর্মেন্স খুবই ভালো বলা যায়। এর ফ্রন্ট ক্যামেরাও খুব ভালো। পিকচার কুয়ালিটি খুবই ভালো। বেশ ওয়াইড এঙ্গেলও ছিলো। এক কথায় ফোনটির ক্যামেরা কুয়ালিটি এর দামের তুলনায় ঠিক আছে। আপনাদের জন্য রেডমি ফোর এক্স দিয়ে উঠানো একটি ছবি দিলাম।
এই ছিলো শাওমি রেডমি ফোর এক্স ফোনের ফুল রিভিও। আপনি যদি ভেবে থাকেন, একটি লো বাজেটের স্মার্টফোন কিনবেন, তাহলে আমি আপনাকে রেডমি ফোর এক্স সাজেস্ট করবো। কারণ, এই দামে এর চেয়ে ভালো স্মার্টফোন আপনি পাবেন না। সবশেষে এইটুকু বলতে চাই, যদি রিভিউটি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
Leave a Reply