কিছু মানুষ স্বাভাবিকভাবেই সমাজে নিজের জায়গা করে নিতে পারে কিন্তু কিছু মানুষের সামাজিক দক্ষতা না থাকার কারণে পেছনে পড়ে যায়। সামাজিক দক্ষতা না থাকার কারণে অনেকেই মানুষের সাথে সুন্দর সম্পর্ক তৈরি করতে পারে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব পরিস্থিতিতে সে নিজেকে একাকী মনে করা শুরু করে।
এখন সময় এসেছে নিজেকে পরিবর্তন করার। কেবল বেঁচে থাকার জন্য নয় বরং সামাজিকভাবে সাফল্য অর্জন করার জন্য নিজেকে পরিবর্তন করতে হবে। তাই আজকে আমরা জানবো, সামাজিক বৃত্তে সফল হওয়ার জন্য সেরা ১০টি স্যোশাল লাইফ হ্যাক।
প্রায় সব মানুষের জীবনে এমন কিছু স্বভাব থাকে যা জীবনে অসুখী হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমরা যদি কিছু কিছু অভ্যেশ পরিবর্তণ করে নেই, তবে সমাজে সকলের কাছেই ভাল থাকতে পারবো এবং জীবনে সুখী হবো। আসুন, ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, চাকরী জীবন এবং সর্বোপরি সামাজিক জীবনে সুখী হতে কিছু সোশ্যাল লাইফ হ্যাক সম্পর্কে জানি।
স্যোশাল লাইফ হ্যাক
১. হঠাৎ করে কথোপকথন শেষ করার পদ্ধতি
কিছু মানুষ আছে একবার কথা বলা শুরু করলে আর বন্ধ করে না। এসব ক্ষেত্রে আপনার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে “ওহ! আমার লেট হচ্ছে” বলে, আনাড়িদের মত কথোপকথন শেষ করবেন না।
বরং এসব ক্ষেত্রে আপনার হাতটি তাদের কাঁধে রাখুন এবং আস্তে-ধীরে বলুন আপনার এখন যেতে হবে।
২. হঠাৎ করে কারও মতের সাথে একমত হবেন না
আলোচনার মাঝখানে কিংবা শুরুতে কোন কিছু না বুঝে সম্মতি দিবেন না। উক্ত বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করুন। প্রশ্নটি নিয়ে চিন্তা করুন, যাতে ঐ ব্যক্তি আপনাকে জ্ঞানী এবং সত্যিকারের মানুষ হিসাবে বিশ্বাস করতে পারে।
এছাড়া হঠাৎ করে কোন বিষয়ে আন্দাজে সম্মতি প্রদান করলে পরবর্তীতে সমস্যার সৃষ্টি করে।
৩. কেউ অপমান করলে গালাগালি কিংবা তর্ক করবেন না
যদি কেউ আপনাকে অপমান করে, তবে সর্বোচ্চ একটু মুচকি হাসি দিন। তার মানে এই নয়, আপনি তর্ক বা জবাব দিতে জানেন না। বরং এরকম পরিস্থিতিতে চুপ থাকাটাই ভাল।
যদি একসাথে সবাই আপনার সাথে মজা করে বা আপনাকে অপমান করতে শুরু করে, তবে মনোযোগ দিয়ে কথাগুলো শুনুন আর উপভোগ করুন। কারণ এতে করে, আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন, কি পরিমাণ হেটার্স আপনার সফলতাকে সহ্য করতে পারে না।
৪. চালাক-চতুর মানুষ চিনে রাখুন
যখন আপনি কোনও উপকারের জন্য কারও কাছে সাহায্য চাচ্ছেন, তখন তাদের ৩টি বিকল্প উপায় দিন।
- ছোট-খাট সাহায্যে
- বড় ধরণের সাহায্যে
- অসম্ভব রকম সাহায্য
চালাক-চতুর ব্যক্তিরা সর্বদা সহজ বিষয়টাকেই বেছে নিবে। এ ধরণের ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলুন।
৫. চুয়ংগাম চাবাবেন না
সব জায়গায় চুয়ংগাম খাবেন না। তবে আপনি যদি কোন বিশেষ ক্ষেত্রে নার্ভাস থাকেন, তবে চুয়ংগাম খেতে পারেন। অধিকাংশ গবেষকের মতে চুয়াংগাম নার্ভাসনেস দূর করতে সাহায্যে করে।
৭. সব জায়গায় সব সময় উদারতা দেখাবেন না
যখন কোন বন্ধু, অফিসের সহকর্মী কিংবা কোন গ্রুপের সাথে থাকবেন, তখন চেষ্টা করবেন নিজের স্বকীয়তা বজায় রাখার। তাদের সব কিছুতে সম্মতি দেওয়া থেকে বিরত থাকুন। তার কোন কিছু অফার করলেই নেওয়ার দরকার নেই।
কারণ পৃথিবীতে এখনও অনেক মানুষ আছে, যারা আপনাকে কোন কিছু দেয়ার পর বলতে পারে, তোমার পেছনে আমি অনেক টাকা খরচ করেছি।
৭. নোট করার অভ্যাস করুন
প্রতিদিনের কাজ বা লক্ষ্য গুলো নোট করে রাখুন। এটা আপনার বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বহন করে। পৃথিবীর সকল বুদ্ধিমান এবং সফল ব্যক্তিরা দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজের নোট রাখে।
৮. প্রকৃত বন্ধুকে খুঁজে বের করুন
জীবনে চলার জন্য একজন ভাল বন্ধু, মরুভূমিতে থাকা ছায়ার মত কাজ করে। আপনার প্রকৃত বন্ধু কে জানতে চান?
আপনার তেমন কোন টাকা-পয়সা নেই সবাইকে বলুন। এরপরও যে আপনার সাথে থাকে কিংবা তার কোন অনুষ্ঠানে আপনাকে দাওয়াত করে। তবে সে আসলেই আপনার সত্যিকারের প্রকৃত বন্ধু।
৯. মানুষের শারীরিক ভাষার উপর লক্ষ্য রাখুন
অনেক সময় আমাদের শরীরের ভাষা অনেক সত্য প্রকাশ করে। মানুষের হাত, পায়ের পাতা, চোখ অনেক কিছু প্রকাশ করে। কারও সাথে কথা বলার সময় এসব দিকে দৃষ্টি রাখতে পারেন। যাতে তার মনের কথা আপনি জেনে জান আর ওইভাবে তার সঙ্গে চলতে পারেন।
১০. মানুষ কি ভাবছেন তা নিয়ে বেশী মাথা ঘামাবেন না
প্রতিটি সমাজে এমন কিছু লোক থাকে, যারা আপনার সকল কাজকে অবজ্ঞা এবং হেয় করে। এসব লোকের কথাবর্তায় গুরুত্ব দিবেন না। এরা আপনার খারাপ বা ভাল কাজ সব কিছুকেই অবজ্ঞা করবে। বলতে পারেন এরা আপনার জীবনের পথের কাঁটা।
শেষ কথা
সামাজিক জীবনে সুখী হওয়া ও সবার সাথে মিলে-মিশে থাকার জন্যে এ ছোট ছোট উপায়গুলো আপনাকে দারুণ সাহায্য করবে। এমনকি, কখনো কখনো এমন ছোট ছোট অভ্যেশ আপনার জীবনে বড় ধরণের সফলতা এনে দিতে দারুণ ভূমিকা রাখবে।
Leave a Reply