একটা নতুন মোবাইল ডিভাইস কেনার পর একজন ব্যবহারকারীর চোখ প্রথমেই যেটার উপর পড়ে, সেটা হচ্ছে স্মার্টফোনের ডিসপ্লে। কারণ, এই ডিসপ্লে দিয়েই সফটওয়্যারের সাথে সবকিছুর ইন্টারেকশন তৈরি হয় এবং যাবতীয় কাজ-কর্ম সম্পন্ন করা হয়। যার ফলে, স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে ঘটেছে বিকাশ ও বিপ্লব এবং এটিকে আগের থেকে কয়েক গুণ বেশি ফ্লেক্সিবল করা হয়েছে।
স্মার্টফোনের জন্যে অনেক ধরণের ডিসপ্লে বা টাচস্ক্রিণ আছে এবং একেকটার ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা ও অসুবিধাও রয়েছে। এগুলো যদি আমাদের জানা থাকে, তবে কোন ধরণের টাচস্ক্রিণ বা ডিসপ্লে সম্পন্ন স্মার্টফোন কেনা উচিৎ, সেটা বুঝতে আমাদের জন্যে সহজ হবে।
আসুন, প্রথমেই জানা যাক টাচস্ক্রিণের ছোট্ট সংজ্ঞাটা।
স্মার্টফোনের ডিসপ্লে/ টাচস্ক্রিণ কি?
ডিসপ্লে বা টাচস্ক্রিণ হচ্ছে স্মার্টফোনের ইনপুট এবং আউটপুটের অ্যাসেম্বল। এখানে ইনপুট মানে হচ্ছে টাচ প্যানেল আর আউটপুট মানে হচ্ছে ডিসপ্লে। আর এই দুইটার মূল সমন্বয়কারী পেরিপেরালটিকেই টাচস্ক্রিণ বা ডিসপ্লে বলে।
স্মার্টফোনের টাচস্ক্রিণ কিভাবে কাজ করে?
টাচস্ক্রিণ হচ্ছে মোবাইলের মূল ইনপুট ডিভাইস যা একটি গ্লাস দ্বারা আবৃত। যখন আমরা স্মার্টফোনের স্ক্রিণ টাচ করি, তখন গ্লাসের নিচে থাকা ক্যাপাসিসিটিভ মেজারমেন্ট সেই ইনপুটটি গ্রহণ করে ভেতরে থাকা ইনফর্মেশন প্রসেসিং সিস্টেমকে জানিয়ে দেয়। আর সেখান থেকে প্রোগ্রামিং করা আউটপুটটি ডিসপ্লেতে ভেসে ওঠে।
এর পেছনে আরো অনেক কারিগরি বা ইঞ্জিনিয়ারিং ম্যাটেরিয়াল রয়েছে, আমরা সেদিকে যাবো না। কারণ, আমাদের টপিক হচ্ছে বিভিন্ন ধরণের টাচস্ক্রিন বা ডিসপ্লে সম্পর্কে ধারণা নেয়া।
স্মার্টফোনের ডিসপ্লে কত প্রকার ও কি কি?
গত কয়েক বছরে স্মার্টফোনের যে বিবর্তণ দেখা দিয়েছে, তার মাঝে একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে ডিসপ্লে। স্মার্টফোনের ডিসপ্লে অনেক প্রকার। তার মাঝে সর্বাধিক পরিচিত ১০টি ডিসপ্লে সম্পর্কে এই পোস্টে আপনাদের জানাবো, ইংশাল্লাহ্। সেই সাথে সংক্ষিপ্ত আকারে থাকছে সেগুলোর সুবিধা এবং অসুবিধাসমূহ।
OLED Display
স্মার্টফোনের ডিসপ্লের ক্ষেত্রে নতুন ও মডার্ন টেকনোলোজি হচ্ছে OLED Display যা LG কোম্পানীর পেটেন্ট। প্রায় সকল স্মার্টফোন নির্মাতা ও ব্যবহারকারীই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে, স্মার্টফোনের জন্যে বিশ্বের বিখ্যাত এবং সবচেয়ে ভাল ডিসপ্লে হচ্ছে OLED Display।
Organic শব্দের প্রথম অক্ষর O, Light এর L, Emitting এর E আর Diode এর D নিয়ে OLED, যা বর্তমানে স্মার্টফোনের খুবই জনপ্রিয় একটি ডিসপ্লে। স্মার্টফোন ছাড়াও আরো কিছু ডিসপ্লেতে এটি ব্যবহার করা হয়, যেমন কিছু কিছু কম্পিউটারের মনিটরে।
কার্বন বেইজড্ অর্গানিক ম্যাটেরিয়্যালের একটি লেয়ারকে anode এবং cathode নামক দু’টি কন্ডাক্টিং এর মাঝে ইনসার্ট করে তৈরি করা হয় OLED ডিসপ্লে। দু’টি কন্ডাক্টিং শিটের মধ্যে যখন ইলেকট্রিক পালস্ অ্যাপ্লাই করা হয়, তখন ইলেক্ট্রো-লুমিনসেন্ট লাইট সরাসরি অর্গানিক ম্যাটেরিয়্যাল থেকে তৈরি হয়, যার উপর নির্ভর করে ডিসপ্লে’র উজ্জ্বলতা এবং রঙ পরিবর্তিত হয়।
OLED Display এর সুবিধা:
- OLED অবশ্যই একটি হাই-কোয়ালিটি ডিসপ্লে।
- অন্যান্য ডিসপ্লের সঙ্গে তুলনা করলে OLED কস্ট-ইফেক্টিভ।
- এটি LED থেকে অনেক বেশি উজ্জ্বল ডিসপ্লে।
- OLED ডিসপ্লের ক্ষেত্রে ব্যাকলাইটের প্রয়োজন হয় না।
OLED Display এর অসুবিধা:
- LCD, LED এবং PDP ডিসপ্লে প্রযুক্তির তুলনায় OLED এর আয়ু অনেক কম হয়।
- রঙের ভারসাম্যে ভিন্নতা দেখা যায়।
- OLED ডিসপ্লে জলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রদান করে না।
AMOLED Display
OLED Display এর একটা ভিন্ন রূপ হচ্ছে AMOLED Display যা টপ-এন্ড স্মার্টফোনের জগতে তুমুল জনপ্রিয় সেগমেন্ট। বর্তমানের স্মার্টফোনগুলোর অধিকাংশতেই AMOLED Display ব্যবহার করা হয় যা OLED ডিসপ্লের মতোই লাইটওয়েট স্ক্রিণ সুবিধা দিয়ে থাকে। এই ডিসপ্লেতে ব্রিলিয়ান্ট কালার রিপ্রোডাকশন এবং পারফেক্ট ব্রাইটনেস সেট করা থাকে।
Active শব্দ থেকে A, Matrix থেকে M, Organic থেকে O, Light থেকে L, Emitting থেকে E আর Diode থেকে D নিয়ে AMOLED শব্দটি গঠিত হয়েছে। তার মানে, AMOLED এর পূর্ণ রূপ Active-Matrix Organic Light-Emitting Diode দাঁড়াচ্ছে।
AMOLED Display এর সুবিধা:
- পিক্সেল টু পিক্সেল কালার কম্বিনেশন।
- ডিসপ্লে’র ক্ষেত্রে পাওয়ার সেভিং।
- ওয়াইড ভিউ অ্যাঙ্গেল।
- LED থেকে উজ্জ্বল ডিসপ্লে।
AMOLED Display এর অসুবিধা:
- LED ও LCD থেকে শর্ট লাইফ স্প্যান।
- পানিতে পড়লে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
- ম্যানুফ্যাকচারিং খরচ বেশি হওয়ায় দাম বেশি।
Super AMOLED Display
AMOLED Display এর অ্যাডভান্সড্ ভার্সণ হচ্ছে Super AMOLED Display যা ডেভেলপ করেছে স্যামসাং কোম্পানী। স্যামসাং কোম্পানীর সেরা ফোনগুলোর অনেকটাতেই এই ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে।
Super AMOLED Display তে ক্যাপটিভ টাচস্ক্রিণের মতো ভিন্নতা আনতে অর্থাৎ সেপারেট টাচ সেন্সিটিভ লেয়ারের পরিবর্তে টাচ সেন্সর ব্যবহার করা হয়। ফলে, এটিই হচ্ছে বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে হালকা পাতলা টাচ স্ক্রিন বা ডিসপ্লে টেকনোলোজি।
Super AMOLED Display এর সুবিধা:
- ওয়াইড রেঞ্জ অব কালারের কারণে উন্নত রেজ্যুলেশন।
- ১ লক্ষের উপরে Contrast রেশিও।
- গেম খেলায় চোখের জন্যে সুইটেবল।
Super AMOLED Display এর অসুবিধা:
- একবার নষ্ট হলে সহজে ঠিক করা যায় না।
- সাধারণ ডিসপ্লে থেকে দাম বেশি।
Retina Display
Retina Display হচ্ছে আইফোনে ব্যবহৃত উন্নত মানের রেজ্যুলেশন সম্বলিত ডিসপ্লে। ব্যাকলিট LED এর সাথে IPS LCD এর সমন্বয়ে তৈরি এই ডিসপ্লে কে Retina Display বলার কারণ হচ্ছে এই ডিসপ্লের পিক্সেল আলাদাভাবে দেখা মানুষের চোখের পক্ষে সম্ভব নয়।
Retina Display হচ্ছে সুপার শার্প একটি ডিসপ্লে যা সর্বাধিক ব্রিলিয়ান্ট ডিসপ্লে হিসেবে পরিচিত। অ্যাপল কোম্পানী এখন এই ধরণের ডিসপ্লের মাঝে রেটিনা, রেটিনা এইচডি, লিকুইড রেটিনা, লিকুইড রেটিনা এইচডিসহ আরো নানা ধরণের ডিসপ্লে তৈরি করছে।
Retina Display এর সুবিধা:
- ডিসপ্লে প্যানেলের দিক থেকে দারুণ এক্সপেরিয়েন্স।
- পিক্সেল ডেনসিটি ও উন্নত রেজ্যুলেশনের জন্যে অধিক তথ্য সম্বলিত।
- শার্পার ইমেজ রিপ্রোডাক্টিভ অপশন।
Retina Display এর অসুবিধা:
- অনেক দামী হওয়ায় ডিসপ্লে নষ্ট হলে মাথা খারাপ হয়ে যায়।
- IPS LCD এবং OLED ডিসপ্লে’র প্রায় সকল অসুবিধা বিদ্যমান।
LCD Display
Liquid Crystal Display কে সংক্ষেপে LCD ডিসপ্লে বলে। অন্যভাবে, লিকুইড ক্রিস্টাল এর ম্যাট্রিক্স যুক্ত ডিসপ্লে কে LCD ডিসপ্লে বলা হয়। জেনে রাখা ভাল যে, লিকুইড ক্রিস্টাল নিজেই কিন্তু আলো নি:সরণ করে না। বরং, পুরো ডিসপ্লেকে আলোকিত করতে ব্যাক-লাইটের উপর নির্ভর করে। ফলে, LCD ডিসপ্লে সরাসরি সূর্যের আলোতে খুব দৃশ্যমান হতে পারে।
LCD Display এর আরেক নাম প্যানেল ডিসপ্লে। এটি অত্যন্ত পাতলা আর সমান্তরাল হয়ে থাকে। LCD Display ডায়োড এর সাথে সম্পর্কিত যা মূলত আলোক বিচ্ছুরণ করে আর আলোর এই সারিকে পিক্সেল হিসেবে ইউটিলাইজ করে ভেতরের ফাংশনকে সামনে উপস্থাপন বা ডিসপ্লে করে LCD বা Liquid Crystal Display।
LCD ডিসপ্লে শুধু স্মার্টফোনেই ব্যবহৃত হয় না, বরং এটি অন্যান্য আরো অনেক ইলেকট্রোনিক্স ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়। যেমন, টিভিতে, কম্পিউটার মনিটরে, স্মার্টওয়াচে। আগেকার দিনের ডিভিডি প্লেয়ারের মনিটরেও LCD ডিসপ্লে ব্যবহৃত হতো।
LCD Display এর সুবিধা-
- LCD ডিসপ্লে বড় আকারে তৈরি করা যায় যা ৬০ ইঞ্চি পর্যন্ত বড় করা যেতে পারে।
- LCD ডিসপ্লের কোনও জিওমেট্রিক ডিসটরশন নেই।
- এই ডিসপ্লে অত্যন্ত হালকা, পাতলা, এবং কমপ্যান্ট CRT ডিসপ্লে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
- LCD ডিসপ্লে ম্যাগনেটিক ফিল্ডের উপর কোনও প্রভাব ফেলে না।
- খুবই কম পাওয়ার ইউজ করে বলে LCD ডিসপ্লে সম্পন্ন ফোনগুলো কখনোই অতিরিক্ত গরম হয়ে যায় না।
- LCD ডিসপ্লে CTR (Cathode Ray Tube) এর তুলনায় অনেক হালকা।
LCD Display এর অসুবিধা-
- উচ্চ তাপমাত্রায়, LCD Display কনট্রাস্ট হারিয়ে ফেলে।
- LCD Display তুলনামূলকভাবে অনেক ব্রাইট। কিন্তু, ব্রাইট বা উজ্জ্বল পরিবেশের ক্ষেত্রে কিন্তু পরিস্কার নয়।
- প্রচুর পরিমাণে ইলেকট্রিসিটি খরচ করে বিধায়, LCD Display এর ফোনগুলো ওভারহিট হয়ে যায়।
- LCD Display এর পৃথক Liquid Crystal থাকায় ব্যাকলাইটের সমস্ত ব্লক সম্পূর্ণ করতে পারে না।
- ভিউ অ্যাংগেল থেকে LCD Display এর কালার ও কনট্রাস্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
TFT Display
Thin Film Transistor এর সংক্ষিপ্ত TFT যা মোবাইলের সবচেয়ে কমোন ডিসপ্লে। টিএফটি এলসিডিগুলি মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ডিসপ্লে ইউনিট। আগের প্রজন্মের কিংবা কাছাকাছি সময়ের LCD ডিসপ্লের তুলনায় TFT ডিসপ্লের ইমেজ কোয়ালিটি অনেক ভাল এবং রেজ্যুলেশন উন্নততর। কিন্তু, ভিউ অ্যাংগেলের দিক থেকে এটি অনেক narrow আর সাধারণ আলো ও সূর্যের আলোতে ভিজিবিলিটি খুব একটা সুবিধার নয়।
TFT Display এর আরো একটা সমস্যা হচ্ছে এটি ব্যাটারি ফ্রেন্ডলি নয়। কারণ, এই ধরণের ডিসপ্লে প্রচুর পাওয়ার ব্যবহার করে। ফলে, দ্রুত ব্যাটারির চার্জ শেষ হতে থাকে। তবে, সাধারণ মানের ফিচার ফোন, বাজেট ফোন এবং লোয়ার-এন্ড স্মার্টফোনের জন্যে কম খরচে ভাল ডিসপ্লে হিসেবে TFT এর কদর রয়েছে। গ্রাহক হিসেবে আপনার যেটা জানা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, আপনি যদি কম বাজেটে ফোন কিনতে চান, কিংবা মাঝারি মানের স্মার্টফোন খুঁজে থাকেন, তবে আপনার ক্ষেত্রে TFT ডিসপ্লে প্রযোজ্য হবে।
TFT Display এর সুবিধা-
- TFT Display মিনিমাল অ্যানার্জি কনজাম্পশন, অর্থাৎ অল্প মাত্রায় বিদ্যুৎ ও পাওয়ার ব্যবহৃত হয়।
- উজ্জ্বল ও ক্লিয়ার ভিজিবিলিটির জন্যে TFT Display খুবই ভাল, বিশেষ করে LCD এর তুলনায়।
- TFT Display এর ডিজাইন দেখতে খুব সুন্দর।
- এই ধরণের ডিসপ্লের রেসপন্স ভাল। অর্থাৎ, যে কোনও কমান্ডের ক্ষেত্রে দ্রুত ও সঠিক ফলাফল পাওয়া যায়।
- TFT Display এর ক্ষেত্রে Eye Strain মিনিমাইজ করা যায়।
TFT Display এর অসুবিধা-
- LCD ডিসপ্লের তুলনায় TFT ডিসপ্লের দাম বেশি।
- ভিউ অ্যাংগেল Disproportionate, ফলে একদিন থেকে সোজা মনে হলেও অন্য দিক থেকে একটু বাঁকা লাগে।
- প্রাকৃতিক আলোতে, বিশেষ করে আউট ডোরে আনঅ্যাপ্রোপিয়েট।
- উজ্জ্বলতা প্রদর্শনের জন্যে নিজস্ব লাইট প্রতিফলনের চেয়ে ব্যাকলাইটের উপর বেশি নির্ভরশীল।
IPS-LCD Display
আইপিএস এর পুরো মানে ইন-প্লেস সুইচিং। যদি আপনি টিএফটি বনাম আইপিএস তুলনা করেন, তাহলে আইপিএস এলসিডি ডিসপ্লেকে সাধারণ টিএফটি এলসিডি ডিসপ্লের চেয়ে উন্নত হিসেবেই পাবেন। বিশেষ করে, প্রশস্ত ভিউ (Wider Viewing Angels) আর কম পাওয়ার খরচের জন্যে। ফলে, একদিকে যেমন দেখার দিক থেকে ক্লিয়ার ও ব্রাইট, অন্যদিকে ব্যবহারের দিক থেকে ব্যাটারি লাইফ।
ছবির উচ্চ কোয়ালিটির কারণে IPS-LCD ডিসপ্লে কে রেটিনা ডিসপ্লেও বলা হয় থাকে। IPS-LCD সাধারণ TFT ডিসপ্লের চেয়ে বেশি দামী হয়ে থাকে। যারফলে, মোটামুটি ভাল দামের ফোনগুলিতেই এই ধরণের ডিসপ্লে দেখা যায়। অ্যাপলের আইফোন ৪ এ এই ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে।
IPS-LCD Display এর সুবিধা-
- কালার ডেপথ্ প্রডিউসিং এর ফলে IPS-LCD Display এর ছবি অ্যাকিউরেট হয়।
- ডিসপ্লে ওয়াইড ভিউ অ্যাংগেলের হয়। ভিন্ন ভিন্ন অ্যাংগেল থেকে কালার ডিসটরশন হয় না।
- সাধারণ প্রাকৃতিক আলো ও সরাসরি সূর্যের আলোতেও ক্লিয়ার ভিউ পাওয়া যায়।
IPS-LCD Display এর অসুবিধা-
- যদিও TN LCD panel থেকে উন্নত Contrast ও রেশিও রয়েছে, তবু IPS-LCD Display কখনোই VA LCD বা OLED এর সাথে পার পায় না।
- IPS-LCD Display কে মোটামুটি পাওয়ার কনজিউম বলা চলে।
- IPS-LCD Display এর পিক্সেল রেসপন্স টাইম অনেক স্লো।
SLCD Display
সুপার এলসিডি’র সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে SLCD Display। এটি এস-এলসিডি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন একটি এলসিডি প্রযুক্তি। সাধারণভাবে বলতে গেলে, HTC ফোনে SLCD ব্যবহার করা হয়, যদিও অন্যান্য কিছু OEM তাদের ফোনে এই ডিসপ্লেটি অন্তর্ভুক্ত করেছে।
IPS LCD এর সাথে SLCD Display এর পার্থক্য হচ্ছে বাইরের গ্লাস ও টাচ সেন্সরের মাঝে কোনও গ্যাপ না থাকে না। IPS প্রযুক্তির সাথে SLCD Display এর তুলনা করলে এটা বলা যায় যে, এই ডিসপ্লেতে কম লেন্সের ঝলক দেখা যায়।
LED Display
LED একটি শর্ট ফর্ম যার ফুল ফর্ম হচ্ছে Light-Emitting Diode, স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে যার ব্যবহার বর্তমানে নেই বললেই চলে। প্রায় এক দশক ধরেই দেখা যাচ্ছে প্রযুক্তির অনেক অগ্রগতি এবং নানা রকম উপপ্রকার সৃষ্টির কারণে এই ডিসপ্লে আরো অনেক উন্নত হয়েছে, যা এখন স্মার্টফোন ডিসপ্লে তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে, সাধারণ বাটন ফোনে এখনো এই ডিসপ্লের ব্যবহার রয়েছে আর টিভি স্ক্রিণের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার ব্যাপক।
Micro LED Display
এটি একটি ফিউচার প্রযুক্তি যা Micro LED Display এর পাশাপাশি MLED বা µLED নামেও পরিচিত। MicroLED হল এমন একটি নতুন প্রযুক্তি যা মানুষকে মুগ্ধ করবে, তবে এখনই নয়, এটি আমরা স্মার্টফোনের জন্য ভবিষ্যতে দেখতে পারবো। এটিকে Micro LED Display বলার কারণ হচ্ছে এটির ক্ষেত্রে প্রতিটি পিক্সেল তার নিজস্ব LED-এর সাথে সংযুক্ত থাকে।
উপসংহার
স্মার্টফোনের ডিসপ্লে বা টাচস্ক্রিণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন। আশা করি, এখন আর কেউ ডিসপ্লে নিয়ে ডিটেইলস্ জানার ক্ষেত্রে আপনার সঙ্গে মাঞ্জা মারতে পারবে না। কারণ, আপনি এখন টাচস্ক্রিন ও ডিসপ্লে সম্পর্কে অন্য অনেকের চেয়ে ভাল জানেন।
Leave a Reply