ব্যবসায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং তুলনামূলক স্বল্প খরচে অনেক বেশি ক্রেতার দৃষ্টির আকর্ষণের সবচেয়ে জনপ্রিয় পদ্ধতি। এর সুদূরপ্রসারী কার্যকরী প্রভাবে কারণে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এটি ডিজিটাল মার্কেটিং এর এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। এর মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সহজতর যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
আপনি যদি এ বিষয়ে নতুন হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাদের জন্য আমাদের সাইটে রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্কুলের গবেষণা বলছে, বর্তমান সময়ে বিজনেস এক্সপোজারের জন্য অন্যান্য যে কোন মার্কেটিং এর চাইতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ৯০% বেশি কার্যকর।
শতকরা ৬৬ ভাগেরও বেশি ডিজিটাল মার্কেটারগণ প্রতিদিন শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংর জন্য ৬-৭ ঘন্টা সময় ব্যয় করে থাকেন। এটি থেকে সহজেই বলা যায় যে সোশ্যাল মিডিয়াকে মার্কেটিং টুল হিসেবে ব্যবহার করা মানেই হচ্ছে ব্যবসায় স্বল্প সময়ে দ্রুত প্রসার।
ব্যবসায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং গুরুত্বপূর্ণ
প্রতিটি ব্যবসায়ীক সংস্থাই এই ব্যাপারে চিন্তিত থাকে যে, তারা কি ধরনের মার্কেটিং এর জন্য বিনিয়োগ করবেন। অনেক প্রতিষ্ঠানে তো শুধুমাত্র এবিষয়গুলি দেখাশোনা করার জন্য আলাদা ডিপার্টমেন্ট থাকতে দেখা যায়। আর এই ডিপার্টমেন্টে তারা মার্কেটিং পদ্ধতি, বিনিয়োগের পরিমাণ, কোন ধরনের মার্কেটিং কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবিষয়ে গবেষণা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। চলুন এক নজরে দেখে আসি ব্যবসায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ:-
- অন্যান্য মার্কেটিং পদ্ধতির চাইতে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর খরচ তুলনামূলক অনেক কম।
- অধিকতর ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষন করতে সক্ষম।
- বিশ্বস্ত ক্রেতা তৈরীর জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত মাধ্যম।
- ক্রেতার সাথে যোগাযোগ রক্ষার মাধ্যমে ক্রেতা সন্তুষ্টি ও আস্থা লাভ করা যায়।
- সার্চ ইঞ্জিনকে খুব সহজেই প্রভাবিত করে।
- ওয়েবসাইটে চাহিদানুযায়ী ট্রাফিক জেনারেট করতে সক্ষম।
ব্যবসায় এসএমএম সাশ্রয়ী
বিজ্ঞাপনের জন্য খুব সম্ভবত সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংই হচেছ সবচেয়ে স্বল্প খরচে অধিকতর ক্রেতা আকর্ষণের মাধ্যম। প্রায় সকল সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মই বিনামূল্যে অ্যাকাউন্ট তৈরীর সুবিধা দিয়ে থাকে। একই সাথে এখানে পেজ, গ্রুপ ইত্যাদি খোলার ক্ষেত্রেও কোন ধরনের খরচ নেই।
আপনি আপনার পেজ থেকে বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট প্রকাশ করার মাধ্যমে খুব সহজেই সবাইকে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ধারণা দিতে পারবেন।
আবার আপনি চাইলে এখানে পেইড অ্যাডভারটাইজিংও করতে পারেন। তবে প্রথম পর্যায়ে আমি আপনাদের বলবো ফ্রি-মার্কেটিং দিয়ে শুরু করার জন্য। আর যদি পেইড করতেও চান, সেক্ষেত্রে ছোট পরিসরে শুরু করুন। আপনার পণ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য দিয়ে কন্টেন্ট পাবলিশ করুন। একই সাথে আপনার পেজটিকে সময়দিন এবং পেজে আসা কমেন্ট ও ইনবক্স ম্যাসেজের জবাব দিয়ে কাস্টমারের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন।
খুব কম সময়েই আপনার বিনিয়োগ আপনাকে ফল দিতে শুরু করবে। কোন কোন প্ল্যাটফর্মে কেমন খরচে পেইড অ্যাডভারটাইজিংও করা সম্ভব, টার্গেটেড অডিয়েন্স পাওয়ার রেশিও কত ইত্যাদি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সিদ্ধান্ত নিন।
এসএমএম এ দৃষ্টি আকর্ষণ সহজ
আপনি যেসব কারণে ব্যবসায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তার মধ্যে অন্যতম সেরা কারণটি হলো আপনার ক্রেতারাও এই ধরনের প্লাটফর্মে বেশিরভাগ সময় স্বক্রিয় থাকেন।
ষ্টাটিস্টার এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইন্টারনের ব্যবহারকারীদের মধ্যে শতকার ৭০ ভাগ মানুষেরই কোন না কোন সোশ্যাল মিডিয়া সাইটে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে যার সংখ্যা প্রায় ৩.১ বিলিয়নে গিয়ে দাড়াবে। ছোট বড় সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য এটি অনেক বড় সুযোগ যা ব্যবহার করে তারা খুব সহজেই ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন।
তবে এর জন্য অবশ্যই উপযুক্ত কন্টেন্ট থাকতে হবে। এ ধরনের পদ্ধতিতে সফল হওয়ার জন্য ব্যবসায়ীক সততা খুবই প্রয়োজন। আপনি আপনার পণ্যের ইতিবাচক দিক ক্রেতার সামনে তুলে ধরবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শুধু প্রশংসায় পঞ্চমুখ না হয়ে কেন সেটি একজন ক্রেতার ক্রয় করা উচিত ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা করতে ভুলবেন না।
চকটদার কন্টেন্ট এর মাধ্যমে আপনি যদি কোন পণ্য বিক্রয় করেও ফেলেন, তবুও যদি সেটির মান ঠিক না থাকে, তবে খুব শীঘ্রই আপনি কাস্টমার হারাতে শুরু করবেন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় চটকদার মার্কেটিং আপনাকে ভিজিটর এনে দিলেও কাস্টমার এনে দিতে ব্যার্থ হবে। সুতরাং, চটকদার নয়, বরং সাকসেলফুল মার্কেটিং বিষয়ে জ্ঞানার্জণ করা দরকার। প্রয়োজনে এই ৫টি ফ্রি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কোর্স থেকে যে কোনটি করে নিন, ভাল ফল পাবেন।
এসএমএম এর গ্রহণযোগ্যতা বেশি
ব্যবহারকারীদের সোশ্যাল মিডিয়াতে স্বক্রিয় থাকার কারণ হলো এই অনলাইন মাধ্যমগুলো তাদেরকে খুব সহজেই বন্ধু-বান্ধব, পরিবার-পরিজনের সাথে সামাজিক যোগাযোগ রক্ষায় সহায়তা করে। একই সাথে প্রতিনিয়ত পৃথিবীর আলাদা আলাদা স্থানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা সম্পর্কেও এর মাধ্যমে ব্যবহারকীগণ অবগত হয়ে থাকেন। প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে তথ্য বিনিময়ের গতিও সোশ্যাল মিডিয়াগুলোর মাধ্যমে ত্বরান্বিত হচ্ছে।
সাধারণভাবে ব্যবহারকারীরা কোন মার্কেটিং এর টার্গেটেড অডিয়েন্স বা এর অংশ হতে সোশ্যাল মিডিয়াতে আসেন না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা তাদের পছন্দের ব্র্যান্ডগুলো সম্পর্কে জানতেও অনাগ্রহী। মার্কেটিং শেরপা বলছে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীরা সবচেয়ে বেশি পরিমাণে ব্র্যান্ড পেজগুলিকে ফলো করে। একই সাথে ব্র্যান্ডগুলির পেজ থেকে বিভিন্ন অফার ও অন্যান্য তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অনলাইন শপিং করে থাকে।
ব্যবসায় সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হচ্ছে আপনার সেই টুলস যা আপনাকে দ্রুত সময়ে সফল হতে সাহায্য করে। এটির ব্যবহারকে আমি ব্যক্তিগতভাবে কৌশলের পরিবর্তে বিনিয়োগ বলতেই বেশি পছন্দ করি। আর এটি এমন একটি বিনিয়োগ যা আপনার ব্র্যান্ডকে নতুন কাস্টমার তৈরী, পুরাতন কাস্টমারদের সাথে সম্পর্ক রক্ষা, সার্চ ইঞ্জিনে গুরুত্ব বৃদ্ধি করা, ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জনসহ হাজারো সুফল বয়ে আনে।
Leave a Reply