ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন একটি সৃজনশীল কাজ। আর সৃজনশীল কাজ করতে হলে সৃজনশীলতা থাকার পাশাপাশি সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং ট্রিকসগুলো জানা থাকা জরুরি। তার পরিপ্রেক্ষিতে ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনের মত সৃজনশীল কাজে যদি আপনি কৌশল অবলম্বন করতে পারেন, তাহলে আপনার কাজে যোগ হবে নতুন মাত্রা।
সেজন্য আজকে আমরা ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনের দুর্দান্ত কিছু কৌশল বা টিপস নিয়ে হাজির হয়েছি। সবচেয়ে বড় কথা আপনি যদি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে থাকেন, তবে নিচে দেয়া ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনের টিপসগুলো আপনার বেশ কাজে আসবে।
আর আপনি যদি ডিজাইনার না হয়ে থাকেন, কিন্তু আপনার ভিজিটিং কার্ড দরকার হয়ে থাকে, তবে সেরা ১০টি প্রি ভিজিটিং কার্ড থেকে পছন্দ করে যে কোনটি ডাউনলোড করে নিতে পারেন। আর আপনি ডিজাইনার হলেও সমস্যা নেই, ডিজাইনিং এর ক্ষেত্রে এ কার্ডগুলো ফলো করতে পারেন। আর আপনার নিজের ডিজাইনকে সুন্দর ও আকর্ষণীয় করতে, নিচে দেয়া টিপসগুলো অনুসরণ করুন।
ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন টিপস্
ভিজিটিং কার্ডের উদ্দেশ্যে
আপনার ভিজিটিং কার্ড কিংবা বিজনেস কার্ডের ডিজাইন কিরূপ হবে সেটা নির্ভর করে আপনি বা আপনার প্রতিষ্ঠানটি কি নিয়ে কাজ করে। প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ভেদে ডিজাইনে পরিবর্তণ আসতে পারে। আপনি যখন ব্যক্তিগত ভিজিটিং কার্ড তৈরি করবেন, সে ক্ষেত্রে এক ধরনের ডিজাইন হবে। আবার যখন আপনার ব্যবসায়িক কাজের জন্য ভিজিটিং কার্ড তৈরি করবেন, সে ক্ষেত্রে অন্য রকম ডিজাইন হবে। তাই সর্ব প্রথম ঠিক করতে হবে আপনার অথবা আপনার ক্লাইন্টের ভিজিটিং কার্ড তৈরি করার উদ্দেশ্য কি?
ভিজিটিং কার্ডের সাইজ
ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনের পরবর্তী ধাপ কার্ডের সাইজ তথা আকার নির্ধারণ। ভিজিটিং কার্ড তৈরি করার ক্ষেত্রে এই ধাপটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভিজিটিং কার্ডের সাইজ বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের স্ট্যান্ডার্ড রয়েছে। যেমন:
- কানাডা এবং ইউএসএ: 3.5 × 2 ইঞ্চি
- ইরান: 3.346 × 1.889 ইঞ্চি
- ইউরোপ: 3.346 × 2.165 ইঞ্চি
- জাপান: 3.582 × 2.165 ইঞ্চি
- হংকং, চীন, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর: 3.543 × 2.125 ইঞ্চি
- অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন, ভিয়েতনাম, নরওয়ে, তাইওয়ান, ভারত, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড,: ৩.৫৪ × ২.১65৫ ইঞ্চি
- অন্যান্য দেশ: 3.543 × 1.968 ইঞ্চি
সাইজের পাশাপাশি কার্ড ডিজাইনের সময় সর্বদা তিনটি বিষয় বিবেচনা করতে হবে। যথা:
- ব্লীড এরিয়া: কার্ডের বাইরের অংশ হিসাবে এটি থাকবে। এটা প্রিন্ট করার সময় বাদ যাবে।
- ট্রিম লাইন: নাম দেখেই বুঝতে পারছেন আসলে এই অংশ থেকেই কার্ড কাটা হবে।
- সেফটি লাইন: এটা নিরাপদ লাইন অর্থাৎ এই লাইনের বাইরে লোগো বা টেক্সট নেয়া যাবে না।
সাধারণত ভিজিটিং কার্ডের ব্লীড এরিয়া 0.125 ইঞ্চি (3 মিমি) হবে এবং ট্রিম লাইন থেকে সেফটি লাইন পর্যন্ত 0.125 ইঞ্চি (3 মিমি) ফাঁকা থাকবে।
ভিজিটিং কার্ডের শেপ
শেপ শব্দটি শুনে আশ্চর্য হবার কিছু নয়। আমরা সাধারণত আয়তক্ষেত্রের শেপে ভিজিটিং কার্ড দেখে অভ্যস্ত। কিন্তু আয়তক্ষেত্র ছাড়াও বৃত্ত, ত্রিভুজ কিংবা অন্যান্য আরও অনেক শেপে ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করা যায়।
যেমন- যারা মৎস্য ব্যবসায়ী তারা মাছের আকৃতির, ডিমের ব্যবসা ডিমের আকৃতি, ইত্যাদি ধরন অনুযায়ী ভিজিটিং কার্ডের শেপ পরিবর্তণ হয়ে থাকে। আর সে জন্য প্রথমেই ঠিক করে নিন আপনি কোন শেপে ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করতে চান।
ভিজিটিং কার্ডের কালার
ডিজাইনের ক্ষেত্রে কালার তথা রঙ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভিজিটিং কার্ডে কালার ভিজিটিং কার্ডের ডিজাইনকে আকর্ষণীয় করার পাশাপাশি কার্যকরী করে তোলে। যেমন আপনি গোলাপি কালারের ভিজিটিং কার্ডে যদি লাল কালারের টেক্সট ব্যবহার করেন, তবে সত্যিকার অর্থে সেটা ঝাল মুড়ি খাওয়ার জন্য অধিক উপযুক্ত হবে।
কালার মানুষের মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আর তাই কালারকে মার্কেটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ টুল হিসেবে ধরা হয়। একটি ভিজিটিং কার্ডে ২ থেকে ৩ টার বেশী কালার ব্যবহার না করাই উত্তম। কালার নির্বাচনের ক্ষেত্রে অবশ্যই অনেকগুলো বিষয় মাথায় রাখতে হবে। যেমন:
- সাদা: আনন্দ, নিরাপত্তা, আন্তরিকতা, বিশুদ্ধতা বা পবিত্রতা প্রকাশ করে।
- কাল: ক্ষমতা, রহস্য, দামী এবং ব্যয়বহুলতা প্রকাশ করে।
- হলুদ: উৎসাহ, কর্মদক্ষতা ও উদ্যমী প্রকাশ করে।
- সবুজ: প্রকৃতি, শক্তি ও সজীবতা বোঝায়।
- গোলাপি: মেয়েলী, শিশুসুলভ, সরলতা, ভালবাসা প্রকাশ করে।
টেক্সচার
টেক্সচার আপনার ভিজিটিং কার্ডে প্রিমিয়াম লুক এনে দেবে। তবে টেক্সচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে।
অনেকেই দেখা যায় টেক্সচার, কালার এবং ফন্টের কম্বিনেশন ঠিক রাখতে পারে না। ফলে কার্ড দেখতে বিদঘুটে হয়ে যায়। অথচ সঠিক টেক্সচার ব্যবহার করে পারফেক্ট ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করা সম্ভব।
লোগো
যদি আপনার ভিজিটিং কার্ড আপনার প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানির জন্য হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই সেখানে লোগো থাকাটা আবশ্যক। লোগো আপনার কোম্পানির আইডেন্টিটি এবং প্রচারের পাশাপাশি ভিজিটিং কার্ডের ডিজাইন এ নতুন মাত্রা যোগ করে। শুধুমাত্র লোগো আর প্রয়োজনীয় টেক্সট যোগ করে আকর্ষণীয় এবং মনোমুগ্ধকর ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় টেক্সট
প্রয়োজনীয় টেক্সট বলতে মূলত আপনার ভিজিটিং কার্ডে যেসব লেখা অবশ্যই লিখতে হয় সে গুলোকে বুঝায়। ভিজিটিং কার্ডে যেসব বিষয়ে লেখা থাকা বাধ্যতামূলক। যথা:
- নাম
- কোম্পানির নাম
- পেশা
- ফোন নম্বর
- ইমেল
- ওয়েবসাইট
- সোশ্যাল মিডিয়া
- ঠিকানা
টাইপোগ্রাফি
আপনার প্রয়োজনীয় টেক্সটকে সুন্দর মত সাজানোকে টাইপোগ্রাফি বলা হয়। ফন্ট ব্যবহারের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন গুগোল ফন্টস ব্যবহার করতে। এছাড়া ফন্টের কালার, সাইজ, লেটার স্পেস সবকিছুই টাইপোগ্রাফির অন্তর্ভুক্ত।
মিনিমাল ডিজাইন
ডিজাইনকে যথাসম্ভব মিনিমাল তথা সাদাসিধে রাখা প্রয়োজন। অনেকেই ডিজাইনকে খুব বেশি গর্জিয়াস করতে গিয়ে ভিজিটিং কার্ডের প্রফেশনালিজমের রূপ নষ্ট করে দেয়। তাই ডিজাইনকে সিম্পল রাখার চেষ্টা করুন।
প্রিন্টিং
প্রিন্টিং যদিও ডিজাইন এর অন্তর্ভুক্ত বিষয় নয়, তবে আপনার ডিজাইনকে সত্যিকারের রূপ দেয়ার প্রধান হাতিয়ার প্রিন্টিং। প্রিন্টিং যদি খারাপ হয়, তবে আপনার এত কষ্টের ডিজাইন ষোল আনাই বিফলে যাবে। প্রিন্টিং এর শেষে দেখা যাবে আপনার ডিজাইন আর প্রিন্টিং এর মধ্যে আসমান জমিন ফারাক। তাই আপনার ভিজিটিং কার্ড প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে ভালো মানের প্রিন্টার, রঙ এবং কাগজের দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শেষ কথা
এই ছিল আজকে ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনের উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা। আর সবার শেষে একটি কথা, প্রচুর পরিমাণে প্রফেশনাল ভিজিটিং কার্ড ডিজাইনারদের ডিজাইন দেখুন এবং ডিজাইনের ক্ষেত্রে নতুন ট্রেন্ডগুলো ফলো করুন। আর আপনি যদি ভিজিটিং কার্ডের মত সুন্দর ও আকর্ষণীয় ব্রুশিয়ার ডিজাইন করতে চান, তবে হৈচৈ বাংলাতে পাবলিশ হওয়া এই লেখাটি থেকে ঘুরে আসতে পারেন। এখানেও ব্রুশিয়ার ডিজাইন করার ১০টি দুর্দান্ত টিপস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
ভিজিটিং কার্ড ডিজাইন করা আপাত: দৃষ্টিতে সহজ মনে হলেও, আসলে খুব একটা সহজ নয়। কারণ, একটি প্রপেশনাল ভিজিটিং কার্ডে অবশ্যই কিছু সৃজণশীলতার ছোঁয়া প্রয়োজন। আর এই জন্যেই ফলো করতে হবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস্। এই লেখায় দেয়া টিপস্গুলো আমার খুব ভাল লেগেছে।
ভাই, আমার একটা ভিজিটিং কার্ড এবং লগো তৈরি করে দিতে পারবেন, 01721083780
JANNAT RENT A CAR থেকে গাড়ি ভাড়া দেওয়া হয়। দেশের যে কোনও জেলা, উপজেলা ও থানায় যাতায়াত এবং মালামাল বহনের জন্যে আমাদের গাড়ি ভাড়া দেয়া হয়। যারা গরীব, যথেষ্ট্য আয়-রোজগার নেই কিন্তু গাড়ি প্রয়োজন, তাদের জন্যে কিছু ছাড় রয়েছে। বিয়ের জন্যে গাড়ি, এয়ারপোর্টে যাতায়াতের জন্যে ২৪ ঘন্টা গাড়ির ব্যবস্থা আছে।