কম্পিউটার দেরিতে অন হওয়ার মতো সমস্যাতে পড়েননি এমন লোক খুব কমই আছে। কাজের সময় যদি ভালোভাবে কম্পিউটার অন না হয়, তাহলে বিরক্তির আর সীমা থাকে না। দেরি করে অন হওয়ার বিভিন্ন ধরণের কারণ আছে। একই সাথে আছে কম্পিউটার দ্রুত চালু করার উপায় ও সমাধানও। আজকের পোস্টে আমরা সেই বিষয়টাই জানবো।
কম্পিউটার দ্রুত চালু করার উপায়
কম্পিউটারে বিভিন্ন ধরণের প্রোগ্রাম ডিফল্টভাবে চালু থাকে। আবার কিছু প্রোগ্রাম চালু হয় কোন সফটওয়্যার ইন্সটল করার পর। কম্পিউটার দেরিতে অন হওয়ার পিছনে কিছু বিশেষ কারণ থাকে। হার্ডওয়্যারজনিত এমনকি ম্যালওয়্যারের জন্যও একই ধরণের সমস্যা হতে পারে।
সাধারণত এই সমস্যাগুলোর সমাধানই কম্পিউটার চালু হতে বেশি সময় নেওয়া হতে মুক্তি দিতে পারে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক কম্পিউটার চালু হতে বেশি সময় নিলে যে কাজগুলো করা দরকার।
১. স্টার্ট-আপে লোড হওয়া প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করুন
আপনি যখন নতুন কোন সফটওয়্যার ইনস্টল করেন, তখন আপনার পিসি অন করার পরে অনেকগুলো প্রোগ্রাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়। এটা কিছু কিছু সময় ভালো হতে পারে। একইসাথে এটি সুবিধাজনক এবং কিছু অ্যাপ্লিকেশনের জন্য অপরিহার্যও বটে।
এক্ষেত্রে সমস্যা হলো যে, লিস্টে যদি বেশি প্রোগ্রাম থাকে, তাহলে কম্পিউটার চালু হতে অবশ্যই সময় বেশি লাগবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই স্টার্টআপে প্রোগ্রাম লোডিং কমানো প্রয়োজন।
২. ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার চেক করুন
বিভিন্ন সময়ে আমরা পিসিতে পেনড্রাইভ কিংবা মেমোরি কার্ড প্রবেশ করাই। স্ক্যান করে না ঢুকানোর কারণে বিভিন্ন ভাইরাসের প্রবেশ ঘটে। যার ফলে স্লো হয়ে যেতে পারে কম্পিউটার অন হওয়া। কাজেই, কম্পিউটারের ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার চেক করুন ও সেগুলো দূর করুন।
আবার বিভিন্ন খারাপ সফটওয়্যার যা ম্যালওয়্যার হিসাবে পরিচিত এদের কারণেও স্লো হতে পারে। সে কারণে বিভিন্ন সময়ে উইন্ডোজ ডিফেন্ডার দিয়ে ম্যালওয়্যারে চেক করতে হবে এবং উইন্ডোজ ডিফেন্ডার আপ টু ডেট রাখতে হবে।
৩. আপডেট
কখনো কখনো একটি ঝুঁকিপূর্ণ ড্রাইভার কিংবা বাগ আপডেটের কারণেও কম্পিউটার অন হতে দেরি হতে পারে। তাই এটি নিশ্চিত করতে হবে যে উইন্ডোজ, ড্রাইভার এবং প্রোগ্রামগুলো সবই আপ টু ডেট রয়েছে। তা না হলে সেগুলো বিভিন্ন ধরণের বাগ তৈরি করতে পারে। যার ফলে আপনার কম্পিউটার অন হতে প্রচুর সময় নিবে। তাই, কম্পিউটার দ্রুত চালু করার উপায় হিসেবে সফট্ওয়্যাগুলো আপডেট রাখা দরকার।
এক্ষেত্রে উইন্ডোজ, ড্রাইভার এবং প্রোগ্রামগুলোর আপডেট নিশ্চিত করুন। আপডেট অপশন থেকে আপডেট টার্ন অন করে রাখুন, যাতে করে কোন আপডেট আসলেই আপনি সাথে সাথে সে সম্পর্কে জানতে পারেন।
৪. নতুন করে উইন্ডোজ সেট-আপ দিন
কম্পিউটার চালু হলে যে জিনিষটা সবার আগে চোখে পড়ে কিংবা কম্পিউটারে কাজ করার জন্য যে জিনিষটা সবচেয়ে বেশি দরকারি, তা হলো উইন্ডোজ। মনে রাখতে হবে জ উইন্ডোজের কারণেও কম্পিউটার অন হতে দেরি হতে পারে। ১৮-২৪ মাসের মধ্যে উইন্ডোজ পুনরায় ইনস্টল করা ভাল। যার ফলে এটি আপনার সিস্টেমকে প্রাণবন্ত রাখবে। যদি আপনার কম্পিউটার চালু হতে দেরি হয়, তাহলে আর দেরি না করে উইন্ডোজটা পরিবর্তণ করেই ফেলুন।
৫. র্যাম বাড়িয়ে নিন
বেশি RAM ইনস্টল করা কম্পিউটারকে দ্রুতগতির একটি কার্যকর উপায় বলে মনে করা হয়। যদি আপনি অপেক্ষাকৃত নতুন কম্পিউটারে থাকেন, তবে আপনার একটি RAM আপগ্রেডের প্রয়োজন হবে না।
আর যদি আপনি একটি পুরানো কম্পিউটারে কাজ করে থাকেন, তাহলে RAM আপগ্রেড আপনাকে কম্পিউটার দ্রুত চালু করার জন্য সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও মাঝে মাঝে RAM খুলে তা একটু পরিষ্কার করে ফেলুন। যা আপনার কম্পিউটারের জন্য অবশ্যই ভালো হবে।
৬. এন্টিভাইরাস ব্যবহার করুন এবং সেটিকে আফডেট রাখুন
কম্পিউটারের জন্যে অনেক প্রি এন্টিভাইরাস রয়েছে, একটি ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন। এটি আপ টু ডেট রাখুন এবং নিয়মিত স্ক্যান করুন। কারণ বিভিন্ন সময় ভাইরাসই আপনার সিস্টেমকে স্লো করে দিতে পারে। যার ফলে কম্পিউটার চালু হতে সময় বেশি নেয়।
আবার যদি সফটওয়্যারটি আপ টু ডেট না হয়, তাহলে সেটি ঠিকভাবে কাজ করবে না। তাই অবশ্যই একটি ভালো অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইন্সটল করতে হবে এবং একই সাথে তা আপ টু ডেট রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, যদি আপনি ফ্রি অ্যান্টিভাইরাস ইন্সটল করেন, তাহলে অবশ্যই সেটির লাইসেন্সের দিকে নজর রাখতে হবে। একই সাথে অ্যাক্টিভেশনের উপরও নজর রাখতে হবে।
৭. অব্যবহৃত হার্ডওয়্যার ডিজেবল করে দিন
আপনার কম্পিউটার যখন চালু হয়, তখন অনেক ড্রাইভার লোড করে। যার মধ্যে কিছু আপনার ব্যবহারযোগ্য নাও হতে পারে। স্টার্ট মেনু সার্চ অপশন থেকে ডিভাইস ম্যানেজারে প্রবেশ করুন এবং ডিসেবল করে দিন সেইসব হার্ডওয়্যারগুলো যেগুলো আপনি ব্যবহার করছেন না। কারণ অধিক অব্যবহারযোগ্য হার্ডওয়্যার আপনার কম্পিউটারের দেরিতে অন হওয়ার কারণ হতে পারে।
৮. অপ্রয়োজনীয় ফন্ট রিমুভ করে দিন
কম্পিউটার চালু হওয়ার সময় এতে থাকা ফন্টগুলো স্টার্টআপে লোড নেয়। ফলে বুট টাইম কিছুটা স্লো হয়ে যায়। উইন্ডোজ ৭-এ প্রায় ২০০টিরও বেশি ফন্ট রয়েছে। এমনকি আরও বেশি হতে পারে যদি আপনি মাইক্রোসফট অফিস ইন্সটল করেন। অধিকাংশ সময়ে এই সব ফন্ট ব্যবহার হয় না বললেই চলে। সেই হিসাবে আপনি যদি তাদের হাইড করে রাখেন, তাহলে আপনার সিস্টেম কিছুটা দ্রুত হতে পারে।
আপনার কম্পিউটার চালু হতে যদি তুলনামূলক বেশি সময় নিয়ে থাকে তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এখানে বর্ণিত ধাপগুলো ব্যবহার করে আপনি কম্পিউটার দেরি করে অন হওয়া থেকে মুক্তি পেতে পারেন। একইসাথে স্পীড বাড়াতে পারেন আপনার কম্পিউটার সিস্টেমের। তাই দেরি না করে চেষ্টা করে দেখুন উপরের পদ্ধতিগুলো।
Nurbanu says
আফডেট কি? তুই তো বানানই জানিস না।