ভিটামিন বি৬ অন্যান্য ভিটামিনের মতোই সবার জন্যে প্রয়োজন। অন্য অনেকের মতো আপনিও হয়তো নিজের অজান্তেই নিয়মিত এই ভিটামিনটি গ্রহণ করে যাচ্ছেন। আর যদি না করে থাকেন, তবে আপনার জন্যে দু:সংবাদ আছে। দু:সংবাদটি জানার আগে আসুন ভিটামিন বি-৬ কি সেটা জেনে নেই।
ভিটামিন বি৬ কি?
এটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এর একটি বড় সদস্য যার আরেক নাম পাইরিডক্সিন। এটি কেমিক্যাল্লি প্রায় একই রকম ভিটামিনের গ্রুপকে রেফার করে যা বায়োলোজিক্যাল ব্যবস্থায় আন্ত-রূপান্তরিত হতে পারে। এটি শরীরের প্রয়োজনীয় সব বি-ভিটামিন থেকে পাওয়া পুষ্টির একটি বড় অংশ। বি৬ এর অ্যাক্টিভ ফর্ম পাইরোডক্সাল-৫, এমিনো অ্যাসিড, ফসফেট, গ্লুকোজ ও লিপিড বিপাকীকরণের ১০০ এনজাইম প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।
বি৬ ভিটামিনের কাজ কি?
- এটি নরমাল ব্রেন ডেভেলপমেন্টে সবচেয়ে বেশি কাজে লাগে।
- শরীরের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে সক্রিয় ও কার্যকর রাখতে সাহায্য করে।
- এটি শরীরের নিউরোট্রান্সমিটার হিসেবে পরিচিত সেরোটোনিম এবং নোরপাইনফ্রিন উৎপাদনে ভূমিকা রাখে।
- ব্রেন ও স্পাইনাল কর্ডের চারপাশের মাইলিন গঠনেও এটি কাজ করে থাকে।
- জ্ঞান লোপ পাওয়া বয়স্কলোকদের মেমোরী বাড়াতে সাহায্য করে।
- নারীদের গর্ভাবস্থার প্রাথমিক পর্যায়ের বমি বমি ভাব দূর করে বি পরিবারের এই ভিটামিনটি।
ভিটামিন বি-৬ এর অভাবে কি কি রোগ হয়?
- শারীরিক অসাড়তাসহ পেরিপেরাল নিউরোপ্যাথি
- হাত-পা ব্যাথা
- রক্তস্বল্পতা
- হৃদরোগের আক্রমণ
- বিষণ্ণতা
- মানসিক বিশৃঙ্খলা
- রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দূর্বল হয়ে যাওয়া
- পেলাগ্রার মতো রোগ দেখা দিতে পারে
- সেবোরিহিক ডার্মাটাইটিস
- ঠোঁটের প্রদাহ এবং ক্র্যাকিং
- জিহ্বার প্রদাহ, ইত্যাদি।
প্রতিদিন কতটুকু বি৬ প্রয়োজন?
এটা বিভিন্ন ফ্যাক্টরের উপর নির্ভর করে। একজন মানুষের দৈনন্দিন বি৬ এর প্রয়োজনীয়তা তার বয়স এবং আরো কিছু বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। ইউনাইটেড স্টেটস্ অব ডায়েটারি সাপ্লিমেন্ট এর নির্ধারণ করা বি৬ ডোজ নিচে দেয়া হল-
- ০ থেকে ৬ মাস – ০.১ মিলিগ্রাম
- ৭ থেকে ১২ মাস – ০.৩ মিলিগ্রাম
- ১ থেকে ৩ বছর – ০.৫ মিলিগ্রাম
- ৪ থেকে ৮ বছর – ০.৬ মিলিগ্রাম
- ৯ থেকে ১৩ বছর – ১ মিলিগ্রাম
- ১৪ থেকে ১৮ বছর – ১.৩ মিলিগ্রাম
- ১৯ থেকে ৫০ বছর – ১.৪ মিলিগ্রাম
- ৫১ বছরের বড়দের ক্ষেত্রে – ১.৭ মিলিগ্রাম
- নারীদের গর্ভকালীণ সময় – ১.৯ মিলিগ্রাম
- মায়েরা যখন বাচ্চাদের দুধ পান করায় – ২ মিলিগ্রাম
যেসব খাবারে ভিটামিন বি-৬ পাবেন
- অ্যাভোকাডো
- ব্রাউন রাইস
- গাজর
- ফর্টিফাইড সিরিয়াল
- হেজেল নাট
- দুধ
- আলু
- বিভিন্ন ধরণের বীজ
- সয়াবিন
- পালং শাক
- টার্কি মুরগী
- ভেজিটেবল জ্যুস
- হোল গেইনস্, ইত্যাদি।
ভিটামিন বি৬ সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন। আশা করি, এ সংক্রান্ত আর কোন সংশয় নেই। তবে, যদি বি৬ নিয়ে কারো কোনও প্রশ্ন থাকে, তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে প্রশ্ন করতে পারেন।
Leave a Reply