জীবিকার প্রয়োজনে প্রিয়জন আজ বহু দূরে চলে গিয়েছে। কিন্তু মনটাকে রেখে গিয়েছে প্রিয় মাতৃভূমিতে যেখানে তার সমস্ত ভালবাসা। ভালবাসার মানুষটির সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে রয়েছে ফ্রি কলিং অ্যাপস্ যার ভেতর দিয়ে বহু দূর থেকেও ভেসে আসে প্রিয় গলার প্রিয় সুর।
এক সময় দূরের কারো সাথে কথা বলার জন্যে একমাত্র অপশন ছিল টেলিফোন। এ সময় সহজেই প্রাপ্য ইন্টারনেট আর স্মার্টফোনের সমন্বয় সে যুগটিকে নি:শেষ করে দিয়েছে। এ দু’টি জিনিস থাকলে এখন খুব সহজেই প্রিয় মানুষদের সাথে মিলিত হওয়া যায় অডিও কিংবা ভিডিও কলিংয়ের মাধ্যমে।
বাড়তি যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে একটি কলিং অ্যাপ যা এ দুয়ের সমন্বয়ে প্রিয়জনকে কাছে টেনে আনে। এ রকমই কিছু ফ্রি অ্যাপের খোঁজ-খবর ও ডাউনলোড লিংক নিয়ে আমাদের আজকের আয়োজন।
ফ্রি কলিং অ্যাপস্
এ তালিকায় থাকছে এমন কিছু কলিং অ্যাপস্ যেগুলো দিয়ে ফ্রিতে অডিও এবং ভিডিও কল করা যায়। সেই সাথে, টেক্সট্ মেসেজের মাধ্যমে অনলাইন চ্যাটও করা যায়। আবার কিছু অ্যাপ আপনাকে গ্রুপ কলিংয়ের সুবিধাও দিচ্ছে।
তালিকার কিছু অ্যাপের সঙ্গে আপনি হয়তো আগে থেকেই পরিচিত এবং বর্তমানে হয়তো সেগুলোর কোন কোনটি ব্যবহারও করছেন। তবে, যেগুলোর সঙ্গে এখনো পরিচিত হননি, এ তালিকা থেকে সেগুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
Imo – Free Video Calls & Chat
দেশের বাইরে থাকা প্রিয়জনদের সাথে কথা বলার জন্যে আমাদের দেশে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় Imo অ্যাপটি। এই অ্যাপের মাধ্যমে অডিও ওবং ভিডিও উভয় সুবিধাতেই কথা বলা যায়। সেই সাথে মেসেজিং বা চ্যাটও করা যায়।
অন্যান্য অনেক অ্যাপের তুলনায় এটি অনেক বেশি লাইট। যদিও এটি ডিভাইস অনুযায়ী স্পেস নেয়, তবু এটি খুবই সামান্য জায়গা দখল করে থাকে। এই লাইট-ওয়েট অ্যাপটির সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, এটি সামান্য নেট হলেই চলতে পারে। অর্থাৎ, একেবারে স্লো কানেশনের নেট হলেও, ইমোর জন্যে তেমন একটা সমস্যা হয় না।
তবে সমস্যা হচ্ছে, নিরাপত্তার ঝুঁকি এড়ানোর অজুহাতে এ যাবৎ ৯টি দেশে ইমোকে ব্যানড্ করে দেয়া হয়েছে। আপনি যদি এ ৯টি দেশের কোনটিতে বসবাস করে থাকেন, তবে ঘাবড়াবার কিছু নেই, আপনার জন্যে আরো অনেক ভিডিও কলিং অ্যাপ রয়েছে। আর যারা এখনো ইমো ব্যবহার করেননি, তারা নিচের লিংক থেকে ডাউনলোড ও ইনস্টল করে নিন।
Facebook Messneger
যারা ফেসবুক ব্যবহার করেন, তারা সবাই Facebook Messneger এর সঙ্গে পরিচিত। কথা বলার জন্যে এটি একটি অ্যাভারেজ অ্যাপ। ব্যাপকভাবে পরিচিত হলেও Facebook Messneger এর ইউজার এক্সপেরিয়েন্স তেমন একটা সুবিধার নয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এটি অত্যন্ত স্লো এবং ক্লাঙ্কি, ঠিক মতো কথা বোঝা যায় না। আর সেই সাথে এটি প্রচুর ব্যাটারি খরচ করে।
তবে, যারা স্পিডি নেট ব্যবহার করেন, তাদের জন্যে এটা কোনও সমস্যাই নয়। এমনকি, যারা ফেসবুক চালান এবং ফেসবুকে যাদের অনেক বন্ধু আছে, তাদের জন্যে এই অ্যাপটি বেশ উপকারী। নিমিষেই তারা যে কোন বন্ধুকে কল দিতে পারেন, বন্ধুর সঙ্গে চ্যাট করতে পারেন এবং সম্পূর্ণ ফ্রিতে।
Discord – Free Voice and Text Chat for Gamers
প্রথম দিকে গেমারদের জন্যে গ্রুপ চ্যাটের সুবিধা নিয়ে এলেও, Discord এখন সবার জন্যেই উন্মুক্ত। এখন এটি যে কারো জন্যে উপকারী যখন কেউ চ্যাট করা ছাড়াও অডিও কিংবা ভিডিও কল করতে চান। প্রিয়জনের সঙ্গে প্রাইভেটলি কথা বলার জন্যে অন্যান্য অ্যাপের থেকে এখন Discord এর ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। বিশেষ করে, ইউরোপের দেশগুলোতে ফেসবুক মেসেঞ্জার, ইমো কিংবা স্কাইপির চেয়েও এখন Discord এর জনপ্রিয়তা বেশি।
Discord এ আপনি একদিকে যেমন প্রাইভেটলি কথা বলতে পারবেন, অন্যদিকে গ্রুপ ওয়াইজও কথা বলতে পারবেন। অর্থাৎ, আপনি নিজেই গ্রুপ কিংবা চ্যানেল খুলতে পারবেন, আবার নিজের পছন্দ মতো লোকদের আপনার গ্রুপে অ্যাড করতে পারবেন।
Discord এর একটাই অসুবিধা আর সেটি হচ্ছে এটি দিয়ে আপনি ল্যান্ডফোনে কল করতে পারবেন না। তবে, ভিওআইপি সার্ভিসের ক্ষেত্রে এর তুলনা নেই।
WhatsApp Messenger
১ বিলিয়ন ব্যবহারকারী নিয়ে WhatsApp প্রাইভেট চ্যাট ও কলিং অ্যাপ্লিকেশনের জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ধরে আছে। ইন্টারন্যাশনাল কলিং অ্যাপ হিসেবে প্রায় সব ধরণের ডাটা কানেকশন ও ওয়াইফাই সাপোর্ট করে এটি।
WhatsApp দিয়ে অডিও কল, ভিডিও কল, প্রাইভেট ও গ্রুপ চ্যাট করা যায়। সেই সাথে, ভয়েস কল ও ভিডিও কল রেকর্ডও করা যায়। এই অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্যে আপনাকে একটি একটি করে নাম্বার সেট করতে হয় না, এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ফোনে থাকা নাম্বারের সঙ্গে সিঙ্ক করে নেয়।
Google Duo – The simple video calling app
নিরাপদ অ্যাপ ভিডিও কলিং অ্যাপ হিসেবে Google Duo ব্যবহার করতে পারেন। এটি ফ্রি এবং ব্যবহার করা সহজ। আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হচ্ছে ডাউনলোড করা, ওপেন করা এবং আপনার ফোন নাম্বার অ্যাড করা। ব্যাস্, এরপর আপনি পৃথিবীর যে কোন প্রান্তের যে কাউকেই ফ্রিতে অডিও কিংবা ভিডিও কল করতে পারবেন।
Google Duo এর একটা সমস্যা হচ্ছে আপনি যার সঙ্গে কথা বলতে চান তার মোবাইলেও এটি থাকতে হবে। এটি ছাড়া বাকী সবই ভাল। যেমন, এটি অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস উভয় প্লাটফর্মেই ইউজ করা যায় আর এর ভিডিও কোয়ালিটি অত্যন্ত ভাল।
এগুলো ছাড়াও আরো অনেক ফ্রি কলিং অ্যাপস্ আছে। আশা করি, এগুলো থেকেই আপনার প্রয়োজন মিটে যাবে। তাই, লিস্টটা আর বড় করা হলো না।
Leave a Reply