ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সুবিধা সম্পর্কে অনেকেই এখন সম্যক অবগত। প্রযুক্তির এই যুগে এমন কিছু কাজ করা যায় যা পূর্বে করা তো দূরের কথা, কল্পনাই করা যেত না। ই-কমার্স ও ডিজিটাল মার্কেটিং প্রযুক্তির এক বিস্ময়কর অবদান বলা চলে। তবে, আমরা অনেকেই ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিংকে একই মনে করি। কিন্তু ই-কমার্স এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
ই-কমার্স হল ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও সেবার বিনিময় মাধ্যম। অর্থাৎ, আপনি ঘরে বসেই যে কোন পণ্য বা সেবা ক্রয় বা বিক্রয় করতে পারবেন ই-কমার্স সাইটগুলোর মাধ্যমে। অন্যদিকে, ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে ই-কমার্সের একটি অংশ যার কাজ হচ্ছে ই-কমার্সের সেবাকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া। এই ছড়িয়ে দেয়ার কাজটি সুচারুরূপে করার জন্যে আপনাকে এর সঠিক পদ্ধতি জানতে হবে। এজন্যে অবশ্য আপনি এই ৫টি ফ্রি ডিজিটাল মার্কেটিং কোর্স থেকে যে কোনটি করে নিতে পারেন।
তবে, মনে রাখবেন ডিজিটাল মার্কেটিং কিন্তু ই-কমার্সের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর মাঝে আরো অনেক কিছুই অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। যেমন-
- ওয়েব ডেভলেপমেন্ট
- মার্কেটিং অটোমেশন
- ই-কমার্স
- ইমেইল মার্কেটিং
- মোবাইল মার্কেটিং
- সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)
- সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং (SEM)
- ভিডিও ও অডিও প্রোডাকশন
উপরের এগুলো ছাড়াও আরও অনেক ধরণের কাজ রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিং জগতে। তাই, আপনি চাইলেই ডিজিটাল মার্কেটিং এর যে কোন কাজ শিখে আয় করতে পারেন, মুক্ত হতে পারেন বেকারত্বের অভিশাপ থেকে।
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে আপনি হতে পারেন একজন ফ্রিল্যান্সার। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের জরিপে দেখে গেছে, সারা বিশ্বে ফ্রিল্যান্সিং তথা ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজে সবচেয়ে বেশি মানুষ কাজ করছে ভারতে। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনি চাইলেই নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। আসুন জেনে নিই, ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনি যে ৬টি সুবিধা পেতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সুবিধা
১. ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে চাহিদা অত্যাধিক
প্রযুক্তি নির্ভর আজকের বিশ্বে পুরাতন বা ট্রেডিশনাল মার্কেটিংয়ের স্থান দখল করে নিচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং। আর তাই, সারা বিশ্বে রয়েছে এর অত্যধিক চাহিদা। এক সূত্রের খবরে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যেই আগামী ২০২০ সালের মধ্যেই প্রায় ২০ লাখ নতুন ডিজিটাল মার্কেটিং ভিত্তিক কাজ পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের মত অন্যান্য দেশেও রয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ব্যাপক কাজের সুযোগ।
আর তাই, ছাত্র থেকে শুরু করে যে কোন পেশার মানুষ বা বেকার যারা আছেন, তারা ডিজিটাল মার্কেটিংকে নিজেদের ক্যারিয়ার হিসেবেও গড়তে পারেন।
২. ক্যারিয়ার পছন্দের সুযোগ
এই মূহুর্তে যারা কর্মজীবনে আছেন, তারা হয়তো একই ধরণের কাজ সারা বছর ধরে করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছেন। কিংবা একঘেয়েমি লাগছে। কিন্তু, চাইলেই আপনি আপনার পেশাকে পরিবর্তণ করতে পারছেন না। তবে, ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে আপনাকে এ ধরণের ভোগান্তির শিকার হতে হবে না।
আপনি চাইলেই যে কোন কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারবেন। আপনার পছন্দ ও কাজ করার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনি যে কোন কাজ করতে পারবেন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে।
৩. কাজের অভিজ্ঞতার সাথে সাথে আয়ের সুযোগও ক্রমশ বাড়ে
সাধারণ পেশাগত কাজে আপনার অভিজ্ঞতা যতটা বাড়ে, ঠিক ততখানি আপনি বেতন পাচ্ছেন না। অর্থাৎ, আপনি যদি কোন অফিসে কাজ করেন, তাহলে আপনার প্রমোশনের সুযোগ খুবই সীমিত থাকে। কিন্তু, ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা যত বাড়তে থাকবে, আপনার আয়ের সুযোগও তত বাড়তে থাকবে।
৪. খুব সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ক্যারিয়ার শুরু করা যায়
একজন ছাত্র তার গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর একটি ভাল জব করার আশা করতে পারে। কিন্তু, ডিজিটাল মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে কোন গ্রাজুয়েশন সার্টিফিকেট প্রদর্শন করতে হবে না। বরঞ্চ, আপনার কাজের সামর্থ্য থাকলেই আপনি ডিজিটাল মার্কেটিং-এ আপনার ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন।
তবে, তার অর্থ এই নয় যে আপনি পড়াশুনা বাদ দিয়ে দেবেন। পড়াশুনার কোন বিকল্প নেই। আপনি আপনার লেখাপড়ার পাশাপাশি বরং ডিজিটাল মার্কেটিংকে প্রথম অবস্থায় পার্ট টাইম জব হিসেবে নিতে পারেন। এরপর, চাইলে আপনি এটিকে আপনার ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবেও নিতে পারেন। জেনে নিন ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার শুরু করবেন কিভাবে।
৫. ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদা সম্পর্কে জানা যায়
আজকাল মানুষ তাদের পছন্দের যে কোন জিনিস কেনার আগ্রহ রয়েছে এমন জিনিসের বিষয়ে ফেইসবুক, টুইটার, ইউটিউবের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়। তাই, ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদা সম্পর্কে খুব সহজেই জানা যায়। আর তাই, ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদা অনুসারে আপনি চাইলে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবা সম্পর্কে সেই ক্রেতা বা ভোক্তাদের কাছে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অবহিত করতে পারেন।
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এই সুবিধাটি কাজে লাগাচ্ছে বড় বড় জায়ান্ট কোম্পানি। এর একটি প্রমাণ আপনাদেরকে দেওয়া যেতে পারে। ধরুন, আপনি একটি কম্পিউটার টেবিল কিনতে চাচ্ছেন। আর তাই, আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে কিংবা ফেইসবুকে ভাল কোন ব্রান্ড কিংবা দাম কেমন হতে এসব বিষয়ে সার্চ বা খোঁজ করলেন।
সার্চ করা শেষে আপনি যদি আপনার ফেইসবুকের আইডিটি একবার রিফ্রেস করেন কিংবা হোমে ক্লিক করেন, দেখবেন কিছু মূহুর্তের মধ্যেই ফেইসবুক আপনার ওয়ালে কম্পিউটার টেবিল কেনা যায় এমন কোন দোকান, শো-রুম বা কোম্পানির বিজ্ঞাপন বা তাঁদের পোস্ট দেখাবে আপনাকে।
৬. প্রতিদিন বিভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ ও নতুন বন্ধুত্ব তৈরি
ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে নানামূখী কাজের সুবিধা থাকার সুবাদে আপনার সাথে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন মানুষের সাথে কাজ করার সুযোগ থাকে। আর এতে করে, দেশ ও দেশের বাইরের মানুষের সাথে আপনার একটি ভাল সম্পর্ক তৈরি হতে পারে যা আপনার ক্যারিয়ারকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারে।
শেষ কথা
ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার সুবিধা আছে আরো অনেকগুলো। আমি মূল ৬টি সুবিধা নিয়ে লিখেছি। আশা করি, এ ৬টি সুবিধা সম্পর্কে জেনেই আপনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে নিজেকে দক্ষ করে তুলবেন। সুতরাং, আজই শুরু করে দিন।
Md Sahadat says
সুবিধা জানলাম, কিন্তু আমি জানতে চাই আপনে কি অনলাইনে ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ করেন?