ম্যাংগো পিপল পার্ট টাইম চাকরির সুবিধা অসুবিধা নিয়ে মাথায় ঘামায় না। আর, এলিট পিপল তো পার্ট টাইম চাকরি করতেই চায় না। তারা হয় ব্যবসা করে, না হয় উচ্চ মানের চাকরি করে।
আপনি ম্যাংগো পিপল হোন, আর এলিট পিপলই হোন, আপনার অবশ্যই পার্ট টাইম জবের যাবতীয় সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো জেনে রাখা ভাল।
আপনি পছন্দ করেন আর না করেন, পার্ট টাইম জবের জনপ্রিয়তাকে অস্বীকার করতে পারবেন না। সারা পৃথিবীতেই সাধারণ বা অসাধারণ অনেক মানুষই আজকাল পার্ট টাইম বা খন্ডকালীণ চাকরি করতে ভালবাসেন। আর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যে ৫টি পাওয়ারফুল পার্ট টাইম জব তো রয়েছেই, যেগুলো সব দেশের ছেলে-মেয়েরাই পড়া-শুনার ফাঁকে ফাঁকে করে থাকেন।
আমাদের দেশে খন্ডকালীণ চাকরির বাজারটা খুব একটা বড় নয়। চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই যেখানে ফুল টাইম কাজ করিয়ে পার্ট টাইমের বেতন দেয়ার মানসিকতা লালন করেন, সেখানে এ বাজার বড় হওয়ার অপশন কোথায়?
কিন্তু, করোনা কালীণ সময়টায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, অনেকেরই মন-মানসিকতা পাল্টে গিয়েছে। অনেক কোম্পানীই এখন ব্যবসার মন্দা সময় কাটাতে পার্ট টাইম নিয়োগ দিচ্ছে। আর, আগে থেকেই যে-সব কোম্পানী রয়েছে যারা সব সময়ই পার্ট টাইম কর্মী খুঁজে থাকেন, তাদের ওখানকার সুযোগ সুবিধা তো রয়েছেই।
তবে, এ-সব সুযোগ সুবিধার ভাল ও মন্দ দিকগুলো দেখে নেয়া ভাল। সুতরাং, আসুন জেনে নেই পার্ট টাইম জবের যত সুবিধা ও অসুবিধা রয়েছে।
পার্ট টাইম চাকরির সুবিধা-অসুবিধা
চাকরি যে শুধু চার দেয়ালের ভেতর আবদ্ধ তা কিন্তু নয়। অর্থাৎ, চাকরি কেবল অফিসেই হয়, এমন নয়। আজকাল ঘরে বসেও করা যায় এমন অনেক চাকরি আছে। আর করোনা তো সেটাকে আরো বেগবান করে তুলেছে। আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইন ও অফলাইনে করা যায় এমন ২০টি পার্ট টাইম জব সম্পর্কে জেনেছেন অনেকেই। এবার, আসুন জানা যাক এ ধরণের জবের সুবিধা-অসুবিধাগুলো।
পার্ট টাইম চাকরির সুবিধা
প্রথমেই আসুন পার্ট টাইম কিংবা খন্ডকালীণ চাকরির সুবিধাগুলো জেনে নেয়া যাক।
কাজের অভিজ্ঞতা
পার্ট টাইম জব একজন মানুষকে রিয়েল লাইফ ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্স লাভে সহায়তা করে। বিশেষ করে, পড়াশুনাকালীণ সময়ে কেউ পার্ট টাইম কাজ করলে সেটা তার পরবর্তী জীবনে দারুন কাজে লাগে। পরবর্তী বলতে মূলত পড়াশুনা শেষ করার পর চাকরি জীবনে যখন প্রবেশ করে, তখন পূর্ববর্তী খন্ডকালীণ চাকরির অভিজ্ঞতা বেশ কাজে দেয়।
চাকরিদাতারা সব সময়ই আশা করেন, যাদেরকে নিয়োগ দিচ্ছেন তারা যেন অন্তত ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্টের সাথে পরিচিত থাকে। এমনকি, টিমের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে যেন কোনও অসুবিধা না হয়, অর্থাৎ সহজে সেট হয়ে যেতে পারে। আর পার্ট টাইম ওয়ার্ক একজন চাকরিপ্রার্থীকে এ দুটোই দিয়ে থাকে। মোট কথা, আগে থেকে খন্ডকালীণ কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকার মানেই হচ্ছে প্রপেশনাল ওয়ার্ল্ডে নিজেকে একধাপ এগিয়ে রাখা।
স্কিল ডেভেলপমেন্ট
খন্ডকালীণ কাজ করতে করতে একজন মানুষ অনেক ধরণের স্কিল অর্জণ করে থাকে যা পরবর্তী প্রপেশনাল লাইফে দারুণ কাজে দেয়। বিশেষ করে, চাকরি কিংবা ব্যবসা উভয় ক্ষেত্রেই এটি মানুষকে ইউজফুল স্কিল অর্জণে সহায়তা করে। যেমন, টিম ম্যানেজমেন্ট, অর্গানাইজেশন হ্যান্ডলিং স্কিল, টাইম ম্যানেজমেন্ট, ইনিশিয়েটিভ মিটিং স্কিল, ইত্যাদি।
নেটওয়ার্কিং অপরচুনিটি
পার্ট টাইম কাজ করতে গিয়ে একজন মানুষ আরো বহু ধরণের মানুষের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পায়। একে অন্যকে সাহায্য করা, নতুন নতুন বিষয় শেখা, কার্য সম্পাদন করার ভিন্ন রকম টেকনিক জানাসহ আরো নানাভাবে উপকৃত হওয়া যায়। এতে করে তার একটা প্রপেশনাল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠে।
নিজের খরচ নিজেই মেটানো
পার্ট টাইম কাজের মূল লাভই হচ্ছে আর্থিক যা থেকে নিজের আনুষঙ্গিক সকল খরচ নিজেই চালাতে পারে। অর্থাৎ, এখান থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে একজন মানুষ তার মোবাইল খরচ, টিউশন ফি, প্রয়োজনীয় কেনা-কাটাসহ যাবতীয় সকল ব্যয়ভার বহন করতে পারে। এমনিক, উদ্বৃত্ত টাকা দিয়ে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সাহায্য করতে পারে।
মানি ম্যানেজমেন্ট
আমরা যখন পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা নেই, তখন খরচের বেলায় কোনও হিসেব নিকেশ করি না। বিশেষ করে বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত টাকার সঠিক ম্যানেজমেন্ট করি না। কিন্তু যখন নিজের পরিশ্রমের টাকা হাতে আসে তখন ঠিকই খুব হিসেব করে খরচ করি। পার্ট টাইম কাজের এটা একটা ভাল দিক যে, এটি মানুষকে মানি ম্যানেজমেন্ট শেখায়। একজন মানুষ চিন্তা করতে শুরু করে কতটুকু খরচ করতে হবে এবং কোথায় খরচ করতে হবে; বাড়তি বা অহেতুক খরচ থেকে বিরত থাকতে হবে।
টাইম ম্যানেজমেন্ট
সাধারণত ছাত্র-ছাত্রীরাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পার্ট টাইম চাকরি করে থাকেন। আর ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে সময়ের কোনও হিসেব থাকে না। অর্থাৎ, সবচেয়ে বেশি সময় অপচয় হয় স্টুডেন্ট লাইফে। এটা স্বীকার করেন সবাই। কিন্তু একজন ছাত্র বা ছাত্রী যখন পড়াশুনার মাঝেই চাকরি করেন, তখন তিনি তাকে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়, সময়ের হিসেব করতে হয়। এতে করে, তিনি তার ভবিষ্যৎ জীবনের জন্যে টাইম ম্যানেজমেন্ট শিখে যান।
আত্মবিশ্বাস অর্জণ
পড়াশুনা শেষ করে কেউ যখন চাকরির অনুসন্ধ্যান করতে থাকে, তখন তার মাঝে সবচেয়ে বড় সমস্যা যেটা দেখা যায় সেটা হচ্ছে আত্মবিশ্বাসের অভাব। কাজের কোনও অভিজ্ঞতা না থাকার কারণে মনের মাঝে একটা কথা বারবার উঁকি দেয়- আমি কি এটা পারবো! ফলে, তার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি যা তার সফলতার ক্ষেত্রে মারাত্মক অন্তরায়।
পার্ট টাইম ওয়ার্ক একজন মানুষের এই দূর্বল দিকটি দূর করে দেয়। অর্থাৎ, খন্ডকালীণ কাজ করে নানা রকম অভিজ্ঞতা অর্জণের ফলে সে আত্মবিশ্বাসে টাইটম্বুর থাকে যা তার পরবর্তী চাকরিতে আশার ফ্লো তৈরি করে। এ ধরণের মানুষ সাধারণত কোথাও আঁটাকায় না। চাকরির ক্ষেত্রে তো নয়ই।
খারাপ অভ্যাশ ত্যাগ
বেকার মানুষ বহুবিধ খারাপ অভ্যাশে জড়িয়ে যায়। হাতে অফুরন্ত সময় থাকার ফলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দিতে নানা রকম অহেতুক ও অপ্রয়োজনীয় কাজে জড়িয়ে যায়। আবার, আড্ডা ছাড়াও যে এ রকম হয় না তা কিন্তু নয়। যেমন, অনেকেরই রাত জেগে গেম খেলা কিংবা ফেসবুকিং এর অভ্যেশ গড়ে ওঠে। ফলে, দিনের বেলা দেরী করে ঘুম থেকে ওঠে। এভাবে সে নানা রকম বদঅভ্যাশের ভিড়ে যায়।
কিন্তু ছাত্র জীবনে পার্ট টাইম জব করলে দেখা যায়, রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমোনোর চিন্তা থাকে। সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়। সুন্দর আর স্বচ্চ একটা রুটিন মাফিক জীবনে চলে আসতে হয়। এতে করে তাকে সকল ধরণের বদ অভ্যাশ ত্যাগ করতে হয়। আসলে, এসব খারাপ অভ্যাশ ছাড়তে সে বাধ্য হয়ে যায়।
পার্ট টাইম চাকরির অসুবিধা
পার্ট টাইম চাকরির যেমন সুবিধা রয়েছে, তেমনই রয়েছে কিছু অসুবিধাও। এটা তো খুবই স্বাভাবিক যে প্রতিটি কাজের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া, ভাল মন্দ, সুবিধা অসুবিধা থাকবে। এখানেও তাই রয়েছে। আসুন, খন্ডকালীণ চাকরির কিছু অসুবিধা জানা যাক।
পড়াশুনায় নেগেটিভ ইফেক্ট
যারা ছাত্রাবস্থায় চাকরি করেন, তাদের সবার ক্ষেত্রে না হলেও অনেকের বেলায়ই দেখা যায় পড়াশুনায় প্রভাব পড়ে। চাকরি করতে গিয়ে অনেকেই পড়াশুনায় পর্যাপ্ত সময় দিতে পারেন না। কারণ, পার্ট টাইম হলেও কিন্তু এ ধরণের চাকরিতে ভালই সময় দিতে হয়। যারফলে, পড়াশুনার জন্যে প্রয়োজনীয় সময় বের করাটা অনেকের ক্ষেত্রেই কঠিন হয়ে যায়।
ডিগ্রি অর্জণে ধীরগতি
কারো কারো বেলায় ভীষণভাবে লক্ষ্য করা যায় যে, তারা চাকরি করতে গিয়ে ঠিক মতো পড়াশুনা করতে পারেন না। ফলে, নিয়মিত পরীক্ষাগুলোতে অংশ নিতে পারেন না। এতে করে সেমিস্টার পেছাতে থাকে, পড়াশুনার গতি ধীর হতে থাকে। অর্থাৎ, ডিগ্রি অর্জনে অন্যদের থেকে পিছিয়ে পড়তে হয়।
স্বাস্থ্যের উপর ইফেক্ট
পড়াশুনার পাশাপাশি যারা পার্ট টাইম জব করেন এবং একই সাথে ভার্সিটিতেও নিয়মিত যান এবং পড়াশুনার পেছনে সময় দেন, তাদের কারো কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় শরীরের উপর নৈতিবাচক প্রভাব পড়ে। কারণ, দুটোই ম্যানেজ করতে গিয়ে তারা শরীরের সার্বিক যত্ন নিতে পারেন না।
এক্টট্রা বেনিফিট পাওয়া যায় না
ফুল টাইম চাকরিতে যেসব আলাদা সুবিধা থাকে, পার্ট টাইমে অধিকাংশের ক্ষেত্রেই সেগুলো থাকে না। যেমন, অনেকেই মোবাইল সেট কিংবা বিল পান না। সিক লিভ থাকে না। অসুস্থ্য হলে অফিসে যাওয়া সম্ভব হয় না, আর অফিসে না গেলে ওই দিনের বেতনও দেয়া হয় না। এটা অবশ্য সব চাকরির ক্ষেত্রে নয়। অনেকে আবার ছুটির দিনেও ছুটি কাটাতে পারেন না। হেলথ্ ইন্সুরেন্স কিংবা এ জাতীয় সুবিধাগুলোও পাওয়া যায় না।
চাকরির সিকিউরিটি নেই
পার্ট টাইম জবের আরো একটি নেগেটিভ দিক হচ্ছে চাকরির কোনও নিশ্চয়তা থাকে না। যে কোনও সময় চাকরি চলে যেতে পারে।
পার্ট টাইমে এখন কাজ করার অনেক পার্টই আছে। যে কোনও এক পার্টে জয়েন করে ফেললেই হয়।
ঠিক বলেছেন, নূর আলম সিদ্দিক ভাই।
This is a very valuable post on job field in Bangladesh that will help the people who search jobs. Thank you for properly describing the topic on this post.
Hello Maz Islam, I am glad that you read this post about “advantages & disadvantages of part time job” written by me. I like your compliments a lot. Hope you will take a look on my other post on Hoicoibangla.