মোবাইলের ব্যাক কভার চিনিনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই অসম্ভব। শখের মোবাইলটি বড় বড় আঘাত বা দাগ পড়া থেকে বাঁচাতে এই ব্যাক কভারের জুড়ি নেই। মোবাইল ফোন সুন্দর ও সুরক্ষিত রাখতে আমরা অনেকেই নানান রঙের ব্যাক কভার ব্যবহার করে থাকি। বাজারে বিভিন্ন ডিজাইন এবং মডেলের ব্যাক কভার পাওয়া যায়।
সাধারণত, মোবাইলের দুই ধরনের কভার থাকে।
- ব্যাক কভার
- ফ্লীপ কভার
এছাড়াও আছে চামড়া, রাবার আর প্লাস্টিকের কভার। ফুল পাথরের নকশা এবং হেলোগিটি বিভিন্ন ধরণের নকশার হয়ে থাকে এই মোবাইল ফোনের কভারগুলো। আবার অনেক ক্ষেত্রে পোশাকের রঙ এর সাথে মিলিয়ে নেওয়া হয় ফোনের কভার, কিছু ক্ষেত্রে দেখা মেলে স্টোন এবং থ্রিডির। তবে ডিজাইন নকশা যা-ই হোক, ব্যাক কভারের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু মোবাইল সুরক্ষিত রাখা।
মোবাইলের ব্যাক কভার ব্যবহার ক্ষতিকর
আমরা মোবাইলের ব্যাক কভার ব্যবহার করছি ভালোর জন্য কিন্তু এর কিছু ক্ষতিকর দিক আছে তা হয়ত আমরা অনেকেই জানি না! তাই আজ আমি এখানে মোবাইলের ব্যাক কভার এবং ফ্লীপ কভারের ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করবো।
মোবাইল ফোনের টেম্পারেচার
আমরা যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করি তারা ভালো করেই জানি, ফোন ব্যবহার করার সময় বেশিরভাগ স্মার্টফোনই গরম হয়ে যায়। এটা খুব কমন সমস্যা, তাই এটাকে আমরা সমস্যা মনে করি না। আবার অনেকেই ব্যাক কভার ব্যবহার করার কারণে, মোবাইলের টেম্পারেচার বেড়ে যাওয়াটা অনুভব করতে পারি না। আবার ব্যাক কভার ব্যবহারেরর ফলে মোবাইলের তাপমাত্রা বের হতে পারে না। আর বাহিরের বাতাসও মোবাইলের সংস্পর্শে আসে না। তাই ব্যাক কভার ব্যবহারের ফলে মোবাইলের টেম্পারেচার একটু বেশিই বেড়ে যায়।
আপনি চাইলে টেম্পারেচার মিটার দিয়ে একবার ব্যাক কভার ছাড়া আরেকবার ব্যাক কভারসহ টেম্পারেচার মেপে দেখতে পারেন। টেম্পারেচার জনিত কারণে ফোনের ব্যাক কভার ব্যবহার খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ, মাত্রাতিরিক্ত টেম্পারেচার হলে কি হতে পারে, তা নিচের ছবি দেখেই বুঝতে পারবেন।
ফোনে কথা বলার মাঝে কলড্রপ খুবই বিরক্তিকর, মাঝে মাঝে এতই বিরক্তিকর যে মন চায় ফোন ধরে আছাড় মারতে! যাই হোক যাদের বারবার কলড্রপ হয় তারা ভেবে দেখুন ফ্লীপ কভার ব্যবহার করছেন কিনা? শুনতে অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে, ফ্লীপ কভারে থাকা ম্যাগনেট কলড্রপ করে!
অ্যান্ড্রয়েড অথরিটি’র কমিউনিটি পেইজে অনেকেই ফ্লীপ কভারের ম্যাগনেট নিয়ে কমপ্লেইন করেছে যে, ফ্লীপ কভার লাগানো অবস্থায় অনেক কলড্রপ হয়। এমনকি, স্ক্রিনে টাচেও সমস্যা করে। ফ্লীপ কভারের যে সাইডে ম্যাগনেটটি থাকে, সে সাইডে টাচ খুবই অল্প রেস্পন্স করে।
আবার অনেকেই বলেছেন যে ম্যাগনেটিক ফ্লীপ কভার ফোনের সেন্সর নষ্ট করে। আর Asus মোবাইল ব্যবহারকারীরা খুব ভালো করেই জানে যে, Asus মোবাইলের নেটওয়ার্ক ব্যাক কভারের সাথে সম্পর্কিত। ব্যাক কভারের সামান্য ত্রুটি হলে নেটওয়ার্কের সমস্যা করে।
ব্যাক কভার আমরা মূলত ব্যবহার করি যাতে ফোন আঘাত লেগে ভেঙে না যায় এবং কোন দাগ না পড়ে। কিন্তু ব্যাক কভার সব ধরণের আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। বর্তমানে স্মার্টফোনেরর কাঠামো আগের থেকে অনেক শক্তভাবে তৈরী করা হয়, যা অল্প আঘাতে বড় কোন ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হওয়ার মত বড় কোন আঘাত পেলে বা উপর থেকে পড়ে গেলে ব্যাক কভার সে আঘাত থেকে রক্ষা করতে পারে না।
আর স্কিনের কথা কি বলবো ভাঙার মত আঘাত পেলে তা ভাঙবেই, আপনি যতই উন্নতমানের ব্যাক কভার ব্যবহার করুন না কেন। তবে হ্যা, বলতে পারেন ছোটখাটো আঘাত পেলে যে দাগ পড়ে তা থেকে বাঁচতে ব্যাক কভার ভালো কাজ করে। কিন্তু অনেকেই খেয়াল করেছেন যে রাবারের ব্যাক কভার ব্যবহার করলে অনেক ধূলোবালি কভারের মধ্যে প্রবেশ করে। আর এই ধূলোবালি ব্যাক কভারের ঘসা লেগে ফোনের পিছনে দাগ ফেলে দেয়।
আবার প্লাস্টিকের ব্যাক কভার বারবার খোলা এবং লাগানোর ফলে ফোনের সাইডে দাগ পড়ে যায়। তাহলে দেখা যায় যে দাগ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যে ব্যাক কভার ব্যবহার করছি, সেই ব্যাক কভারের কারনেই দাগ পড়ছে, এতো খাল কেটে কুমির আনার মত। স্যামসাং সহ যাদের মোবাইলের সাইট প্লাস্টিকের তারা এই সমস্যাটি ভালো করেই লক্ষ করেছেন।
এখন আমাদের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, দাগ থেকে সুরক্ষার জন্য তাহলে কি করতে পারি? আমি বলবো মোবাইলের পিছনে মোবাইলের কালার অনুযায়ী কার্বোন ফাইবার স্টীকার লাগাতে পারেন। এতে করে ছোটখাটো আঘাতে দাগ পড়া থেকে রক্ষা পাবেন, আর এ-সব স্টীকার যখন তখন উঠিয়ে ফেলতে পারবেন। আর মার্কেটে এখন বিভিন্ন মডেলের ফোনের জন্য স্টীকার পাওয়া যায় এবং ফোনের সাইডের জন্য বাম্পার পাওয়া যায়। এগুলো দিয়ে ফোনের সাইডে এবং কর্ণারে আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় আর স্কিনের জন্য আছে স্কিন প্রটেক্টর।
এবার স্টাইল নিয়ে কথা বলতে চাই…
আমরা মার্কেটে ফোন কিনতে গেলে ফোনের স্টাইলের দিকে নজর দেই। দারুণ ফিচারের পাশাপাশি দেখতেও দারুণ হয় যে ফোন, আমরা সেই ফোনটি কিনতে চাই। তবে এতো সুন্দর স্টাইলিশ ফোন কিনে আমরা একটা ব্যাক কভার কিনি, যাতে দাগ পড়ে সৌন্দর্য নষ্ট না হয়। কিন্তু এই ব্যাক কভারের জন্য ফোনের সেই সৌন্দর্য প্রকাশই পেলো না বা কেউ দেখতেই পেলো না। তাহলে এতো সুন্দর ফোন কিনে লাভ কি? এখন মোবাইলের ব্যাক কভার ব্যবহার করবেন কিনা সেটা সম্পুর্ণ আপনার উপর নির্ভর করে।
আর উপরে যে সমস্যাগুলোর কথা বললাম সেগুলো যদি আপনার সাথে না ঘটে। আপনি যদি ব্যাক কভার ব্যবহার করে কোন ধরণের প্রবলেম ফিল না করেন, তবে আপনি অবশ্যই ব্যাক কভার ব্যবহার করবেন। আর যদি আপনি এ-সব সমস্যায় বিশেষ করে ফোন টেম্পারেচার বা ফোন হিটিং এর রিস্ক না নিতে চান, তাহলে অবশ্যই ব্যাক কভার ব্যবহার করা বন্ধ করুন। এতে আপনার ফোনের টেম্পারেচার ও কিছু কম হবে এবং ফোনের সৌন্দর্যটাও প্রকাশ পাবে।
তাজওয়ার উচ্ছাস says
ব্যাক কাভারের টেম্পারেচারের ব্যাপারটা : সব মোবাইলে কিন্তু লিমিটের বাইরে টেম্পারেচার বাড়ে না। তাই সেগুলোতে ব্যাক কাভার ব্যবহারে সমস্যা হওয়ার কথা না।
স্টাইলের ব্যাপারে: আপনি যা বলেছেন তার উলটা লজিকও পসিবল। খুব নরমাল ফোনে স্টাইলিশ ব্যাককাভার লাগানো যাইতে পারে। একটু খুজলেই পাওয়া যাবে।
আর ব্যাক কাভার আমার নিজের মোবাইলকেই বেশ অনেক বার বাচিয়েছে। তাই, এটার কাছে আমি আসলে কৃতজ্ঞ
আর এস আশিক says
হ্যা ভাই আমিত শেষের দিকে এটা বলেই দিয়েছি যে,আপনি যদি ব্যাক কভার ব্যবহার করে কোন ধরণের প্রবলেম ফিল না করেন, তবে আপনি অবশ্যই ব্যাক কভার ব্যবহার করবেন।
Munna says
স্পিকার কি, এ বিষয়ে আপনাদের সাইটে কি কোনও লেখা আছে?