প্রতিটি ব্যবসায়ী কিংবা উচ্চাকাংখী উদ্যোক্তাই এমন ব্যবসা খুঁজে থাকেন যা কখনো ফ্লপ খাবে না। আর এমন কিছু ব্যবসা অবশ্যই আছে যেগুলো কোনদিন বন্ধ হবে না। পৃথিবী ধ্বংশ হওয়ার আগ মূহুর্ত পর্যন্ত চলতে থাকবে।
বর্তমান গ্লোবাল ওয়ার্ল্ডে সব ব্যবসাই স্বাধীন। যে কেউ চাইলেই যে কোনও ব্যবসা করতে পারেন, সেটা ডোমেস্টিক হোক আর ইন্টারন্যাশনাল হোক, ছোট হোক আর বড় হোক। বড় কিংবা ছোট ব্যবসা করে ধনী হওয়ার উপায় অনেকেরই জানা।
কিন্তু সবাই কি আর ব্যবসা করে সফল হতে পারেন! প্রায় প্রতিদিনই আমরা কোন না কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে থাকি। নিজেদের সার্কেলে যেমন প্রতিনিয়তই এরকম ঘটনা ঘটে থাকে, তেমনই পত্র-পত্রিকায় প্রতিদিনই ব্যবসা বন্ধের খবর পাওয়া যায়। বৈশ্বিক কারণ, রাস্ট্রীয় নিয়ম-নীতির কঠোরতাসহ আরো নানা কারণেই ব্যবসা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কিন্তু এমন কিছু ব্যবসা আছে যেগুলো বন্ধ হওয়ার সম্ভাবণা নেই বললেই চলে। আজ আপনাদের তেমনই কিছু ব্যবসার কথা বলবো যেগুলো সম্পর্কে আপনি নিজেও জানেন কিন্তু করার কথা ভাবেন না।
১. খাদ্য কিংবা খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসা
খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদার প্রথমে রয়েছে। এটা শিশু থেকে বুড়ো সবারই বেসিক প্রয়োজন। মানুষ যতকাল বাঁচবে, ততকালই খাদ্য খাবে। তাই, খাদ্যের চাহিদা কোনদিন শেষ হবে না এবং খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্যের ব্যবসাও কোনদিন ফ্লপ যাবে না।
আপনি যদি ইতিমধ্যেই এ-রকম ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন, তবে মনোযোগ বাড়িয়ে দিন। আর যদি নতুন করে ব্যবসা করার কথা ভেবে থাকেন, তবে এখনই সময়; অন্য চিন্তা বাদ দিয়ে ফুড বিজনেসে নেমে পড়েন। গ্রোসারি, সুপার মার্কেট, রেস্টুরেন্ট, ফাস্ট ফুড, অনলাইন ফুড ডেলিভারী, ইত্যাদি যে কোনও ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন। কিংবা, অল্প পুঁজিতে করার মতো ১০ ফুড বিজনেস আইডিয়া দেখে নিতে পারেন।
২. ফার্মাসিউটিক্যালস্ কিংবা ফার্মেসি ব্যবসা
মানুষ মাত্রই অসুস্থ্য হয় এবং সুস্থ্য হওয়ার জন্যে ঔষধ খায়। যে কোনও মানুষ যত দিন বাঁচবে, ততদিনই জীবনের কোন না কোনও সময় ঔষধ খাবে। তাই, যারা ঔষধ উৎপাদন করেন এবং যারা বিপনন বা ব্যবসা করেন, তাদের ব্যবসা ফ্লপ খাওয়ার কোন সম্ভাবণা নেই।
আপনার যদি যথেষ্ট্য পুঁজি থাকে, তবে ফার্মাসিউটিক্যালস্ কোম্পানী খুলতে পারেন যেখানে সব রোগের ঔষধ উৎপাদন হবে। আর যদি আপনার প্রচুর পুঁজি না থাকে, তবে নিজ মহল্লা কিংবা অন্য এলাকায় ঔষধের দোকান দিতে পারেন। তবে, তার আগে জেনে নিন ফার্মেসী ব্যবসা বা ঔষধের দোকান দিতে কি কি কাগজ-পত্র লাগবে।
৩. হেলথ্ কেয়ার বা হাসপাতাল
এটিও ঔষধের মতোই নন-ফ্লপিং বিজনেস। লাভের দিক থেকে ঔষধ কোম্পানীর পরেই এর অবস্থান। হেলথ্ কেয়ার আর হাসপাতাল প্রায় কাছাকাছি শব্দ। তবে, হেলথ্ কেয়ার বললে ছোট পরিসর আর হাসপাতাল বলতে বড় পরিসর বোঝায়।
মানুষ যখন গুরুতরভাবে অসুস্থ্য হয়, তখন হাসপাতালে না গিয়ে উপায় থাকে না। আপনারও নিশ্চয়ই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে কিংবা নিজে ভর্তি না হলেও আত্মীয়-স্বজনকে ভর্তি করিয়েছেন। আর কিছুটা হলেও টের পেয়েছেন যে হাসপাতালগুলো কি পরিমাণ ব্যবসা করছে! বড় পুঁজির ব্যবস্থা থাকলে এই ব্যবসায় নেমে পড়ুন, প্রয়োজনে কয়েকজন মিলে শুরু করুন।
৪. শিক্ষা প্রতিষ্ঠান – স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি
মানুষের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক প্রয়োজন শিক্ষা। প্রতিটি বাবা-মা’ই তাদের সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলতে চান। আর সে লক্ষেই ছেলে-বেলা থেকেই ভাল স্কুলে ভর্তি করার তৎপরতায় থাকেন। বুঝতেই পারছেন শিক্ষা ব্যবসা কখনোই ফ্লপ খাবে না।
আপনি হয়তো স্কুল, কলেজ কিংবা ইউনিভার্সিটি দেয়া কিংবা পরিচালনা করাকে ব্যবসা বলতে নারাজ হতে পারেন। কিন্তু চোখ কান খোলা রেখে দেখুন, বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থার প্রায় পুরোটাই ব্যবসা। কাজেই, আপনিও এই ব্যবসায় নামতে পারেন। তবে, এখনই নয়; করোনা কাল কেটে যাওয়ার অপেক্ষা করুন।
৫. ফ্যাশন এন্ড ক্লথ
জন্মের পর থেকেই পোষাক পরতে হয় সবাইকে। আর কিছুদিন পরই, অর্থাৎ বুঝতে শিখতে শুরু করলেই হয়ে ওঠে ফ্যাশন সচেতন। কাজেই, ফ্যাশন ও ক্লথ ব্যবসা কখনোই ফ্লপ যাবে না। কারণ, মানুষকে চিরকাল জামা-কাপড় পরতে হবে আর যারা জামা-কাপড়ের ব্যবসা করবে, তারা চিরকালই সফলতা পাবে।
যদিও জামা-কাপড়ের ব্যবসা তুমুল প্রতিযোগীতাপূর্ণ, কিন্তু আপনার যদি এ বিষয়ে ভাল ধারণা থাকে, তবে আপনি গার্মেন্টস্ খুলতে পারেন, পাইকারি কিংবা খুচরা বিক্রির দোকান দিতে পারেন।
শেষের কথা
মানুষের আয়ের প্রায় আশি ভাগই আসে ব্যবসা থেকে। বাকি বিশ ভাগ চাকরি বা অন্যান্য উৎস থেকে। কাজেই, ব্যবসার উপর বড় কিছু নেই। তবে, সব ব্যবসা সবার জন্যে নয়; ব্যবসার জন্যে বিচক্ষণ হতে হবে। এমন ব্যবসা করা যাবে না যা ফ্লপ খাওয়ার সম্ভাবণা রাখে। সুতরাং, উপরোক্ত ব্যবসাগুলো থেকে যে কোনটি বেছে নিন এবং আজই প্ল্যান তৈরি করা শুরু করে দিন।
Meftah ul Haq says
Yes, your food business idea is appreciated to me, Thanks.
Abrar says
খাবারের ব্যবসা ভাল প্রপিট এনে দেয়, এটা সত্যি। তবে, এই ব্যবসার মধ্যে ব্যস্ত থাকতে হয় সারাক্ষণ। অর্থাৎ, প্রচুর সময় দিতে হয়। এটাই হচ্ছে ফুড ব্যবসার বড় অন্তরায়। তবে, যাদের হাতে সময় আছে, তাদের জন্যে এই ব্যবসা ব্যাপক ফলপ্রসূ হবে বলে মনে করি।