ব্রাউজার হিসেবে মজিলা ফায়ারফক্সের সুবিধা-অসুবিধা দু’টোই রয়েছে। এটি একটি ওপেন সোর্স ওয়েব ব্রাউজার যা অনেকের কাছেই অত্যন্ত পছন্দের। যদিও ব্রাউজার হিসেবে গুগল ক্রোমের ইউজারই এখন সবচেয়ে বেশি, তবু মজিলারও রয়েছে টোটাল ব্যবহারকারীর ২৮%। আর এ তথ্যটি দিয়েছে অনলাইন লার্নিং প্লাটফর্ম W3Schools এবং ওয়েব ট্রাফিক অ্যানালাইজার statcounter এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট।
মজিলা ফায়ারফক্স হচ্ছে মজিলা ফাইন্ডেশনের আন্ডারে থাকা মজিলা কর্পোরেশনের তৈরি একটি ফ্রি ওয়েব ব্রাউজার। এটি উইন্ডোজের সব ভার্সণের জন্যেই পাওয়া যায়, একই সাথে এটি ম্যাক ওএস এবং লিনাক্সেও ব্যবহার করা যায়। অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্যেও রয়েছে এই ব্রাউজারটির অ্যাপ।
মজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজারের ১০টি অজানা তথ্য আপনি হয়তো ইতিমধ্যেই জেনেছেন। এবার জানুন এ ব্রাউজারের ৪টি সুবিধা ও ৫টি অসুবিধা সম্পর্কে।
মজিলা ফায়ারফক্সের সুবিধা-অসুবিধা
সুবিধা-১: ব্যাপক ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা
একটি ট্যাবে অসংখ্য ট্যাব ও পৃষ্ঠা ওপেন করা যে কোনও ব্রাউজারেরই বিশাল একটি সুবিধা হিসেবে পরিগণিত হয়। আর মজিলা ফায়ারফক্সে এই সুবিধাটি বিদ্যমান। অর্থাৎ, আপনি একটি মাত্র ট্যাবে অনেক পেজ ব্রাউজ করতে পারবেন এই ব্রাউজারটি ব্যবহার করে। এ জন্যে আপনাকে ট্যাবড্ ব্রাউজিং অপশনটি চালু করে দিতে হবে।
এই সুবিধাটি নেট ব্রাউজিংকে সংগঠিত এবং সহজ করে তোলে। এ রকম অনেক পেজ ওপেন করা অবস্থায় যদি আপনার পিসি কোন কারণে বন্ধ হয়ে যায় কিংবা রিস্টার্ট নিয়ে নেয়, তবু আপনি সবগুলো ট্যাবই আবার আগের অবস্থায় ফিরে পাবেন।
সুবিধা-২: বিশাল অ্যাড-অন লাইব্রেরী
ব্রাউজিং এক্সপেরিয়েন্সকে স্মুথ আর আনন্দময় করে তোলার জন্যে মজিলা ফায়ারফক্সের রয়েছে একটি বিশাল অ্যাড-অন লাইব্রেরী। আপনি এখানে প্রায় ৬ হাজার অ্যাড-অন এবং ৫ হাজার থিম পাবেন। তবে, সবগুলো অ্যাড-অনই যে আপনার কাজে লাগবে এমন নয়। তাই, মজিলা ফায়ারফক্সের ৮টি অত্যন্ত দরকারি অ্যাড-অন দেখে নিন।
সুবিধা-৩: মজিলা টেক সাপোর্ট
বর্তমান সময়ের সকল ওয়েব ব্রাউজারের মতো মজিলা ফায়ারফক্সও এমন একটি ব্রাউজার যা ব্যবহার করতে গিয়ে আপনি নানা ধরণের টেক সাপোর্ট পাবেন। এই ব্রাউজার টেক সাপোর্ট টিম বলতে গেলে এক রকম ২৪ ঘন্টাই ইউজারদেরকে সাপোর্ট দিয়ে থাকে। ফায়ারফক্স টিউটোরিয়ালের পাশাপাশি আপনি এই টিমের কাছ থেক ইমেলে এবং ফোনেও সাপোর্ট নিতে পারবেন।
সুবিধা-৪: সহজে কাস্টোমাইজ করা যায়
মজিলা ফায়ারফক্সের অন্যতম একটি দারুণ সুবিধা হচ্ছে এটাকে সহজে কাস্টোমাইজ করা যায়। আপনি অনায়াসেই এই ব্রাউজারের কন্ট্রোল, টুলবার, টাইটেল বার ও বাটন, বুকমার্ক, ওভার ফ্লো মেন্যুসহ আরো অনেক কিছুই কাস্টোমাইজ করতে পারবেন। মোট কথা, আপনি যদি এই ব্রাউজারটি ব্যবহার করেন, তবে এটিকে নিজের মনের মতো করে সাজিয়ে নিতে পারবেন।
সুবিধা-৫: হাই-লেবেল সিকিউরটি
আমাদের মোবাইল ও কম্পিউটারে থাকা ব্যক্তিগত ও প্রয়োজনীয় গোপণ তথ্য সবচেয়ে বেশি চুরি হয় ব্রাউজারের মাধ্যমে। মজিলা ফায়ারফক্সের অ্যাডভান্সড্ সিকিউরিটি সিস্টেম আপনাকে নিশ্চিত করছে যে, আপনি নিরাপদে ব্রাউজ করতে পারেন। তথ্য চুরি তো দূরের কথা, কোন রকম ম্যালওয়্যার, স্পাই অ্যাটা এবং কোন রকম ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না।
অসুবিধা-১: ফায়ারফক্স সব প্লাটফর্মে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়
ফায়ারফক্স সব প্লাটফর্মে সঠিকভাবে কাজ করে না। বিশেষ করে, বিভিন্ন মোবাইল প্লাটফর্মে এটি কিছু কিছু ওয়েব পেজ পরিপূর্ণভাবে ডাউনলোড করতে পারে না। আবার, কিছু প্লাটফর্মে দেখা যায়, ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। অর্থাৎ, ছবি কিংবা টেক্সট্ ফ্রেমের বাইরে বেরিয়ে থাকে। তার মানে স্ক্রিন রেজ্যুলেশন সমস্যা।
অসুবিধা-২: বেশি প্লাগইন, কম স্পিড
মজিলা ফায়ারফক্স অনেক প্লাগইন ইউজ করে। যারফলে, স্পিড কমে যায়। এটা মজিলার একটি সিরিয়াস ইস্যু। অনেক ইউজাররেই এই অভিযোগ যে, ফায়ারফক্স ওয়েব পেজকে স্লো ডাউন করে দিচ্ছে।
অসুবিধা-৩: নন-রিজিউমিং ডাউনলোড
ইন্টারনেট ব্রাউজিং এর সবচেয়ে বড় একটি সুবিধা হচ্ছে যখন তখন প্রয়োজন ফাইল-পত্র ডাউনলোড করা। কিন্তু যখন কোন বড় ফাইল ডাউনলোড করবেন, আর তখন যদি নেট চলে যায় কিংবা অন্য যে কোন টেকনিক্যাল সমস্যা দেখা দেয়, তখন উপায় কি?
সব ব্রাউজারেই রিজিউমিং সুবিধা আছে। অর্থাৎ, যেখান পর্যন্ত ডাউনলোড হয়েছে, ঠিক সেখান থেকেই আবার শুরু করা যায়। কিন্তু মজিলায় আবার শুরু থেকেই ডাউনলোড শুরু হয় যা কিনা সময়ের অপচয় হিসেবে বিবেচিত।
ফায়ারফক্সের সুবিধা-অসুবিধা জানলেন। সব ব্রাউজারেরই কিছু ভাল-মন্দ দিক রয়েছে। এখন আপনিই ঠিক করুন ফায়ারফক্স ইউজ করবেন নাকি করবেন না। যদি ইউজ করতে চান, তবে ফায়ারফক্সের ডাউনলোড লিংক থেকে কম্পিউটার কিংবা স্মার্টফোনের জন্যে ডাউনলোড করে নিন।
Leave a Reply