বাইকে বসে চোখে-মুখে বাতাসের ঝাপটা খাওয়া কার না ভাল লাগে? কার না পছন্দ বাইক চালিয়ে মাঝে মধ্যে পরিচিত মহল ছেড়ে, শহুর পেরিয়ে একটু দূরে গিয়ে প্রকৃতির প্রাণচাঞ্চল্য দেখে আসা? কে না উপভোগ করতে চায় সবাইকে চম্পট মেরে, সমস্ত জ্যামকে রাস্তার উপর জিম্মি রেখে ফুটপাত ধরে কিংবা অলি-গলি পেরিয়ে সবার আগে গন্তব্যে পৌঁছে যেতে?
হুম, যারা বাইক চালাতে জানেন এবং যারা জানেন না, উভয়ই চান উপভোগ করতে বাইকের বাহাদুরি। এটা আসলেই বাহাদূরির ব্যাপার যে যখন সবাই জ্যামে বসে যারপরনাই বিরক্ত, তখন একজন বাইক চালিয়ে বিশ্বজয়ীর মতো চলে যাচ্ছে পাশ দিয়ে। থোড়াই কেয়ার করছে বড় কিংবা ছোট রাস্তা, ফুটপাত বা পথচারি, ট্রাফিক বা ট্রাক।
আসলে, আমরা যারা মিডল ক্লাস ফ্যামিলিতে বেড়ে উঠেছি, তারা না পারছি আমাদের উপরের মানুষগুলোর উপচে পড়া জীবনের সঙ্গে তাল মেলাতে, আবার না পারছি নিম্নের নির্জলা মানুষদের সঙ্গে নিজেদের মিশিয়ে দিতে। আমাদের সব ব্যাপারেই মধ্যম পন্থা অবলম্বন করতে হয়।
অফিসে যাওয়া আসা করতে কিংবা জরুরী কাজে বাড়ির বাইরে বের হতে আমাদের মধ্যবিত্তের জন্যে সবচেয়ে ভাল ব্যবস্থা বাইক বা মোটর সাইকেল। অনেকেই আজকাল কোথাও আসা-যাওয়ার জন্যে বাইক ব্যবহার করছেন। যাদের বাইক নেই, তাদের মাঝেও অনেকেই কেনার কথা ভাবছেন।
আপনিও যদি তাদের মাঝে একজন হয়ে থাকেন অর্থাৎ বাইক কেনার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন, তবে আপনাকে অবশ্যই কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে। আসুন, বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।
বাইক কেনার আগে বিবেচ্য বিষয়
বাইক কেনা খুব বড় কোনও বিষয় না হলেও আমাদের আর্থ-সামাজিক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত। কারণ, বাইক তো আমরা বারবার কিনবো না। একবার কিনে ঠকে গেলাম তো কি হয়েছে, আবার আরেকটা কিনবো; এমন অবস্থা তো আমাদের নেই। তাই, বাইক কেনায় হুট করে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়া বা তাড়াহুড়া না করাই উত্তম।
প্রয়োজনে কয়েকদিন কয়েকটা শো রুম ঘুরে দেখা যেতে পারে, আইডিয়া নেয়া যেতে পারে। শো রুমে গেলে মালিক কিংবা সেলস্ ম্যান তো ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে অনেক বাইকই দেখাবে। প্রতিটি বাইকের ফিচার সম্পর্কে জানাবে। কিন্তু আপনার নিজের যদি বাইক সম্পর্কে বিন্দুমাত্র আইডিয়া না থাকে, তবে তো বাইক কিনে ধরা খেতে পারেন। তাই, বাইক কিনতে যাওয়ার আগে নিম্নোক্ত ১২টি বিষয় বিবেচনায় নিন।
১. নতুন না পুরনো বাইক কিনবেন?
নতুন ও পুরনো কিংবা সেকেন্ডহ্যান্ড বাইক, উভয়েরই সুবিধা-অসুবিধা আছে। নতুন বাইক যেমন ঝকঝকে তকতকে থাকবে, পুরনো বাইক ততোটা থাকবে না। তাই, নতুন বাইকের দাম বেশি হবে আর পুরনো বাইকের দাম কম।
সাধারণত নতুন বাইক নিরাপদ, নির্ভরযোগ্য এবং বেশ আরামদায়ক হয়ে থাকে। সেই সাথে নতুন বাইকের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্টিও পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে, পুরনো বাইক ব্যবহৃত বলে দেখতে অতোটা কালারফুল হয় না। কিংবা, নতুনের মতো ঝকঝকেও দেখায় না।
পুরনো বাইকে নতুনের মতো সবকিছু না পেলেও সবচেয়ে বড় সুবিধা হিসেবে যেটা পাবেন, সেটা হচ্ছে কম মূল্য। কাজেই, বাইকের জন্যে আপনার বাজেট যদি কম হয়, কিন্তু আপনি অনেক আপডেট ভার্সণের বাইক চান, তবে আমার পরামর্শ হবে পুরনো বাইক কেনা। মাঝে মাঝে এমন কিছু পুরনো বাইক পাওয়া যায় যেগুলো খুব একটা ব্যবহৃত হয়নি। কেউ হয়তো অনেক শখ করে কিনেছে, কিন্তু টাকার অভাবে বিক্রি করে দিচ্ছে। এমন টাইপের বাইক পেলে আপনার কপাল ভালো।
আর যদি নতুনের মতো পুরাতন বাইক না পান, তবে জরাজীর্ণ পুরনো বাইক না কেনাই ভাল। কারণ, পুরনো বাইকের ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় যে কেনার পর এটার পেছনে খরচ করতে করতে জীবন ধপা-রপা। তাই, একটু কষ্ট হলেও প্রথম বাজেটেই নতুন বাইক কেনা উচিৎ।
২. বাজেট নির্ধারণ করুন
বাইকের জন্যে বাজেট নির্ধারণ করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বলতে পারেন এটিই প্রথম পদক্ষেপ। কারণ, বাজেটের উপর নির্ভর করছে আপনি কি মানের বাইক কিনতে পারবেন। বাজেট নির্ধারণ করা হয়ে গেলে সেই বাজেটের মধ্যেই ভাল মানের বাইক খুঁজে বের করা সহজ হয়ে যাবে।
ধরা যাক, বাইক কেনার জন্যে আপনার বাজেট হচ্ছে ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা। এখন আপনার জন্যে সহজ হয়ে যাবে সরাসরি বাইকের শো রুমে গিয়ে কিংবা অনলাইন বাইক শপগুলিতে ঢুকে এ টাকার মধ্যে সুন্দর একটি বাইক পছন্দ করা। একই বাজেটের মধ্যে আপনি নানা ব্র্যান্ডের নানা কোয়ালিটির বাইক পেয়ে যাবেন।
আবার যদি আপনার বাজেট আরেকটু বেশি হয়, ধরা যাক ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা, তাহলে কোয়ালিটির দিক থেকে আপনি আরো ভাল মানের বাইক কিনতে পারবেন। আপনার বাজেট যত বাড়বে, আপনার বাইকের কোয়ালিটিও তত বৃদ্ধি পাবে।
তবে, এমন যেন না হয় যে, আপনি আপনার সাধ্যের বাইরে বাজেট করে বসে থাকেন। কারণ, আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে বাইকের পেছনে আপনার আরো অনেক খরচ আছে। কাজেই, আপনি যতটুকু বহন করতে পারবেন, ততটুকুই বাজেট করুন।
৩. বাজেটের মধ্যে ভাল বাইকের তালিকা তৈরি করুন
যেহেতু বাইকের জন্যে আপনার বাজেট নির্ধারণ হয়ে গিয়েছে, সেহেতু আপনার পরবর্তী কাজ এখন এই বাজেটের মধ্যে সম্ভাব্য সকল বাইকের তালিকা তৈরি করে ফেলা। কারণ, একই বাজেটের মধ্যে একদিকে যেমন আপনি বিভিন্ন বিখ্যাত ব্র্যান্ডের বাইক পাবেন, অন্যদিকে পাবেন বিভিন্ন কোয়ালিটির বাইকও। কিন্তু আপনাকে ব্র্যান্ড এবং কোয়ালিটি দুই দিক থেকেই জিতলে হলে বাজেটের মধ্যে বাইকের একটা তালিকা করতে হবে।
তালিকা কিভাবে করবেন? বিভিন্ন বাইক শপে যান, আপনার বাজেটের মধ্যে যে বাইকগুলো পাওয়া যায়, সেগুলোর নাম ও মডেল লিখে রাখুন। অথবা, বাংলাদেশী অনলাইন বাইক শপগুলো ভিজিট করুন। আপনার নির্ধারিত বাজেটের ভেতরে যেগুলো দেখবেন, সেগুলো নোট ডাউন করুন। এভাবে, আপনার তালিকাটি সম্পন্ন করুন।
তালিকা করা হয়ে গেলে বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করুন। এ প্রক্রিয়ায় যেগুলো আপনার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে, সেগুলোকে উপরের দিকে নিয়ে আসুন। আর যেগুলো কম ভাল লেগেছে, সেগুলোকে তালিকার নিচে নিয়ে যান। এরপর তালিকার শীর্ষে থাকা প্রথম ৩টি বাইক থেকে একটি পছন্দ করে নিন।
৪. পরিচিত বাইকারদের পরামর্শ নিন
আপনার তালিকার প্রথম দিকে থাকা ৩টি বাইক সম্পর্কে পরিচিতদের পরামর্শ নিন। আপনার বাইকার সার্কেলের মধ্যে দেখুন এই ৩টি বাইকের মধ্যে কেউ কোনটি কিনেছে কিংবা ব্যবহার করেছে কিনা। যদি পেয়ে যান এমন একজনকে যে এগুলোর কোন না কোনটি ব্যবহার করেছে, তবে তার কাছ থেকে বিস্তারিত সুবিধা-অসুবিধা জেনে নিন।
যদি আপনার পছন্দের বাইক ব্যবহারকারি না পান, তাতেও সমস্যা নেই; যে কোনও বাইকার থেকেই তার অভিজ্ঞতা জেনে নিতে পারেন। তার অভিজ্ঞতা কিংবা পরামর্শ আপনার বাইক কেনায় দারুণ কাজে দেবে। সুতরাং, পারলে কয়েকজনকেই আপনার পছন্দের বাইকটি দেখান এবং সবার মতামত নিন। এতে আপনার তালিকার ৩টি বাইক থেকে একটি চূড়ান্ত করা সহজ হবে।
৫. টেস্ট হিসেবে একটা ড্রাইভ দিন
বন্ধু বা পরিচিত বাইকারদের পরামর্শ নিয়েছেন। এবার, আপনাকে আরেকটা কাজ করতে হবে আর সেটা হচ্ছে যে বাইকটি কিনবেন বলে ঠিক করেছেন সেটি একবার টেস্ট ড্রাইভ দেয়া। অর্থাৎ, পছন্দের বাইকটি কিছুক্ষণ চালিয়ে দেখা।
যদি আপনার পরিচিত কারো সেই বাইকটিই থেকে থাকে, তবে তার কাছ থেকে নিয়েই কিছুক্ষণ চালিয়ে দেখুন। আর যদি পরিচিত কারো কাছে না পান, তবে আপনাকে শো রুমের সহযোগীতা নিতে হবে এবং অবশ্যই আপনি তাদের পক্ষ থেকে এই সুযোগ পেতে পারেন।
সম্ভব হলে সেকেন্ড কিংবা থার্ড চয়েসে থাকা বাইকগুলোও চালিয়ে দেখতে পারেন। এমন হতে পারে যে, প্রথম পছন্দের বাইকটি টেস্ট ড্রাইভের পর আপনার আর ভাল না’ও লাগতে পারে। যদি এমন হয় যে, টেস্ট ড্রাইভের পর সেকেন্ড চয়েসে থাকা বাইকটিই আপনার বেশি ভাল লেগে গেল, তবে সেটিই কিনুন।
৬. মাইলেজে মনোযোগ কমান
যারা নতুন বাইক কেনেন, তাদের অধিকাংশেরই মনোযোগ থাকে মাইলেজের দিকে যা মোটেই ঠিক নয়। কেননা, মাইলেজ ভাল হলেই যে বাইক ভাল হবে, এর কোনও গ্যারান্টি বাইক নির্মাতারা দিতে পারেন না। প্রায় সময়ই এমন দেখা যায় যে, একই মাইলেজের দুইটা বাইকের মধ্যে একটার ফুয়েল লাগে মাসে ৩০ লিটার, অন্যটার লাগে ২৫ লিটার।
বাইক কেনার ক্ষেত্রে ফুয়েল ইকোনোমি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শুধু বাইকই নয়, কারসহ অন্যান্য যানবাহনের ক্ষেত্রেও ফুয়েল ইকোনোমির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ফুয়েল ইকোনোমি হলো প্রতি লিটারে ফুয়েলের মূল্য বা খরচ যা গাড়ির রানিং ব্যয়ভারকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।
বাইকসহ যে কোনও গাড়ির ক্ষেত্রে মাইলেজ হলো প্রতি লিটার বা গ্যালনে কিলোমিটারের বা মাইলের পরিমাণ। আর যারা নতুন বাইক কিনতে যান, তাদের মাঝে অধিকাংশই মাইলেজের দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে ইঞ্জিনসহ অন্যান্য ফিচারের প্রতি গুরুত্ব কম দিয়ে থাকেন। অথচ মাইলেজের চেয়েও বাইকের ইঞ্জিনের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিৎ। হতে পারে, ভাল ইঞ্জিনের কারণে ফুয়েলের খরচ একটু বেশি পড়লো।
৭. সাধ্যের বাইরে বাইক কিনবেন না
নতুন বাইক কেনেন যারা তাদের অধিকাংশের মধ্যেই কমোনলি যে সমস্যাটা হয় সেটা হচ্ছে সাধ্যের বাইরে বাইক কেনা। বিশেষ করে, পারফরন্সের দিক থেকে। একজন বাইকার যতটা হ্যান্ডেল করতে পারবে, তার চেয়ে বেশি পারফরমেন্সের বাইক কেনা বোকামী বৈ আর কিছুই নয়।
সুতরাং, বাইক কেনার সময় বুদ্ধিমানের কাজ হলো ক্রস রকেট থেকে দূরে থাকা। বিশেষত, ৬শ সিসির বেশি পাওয়ারফুল ইঞ্জিনের বাইক না কেনা। যখন আপনি ধীর গতির বাইক চালানো শিখে ফেলবেন, তখন দ্রুত গতির বাইক চালানো আপনার জন্যে সহজ হয়ে যাবে।
মনে রাখবেন, আপনার যখন বাইক চালানোর স্কিল বেড়ে যাবে, আপনি যখন অভিজ্ঞ হয়ে উঠবেন, তখন যে কোনও সময়ই আপনি নিজেকে আপগ্রেড করার সুযোগ পাবেন। সে সময় আপনি যত দ্রুত গতির বাইকই কেনেন না কেন, কোন সমস্যা নেই; তবে শুরুতেই নয়।
৮. রিসেল ভ্যালু নিয়ে ভাবুন
একটা বাইক নিশ্চয়ই আপনি সারা জীবন ধরে চালাবেন না। এমন হওয়ার সম্ভাবণা অত্যন্ত প্রবল যে, নতুন কোনও মডেলের বাইক দেখে আপনার আর আগের বাইকটি চালাতে ইচ্ছে করবে না। সেক্ষেত্রে, আপনি ভাববেন আগের বাইকটি বিক্রি করে দিয়ে সেই সাথে আরো কিছু টাকা অ্যাড করে নতুন বাইকটি কিনে নিতে।
কিন্তু আপনার কেনা বাইকটির যদি রিসেল ভ্যালু না থাকে, তবে বিক্রি করতে গিয়ে আপনি খুব একটা দাম পাবেন না। কাজেই, প্রথমবার বাইক কেনার সময়ই রিসেল ভ্যালু নিয়ে ভাবুন। অর্থাৎ, এমন ব্র্যান্ড বা এমন মডেলের বাইক কিনুন, যেটির মূল্য সবসময়ই ভাল থাকে।
পরিচিত বাইকারদের সঙ্গে পরামর্শ করে এমন বাইক কিনুন যা কয়েক বছর পর বিক্রি করলেও ভাল দাম পাবেন। সাধারণত, নামি-দামি ব্র্যান্ডের বাইকের রিসেল ভ্যালু বেশি থাকে।
৯. পরিচিত ব্র্যান্ডের বাইক কিনুন
বাইকের জগতে যেমন অনেক পরিচিত ব্র্যান্ড রয়েছে, তেমনই রয়েছে প্রচুর অপরিচিত ব্র্যান্ড। আপনার অবশ্যই এমন ব্র্যান্ডের বাইক কেনা উচিৎ যা সর্বাধিক পরিচিত। অর্থাৎ, এক নামে সব বাইকারই সেই ব্র্যান্ডকে চেনেন।
সাধারণত, পরিচিত বা নামি-দামি ব্র্যান্ডগুলো ভাল মানের বাইক তৈরি করে থাকে। এইসব ব্র্যান্ডের বিক্রি বেশি, লাভ বেশি এবং কোয়ালিটি মেইনটেনেন্সের স্কোপও বেশি। বড় কোম্পানী সচরাচর কোয়ালিটির সঙ্গে কোনও রকম কম্প্রোমাইজ করে না। সবচেয়ে বড় কথা, নামি-দামি ব্র্যান্ডের বাইকের পার্টস্ পেতে সমস্যা হয় না।
১০. পার্টস্ এর সহজলভ্যতার কথা ভাবুন
কোনভাবেই এমন কোনও বাইক কিনবেন না যারা পার্টস্ পাওয়া যায় না। সাধারণত ব্র্যান্ডের বাইক কিনলে আপনি অনায়াসেই এই ঝামেলা থেকে বেঁচে যাবেন। আর যদি নন-ব্র্যান্ড বাইক কিনে ঝামেলায় পড়ে যান, তবে নষ্ট হওয়ার পর রিপেয়্যার করতে গিয়ে পার্টস্ না পাওয়ার সমস্যা পোহাতে হবে। তাই, প্রথম দিকেই এমন বাইক কিনুন যার যন্ত্রাংশের সহজলভ্যতা রয়েছে।
১১. রিয়েল ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে কিনুন
ধরা যাক, অত্যন্ত নামি-দামি কোনও ব্র্যান্ডের বাইক কিনলেন। সুতরাং, গ্যারান্টি, ওয়ারেন্টি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। এমনকি, পার্টস্ এর অ্যাভাইবালিটি নিয়েও কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু বাইকটি কিনলেন আপনি এমন ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে যা রিয়েল নয়, অর্থাৎ কোম্পানির অনুমোদিত পরিবেশক নয়। ভাবুন, অবস্থাটা কি হবে!
প্রয়োজনের মূহুর্তে কোনও সহযোগীতা তো পাবেনই না, বরং নানা রকম হয়রানির শিকার হবেন।
১২. সাইজ, ওজন ও ইঞ্জিন পাওয়ার
বাইকের সাইজ বড় একটি বিষয় যা কেনার সময়ই বিবেচনায় রাখা উচিৎ। আপনার বডি শেপ ও সাইজের সঙ্গে যদি বাইকের শেপ ও সাইজ ম্যাচ না করে, তবে বাইকে বসতে আপনার সমস্যা হতে পারে। এমনকি, হ্যান্ডেল ধরতেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, স্বাচ্ছন্দের সহিত বাইক চালাতে হলে আপনাকে অবশ্যই সাইজের প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।
সাইজের সাথে ওজনও বেশ বিবেচনার বিষয়। এখানেও আপনার নিজের ওজনের সাথে বাইকের ওজনের সামঞ্জস্য থাকতে হবে। যদি আপনার নিজের ওজনের সাথে বাইকের ওজন সঙ্গতিপূর্ণ না হয়, তবে সুন্দরভাবে বাইক চালানো আর সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা আপনার জন্যে কঠিন হয়ে যাবে।
সাইজ আর ওজনের সাথে সাথে ইঞ্জিন পাওয়ারের ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ২০০ সিসি পর্যন্ত পাওয়ার নির্ধারণ করা রয়েছে। কাজেই, এর থেকে বেশি ইঞ্জিন পাওয়ারের বাইক কেনার প্রয়োজন নেই।
যাইহোক, বাইক কেনার আগে আপনাকে যে-সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানলেন। আশা করি, বাইক কেনার এই গাইডলাইনটি আপনার ভাল লেগেছে এবং এটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়েছেন।
Leave a Reply