ইউটিউবের বিকল্প ভিডিও শেয়ারিং সাইট শুনেই আপনি বলতে পারেন ইউটিউবের সাথে পাল্লা দিবে এমন সাইট কীভাবে সম্ভব? হ্যাঁ, এই কথা সত্য যে ইউটিউবের সাথে পাল্লা দেয়ার মত সাইট কেবল ইউটিউব নিজেই। কিন্তু আজকে আমি এমন কিছু সাইট সম্পর্কে আপনাদেরকে বলব, যে-সব সাইটে আপনি ইউটিউবের মতোই সুবিধা পাবেন।
ইউটিউবের জনপ্রিয়তা দিন দিন যেমন বাড়ছে, ভিডিও ক্রিয়েটরদের জন্য নিয়মও তেমন শক্ত হচ্ছে। এতে করে অনেকেই ইউটিউবের আশা ছেড়ে দিচ্ছেন। কিন্তু একমাত্র ইউটিউবই সব কিছু না, ইউটিউব ছাড়াও আরও অনেক ভাল ভাল প্ল্যাটফর্ম আছে, যেখানে আপনার কনটেন্ট আপলোড করতে পারবেন।
শুধু তাই নয়, ইউটিউবে যে ভিডিওগুলো আপনি আফলোড দিচ্ছেন, সেগুলো যদি একই সাথে নিচের সাইটগুলোতেও আফলোড দেন, তাহলে আপনার আয় বেড়ে যাবে নি:সন্দেহে।
তাহলে, চলুন জেনে নিয়া যাক ইউটিউবের বিকল্প ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইটগুলো সম্পর্কে।
ইউটিউবের বিকল্প ভিডিও শেয়ারিং সাইট
Daily motion
ডেইলিমোশন ইউটিউবের মতোই জনপ্রিয় একটি ভিডিও শেয়ারিং সাইট। এই সাইটের ইন্টারফেসও প্রায় ইউটিউবের সাথে মিলে যায়। আপনি এই ইন্টাফেসের হোম পেইজে সব ট্রেন্ডিং ভিডিও পেয়ে যাবেন। আর এখানে ক্যাটেগরি অনুযায়ী ভিডিও দেখতে পারবেন।
এছাড়াও সার্চ বক্স ব্যবহার করে পছন্দের ভিডিও দেখতে পারবেন। কনটেন্ট ক্রিয়েটররা এখানে সর্বোচ্চ ৪ জিবি ফাইল আপলোড করতে পারবেন। আর সর্বোচ্চ ভিডিও দৈর্ঘ ৬০ মিনিট পর্যন্ত রাখতে পারবেন। ইউটিউবের মতোই রেজুলেশন ১০৮০ পিক্সেল পর্যন্ত আপলোড করা যাবে।
অন্যদিকে ইউটিউবের মতো ডেইলিমোশনের নিজস্ব কিছু প্রাইভেসি পলিসি আছে, কিন্তু এখানে কপিরাইট নিয়ে ইউটিউবের মতো কোন স্ট্রিক রুলস্ নেই। ফলে কনটেন্ট আপলোডকারীদের জন্য এটা খুব ভাল একটা দিক।
ডেইলীমশনের সবচেয়ে ভাল দিক হল এখানেও আপনি ভিডিও আপলোড করে অ্যাড দেখিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনেকটা ইউটিউবের মতোই।
কেন ডেইলি মশন?
- হাই কোয়ালিটির কনটেন্ট।
- এই সাইটের লে-আউট ইউটিউবের মত এই কারণে খুব সহজে এই সাইটটি আপনি ইউজ করতে পারবেন।
- এখানে রুলস অনেক সহজ এবং আপনার কনটেন্ট রিমোভ হওয়ার তেমন কোন রিস্ক নেই।
Vimeo
ভিডিও হোস্টিং সাইটের জন্য ভিমিও আরো একটি সেরা সাইট। এই সাইটটি তারচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আর্টিস্ট এবং ছবি নির্মাতাদের জন্য। এই প্লাটফর্মটি মূলত মিউজিক, ডান্স, সিনেমাটোগ্রাফি এবং ফটোগ্রাফি ছাড়াও আরও অনেক ক্রিয়েটিভ কাজের সুযোগ রয়েছে এখানে।
যদি আপনার ক্লাসিক শর্ট ভিডিও, এক্সপেরিমেন্টাল মিউজিক ক্লিপ এবং স্নেপশর্ট বিষয়ে আগ্রহ থাকে, তাহলে আপনাকে এই সাইটে স্বাগতম। কারণ এই সাইটের খুব স্ট্রিক রুলস আছে। এখানে আপনি ৪কে আল্ট্রা এইচডি মানের ভিডিও দেখতে পারবেন।
ভিমিওর সবচেয়ে খারাপ দিক হল, এখানে ৫০০ এম্বির বেশি ফাইল আপলোড করেতে পারবেন না। যদি আপনি পেমেন্ট দিতে ইচ্ছুক হন, তাহলেই ৫ জিবি পর্যন্ত ভিডিও আপলোড করতে পারবেন।
কেন ভিমিও?
- পরিস্কার এবং সুন্দর ইটারফেস যেখানে সবকিছু ক্যাটেগরি অনুযায়ী পাবেন।
- খুব ভাল ভিউয়ার এক্সপেরিয়েন্স পাবেন এখানে।
Metacafe
অনেক পুরানো একটি স্ট্রিমিং সাইট। এই মেটাক্যাফে সাইটটি ২০০৩ সাল থেকে ইন্টারনেট জগতে রাজত্ব করছে। যখন ইউটিউবের জন্মই হয়নি। এই সাইটটির মুল ফোকাস ৬০ সেকেন্ড মানে ১ মিনিটের ক্লিপ ভিডিওর দিকে।
মেটাক্যাফের এদের রয়েছে প্রায় ৪০ মিলিয়ন ভিউয়ার। যদি আপনি প্রফেশনালি কমপ্লেক্স ভিডিও বানাতে চান, তাহলে এই সাইটটি আপনার জন্য না। যারা রেগুলার শর্ট ভিডিও বানাতে চান, তাদের জন্য ইউটিউবের বিকল্প হিসাবে মেটাক্যাফেই খুব ভাল একটি প্লাটফর্ম।
কেন ম্যাটাক্যাফ?
- ৯০ সেকেন্ডের ভিডিওর জন্য সব চেয়ে ভাল ভিডিও শেয়ারিং সাইট।
Dtube
ডিটিউব একটি নতুন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম। এই ডিসেন্ট্রালাইজড ওয়েবসাইটটি ইউটিউবের বিকল্প হিসাবে দারুণ একটি সাইট। এখানে আপনি সব ক্যাটাগরিতে ভিডিও পাবেন। ট্রেন্ডিং থেকে শুরু করে জনপ্রিয়, শীর্ষ সব ধরণের ভিডিও। এছাড়াও আপনি এখানে যে কোন ভিডিও সেভ করে রাখতে পারবেন এতে করে পরে সেই ভিডিওটি দেখতে পারবেন।
এখানে আপনি একটি ভিডিও দিলেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন আবার আপনার ভিডিওকমেন্ট করলেও টাকা আয়ের সুযোগ আছে।
কেন ডিটিউব?
- অ্যাড ফ্রি ওয়েবসাইট, ফলে ভিডিও দেখতে পারবেন একেবারে নিশ্চিন্তে।
- এটা ব্লকচেইন বেইস হওয়ায় এখানে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে ইনকাম করা যাবে।
Veoh
ইউটিউবের মতোই এটিও একটি ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট। এখানে খুব সহজেই আপনার পছন্দের ভিডিও আবিস্কার করতে পারবেন। অন্য সব সাইটের মত এখানে ভিডিও দৈর্ঘ নিয়ে কোন ঝামেলা নাই।
আপনি যদি লংটাইম মুভি কিংবা শো দেখতে পছন্দ করেন, তাহলে এই সাইটটি আপনার জন্য। এনিমি, মুভি, টিভি সিরিজসহ আরও অনেক কিছুই এখানে পাবেন।
কেন Veoh?
- দীর্ঘসময় ধরে ভিডিওর জন্য সেরা প্লাটফর্ম।
Intermet Archive video section
এই সাইটের নাম শুনেই বুঝতে পারবেন সাইটটি মূলত কীসের ভিত্তিতে তৈরি। এখানে প্রচুর ভিডিও আছে। ইউটিউবের বিকল্প ভিডিও শেয়ারিং সাইট হিসাবে এই সাইটের তুলনা হয় না।
আপনি এখানে স্পেসিফিকভাবে কনটেন্ট সার্চ করতে পারবেন। বিভিন্ন ফিল্টার সেটিং আছে যেমন ইয়ার, ভাষা, টপিক এবং সাবজেক্ট। এখানে আপনি ভিডিও আপলোড করে তাদেরকে কন্ট্রিবিউট করতে পারবেন।
কেন ইন্টারনেট আর্কাইভ?
- এখানে রয়েছে অনেক বিশাল ভিডিও কনটেন্ট কালেকশন।
IGTV
ইউটিউবের সাথে পাল্লা দিয়ে এখন নতুন একটি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম এসেছে যার নাম আইজিটিভি। এই সাইটে কেবল ভার্টিক্যাল ভিডিও দেখতে পারবেন। সাইটটিই এমনভাবে ডেভেলপ করা যাতে সহজে স্মার্টফোন ফোন থেকে ভিডিও স্ট্রিমিং করা যায়।
বুঝতেই পারছেন ইনস্টাগ্রামের মত একটি জনপ্রিয় সাইটের মালিকানা যেখানে, সেখানে তো আর কিছু বলার থাকে না। অবশ্যই এটি ইউটিউবের বিকল্প সেরা একটি সাইট।
কেন IgTv?
- স্মার্টফোন দিয়ে সহজে ভিডিও দেখা যাবে।
- অনেক বেশী শর্ট ভিডিও দেখতে পারবেন।
উপরে উল্লেখ করা সব সাইটেই ইউটিউবের সাথে পাল্লা দিয়ে এখন বিশ্বে অনেক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। সুতরাং, ইউটিউবের বিকল্প ভিডিও শেয়ারিং সাইট হতে পারে এ-সব প্লাটফর্ম। ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন এই ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইটগুলোর লিস্ট, তাদেরকেও জানাবেন ইউটিউবের বিকল্প সাইট সম্পর্কে।
Muhammad Shuvo says
৭টি সাইটের সব কি কপিরাইট নিয়ম চেন্জ করেছে না, পোষ্ট এর মতন আছে।