আজকের দুনিয়ায় ইন্টারনেট বহুল ব্যবহৃত এবং প্রচলিত একটি শব্দ যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া, নিউজ, ব্লগ ইত্যাদি আরও অনেক সাইট ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করে থাকে।
ইন্টারনেট আসলে অনেকগুলো কম্পিউটারের সংযোগ। ইন্টারনেট একটি বিশ্বব্যাপী সংযুক্ত নেটওয়ার্ক সিস্টেম, যা বিভিন্ন ধরনের মিডিয়ার মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ করতে টিসিপি / আইপি ব্যবহার করে।
আমরা জানি ইন্টারনেট ক্রমাগত পরিবর্তন হচ্ছে। এই মুহূর্তে, InternetLiveStats ওয়েবসাইটের মতে, ১,৯২৫,৮২৮,৭০০ টি ওয়েবসাইট অনলাইনে রয়েছে। কিন্তু আপনি যখন লিঙ্কটি চেক করবেন তখন আরও বেশী হতে পারে। এটি শুধুমাত্র সারফেস ওয়েবের হিসাব, যা আপনি Google বা Bing এর মতো সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে খুঁজে পান।
এমন শত শত কোটি ওয়েব সাইট আছে যেগুলোতে আপনি গতানুগতিক পদ্ধতিতে ঢুকতে পারবেন না, এমনকি খুঁজেও পাবেন না। আবার এমন কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলো খুবই বিচিত্র।
ইন্টারনেট তথা ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব আসলে তিন স্তরে গঠিত হয়। হয়তো আপনি “ডিপ ওয়েব” বা “ডার্ক ওয়েব” শব্দটি শুনেছেন। এই বিশ্বব্যাপী ওয়েবর তিনটি স্তর। আসুন এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি।
সারফেস ওয়েব ডীপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা WWW কি
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব একটি তথ্য ভাণ্ডার, যেখানে তথ্য বা নথি পত্র থাকে। আর এগুলো ইন্টারনেট দ্বারা অ্যাক্সেস করা যায়। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব ১৯৮৯ সালে টিম বার্নার্স লি দ্বারা আবিষ্কার হয়েছিল। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হল ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করার প্রাথমিক সরঞ্জাম। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ওয়েবসাইট গুলোকে হাইপারটেক্সট লিঙ্ক গুলোর সাথে সংযুক্ত করা হয়। হাইপার লিঙ্কগুলো ব্যবহারকারীদের একটি ডোমেইনের অধীনে, একাধিক ওয়েব পেজ ব্যবহারের সুবিধা প্রদান করে।
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের স্তরসমূহ
ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ৩টি স্তর। যথা:
- সারফেস ওয়েব – সারফেস ওয়েব ইন্টারনেটের দৃশ্যমান অংশ। সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্রাউজারের মাধ্যমে আপনি এসব সাইট খুঁজে পেতে পারেন।
- ডীপ ওয়েব – ডীপ ওয়েব ইন্টারনেটের অদৃশ্য অংশ। সাধারণ সার্চ ইঞ্জিন বা ব্রাউজার থেকে আপনি ডীপ ওয়েব খুঁজে পাবেন না।
- ডার্ক ওয়েব – ডার্ক ওয়েব ইন্টারনেটের আর একটি অদৃশ্য অংশ। ডার্ক ওয়েব ব্যবহারকারীদের এবং ওয়েবসাইট মালিকদের পরিচয় লুকিয়ে রাখার অনুমতি দেয়।
১. সারফেস ওয়েব
সারফেস ওয়েব ইন্টারনেটের একমাত্র দৃশ্যমান অংশ। সারফেস ওয়েবের ওয়েবসাইট আপনি সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে পাবেন। আমরা স্বাভাবিক ভাবে যে ইন্টারনেট তথা ওয়েবসাইট ব্যবহার করছি তাই সারফেস ওয়েব। সারফেস ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একটি ছোট অংশ এবং এটি জনসাধারণের জন্য একমাত্র অ্যাক্সেস যোগ্য অংশ।
গুগল, ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার ইত্যাদি ওয়েবসাইট সাধারণ সারফেস ওয়েবের অন্তর্ভুক্ত। সারফেস ওয়েব সাইটগুলো সাধারণত .com, .org, .in, .ae, .club ইত্যাদি ডোমেন ব্যবহার করে। এসব ওয়েবসাইটে অ্যাক্সেস বা প্রবেশ করতে, কোন বিশেষ কনফিগারেশন প্রয়োজন নেই। সারফেস ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের মাত্র ৪%।
২. ডীপ ওয়েব
ডীপ ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের অদৃশ্য অংশ। তাই এটি লুকানো ওয়েব হিসাবেও পরিচিত। ডীপ ওয়েবের সাইট গুগলের মত সাধারণ সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে পাওয়া যায় না। ডীপ ওয়েবটি সারফেস ওয়েবের বিপরীতে, কারণ এটি জনসাধারণের অ্যাক্সেস যোগ্য নয়। ডিপ ওয়েব নিয়ে রয়েছে অনেক অজানা তথ্য যা আপনাকে দারুণ চমকাবে।
ডীপ ওয়েব সাধারণত ব্যাংকিং, ক্লাউড স্টোরেজ, সরকারী তথ্য, ওয়েবমেইল বা অন্যান্য পেমেন্ট পরিষেবা দির জন্য ব্যবহার করে। ডীপ ওয়েব বা লুকানো ওয়েব HTTPS প্রোটোকলের পিছনে লুকানো। ডীপ ওয়েবে প্রবেশ করতে আইপি ঠিকানা বা সরাসরি URL প্রয়োজন, কিছু ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড বা অন্যান্য সিকিউরিটি থাকতে পারে।
৩. ডার্ক ওয়েব
ডার্ক ওয়েব ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের একটি অংশ এবং এটি ওয়েবে অদৃশ্য থাকে। ভিজিটর বা ওয়েবসাইট এডমিনদের ওয়েব অ্যাক্সেসের জন্য আলাদা সফটওয়্যার বা কনফিগারেশনের প্রয়োজন। টর ব্রাউজার ডার্ক ওয়েব অ্যাক্সেস করার জনপ্রিয় সফটওয়্যার। টর ব্রাউজারের মাধ্যমে এসব ওয়েব ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করা যায়। ডার্ক ওয়েব ওয়েবসাইটের ডোমেইন সাধারণত .onion থাকে।
ডার্ক ওয়েবে অবৈধ কার্যকলাপ, জুয়া, ড্রাগ, শিশু পর্নোগ্রাফি, অস্ত্র ইত্যাদি মতো খারাপ কার্যক্রম হয়ে থাকে। বিট কয়েনের মত ক্রিপ্টোকুরেন্স ব্যবহার করে লেনদেনের সংঘটিত হয়। বেশিরভাগ হ্যাকার ডীপ ওয়েব এবং ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। মোট ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েবের ৯৬% ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করে।
Ashik says
আমিই সেই হ্যাকার, যে এখন বেকার, কাজ-কর্মের অভাবে।
ডীপ ওয়েব দেখে, রংচং মেখে, নেমেছিলাম স্বভাবে।
অবশেষে বুঝিলাম
আসলে তো ডুবিলাম
নৈ কাজ তো খৈ বাজ-এর প্রভাবে।।