অনেকগুলো কারণে ইমেল লিস্ট কেনা উচিত নয়। একসাথে অনেকগুলো ইমেল পাওয়ার সুবাদে অনেকে ইমেল লিস্ট কেনার প্রতি বেশি ঝোঁক থাকে। পণ্য বা সেবার প্রসারের ক্ষেত্র এ ইমেল লিস্ট অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও ইমেইল মার্কেটিং থেকে আয় করার কিছু সহজ উপায় আছে, তবু ইমেল মার্কেটিংয়ের জন্য আপনি যদি ইমেল লিস্ট কেনার চিন্তা করেন, তাহলে এটা অনেক বড় ভুল হতে পারে। মূলত অর্গানিক পদ্ধতিতে ইমেল লিস্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের উপায়। অনেকে ভাবতে পারেন একসাথে অনেকগুলো ইমেল কিনে নিলে সময় বাঁচবে।
আপনার মূল্যবান সময় বাঁচাতে গিয়ে, হারাতে পারেন মূল্যবান গ্রাহক। এছাড়া, আপনার ব্যবসায়ের সম্মান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি দণ্ডও হতে পারে। এ-রকম অসংখ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন ইমেল লিস্ট কেনার দ্বারা। বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হল।
ইমেল লিস্ট কেনা থেকে যে-সব সমস্যা হতে পারে
১. সঠিক ইমেলের অনিশ্চয়তা
অনেক সময় যারা ইমেল লিস্ট বিক্রি করে, তাদের মধ্যে অনেক অসৎ লোক থাকতে পারে। তারা হয়তো বলবে তাদের ইমেলগুলো সঠিক। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাবে অনেক ইমেলের নামটি সঠিক নয়। এছাড়া, আরও অনেক সমস্যা থাকতে পারে। যেমন-
- অসম্পূর্ণ ডেটা (তালিকায় থাকা ব্যক্তির ভুল নাম)
- পুরানো তথ্য (ইমেলগুলো আগে সক্রিয় ছিল কিন্তু বর্তমানে বন্ধ আছে)
- ইমেলগুলো অনলাইন থেকে অবৈধভাবে সংগ্রহ করা হয়েছে।
রাতারাতি ১০ থেকে ১৫ হাজার মেইল আইডি পাওয়া দুর্দান্ত আইডিয়া মনে হতে পারে। তবে, এই ইমেল লিস্টটি যদি কোনও অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করা হয়, তাহলে সেন্ড করা প্রতিটি ইমেলের জন্য ১৬ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
২. আপনার ইমেলগুলো স্প্যাম হিসাবে গণ্য হতে পারে
আপনি খেলার খবর অপছন্দ করেন! এখন আপনার মেইলে যদি নিয়মিত খেলা সম্পর্কিত তথ্য পাঠায় সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন? স্বাভাবিকভাবে উক্ত মেইল অ্যাড্রেসটি আপনার মেইলের স্প্যাম বক্সে পাঠিয়ে দিবেন।
একই ঘটনা ঘটতে পারে আপনার কেনা ইমেল লিস্টের ক্ষেত্রে। আপনি ১০ হাজার ইমেল কিনলেন, কিন্তু জানেন না তাদের কোন বিষয়ে আগ্রহ। অপ্রয়োজনীয় ইমেল পাঠানোর মাধ্যমে দেখা যাবে প্রাপক উল্টো আপনার ইমেল এবং প্রতিষ্ঠানের উপর বিরক্ত হয়ে যাবে।
এটাও সত্য, ৪টি ফ্রি ইমেল ট্র্যাকিং সফট্ওয়্যারের মাধ্যমে আপনি ফ্রি ইমেল ট্র্যাক করতে পারবেন। এর ফলে, কতজন আপনার ইমেল ওপেন করেছে তা বুঝতে পারবেন।
৩. অন্যরাও একই ইমেল ব্যবহার করছে
আপনার নিকট যখন কেউ ইমেল লিস্ট বিক্রি করেছে। স্বভাবতই ঐ একই ইমেল লিস্ট হয়তো সে অন্য কারও নিকট বিক্রি করেছে। হয়তো ইতোমধ্যে পূর্বের ইমেলে ক্রেতা অফার বা অন্যান্য ইমেল পাঠিয়ে প্রাপককে বিরক্ত করে ফেলেছে। ফলাফল স্বরূপ দেখা যাবে তারা অফার বা এ-সব ইমেলগুলো ফিল্টার করে রেখেছে।
৪. ইমেল সার্ভিস প্রোভাইডারদের থেকে সমস্যায় পড়তে পারেন
যদি আপনার পাঠানো ইমেলগুলো সব সময় স্প্যাম বক্সে চলে যায়, তাহলে ফলাফল খুব ভয়ানক হবে। আপনার ইমেল সার্ভিস প্রোভাইডাররা আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দিতে পারে।
এছাড়া, সন্দেহজনক কিছু মনে হলে তারা আপনাকে জরিমানা করতে পারে এবং আপনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে। ইমেল লিস্ট কেনা ইমেল সার্ভিস প্রোভাইডারদের আইন বিরোধী এবং কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
৫. রেসপন্স রেট কম থাকবে
স্বভাবত, আপনার কেনা ইমেল লিস্টের ব্যক্তিরা আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানে না। সে হিসাবে আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তাদের আগ্রহ কম থাকবে। আপনার পাঠানো ইমেলগুলো থেকে হয়তো খুব কম মানুষ উত্তর দিবে।
অথচ, আপনি যদি অর্গানিক পদ্ধতিতে ইমেল নিতেন, তাহলে ১০০ ইমেল থেকে কমপক্ষে ৮০টি ইমেলে সাড়া পেতেন। কেননা, এক্ষেত্রে ঐ ১০০ জনের আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ থাকার কারণে ইমেল সরবারহ করেছে ।
শেষ কথা
ইমেল লিস্ট কেনার ক্ষেত্রে আশা করি উপরের দিকগুলো বিবেচনা করবেন। তবে, আপনি যদি বিশ্বস্ত কোন মাধ্যম পান, সেক্ষেত্রে ইমেল লিস্ট কিনতে পারেন। যেমন, আপনার প্রতিষ্ঠানটি ই-কর্মাস ওয়েবসাইট এবং যার নিকট থেকে ইমেল কিনবেন তাদেরটাও ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান, সেক্ষেত্রে কিনতে পারেন। কিন্তু মনে রাখবেন, ইমেল লিস্ট কেনা কখনও সঠিক পদ্ধতি না।
Leave a Reply