ল্যাপটপের জন্য যেমন গেমিং ল্যাপটপ, তেমনি গেমিং স্মার্টফোন রয়েছে স্মার্টফোনে গেম খেলার জন্য। কথা বলা, মেসেজিং কিংবা অন্যান্য কাজে ব্যবহারের জন্যে একটি সাধারণ ফোন হলেই চলে। কিন্তু গেম খেলার জন্যে, বিশেষ করে ভারী কোনও গেম খেলার জন্যে একটি ভারী ফোনের প্রয়োজন।
না, ওজনে ভারী ফোনের কথা বলছি না, কনফিগারেশনে ভারী ফোনের কথা বলছি। হার্ডকোর গেমারদের জন্যে এমন একটি স্মার্টফোন দরকার যাতে একটি পাওয়াফুল প্রসেসর রয়েছে, রয়েছে উপযুক্ত পরিমাণ র্যাম ও যথেষ্ট পরিমাণ ইন্টারনাল স্পেস। একটা গেমিং ফোনে এই বেসিক পেরিপেরালস্ ছাড়াও প্রয়োজন আরো কিছু ছোট-খাট জিনিসের, যেমন ফ্রন্ট ফেসিং স্পিকার ও অন্যান্য গেমিং এক্সেসরিজ।
যে ৫টি কারণে অবশ্যই আপনার গেম খেলা উচিৎ, সেগুলো হয়তো আপনি জানেন। কিন্তু আপনি কি এটা জানেন যে প্রথম গেমিং স্মার্টফোন তৈরি করেছে কোন কোম্পানী? আজ থেকে ১৫ বছর আগে, ২০১৩ সালে Razer কোম্পানী যখন প্রথম গেমিং ফোন বাজারে ছাড়ে, তখন অন্যান্য কোম্পানী ভাবতেই পারেনি যে শুধু গেম খেলার জন্যে ভাল স্মার্টফোনের প্রচারণা করে বাজার ধরা যাবে।
Razer শুধু বাজারই ধরেনি, তখনকার সময়ে রাতারাতি পত্র-পত্রিকাগুলোর শিরোনাম হয়ে যায় শুধু এই একটি আইডিয়ার জন্যে।পরবর্তীতে প্রায় সব কোম্পানীই Razer এর এই আইডিয়াকে পুঁজি করে বাজারে একের পর এক গেমিং ফোন ছাড়তে থাকে। বর্তমানে প্রায় প্রতিটি স্মার্টফোন কোম্পানীরই আলাদা করে গেমিং স্মার্টফোন রয়েছে। আর সেগুলো থেকে বাছাই করে সেরা ৫টি ফোন নিয়েই হাজির হয়েছি আপনাদের সামনে।
বাজারের সেরা গেমিং স্মার্টফোন
ডিসপ্লে, প্রসেসর কিংবা স্পীড যায় বলা হোক না কেন গেমস খেলার জন্য সেরা স্মার্টফোনগুলোতে তা একটু বেশিই হয়ে থাকে। আর আপনি যদি গেমিং-এর নতুন অভিজ্ঞতা পেতে চান, খেলতে চান ফার্স্ট পারসন শুটার গেম এর মত ভারী ভারী গেমগুলো, তবে নিচের ৫টি স্মার্টফোন থেকে বেছে নিন আপনার পছন্দের গেমিং স্মার্টফোন।
১. iPhone 8 Plus
অন্যান্য যে কোনো স্মার্টফোনের তুলনায় আইফোনের কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। বাজারের অন্য কোন ফোনের থেকে এই ফোনের প্রসেসর যথেষ্ট দ্রুত। তবে এর মেমোরির পরিমাণ হলো 3 জিবি এবং স্ক্রিন রিজল্যুশন হলো 1920 x 1080।
এই স্মার্টফোনটিতে খুব একটা জমকালো না হলেও ফুল ভিউ ডিসপ্লে রয়েছে। 5.5 ইঞ্চির ডিসপ্লের সাথে A11 বায়নিক সিপিইউ এবং গ্রাফিক্স আপনার গেমিং অভিজ্ঞতাকে আরও বেশি বাড়িয়ে দিবে। 2691 এমএএইচ ব্যাটারির গেমিং স্মার্টফোনটি আপনার চয়েজের মধ্যে অবশ্যই রাখতে পারেন।
২. Samsung Galaxy Note 9
সবচেয়ে বড় ডিসপ্লেসহ এই তালিকাতে সবচেয়ে বড় গেমিং ডিভাইস হিসাবে এই ফোনটিকে অবশ্যই রাখতে হবে। আপনি এতে যে শুধু 6.4-ইঞ্চি AMOLED প্যানেল পাবেন তা নয়, একই সাথে চিপে পাবেন ক্যালোকমের সর্বশেষ হাই-এন্ড মোবাইল সিস্টেম এবং স্ন্যাপড্রাগন 845।
প্রতি সেকেন্ডে আরও অধিক ফ্রেম সুবিধা পাওয়ার কারণে আপনি আরও স্পষ্টভাবে দেখতে পারবেন। 4,000 এমএএইচ ব্যাটারি ব্যাকআপ পাওয়া যাবে এই ফোনটিতে। এটা হয়তো বাজারে সেরা Android গেমিং ফোন নয়। তবে গেমিং ফোনের তালিকায় জায়গা পাওয়ার যোগ্য।
৩. Sony Xperia XZ2
6 জিবি র্যাম, 64 জিবি রমের সাথে 2160 x 1080 ডিসপ্লে, গেমিং স্মার্টফোন হিসাবে ভালো একটা স্থান দখল করে রেখেছে এই স্মার্টফোনটি। তাছাড়াও ব্যাটারি ব্যাকআপের ক্ষেত্রেও এটি খুবই প্রশংসনীয়। স্ন্যাপড্রাগন 845 প্রসেসর এবং অ্যাড্রেনো 640 জিপিইউ রয়েছে এই গেমিং স্মার্টফোনে।
3,180 এমএএইচ দুর্দান্ত ব্যাটারি ব্যাকআপের সাথে 5.7-ইঞ্চির স্মার্টফোনটিতে সর্বশেষ ক্যালোকম সিস্টেম-অন-এ-চিপের কারণে এটি দুর্দান্ত ভিডিও গেম পারফরম্যান্স প্রদান করে। তাই গেমিং স্মার্টফোন হিসাবে তালিকায় থাকবে এই ফোনটিও।
৪. Razer Phone
রেজার একটি ডেডিকেটেড গেমিং হার্ডওয়্যার কোম্পানী যা অন্য সব কিছুর উপরে কর্মক্ষমতা মূল্যায়ণ করে। ফোনটিতে ডলবি এটমস স্টেরিও শব্দের জন্য ফোনের প্রতিটি প্রান্তে একটি বৃহদায়তন স্পিকার রয়েছে যা গেমিংয়ের সময় দুর্দান্ত কাজ করে।
ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ২০১৭ ফ্ল্যাগশিপ, স্ন্যাপড্রাগন 835, 8 জিবি র্যাম, 64 জিবি মেমরি এবং 2560 x 1440 ডিসপ্লে রেজ্যুলেশন গেমিং এর সময় অন্যরকম এক অনুভূতির সৃষ্টি করবে। তাছাড়া 4,000 এমএএইচ বিশাল ব্যাটারি ব্যাকআপ রয়েছে এই স্মার্টফোনটিতে।
৫. Google Pixel 2 XL
গুগল পিক্সেল 2 এক্সএল একটি চমৎকার ফোন হলেও স্যামসাং গ্যালাক্সির সাথে তুলনায় সমালোচকরা শীর্ষ এবং নিচের দিক নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিলেন না। সৌভাগ্যক্রমে এই নকশা স্ক্রিন স্পর্শ ছাড়া অনুভূমিকভাবে ফোন গ্রিপিং এর জন্য বিস্ময়কর কাজ করে।
এই ফোনটিতে রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন 835 প্রসেসর, অ্যাড্রেনো 540 জিপিইউ, 4 জিবি র্যাম এবং 128 জিবি স্টোরেজ। 1440 x 2880 ডিসপ্লে হওয়ার কারণে এটি গেমিং স্মার্টফোন হিসাবে বেশ ভালোই হবে। সাথে 3,520 এমএএইচ ব্যাটারি ব্যাকআপ থাকার কারণে গেমিং স্মার্টফোন হিসাবে রাখায় যায় তালিকাতে।
আপনি যদি গেমস খেলার জন্য সেরা স্মার্টফোন খুঁজে থাকেন, তাহলে অবশ্যই এই পোস্টটি আপনার জন্য। কারণ এখানে সেরা ৫টি গেমিং স্মার্টফোন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে যা আপনার গেমিং এক্সপেরিয়ান্সকে করবে আরও উন্নত। তবে, দাম উল্লেখ করা হয়নি, যেহেতু এক এক সময় এক এক দোকানে একেক রকম দাম রাখা হয়। সুতরাং, আপনি কয়েকটি দোকান যাছাই করে যে কোন একটি থেকে কিনুন পছন্দের গেমিং স্মার্টফোনটি।
Leave a Reply