চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বকাপের উম্মাদনা যেখানে কোটি কোটি ফুটবলপ্রেমী তাকিয়ে আছে ১৫ জুলাইয়ের বিশ্বকাপ ফাইনালের দিকে। আর এই সব ফুটবলপ্রেমীদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে বিশ্বকাপের আয়োজক ফিফা ও রাশিয়া ব্যবহার করেছে নানা রকম প্রযুক্তি।
আপনি টিভিতে বা অনলাইনে ঝকঝকে ভিউতে খেলা দেখেছেন, প্রতিটি প্লেয়ারের মুভমেন্ট বুঝতে পারছেন, এমনকি কোন ফাইল হলে সেটাকে নিঁখুতভাবে বিশ্লেষন করতে পারছেন। আর এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে আয়োজকদের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে।
বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্যবহৃত প্রযুক্তি
আসুন, জেনে নেই এবারের রাশিয়া ও ফিফার ফুটবল বিশ্বকাপে কী কী প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়েছে।
ভিএআর প্রযুক্তি
ভিএআর প্রযুক্তি মানে ভিডিও এসিসটেন্ট রেফারি প্রযুক্তি। এবারের বিশ্বকাপে নতুন এই প্রযুক্তি অনেক বড় একটি ভুমিকা পালন করছে। এই প্রযুক্তি ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে রেফারিকে গোল, পেনাল্টি, রেড কার্ড শনাক্ত করতে সাহায্য করে থাকে। এমনকি মুল রেফারির নেয়া ডিসিশনকে পরিবর্তণ সম্ভব হচ্ছে এই ভিএআর প্রযুক্তির মাধ্যমে।
এর আগেও এই প্রযুক্তিকে পরীক্ষামূলক কাজে লাগানো হয়েছিল FA কাপে কিন্তু এটি তেমন একটা সফল হতে পারেনি। তা স্বত্তেও ফিফা এই প্রযুক্তি এবারের বিশ্বকাপের ৬৪টি ম্যাচেই ব্যবহার করছে। একজন অ্যাসিসটেন্ট রেফারিসহ তিনজন অভিজ্ঞ সদস্য দ্বারা এই প্রযুক্তি পরিচালিত হয়। আর ভিএআর প্রযুক্তি মাঠে থাকা মুল রেফারির সাথে একটি ফাইবার বেইস রেডিও সিষ্টেমের সাহায্যে সংকেত প্রদান করে থাকে।
৪কে ইউএইচডি ভিআর প্রযুক্তি
প্রতিবারের মতো এবারো বিশ্বকাপে ব্রডকাস্ট প্রযুক্তিতে যুক্ত হয়েছে এক নতুন মাত্রা আর সেটি হল 4 k ULTRA HIGH DEFINITION (UHD)। যেটি কিনা ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে পরীক্ষামুলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে মাধ্যমে দর্শকরা টেলিভিশিন সেটের সামনে অনেক বেশি উপভোগ করতে পারছেন।
ইলেকট্রনিক পারফরমেন্স অ্যান্ড ট্র্যাকিং সিষ্টেম
এই প্রযুক্তিকে এবারের ফিফা আসরের দ্বিতীয় চমক হিসাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। একটা ট্যাবলেট বেইস সিষ্টেম ৩২ টিমের সকল কোচকে দেয়া হয়েছে যাতে সব টিমের প্লেয়ার পরিসংখ্যান থেকে শুরু করে ভিডিও ফুটেজসহ সকল কিছুই পাওয়া যায়।
এমনকি কোন প্লেয়ার কখন কীভাবে গোল করেছেন, কত স্পিডে বল পাস করেছেন সবকিছুর বিবরণী ট্যাবে যুক্ত করা হয়েছে।ফলে যে কোন দলের কোচ অন্য দলের খেলোয়াড়দের সবকিছু জানতে পারবেন। অন্যদিকে এই সিষ্টেমের মাধ্যমে Tracking ও সহজ হয়েছে।
রাশিয়ায় ৫জি প্রযুক্তি
যদিও ৫জি প্রযুক্তি ২০১৯ সালে সর্ব সাধারনের জন্য উম্মুক্ত করা হবে কিন্তু বিশ্বকাপ উপলক্ষে রাশিয়ায় ৫জি প্রযুক্তির সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে করে অনেক দ্রুত ইনফরমেশন আদান প্রদান করা যাচ্ছে। কয়েক দিন আগে অনুষ্টিত pyeongchang 2018 অলিম্পিকে যেটার সাহায্যে ৩৬০ ডিগ্রী ভিআর ভিডিও ব্রডকাস্ট করা সম্ভব হয়েছে।
এডিডাস টেলসটার বল
এডিডাস কোম্পানি সেই ১৯৭০ সাল থেকেই ফিফার জন্য বল তৈরী করে আসছে। প্রতিবারের মতো এবারো এডিডাস কোম্পানি বিশ্বকাপের জন্য “Telstar 18” নামের একটি অত্যন্ত চমৎকার বল এনেছে যেটি আগের সব বল থেকে ব্যতিক্রমী।
এই বলের মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে NEAR FIELD COMMUNITION (NFC) নামের একটি চিপ। শুনে অবাক হবেন এই চিপ মুলত অ্যাপেল কোম্পানী তাদের প্রোডাক্টে ব্যাবহার করে।
যদিও আপনার মনে হতে পারে এগুলা বর্তমান প্রযুক্তির তুলনায় খুব নগন্য কিন্তু আমরা আশা রাখতে পারি এই ছোট ছোট প্রযুক্তি ভবিষ্যৎকালের বিস্ময়কর প্রযুক্তির দুয়ার খুলছে। বিশ্বকাপের আগামী আসর হবে আরও বেশি জমকালো আর প্রযক্তিময়, এটাই আমাদের আশা। সবাই মতামত জানাবেন কোন প্রযুক্তি আপনার সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে।
Leave a Reply