ঘরে বসে ৫টি কাজ করে বিনিয়োগ ছাড়া আয় মাসে আয় করতে পারেন ৩০ হাজার টাকা। বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না আর সেই সাথে বাড়তি কিছু আয়ের চিন্তা করেন না, এমন লোক খুবই কমই আছেন। আমরা যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করছি, বেশিরভাগ লোকজনই ব্যস্ত থাকি স্যোসাল মিডিয়ার বিভিন্ন রকমের অ্যাপস নিয়ে কিংবা ইউটিউব এর মতো জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং মাধ্যম নিয়ে। এখনও অনেকেই জানেন না যে ছোট ছোট কিছু কাজ করে ইন্টারনেট থেকে বড় ধরণের আয় করা সম্ভব। আবার যারা জানেন তাদের মাঝে অনেকেই সঠিক প্রচেষ্টা এবং সঠিকভাবে সময় ব্যবহার না করার কারণে আয় করতে পারেন না।
যে-সব ছোট ছোট মাধ্যম থেকে ঘরে বসে আয় করা যায় সেগুলোর কয়েকটি নিয়ে আলোচনা করছি তাদের জন্য, যারা আয় করতে চাইছেন কিন্তু পারছেন না। এর জন্য আপনাকে দিনে কেবল ২ থেকে ৫ ঘন্টা সময় ইন্টারনেটে ব্যয় করতে হবে। আর সেটা সম্ভব হবে আপনার ইচ্ছা শক্তি আর অল্প কিছু অভিজ্ঞতার বদলে।
ইন্টারনেটে কাজ করে আয় করার জন্য কাজের চাহিদা, কাজের উপর নিয়ন্ত্রন এবং কাজটা আপনার কাছে উপভোগ্য হবে কিনা তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ধরুন আপনি একটা কাজ আধা -আধিভাবে শিখলেন এবং প্রয়োগ করলেন। কিন্তু আপনি কোনো পেমেন্ট পেলেন না, তাহলে কিন্তু হবে না।
আপনাকে অবশ্যই নির্দিষ্ট কোনো কাজ সঠিকভাবে জানতে হবে এবং প্রয়োগ করতে হবে সঠিকভাবে। তাহলেই আপনি সেই কাজ থেকে সঠিকভাবে মূল্যায়িত হবেন। তেমন কয়েকটি কাজ এবং কাজের ধরণ আপনাদের সাথে তুলে ধরছি।
বিনিয়োগ ছাড়া আয় করুন ৫টি কাজ করে
ঘরে বসে অ্যাড পড়া (Ad Rading Work From Home)
বর্তমানে লক্ষাধিক লোকের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় কাজ হলো বিভিন্ন ওয়েবসাইটে গিয়ে অ্যাড ক্লিলিং জব। এই জবগুলোকে জনপ্রিয় ওয়েবসাইটগুলোই সরবরাহ করে থাকে। এই সব জনপ্রিয় ওয়েব সাইটগুলোতে গিয়ে আপনার কাজ হবে কেবল অ্যাড ক্লিক করা এবং কয়েক সেকেন্ডের জন্য সেই অ্যাডগুলো দেখা।
আপনার বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইটের ওপর গবেষণা এবং সেই ওয়েবসাইটগুলোকে পরীক্ষা করে দেখে আপনাদেরকে বলতে পারি যে, ৫/৬ টি’র বেশি কোম্পানি যারা এই কাজগুলো দিয়ে থাকেন তারা তাদের এমপ্লয়িদেরকে শুধু্ উপযুক্ত সম্মানি প্রদান করেন না বরং তারা চেষ্টা করেন সম্মানি সঠিক সময়ে প্রদান করতে। তাহলে দেরি না করে আপনিও হতে পারেন একজন অ্যাড রিডার এবং এই সেক্টর থেকে ইনকাম করতে পারেন নিয়মিত। ঘরে বসে অ্যাড পড়ে আয় করার একটি বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট হল পেইডভার্টস। জেনে নিন কিভাবে পেইডভার্টস থেকে প্রতিদিন ১০ ডলার আয় করবেন।
ঘরে বসে জিপিটি জব (GPT Job From Home)
অ্যাড পড়ার মতো কাছাকাছি একটি কাজ হলো জিপিটি। জিপিটি’র মিনিং হলো- গেট পেইড টু টাস্ক, টাকার বিনিময়ে কারো কাজ করে দেওয়া। জিপিটি এবং অ্যাড রিডিং প্রায় কাছাকাছি ধরণের কাজ কিন্তু কাজের ধরণে সামান্যতম কিছু পার্থক্য আছে।
অনলাইনে খুঁজলে এ ধরণের কিছু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট পাবেন যারা তাদের মেম্বারদেরকে এই ধরণের কাজ দিয়ে যাচ্ছেন। আপনি সহজেই সে-সব ওয়েবসাইট থেকে কাজ পেতে পারেন। কিন্তু কাজ পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই ওয়েবসাইটগুলোতে নিবন্ধন করতে হবে (সাইন আপ) করতে হবে। জিপিটি জব পাওয়া যায় এমন অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দেখে নিন- আউটসোর্সিং এর জন্য সেরা ১০টি ওয়েবসাইট।
ঘরে বসে অনলাইন জরিপ (Complete Online Surveys from Home)
আজকাল প্রায় সবাই অনলাইন জানেন এবং ঘরে বসে অনলাইন সার্ভে করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অনলাইন সার্ভেগুলো হলো হোমওয়ার্কার, পার্টটাইমার এবং ছাত্রদের জন্য অর্থ উপার্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম। যে-সব সাইটগুলোতে ভালো জরিপ রয়েছে, আপনি সে-সব সাইটগুলোর সাথে নিবন্ধিত হতে পারেন এবং বিভিন্ন জরিপ পূরণ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
আপনি ইচ্ছা করলে অনলাইন সার্ভে ওয়েবসাইটগুলো চেক করতে পারেন এবং সেখান থেকে সে-সব ওয়েবসাইটের আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারেন। আপনারা সিওর জব (Sure Job) ট্রেনিং প্যাকেজ এ সাইন আপ করতে পারেন, যেটি আপনাদের এই ধরনের কাজ পেতে সাহায্য করবে।
ব্লগিং – দীর্ঘস্থায়ী আয়
আপনি যদি অনলাইনে স্থায়ী, নির্ভরশীল এবং স্থিতিশীল কোন কাজ করতে চান, তাহলে সেখানে প্রথম সারিতে থাকবে ব্লগিং। ব্লগিং এমন একটি কাজ যেটি আপনি পার্ট টাইম এবং ফুলটাইম করতে পারেন। প্রথমাবস্থায় আপনি যখন নিজেকে ব্লগিংয়ে যুক্ত করবেন তখন ব্লগিং বুঝতে আপনার বেশ কিছু সময় দিতে হবে।
আপনি যদি একবার কাজটা আয়ত্ব করতে পারেন তাহলে আপনি অনেক ফুল টাইম চাকুরিজীবির চেয়ে অনেক বেশি সম্মানজনক আয় করতে পারবেন এই সেক্টর থেকে।
ঘরে বসে হন ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট (Work as VA from Home)
বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ লোক ভার্চুয়াল সহকারী (ভিএ) হিসাবে হোম থেকে কাজ করছে এবং সময় এবং দক্ষতার উপর নির্ভর করে ভাল আয় উপার্জন করছে। ভার্চুয়াল সহকারী হিসেবে কাজ করার জন্য আপনি ভার্চুয়াল সহকারী হিসাবে কাজ করতে বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটগুলিতে সাইনআপ করতে পারেন এবং প্রতি ঘন্টায় $ 5- $ 10 (500 থেকে 1000 টাকা) চার্জ করতে পারেন।
আপনার উল্লেখযোগ্য দক্ষতা ও বাজেটের ভিত্তিতে লোকজন আপনাকে কাজ দেবে এবং আপনাকে উভয়ের মধ্যে নির্ধারিত হারের ভিত্তিতে আপনাকে অর্থ প্রদান করবে। প্রয়োজন অনুযায়ী আপনি 2 ঘন্টা, 8 ঘন্টা বা দিন কাজ করতে পারেন।
ঘরে বসে হয়ে যান রাইটার (Work from Home Writer)
আপনার যদি ভাল লেখার দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনার জন্য ইন্টারনেটে প্রচুর কাজ আছে। আপনি ৫০০ শব্দের কন্টেন্ট এর জন্য ৫$ থেকে ১০$ আয় করতে পারেন। ব্লগ এবং ওয়েবসাইট, প্রুফরিডিং, একাডেমিক লিখন, কপিরাইট ইত্যাদি লেখার মতো লেখার বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে।
ফিজার, আইউরিটার, ইল্যান্স, আপউভার, ফ্রিল্যান্সার প্রভৃতি ফ্রিল্যান্স সাইটগুলি যেখানে আপনি সাইনআপ এবং লেখার অনেক কাজ পেতে পারেন। এছাড়া, আর্টিকেল লেখার জন্য অনেক ভাল পেমেন্ট করে এমন কিছু ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানতে, আর্টিকেল লিখে আয় করতে পারেন প্রতি মাসে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা শিরোনামের লেখাটি পড়ুন।
sohel says
অনেক সুন্দর করে লিখেছেন । ধন্যবাদ ।
md. haiul sheikh says
কিভাবে আয় করতে পারি , একটু বলে দেন?
টি আই অন্তর says
এই ৫টি কাজের মধ্যে আপনি যে কাজটির জন্যে সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত, সেই কাজটি দিয়ে শুরু করুন। মানে এখানকার যে কাজটি আপনি সহজে করতে পারবেন, যে কাজটি করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন, সেটি পছন্দ করাই আপনার জন্যে সবচেয়ে ভাল হবে। আর যে কোনও একটি কাজ পছন্দ করার পর, সে কাজটি যে সব ওয়েবাইটে পাওয়া যায়, সেসব ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করুন। এরপর কাজ পাওয়ার জন্যে বিট করতে থাকুন।
যদি শেষের কাজ ২টি করতে চান, যেমন যদি ব্লগিং করতে চান তবে একটি ডোমেইন ও হোস্টিং কিনে শুরু করে দিন। আর যদি রাইটার হতে চান, তবে লিংক করা লেখাটিতে গিয়ে যে ওয়েবসাইটগুলো পাবেন, সেগুলোর জন্যে লিখতে শুরু করুন।
minhazul says
আমার এমন একটা ওয়েবসাইট লিংক দরকার যাদের কাছে থেকে বিজ্ঞাপন নিয়ে আমার ওয়েবসাইটে দেওয়ার পর শুধু কেউ দেখলেই যেনো তারা আমাকে টাকা দেয়। ক্লিক ছাড়া বিজ্ঞাপন দেখলেই যেনো টাকা পাই এমন একটা ওয়েবসাইট লিংক দরকার।
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, মিনহাজুল। শুধু বিজ্ঞাপন ভিউর উপর টাকা দেয় এ রকম অ্যাড নেটওয়ার্ক নেই বললেই চলে। হাতে গোনা যে কয়েকটি আছে, সেগুলোর বেশিরভাগই প্রতারণায় ভরা। আসলে, ওয়েবসাইট থেকে এত সহজে আয় করার চিন্তাটা কিছুটা অযোক্তিকই বটে। আপনি যদি গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করেন, তবে আপনি ক্লিক থেকেও আয় করতে পারবেন, আবার ভিউ থেকেও আয় করতে পারেন, যেটাকে গুগলের ভাষায় ইমপ্রেশন বলে।
চৌধুরী আজিজ কোরাইশী says
আমি একজন ছাত্র ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার। আমার পিসি ও স্মার্টফোন দুটোই আছে।আমি অনলাইনে আয় করতে চাই কোন ঝামেলা ছাড়া। আর পে-মেন্ট টা সরাসরি মোবাইল অথবা ব্যাংক একাউন্টে পেতে চাই। কোথায় কিভাবে কাজ করলে ভালো হবে জানাবেন প্লিজ।
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, চৌধুরী আজিজ কোরাইশী। জেনে ভাল লাগলো যে আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ডিজাইন করার জন্যে আপনার প্রয়োজনীয় সব উপকরণই রয়েছে। কাজ করে ঝামেলা ছাড়া পেমেন্ট পাওয়ার জন্যে আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য ঘরে বসে আয় করার সেরা ১০ টি ওয়েবসাইট থেকে বাছাই করে যে কোনটিতে কাজ করুন। চাইলে আপনি একাধিক ওয়েবসাইটেও কাজ করতে পারেন।
SHAJEEB MAI says
আমি কাজ করতে চাই, কিন্তু বুঝতে পারছি না কিভাবে করবো। বিনিয়োগ ছাড়া আয় করার উপায়গুলো মন্দ না, লেখককে ধন্যবাদ।
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ, সজীব ভাই। আপনার যদি কাজ করার আগ্রহ থাকে, তবে প্রথমে এখানকার মানে এ ৫টি উপায়ের যে কোনটি বেছে নিন। যে উপায় বা পদ্ধতি আপনার সঙ্গে মিলে যায় মানে আপনার জন্যে সহজ হয়, সেটিতে কাজ করার জন্যে মনস্থির করুন। এরপর, সেটি নিয়ে একটু ঘাঁটাঘাটি করুন, ওয়েবে সার্চ দিন। অন্যরা যারা ঐ কাজটি করছে, তাদের সাথে কথা বলুন, সম্ভব হলে তাদের সহযোগীতা নিন। ইনশাল্লাহ্, আপনিও বিনিয়োগ ছাড়া আয় করতে পারবেন। এছাড়া এ ২০টি পার্ট টাইম জব সম্পর্কেও আইডিয়া নিয়ে রাখুন এবং এখান থেকেও চাইলে আপনি যে কোনটি করতে পারেন।
Mithun Debnath says
ভাই, আমি তো এই ৫টা কাজের মধ্যে একটাতেও এক্সপার্ট না। দয়া করে বলে দেবেন, কোথা থেকে এগুলো খুব তাড়াতাড়ি শিখতে পারবো এবং এক্সপার্ট হতে পারবো? ভাই, আমি কাজ করতে চাই, কিন্তু আমি তো এসব কাজ জানি না, প্লিজ ভাই বলে দিন।
টি আই অন্তর says
ধন্যবাদ মিথুন দেবনাথ। আসলে শুরুর দিকে কেউ-ই এক্সপার্ট থাকে না। কাজ করতে করতে একেক জন একেক দিকে এক্সপার্ট হয়ে উঠে। আপনি আগে ঠিক করুন, আপনি আসলে কোন কাজটি করতে চান। এটা ঠিক করতে যদি সমস্যা হয়, তবে আমাদের সাইটের একটি মেইন ক্যাটেগরি ‘অনলাইনে আয়’ আর এই ক্যাটেগরির সাব-ক্যাটেগরি ‘আউটসোর্সিং’ এর সবগুলো লেখা পড়ে নিন। অনলাইনে যত ধরণের কাজ আছে, সেগুলোর প্রায় সবটি সম্পর্কেই আপনি এই দুই ক্যাটেগরিতে প্রচুর লেখা পাবেন। এগুলো আপনাকে আপনার যোগ্যতা অনুযায়ী কাজ বেছে নিতে সাহায্য করবে। একবার যদি ঠিক করতে পারেন, আপনি কোন কাজটির জন্যে উপযুক্ত, তবে সে বিষয়টি সম্পর্কে আরো ভালভাবে জানার জন্যে কিছু রিসার্চ করে নিন। আর কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানান, আমরা উত্তর দিয়ে আপনাকে সাহায্য করবো।