ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার তো অনেকদিন থেকেই ব্যবহার করছেন কিন্তু কখনো কি ভেবে দেখেছেন এর প্রয়োজনীয় বা ক্ষতিকর দিক নিয়ে? কেনই বা এটি ব্যবহার করছেন সেটি নিয়ে?
হয়তোবা আপনার উত্তরটি “না” তাই না?
আসলে শুধু যে আপনি করছেন বিষয়টা এমন নয়। প্রায় দুই বিলিয়ন মানুষও আপনার মতো করেই এটি ব্যবহার করছে । আর পরিস্থিতিটাই এমন যে সবাই করছে, তাই আপনিও করছেন আমিও করছি।
কিন্তু তাই বলে কি একটু ভাববেন না? আজ তাই আপনার সামনে কিছু কারণ দাঁড় করাবো যা থেকে ফেসবুক মেসেঞ্জারের কিছু গোপণ সত্য জানতে পারবেন। আর সেই সাথে বুঝতে পারবেন কেন আপনার এই ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করা উচিত নয়।
ফেসবুক থাকতে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের আবির্ভাব হলো কেন?
কারণগুলো জানার আগে চলুন জেনে আসি ফেসবুক মেসেঞ্জার তৈরি করার কারণটি কি ছিল। একটু ইতিহাসটা জানা যাক-
৪ ফেব্রুয়ারী ২০০৪ সালে ফেসবুক প্রথম প্রকাশ পায়। এর ঠিক ৪ বছর পর অর্থাৎ ২০০৮ সালে ফেসবুকে মেসেজ অপশনটি চালু করা হয়। আর তার ৩ বছর পরই গ্রাহকদের সুবিধায় চালু হয় ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার। আসলে এটি বানানোর বা প্রকাশ করার কোনো যুক্তি সংগত কারণ বলতে আপনাকে এর প্রতি আকর্ষিত করাই ছিল যা এখন আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। আপনার কিংবা আপনার ছেলে মেয়ের সারাদিনই কেটে যায় এই ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে।
এই পর্যায়ে কয়েকটি কারণ তুলে ধরছি যার কারণে আপনাকে কিংবা আপনার ছেলে মেয়ে কাউকেই এই ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করা উচিত নয়। কারণগুলো-
সময় নষ্ট-
ইশ!!! আজকে একটু বেশিই ব্যবহার করে ফেললাম। ওর সাথে আজ এত কথা নাও বলতে পারতাম। কালকে থেকে ঠিক কম ব্যবহার করব।
সবার মতো আপনিও হয়তো এই কথাগুলো অনেকদিনই ভেবেছেন কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। আসবেই বা কেমন করে কখনো কি ব্যবহার করা ছাড়তে পেরেছেন?
সমস্যাটা আপনার না, এটা সার্বজনীন বলতে পারেন।শুধু যে আপনার হচ্ছে এমনটা নয়।
কেন এমনটা হচ্ছে জানেন?
আসলে আপনার ব্রেনটা হ্যাক করেছে এই ডাকাতের দল। কখন কার সাথে কথা বলছেন, কার সাথে বেশি বলছেন সেই সব খবর এদের কাছে থাকছে। আর আপনাকে রোজ এখানে নিয়ে আসাই এদের মূল লক্ষ্য, আপনি হয়তো বুঝেই উঠতে পারেননি। তাই, রোজই ছুটে আসেন। আর খালি দেখেই যান কে কোন মেসেজ দিল, ইত্যাদি।
উচ্চমাত্রার আসক্তিযুক্ত-
বিষয়টা আপনার কাছে কিছুটা ধোঁয়াশার মতো মনে হতে পারে। বিষয়টা একটু পরিষ্কার করে বলছি। কখনো কি ভেবে দেখেছেন মেসেজ আসলে নোটিফিকেশন কেন লাল হয়ে থাকে?
এর কারণ আর কিছুই নয় আপনার আসক্তি সৃষ্টি। আর এই আসক্তির জের ধরেই কিন্তু মেসেঞ্জারের সৃষ্টি হয়েছিল সেটি ভুলে যাবেন না।
আসক্তি তো বুঝলাম কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকটা কি? ক্ষতিকর দিকটা আর কিছুই না আপনার রোজ ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে দেয়া সময়ের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। আপনাকেও ঠেলে দিচ্ছে একাকীত্বের জালে। অগোচরেই যে ম্যাসেঞ্জার নিজের বাড়ি ভাবতে শুরু করেছেন তা কি জানেন ?
প্রায়শই ডিস্টার্বের সম্মুখীন হওয়া-
অনেকবারই Message Request জিনিসটা খেয়াল করেছেন। জিনিসটা আসলে অপরিচিত কোনো মানুষের মেসেজ যা আপনাকে পাঠানো হয়েছে। অর্থাৎ, ম্যাসেঞ্জার এই আরেকটি সুবিধা বলতে পারেন এখানে আপনি যে কাউকেই না চিনেই মেসেজ দিতে পারেন। (এখন যদিও কোনো Mutual Friend না থাকলে দেয়া যায় না) আবার ফ্রিতে উতক্তও হতে পারেন, এতে করে কর্তৃপক্ষ দায়ী নহে।
এক্ষেত্রে শুধু ম্যাসেঞ্জার নয়, ফেসবুক লাইটেও ফিচারটি রয়েছে। বলতে পারেন পুরো ফেসবুকেরই একটি Vulnerability বা সমস্যা। পাশাপাশি আরো সমস্যা, যেমন অটো লাইকের সমস্যাটিও রয়েছে ।
সর্বশেষে কিছু কথা থেকে যায়, তা হলো এইসব সোস্যাল মিডিয়া কিন্তু আপনার দৈনন্দিন জীবনের সাথে কোনোভাবেই যুক্ত নয়। আর তাই, এত সময় দিয়ে থাকার মানেও নেই। কিন্তু খেয়াল করলে দেখবেন ২৪ ঘন্টার ১২ ঘন্টারও বেশি সময় আমরা এখানে ব্যয় করছি।
একটা কথা মনে রাখবেন ফেসবুক আপনার দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজ অন্যের সাথে শেয়ার করার জন্য নয়। অনর্থক আড্ডা দেয়ার জায়গাও নয়। কিন্তু এই ম্যাসেঞ্জার আসার পর জিনিসটা একটু বেশিই বেড়ে গেছে।
- হ্যাঁ বুঝলাম অনেক খারাপ, কিন্তু এখন কি করব আমার তো নানা কাজে ম্যাসেঞ্জার লাগে!
আমি বলছি না ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ব্যবহার করবেন না। আমি বলব করুন, কিন্তু একটু ভিন্নভাবে। আপনার মোবাইলের ব্রাউজার কিংবা ল্যাপটপ কম্পিউটারের ব্রাউজারে ব্যবহার করুন এটি। এর ফলে একদিক দিয়ে যেমন নোটিফিকেশন থেকে রেহাই পাবেন, তেমনি অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় করা থেকেও বাঁচবেন । আশা করি, বুঝতে পেরেছেন। এভাবে জীবনটাকে একটু অন্যভাবে ভাবার চেষ্টা করুন, দেখবেন সব বদলে যাবে। ধন্যবাদ।
আবু বকর সিদ্দিক says
হ্যালো হৈচৈ, আপনাদের এই ওয়েবসাইট কি ওয়ার্ডপ্রেসে তৈরি করা হয়েছে? আপনাদের ওয়েবসাইটে প্রতিদিন কত ভিজিটর আসে?
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, আবু বকর সিদ্দিক ভাই। সম্ভবত, আপনি একই প্রশ্ন আমাদের ফেসবুক পেজেও করেছিলেন এবং আপনাকে সেটির উত্তরও দেয়া হয়েছে। কিন্তু আপনি তো জানালেলন না যে কি কারণে এই প্রশ্ন করেছিলেন!