আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলের ব্যাটারি সমস্যা বা স্টোরেজ সমস্যা বা যথেষ্ট র্যাম না থাকায় কি অ্যান্ড্রয়েড গেম খেলার মজা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন? কিংবা অন্য কোন কারণে কোন অসাধারণ অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস পিসিতে চালানোর কথা ভাবছেন? কিন্তু উইন্ডোজ বা লিনাক্স ভার্সণ পাচ্ছেন না? তাহলে, আপনার জন্যেই আলোচনা করব সেরা অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর নিয়ে, যার সাহায্যে আপনি অ্যান্ড্রয়েডের প্রায় যে কোন অ্যাপ রান করতে পারবেন আপনার পিসিতেই।
যদিও অনেকেই জানেন, তবুও কেউ কেউ যদি না জেনে থাকেন, তাদের জন্য বলছি, ইমুলেটর হল এমন একটি হার্ডওয়ার বা সফটওয়্যার, যা আপনার কম্পিউটিং ডিভাইসে অন্য একটি আকাংখিত কম্পিউটার ডিভাইসের এনভায়রনমেন্ট তৈরি করে দেয়। এতে অন্য ডিভাইস এভেইলেবল না থাকলেও সেই ডিভাইসের জন্য প্রস্তুতকৃত অ্যাপস রান বা টেস্ট করা যায়।
সেরা অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর
আর অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর আপনার ডিভাইসে অ্যান্ড্রয়েড-এর এনভায়রনমেন্ট তৈরি করবে। যাতে আপনার উইন্ডোজ পিসিতেও আপনি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস্ চালাতে পারেন। কিংবা আপনার ডেভেলপ করা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস্ টেস্ট করে দেখতে পারেন। যাই হোক, অনেক জ্ঞানচর্চা হল, এবার সেরা ৪টি অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর নিয়ে আলোচনা করা যাক।
১. Blue stacks – ব্লু স্ট্যাকসঃ
নিঃসন্দেহে ব্লু স্ট্যাকস হল সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর। প্রায় ৩ বছর বেটা ভার্সণ রাখার পর মূল ভার্সণ এবং পরে ভার্সণ-২ বের করে তারা। আর এখন ভার্সণ থ্রিও বেরিয়ে গিয়েছে। আমি আজকে যেই ইমুলেটরগুলোর কথা আলোচনা করব, তার মধ্যে আমার নিজের ইউজার এক্সপেরিয়ান্সও সবচেয়ে বেশি ভাল ব্লু স্ট্যাকসের ক্ষেত্রেই।
ব্লু স্ট্যাকস একদম ফ্রি এবং খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি একটি অ্যাপ। আপনি যদি খুব সাধারণ একজন কম্পিউটার ইউজারও হন, তাহলেও খুব সহজেই বুঝে নিতে পারবেন এর ব্যবহার বিধি। আর প্লেস্টোরের ৯৭% অ্যাপই সাপোর্ট করে ব্লু স্ট্যাকস। তাই, আজকের আলোচনার সবগুলো অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরের মধ্যে যদি আমার পার্সোনাল সাজেশন চান, তবে আমি অবশ্যই ব্লু স্ট্যাকস ব্যবহার করার পরামর্শ দিব। যদিও, একই সঙ্গে নিজ দ্বায়িত্বে ব্যবহারও করতে বলব।
গেইম খেলার জন্য ব্লু স্ট্যাকসের অ্যাডাপ্টেশনও বেশ ভাল। এদের সোয়াইপ করা, টিল্ট করার অপশনগুলোও খুব সহজ এবং সাবলীল। আর এছাড়াও, ব্লু স্ট্যাকস ৩ কিন্তু অ্যান্ড্রয়েড ৭ এর এনভায়রনমেন্ট প্রোভাইড করে, যেখানে অধিকাংশ ইমুলেটরই দেয় অ্যান্ড্রয়েড ৪.৪ এর এনভায়রনমেন্ট। এসব কিছু পড়ার পর, ব্লু স্ট্যাকস অ্যাপটি যদি ডাউনলোড করতে চান, তাহলে ক্লিক করুন নিচের বাটনটিতে।
২. Droid 4X – ড্রয়েড ৪এক্সঃ
ব্লুস্ট্যাকসের মত ৮ বছরের পুরোনো ইমুলেটর না হলেও, ড্রয়েড ৪এক্স একটি নতুন এবং বেশ ভাল একটি অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর। বলতে গেলে সেরা অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর এর তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে এটি। আর এর ভার্সণ-১ এর পর নতুন ভার্সণে আরও অনেকটা ইম্প্রুভমেন্ট দেখতে পারবেন। তাই, অদূর ভবিষ্যতে অ্যাপটি ব্লু স্ট্যাকসকে ছাড়িয়ে গেলে খুব বেশি অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
আর এই ইমুলেটরটায় বেশ কিছু অ্যাড-অন পাবেন। এগুলো আপনার ইউজার এক্সপেরিয়েন্স আরও সুন্দর করে তুলবে। শুধু তাই নয়, এই ইমুলেটরটা শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড গেইমিং এর জন্যে অন্যান্য বেশিরভাগ ইমুলেটরের চাইতে ভাল। ড্রয়েড ৪এক্স অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরটি আপনার পিসিতে ইন্সটল করতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন নিচের বাটনটিতে।
৩. Nox – নক্সঃ
নক্স আরেকটি অসাধারণ অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর। নক্সের ব্যাপারে আমার নিজস্ব ইউজার এক্সপেরিয়ান্স হল, ইমুলেটরটা সামান্য একটু স্লো। আর এটার ব্যবহার বিধি বুঝে নিতে সামান্য একটু কষ্ট হবে – ব্লু স্ট্যাকসের তুলনায়। তবে, এই দুইটা ব্যাপার ছাড়া ওভার অল পার্ফরমেন্স প্রায় ব্লু স্ট্যাকসের মতই। ব্লু স্ট্যাকসের চেয়ে এর কয়েকটা ব্যাপার আবার ভাল। যেমন এর ইউজার ইন্টারফেইসটা দেখতে ব্লু স্ট্যাকসের চেয়ে সুন্দর। তাছাড়া, নক্স কী-বোর্ড, মাউসের পাশাপাশি গেইমপ্যাডও সাপোর্ট করে।
তবে, অন্যান্য বিভিন্ন অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরের তুলনায় নক্সটা বেশ ভাল। বেটার গেইমিং এক্সপেরিয়ান্সের জন্য নক্সের বেশ কিছু এডিশনাল ইউটিলিটিও আছে। আর, পাঠকদের মধ্যে কেউ যদি এমন থাকেন, যিনি অনেক দিন ধরে ব্লু স্ট্যাকস ব্যবহার করছেন, এখন একটু ভিন্ন কিছু ট্রাই করতে চান, তাহলে আমি পার্সোনালি নক্স ব্যবহার করার পরামর্শ দিব। নক্স এন্ড্রয়েড ইমুলেটরটা যদি ইন্সটল করতে চান, তাহলে, ক্লিক করতে পারেন নিচে দেয়া বাটনটিতে।
৪. Xamarin – জ্যামারিনঃ
সেরা অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর হিসেবে জ্যামারিন ইতিমধ্যেই ভাল সুনাম কুড়িয়েছে। এটি সত্যিই আরেকটি বেশ ভাল অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর। আর আজকে আলোচনা করা সেরা ৪টি অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর –এর মধ্যে সবচেয়ে নতুন অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরও বটে। তবে, এই অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরটা মূলত বানানো হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ডেভেলপারদের কথা মাথায় রেখে। তাদের ডেভেলপ করা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপগুলো মূলত টেস্ট করার জন্য এই আন্ড্রয়েড ইমুলেটরটা ডেভেলপ করা হয়েছে।
আর এই এন্ড্রয়েড ইমুলেটরটি প্রায় সম্পূর্ণ বাগলেস। তাছাড়া, উইন্ডোজ ৭, ৮, ৮.১, ১০ –সব ভার্সণেই সাপোর্ট করে এই ইমুলেটর। আর আজকের আলোচনা করা ৪টি অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটরের মত, এটাও একদম ফ্রি। ৩২ বিটের উইন্ডোজের জন্য জ্যামারিন ডাউনলোড করতে চাইলে ক্লিক করুন বাম পাশের বাটনে। আর ৬৪ বিটের জন্য ডাউনলোড করতে চাইলে ক্লিক করতে পারেন ডান পাশের বাটনে।
যাই হোক, এই ছিল আমার দৃষ্টিতে সেরা অ্যান্ড্রয়েড ইমুলেটর যেগুলো নিয়ে মোটামুটি বলেছি। ইন্টারনেটে সার্চ করলে আরও অনেক ইমুলেটর পেতে পারেন। কিন্তু, ইমুলেটরগুলোর একটা বড় সমস্যা হল, এগুলো অনেক স্লো। আর টিল্ট, সোয়াইপ করার ব্যাপারগুলো অনেক সময় পার্ফেক্টলি কাজ করে না বা ব্যবহার বিধি বুঝে উঠতেও অনেক কষ্ট করতে হয়।
তাই, মাত্র ৪টি নিয়ে আলোচনা করলাম, অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণগুলো এড়িয়ে গেলাম। যাইহোক, ইমুলেটরগুলো ব্যবহার করুন, কমেন্ট বক্সে রিভিউ জানান। আর শেয়ার করার মাধ্যমে আপনার বন্ধুদেরও জানান ইমুলেটরগুলোর ব্যাপারে। তাহলে, আপনার যেই বন্ধু অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের অভাবে আপনার সঙ্গে মাল্টিপ্লেয়ার গেইম খেলতে পারছেন না, তিনিও গেইম খেলতে পারবেন, আর আপনিও গেইম খেলার পার্টনার পাবেন।
Aabesh says
I have used Bluestacks too and its good (y).