গতকাল রাতে জুভেন্টাস মুখোমুখী হয়েছিল ইংলিশ দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। শুরুতে এগিয়ে গেলেও শেষ ৩ মিনিটে ২ গোল হজম করে ম্যাচটা ২-১ ব্যবধানে হেরে যায় জুভেন্টাস।
জুভেন্টাস-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড
পুরো ম্যাচে জুভেন্টাস আক্রমণের বন্যা বইয়ে দিলেও ম্যাচটা জুভেন্টাস হেরে গেছে মূলত শেষ তিন মিনিটে।
ম্যাচের শুরু থেকেই ইউনাইটেডকে খোলস ছেড়ে বেরোতে দেয়নি জুভেন্টাস স্কোয়াড। জুভেন্টাসের একের পর এক আক্রমণ সামলাতেই হিমসিম খেয়েছে ইংলিশ দলটি।
৩৫ মিনিটের সময় ম্যাচের প্রথম পরিস্কার সুযোগ পায় জুভেন্টাস।
ডান প্রান্ত থেকে রোনালদো ডি-বক্সে সামি খেদিরার উদ্দেশ্যে পাস বাড়ান। ফাকায় থাকা অবস্থায় সামি খেদিরার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ পেয়েছিল জুভেন্টাস। কিন্তু পাওলো দিবালা ও হুয়ান কুয়াদ্রাদো সুযোগ গুলোকে কাজে লাগাতে পারেন নি। গোলশূন্য শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দিবালার শট পোস্টে লেগে ফিরে আসলে হতাশা আরও বাড়ে জুভেন্টাসের।
৬৫ মিনিটে অসাধারণ একটি গোল করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যান রোনালদো।
মাঝমাঠ থেকে রোনালদোর উদ্দেশ্যে লম্বা পাস বাড়িয়েছিলেন বনুচ্চি। বলটি রোনালদোর থেকে অনেকটা দূরেই ছিল। অন্যকোন ফরোয়ার্ড হলে হয়তো বলের পেছনে ছুটত, কিন্তু ঐ পাস থেকে গোলের আশা করতো না। কিন্তু এ যে রোনালদো! চিতার গতিতে বক্সে ঢুকলেন, তারপর বল শূন্যে থাকা অবস্থায় জুভ তারকার দূর্দান্ত ভলি গোলরক্ষক দি গিয়াকে কোন সুযোগ না দিয়েই জালে জড়ায়।
রোনালদোর গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরও আক্রমণ করা থামায়নি জুভেন্টাস। বরং আরও গুছিয়ে আক্রমণ করতে থাকে।
রোনালদো গোল করার কিছুক্ষণ পরই আবার ইউনাইটেড রক্ষণকে এলোমেলো করে দিয়ে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন। তারপর পাস দেন ফাকায় দাড়ানো কুয়াদ্রাদোকে। কেবল গোল বরাবর শট নিলেই চলতো এমন একটি বল কুয়াদ্রাদো বারের উপর দিয়ে মেরে দেন।
এর কিছুক্ষণ পর আরও ভাল কিছু সুযোগ পায় পিয়ানিচ, দিবালা ও কুয়াদ্রাদো। কিন্তু রাতটা যেন জুভেন্টাসের ছিল না। তাই অবিশ্বাস্যভাবে হয়তো দি গিয়া সেভ করে ফেলেন নয়তো পিয়ানিচরা পোস্টের বাইরে দিয়ে মেরে দেন।
এত মিসের খেসারতই দিয়েছে জুভেন্টাস ম্যাচ হেরে।
৮৬ মিনিটে ফি-কিক থেকে দারুণ একটি গোল করে ইউনাইটেডকে ম্যাচে ফেরান হুয়ান মাতা।
এর তিন মিনিট পরেই ম্যাচে চূড়ান্তরকম দূর্ভাগ্যের শিকার হয় জুভেন্টাস। বনুচ্চির ভুল ক্লিয়ার করতে গিয়ে বল নিজেদের জালেই জড়িয়ে দেন সান্দ্রো।
পুরো ম্যাচেই রোনালদো অসাধারণ খেলেছেন। অসাধারণ খেলেছেন দিবালা, কুয়াদ্রাদো, পিয়ানিচরাও। তবে রোনালদো সেখানে কঠিন একটি সুযোগকেও গোলে পরিণত করেছিলেন সেখানে পিয়ানিচ, কুয়াদ্রাদোরা সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও মিস করেছেন।
ইউনাইটেডের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে তাদের গোলরক্ষক দি গিয়ারও।
দি গিয়া যেন আবার প্রমাণ করলেন কেন তাকে বিশ্বসেরা গোলরক্ষক বলা হয়। বারকয়েক শট অবিশ্বাস্য দক্ষতায় প্রতিহত করেছিলেন তিনি।
জুভেন্টাস যতগুলো সুযোগ পেয়েছিল তার কয়েকটি কাজে লাগাতে পারলেও ন্যূনতম ৪ গোল হজম করতে হত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে।
তাই দূর্ভাগ্য, নিজেদের ব্যর্থতা মিলিয়ে এই মৌসুমে প্রথম হারের দেখা পায় জুভেন্টাস।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এই জয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে।
চার ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পয়েন্ট টেবিলের ২য় স্থানে আর ৯ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে জুভেন্টাস।
Leave a Reply